somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্টাইল আইকন হিনা

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ রাত ১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোহাম্মদ আবুল হোসেন: উজ্জ্বল, উচ্ছল তারুণ্য। বয়স চৌত্রিশ। এ বয়সে নজর কেড়েছেন দুনিয়াজুড়ে।

বিশ্বনেতা থেকে আমজনতা- সবার দৃষ্টি এখন হিনার দিকে। তিনি পাকিস্তানের নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খার। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তার চলন-বলন, ফ্যাশন, কথা বলার ভঙ্গি, হাঁটাচলা- সবই নজর কাড়ছে বিশ্বের তাবৎ মানুষের। পাকিস্তানের উথাল-পাথাল রাজনীতি, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো এমন কঠিন পদ আঁকড়ে ধরেছেন এতেই তার সাহসের প্রকাশ পেয়েছে। অথচ হিনা রাজনীতিক হতে চান নি। চেয়েছিলেন ব্যবসায়ী হতে, নামী ব্যবসায়ী। লাহোরে তার রয়েছে একটি পোলো লাউঞ্জ নামের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। লাহোর পোলো গ্রাউন্ডের পাশে এর অবস্থান। কিন্তু তার পিতা গুলাম নূর রাব্বানি খার তাকে বানাতে চেয়েছেন রাজনীতিক। তাকে হোটেল ম্যানেজমেন্টের ক্যারিয়ার থেকে তিনি ভিন্ন পথ দেখান। তার দেখানো পথেই হিনা রাব্বানি খার আজ বিশ্বব্যাপী পরিচিত এক রাজনীতিক- পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৭৭ সালের ১৯শে নভেম্বর পাকিস্তানের পাঞ্জাব রাজ্যের মুলতানে তার জন্ম। তার বংশের শিকড় প্রোথিত রয়েছে পাঞ্জাবের মুজাফ্‌ফরগড় জেলার কোট আদ্দু এলাকার খার ঘারবি গ্রামে। সেখানে রয়েছে এ বংশের জমিজমা সহ বহু সম্পদ। রয়েছে ফিশারিজ, আম্রকানন, আখের খামার। হিনা লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস থেকে ১৯৯৯ সালে বিএসসি (অনার্স) সম্পন্ন করেন। এরপর ২০০১ সালে ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস থেকে হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে এমএসসি অর্জন করেন। ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত। তার স্বামী ফিরোজ গুলজার। তাদের রয়েছে দু’টি কন্যা সন্তান- আনাইয়া ও দিনা। হিনা এখন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-র পররাষ্ট্রমন্ত্রী হলেও তিনি শুরুর দিকে এ দলের কেউ ছিলেন না। তিনি ২০০২ সালে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কিউ এর হয়ে ন্যাশনাল এসেম্বলিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার আসন ছিল এনএ-১৭৭ মুজাফ্‌ফরগড়-২। তিনি ২০০৮ সালে ফের নির্বাচন করার বাসনা প্রকাশ করেন। কিন্তু পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কিউ তাকে আর নির্বাচনের অনুমতি দেয়নি। কিন্তু নিজের ওপর তার ছিল অগাধ আস্থা। তাই জানতেন নির্বাচন করলে তিনি জিতবেনই। তাই তিনি দল বদল করেন। যোগ দেন পিপিপি’তে। পিপিপি’র টিকিটে ঠিকই তিনি নির্বাচনে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে তিনি এগিয়ে ছিলেন ৮৪ হাজারেরও বেশি ভোটে। এরপর থেকেই তার রাজনীতির আকাশ পরিষ্কার হতে থাকে। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে পিপিপি। এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির মন্ত্রিসভায় হিনা রাব্বানি খারকে বানানো হয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও পরিসংখ্যানবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। ২০০৯ সালের ১৩ই জুন পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে প্রথম নারী হিসেবে বাজেট বক্তৃতা দেন। এ বছরের ১১ই ফেব্রুয়ারি হিনা রাব্বানি খারকে নিয়োগ দেয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী পদে। ওই সময়ে ইউসুফ রাজা গিলানি মন্ত্রিসভায় রদবদল করেন। এক পর্যায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদ ত্যাগ করেন শাহ মাহমুদ কুরেশি। ফলে এ বছরের ১৩ই ফেব্রুয়ারি হিনা ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। গত ১৯শে জুলাই পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়। এর পরদিন তাকে শপথ পাঠ করান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। এ সময় নারীদের জাতীয় জীবনের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য পিপিপি সরকার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সে কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। দেশের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি প্রথমেই সফর করেন আফগানিস্তান। এরপর ভারত যান শান্তি সংলাপ কার্যকর করা নিয়ে আলোচনা করতে। ভারত সফরের আগে তিনি আফগানিস্তান সফর করলেও তখন তা নিয়ে মিডিয়ায় তেমন উচ্চবাচ্য হয়নি। কিন্তু তার ভারত সফরের সময় বিশ্ব মিডিয়া তাকিয়ে থাকে তার দিকে। ভারতে একদিকে তার চেয়ে বয়সে প্রায় ৪৬ বছরের বড় ও অভিজ্ঞ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা। তার অভিজ্ঞতার ঝুলি অনেকটাই বড়। সে তুলনায় হিনা একেবারেই নতুন। কিভাবে তিনি এতবড় একজন রাজনীতিকের সঙ্গে রাজনীতির অঙ্ক মিলাবেন সেদিকেই তাকিয়ে ছিল বিশ্ববাসী। এ নিয়ে সাধারণ মানুষেরও আগ্রহের কমতি ছিল না। কেউ তার কথা বলার ধরন প্রত্যক্ষ করেছেন। কেউ দেখেছেন সাজগোজ। ভারতীয় কোন কোন মিডিয়া তাকে স্টাইল আইকন হিসেবে অভিহিত করেন। তাতে তার বহন করা ব্যাগ, তার মুখের শেড, মুক্তোর মালা সহ সব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। ভারত সফরে এসে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে নতুন সম্পর্কের সূচনা হচ্ছে। কিন্তু ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণার সঙ্গে আলোচনার আগেই তিনি কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। এ নিয়ে ভারতে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয়। বিজেপি এর কড়া প্রতিবাদ জানায়। ওই আলোচনার মাধ্যমে তিনি প্রটোকল ভেঙেছেন বলে এর নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে বিজেপি।
স্টাইল আইকন হিনা
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১১ রাত ১:০৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে গুলি করলো কে?

