somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্যান্ডউইথ কেন রফতানি করা হবে?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের অব্যবহৃত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রফতানির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ভারত ও সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের কাছে ব্যান্ডউইথ ক্রয়ের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে। সিঙ্গাপুরের সিংটেল ২.৫ এবং ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় আটটি রাজ্য (এইট সিস্টার্স) ১০ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ রফতানি করলে কোনো সমস্যা হবে না বরং দেশ আথির্কভাবে লাভবান হবে বলে মনে করে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।



বর্তমানে বাংলাদেশ ৪৪.৬ গিগাবাইট ব্যান্ডউইথের মাত্র ১৭ গিগা ব্যবহার হয়। অবশিষ্ট ২৭.৬ গিগাবাইট অব্যবহৃতই থেকে যায়। বিএসসিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ব্যান্ডউইথ রফতানির উদ্যোগ নিয়ে বিএসসিসিএল টেন্ডার আহবান করেছিল। কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয়নি।



সম্প্রতি সিংটেল ছয় মাস মেয়াদে আমাদের কাছ থেকে ২.৫ গিগা ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। এজন্য তারা সাবমেরিন কেবল সি-মি-উই-ফোর কনসোর্টিয়ামে সিঙ্গাপুর থেকে ইতালি পর্যন্ত একটি লিংক চেয়েছে। এই পরিমাণ ব্যান্ডউইথের জন্য সিঙ্গাপুর আমাদের আড়াই থেকে পৌনে তিন কোটি টাকা দেবে। বিএসসিসিএল’র বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে।



এছাড়াও ভারত তার পূর্বাঞ্চলীয় আটটি রাজ্যের অধিবাসীদের উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা দিতে বাংলাদেশ থেকে ব্যান্ডউইথ নিতে চায়। এজন্য তারা বাংলাদেশকে নতুন লিংক তৈরি করে দিতে বলেছে। ইতিমধ্যে বিএসসিসিএল দুটি নতুন লিংকের জন্য ম্যাপ প্ল্যান তৈরি করেছে। একটি লিংক কক্সবাজার-চট্টগ্রাম-কুমিল্লা-আগরতলা হয়ে ত্রিপুরা রাজ্যে যাবে। আরেকটি লিংক কক্সবাজার-ঢাকা-রংপুর-ধুবড়ী-গুয়াহাটি হয়ে আসামে যাবে। এর মধ্যে একটি হবে বিকল্প লিংক। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা কোনো কারণে একটিতে সমস্যা হলে অন্যটি বিকল্প লিংক হিসেবে ব্যবহার করা হবে বলে জানা গেছে।



বিএসসিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরো বলেন, ব্যান্ডউইথ নিতে আটটি রাজ্যকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হবে কি না সে বিষয়ে ছাড়পত্র আনতে বলেছি।



ভারতের আটটি রাজ্যে ব্যান্ডউইথ রফতানির বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য পররাষ্ট্র, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।



এখন প্রশ্ন হলো, কেন ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রফতানি করতে হবে? যুক্তি হিসেবে বলা হতে পারে, অব্যহৃত অংশ ফেলে রেখে লাভ কী? প্রশ্ন হলো, কেন অব্যহৃত থাকবে? ব্যবহারের আবকাঠামো তৈরি করলেই তো হয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে তো আরো বেশি বেশি ব্যান্ডউইথ লাগবে। সারা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল, কলেজ, পাবলিক লাইব্রেরিতে অর্থাৎ যেখানে কম্পিউটার আছে সেসব জায়গায় বিনামূল্যে ইন্টারনেট দিয়ে দিন। শিক্ষার্থী, পাঠকরা বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করুক।



সারা দেশে চার হাজার ৫০১টি ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র হচ্ছে। ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রগুলোর এমনিতেই বেহাল দশা। বেশিরভাগ কেন্দ্রগুলোতে মোবাইল ফোন সেবা দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ইন্টারনেট ব্যবহার করা হচ্ছে। সেসব জায়াগায় বিনামূল্যে ইন্টারনেট দেয়া হোক। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ কেন্দ্রগুলোতে এসে বিনামূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কাজটুকু সম্পাদন করুক। শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ প্রতিদিনকার খবর জানুক। খবরের কাগজ পড়ুক। নিজেকে আপডেটেড রাখুক। এসব করতেই তো কত ইন্টারনেট প্রয়োজন সে হিসাব কি রফতানি কারকদের মাথায় আছে?



নিজের দেশের চালের দাম কমে না, বরং দিন দিন চালের দাম বাড়ছে। অথচ আমরা বিদেশে চাল রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি! দরকার আছে এই রফতানির? ব্যান্ডউইথের বেলায়ও কি এমনটাই হবে?

সারা দেশে প্রায় ২০ হাজারের মতো বাংলাদেশ টেলিসেন্টার নেটওয়ার্কের (বিটিএন) টেলিসেন্টার আছে। ওইসব সেন্টারে বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা দিলে সাধারণসহ প্রান্তিক মানুষও উপকৃত হবে।



প্রয়োজন হলো ব্যান্ডউইথের দাম আরো কমানো হোক। সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল) ক্রয়কৃত মূল্যে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করুক। বিটিসিএল দেশের বাইরে থেকে এক মেগাবাইট ব্যান্ডউইথ কেনে ৬ হাজার টাকায়। এতোদিন আইএসপিগুলো বিটিসিএল থেকে তিন গুণ দামে (১৮ হাজার টাকায়) ব্যান্ডউইথ কিনত। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম ছিল। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। আগামী জুন মাস নাগাদ এক মেগা ব্যান্ডউইথের দাম হবে ১০ হাজার টাকা বলে জানা গেছে।



মূখ্য বিষয় হলো, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করে, বাংলার ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার পরে যদি ব্যান্ডউইথ উদ্বৃত্ত থাকে, তবেই যেন ব্যান্ডউইথ রফতানি করা হয়। নিজের দেশের প্রয়োজন না মিটিয়ে ব্যান্ডউইথ বিদেশে রফতানি করা হলে ডিজিটাল বাংলাদেশর বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে।

মূল সংবাদ
http://www.barta24.net/news/9072
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×