লালন গায়কী বাউলরা যে বিয়ে প্রথায় বিশ্বাসী নয়, তারা যে আদৌ মুসলমান নয়; তারা অবাধ যৌনাচার ও নিকৃষ্টতম ৫ বস্তু ভক্ষণে বিশ্বাসী তা কী আজকের নব্য ফ্যাশনধারী বাউল ভক্তরা জানে? জনশৃঙ্খলা নৈতিকতা বিরোধী এমন একটা হীন গোষ্ঠীকে রাষ্ট্র লালন করে কীভাবে. সাধারণ জনারণ্যে বাউলরা নাড়ার ফকির নামে পরিচিত। ‘নাড়া’ শব্দটির অর্থ হলো শাখাহীন অর্থাৎ এদের কোনো সন্তান হয়না। তারা নিজেদের হিন্দু মুসলমান কোনোকিছু বলেই পরিচয় দেয় না। লালন শাহ ছিল বাউলদের গুরু। লালনকে বাউলরা দেবতা জ্ঞানে পূজা করে। তাই তার ‘ওরসে’ তাদের আগমন এবং ভক্তি অর্পণ বাউলদের ধর্মের অঙ্গ। (বাংলাদেশের বাউল : পৃষ্ঠা ১৪)লালন শাহের অনুসারীদের একটি অংশ ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের দফতরে একজন মুসলমান অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলে, “আমরা বাউল। আমাদের ধর্ম আলাদা। আমরা না-মুসলমান, না-হিন্দু। আমাদের নবী সাঁইজি লালন শাহ। তার গান আমাদের ধর্মীয় শ্লোক। সাঁইজির মাজার আমাদের তীর্থভূমি। আমাদের গুরুই আমাদের রসূল। ডক্টর সাহেব [অর্থাৎ উক্ত মুসলিম অধ্যাপক]আমাদের তীর্থভূমিতে ঢুকে আমাদের ধর্মীয় কাজে বাধা দেন। কুরআনতিলাওয়াত করেন, ইসলামের কথা বলেন এ সবই আমাদের তীর্থভূমিতে আপত্তিকর। আমরা আলাদা একটি জাতি, আমাদের কালিমাও আলাদা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লালন রসূলুল্লাহ।“ (দ্রষ্টব্য : সুধীর চক্রবর্তী, ব্রাত্য লোকায়ত লালন, ২য় সংস্করণ, আগস্ট ১৯৯৮ পৃষ্ঠা ৪-৯৫)
বাউল সাধনায় গুরুশ্রেষ্ঠকে ‘সাঁই’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সাধনসঙ্গিনীকেও গুরু নামে অভিহিত করা হয়। মূলত সাধনসঙ্গিনীর সক্রিয় সাহায্য ব্যতীত সাধনায় সিদ্ধি লাভ করা যায় না। তাই তাকে ‘চেতন গুরু’ বলা হয়। বাউলরা বিশ্বাস করে গুরুর কোনো মৃত্যু নেই। তিনি কেবল দেহরক্ষা করতে পারেন। তিনি চিরঞ্জীবী। বাউলরা মন্দিরে কিংবা মসজিদে যায় না। জুমুয়ারনামায, ঈদ এবং রোযাও পালন করে না। তারা তাদের সঙ্গিনীকে জায়নামায নামে অভিহিত করে। বাউলরা মৃতদেহকে পোড়ায় না। এদের জানাযাও হয়না। হিন্দু মুসলমান নামের সব বাউলদের মধ্যেই এই রীতি। এরা সামাজিক বিবাহ বন্ধনকেও অস্বীকার করে। নারী-পুরুষের একত্রে অবাধ মেলামেশা এবং বসবাসকে দর্শন হিসেবে অনুসরণ করে। ((বাংলাদেশের বাউল : পৃষ্ঠা ১৫-১৭)
বাউল সাধনা মূলতএকটি আধ্যাত্মসাধনা, তবে যৌনাচার এই সাধনার অপরিহার্য অঙ্গ। নাস্তিক ডক্টর আহমদ শরীফের ভাষায় কামাচার বা মিথুনাত্মক যোগসাধনাই বাউল পদ্ধতি। বাউল সাধনায় পরকীয়া প্রেম এবং গাঁজাসেবন প্রচলিত। বাউলরা বিশ্বাস করে যে, কুমারী মেয়ের রজঃপান করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক তৈরি হয়। তাই বাউলদেরমধ্যে রজঃপান একটি সাধারণ ঘটনা। এছাড়াও তারা রোগমুক্তির জন্য স্বীয় মূত্র ও স্তনদুগ্ধ পান করে। সর্বরোগ থেকে মুক্তির জন্য তারা মল, মূত্র, রজঃ ও বীর্য মিশ্রণে প্রেমভাজা নামক একপ্রকার পদার্থ তৈরি করেতা ভক্ষণ করে। একজন বাউলের একাধিক সেবাদাসী থাকে। এদের অধিকাংশই কমবয়সী মেয়ে। (বাংলাদেশের বাউল : পৃষ্ঠা ৩৫০, ৩৮২)
এদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে বাউল সম্প্রদায় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকায়, অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলিমও ধর্মবিবর্জিত বিকৃত যৌনাচারী মুসলিম নামধারী বাউলদেরকে সূফী-সাধকের মর্যাদায় বসিয়েছে। মূলত বিকৃত যৌনাচারে অভ্যস্ত ভেকধারী এসব বাউলরা তাদের বিকৃত ও কুৎসিত জীবনাচরণকে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখার জন্য বিভিন্ন গানে মোকাম, মঞ্জিল, আল্লাহ, রসূল, আনাল হক্ব, আদম-হাওয়া, মুহাম্মদ-খাদিজাসহ বিভিন্ন আরবী পরিভাষা, আরবী হরফ ও বাংলা শব্দ প্রতীকরূপে ইচ্ছাকৃতভাবেই ব্যবহার করেছে। এদেশে বহুল প্রচলিত একটি লালন সঙ্গীত হলো-
“বাড়ির পাশে আরশি নগর
সেথা এক পড়শি বসত করে,
আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।”
এই গানটিকে আমাদের সমাজে খুবই উচ্চমার্গের আধ্যাত্মিক গান মনে করা হলেও এটি মূলত একটি নিছক যৌনাচারমূলক গান, যাতে আরশিনগর, পড়শি শব্দগুলো প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে তাদের বিকৃত জীবনাচারকে গোপন রাখার উদ্দেশ্যে। (বাংলাদেশের বাউল : পৃষ্ঠা ৩৬৮-৩৬৯)