লিখেছেন নতুন নকিব, ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:২৬

হাদিকে গুলি করলো কে?

ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী রাজপথের অকুতোভয় লড়াকু সৈনিক ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলিবিদ্ধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জীবনের চেয়ে তরকারিতে আলুর সংখ্যা গণনা বেশি জরুরি !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:১৭


বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশবাসী একটা নতুন শব্দ শিখেছে: রুট ভেজিটেবল ডিপ্লোম্যাসি। জুলাই আন্দোলনের পর যখন সবাই ভাবছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইতিহাসের সেরা ম‍্যাটিকুলাস ডিজাইনের নির্বাচনের কর্মযজ্ঞ চলছে। দলে দলে সব সন্ত্রাসীরা যোগদান করুন‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৪



বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ব নিকৃষ্ট দখলদার দেশ পরিচালনা করছে । ২০২৪-এর পর যারা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী দিয়ে দেশ পরিচালনা করছে । তাদের প্রত‍্যেকের বিচার হবে এই বাংলার মাটিতে। আর শুধুমাত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাচেষ্টা: কার রাজনৈতিক ফায়দা সবচেয়ে বেশি?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১৮


হাদির হত্যাচেষ্টা আমাদের সাম্প্রতিক রাজনীতিতে একটি অশনি সংকেত। জুলাই ২০২৪ আন্দোলন-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের দ্বিধাবিভক্ত সমাজে যখন নানামুখী চক্রান্ত এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অন্তর্কলহে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আয়-উন্নতির গুরুত্বপূর্ন প্রশ্নগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×