somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

“শীতলক্ষ্যায় কেন লাশ ভাসে”?? (বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাসহ একটি ১৮+ পোস্ট।) ;);):-*:-*

০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৃথিবীর প্রথম যে মানুষটি পানিতে ডুবে মারা গিয়েছিলো বা মরে পানিতে পড়েছিলো, তার লাশও কিন্তু ভেসে উঠেছিলো। কিন্তু কেন ভেসে উঠেছিলো তা কেউ বলতে পারেনি।

লাশ কেন পানিতে ভাসে তা আবিস্কার করেছেন আমাদের সুপরিচিত বিজ্ঞানী আর্কিমিডিস , আজ থেকে প্রায় বাইশ শত বছরের মত আগে।
আর্কিমিডিসের সময়ে তার রাজ্যের রাজা ছিলো, দ্বিতীয় হিয়েরো। যার কাজ ছিলো খালি ধমকাধমকি করা আর মানুষকে সন্দেহ করা। এই বেটায় একবার সোনা দিয়ে একটা মুকুট বানায়। কিন্তু আগেই কইলাম যে, উনার ছিলো সন্দেহবাতিক মন। তার মনে হলো, যে খাদ দিয়ে স্বর্ণকারেরা আবার তাকে ঠকাচ্ছে না তো! তাই তিনি সোনায় খাদ আছে নাকি এইটা পরীক্ষার করতে চাইলেন। কিন্তু শর্ত আছে, মুকুট গলানো যাবে না। প্রচলিত পদ্ধতি ছিলো এবং এখনো আছে, গলিয়ে সোনার ঘনত্ব নির্ণয় করা। সবাই যখন ব্যর্থ হলো। তখন রাজা বলল, “ডাকাও আর্কিমিডিসকে, দেখি সে কেমন বড় বিজ্ঞানী”।
আর্কিমিডিস তো সারাদিন খালি অংক করে। যেখানে সেখানেই খালি কি সব আকিবুকি করে। এক পয়সা ইনকামের মুরুদহীন আর্কিমিডিসকে যখন রাজদরবারে নেবার জন্য লোক আসল, গর্বে তো গর্বে আর্কিমিডিসের বৌয়ের ব্লাউজে ছিড়ে গেলো। “আহা! জানুটারে খালি সারাদিন বকাই দিছি। কিন্তু কত বড় কামের আমার স্বামী। রাজদরবার থেকে তত্ত্ব আসে-তাকে নেবার জন্য। আর আমি তাকে চিনি নাই”।
নিজেকে ধিক্কার দিতে দিতে আনমনেই তিনি গান ধরে পুকুর পাড়ে হাটা ধরেন-
“যে জন প্রেমের ভাব জানে না, তার সাথে নাই লেনাদেনা
খাটি সোনা ছাড়িয়া যে নেয় নকল সোনা, সে জন সোনা চিনে না।”

বত্রিশ দাত বের করে, আর্কিমিডিস রাজদরবারে গেলেও রাজার কথা শুনে তার মুখ চুন হয়ে যায়। কয়দিন ধরে তার কোস্টকাঠিন্য চলছিলো। রাজার কথা শুনে মনে হলো, তার পেটে মনে হয় মোচড় দিয়ে উঠল।
রাজদরবার থেকে বাড়ী ফেরার পথে বাংলা সিনেমার মত তার কানে খালি প্রতিধ্বনিতো হচ্ছিলো রাজাদেশ, “যাও। না গলিয়ে সোনার খাদ বের করার উপায় আবিস্কার করে নিয়ে আসো। অন্যথায় তোমার গর্দান যাবে”।
“অন্যথায় তোমার গর্দান যাবে”
“অন্যথায় তোমার গর্দান যাবে”
“অন্যথায় তোমার গর্দান যাবে”
“অন্যথায় তোমার গর্দান যাবে”।
এদিকে তার বউ তার জন্য বাথটাবে পানি রেডি করে রেখেছে। স্বামী এই গরমে কষ্ট করে হেটে আসবে। গোসল করে যাতে ক্লান্তি দূর করতে পারে। ভদ্রমহিলা অনেকক্ষণ ধরে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছেন। কখন তার স্বামীর গলা দেখা যায়। অবশেষে তিনি তার আরাধ্য, “স্বামীর গলা” দেখলেন এবং দেখে খুশি হলেন। যাক এইবার মালা নাই গলায়। তাইলে পকেটে কিছু আছে।
স্বামী ঘরে আসতেই তিনি পকেট হাতড়ে দেখেন ফক্কা। কিছু নাই। ভাবলেন, হয়ত অন্য কোথাও লুকিয়ে রেখেছে। তাই সব কাপড়-চোপড় খোলা শুরু করলেন। এমনকি আর্কিমিডিসের অন্তর্বাস পর্যন্ত। আর্কিমিডিস ভাবলেন, “কয়দিন পর তো মরুমই। এখন থেকেই জন্মদিনের ড্রেসে গোসল করে একটু অভ্যাস করি”। দ্বিগম্বর আর্কিমিডিস বাথটাবে নামতেই তিনি দেখলেন বাথটাব থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। এটা দেখেই লেংটা আর্কিমিডিস “ইউরেকা!” (আমি পাইছি)- বলে রাস্তা দিয়ে দৌড় শুরু করেন।



আসলে কি পেয়েছিলেন তিনি। তিনি নিচের লাইনটা পেয়েছিলেন।

কোনো বস্তু আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে পানিতে নিমজ্জিত হলে সে তার সমআয়তনের পানি অপসারণ করে।



আবার, বস্তুটি যে পানি অপসারন করেছে সেই পানির ওজন যদি বস্তুটির নিজের ওজন থেকে কম হয়-তবেই কেবল বস্তুটি পানিতে ডুবে যাবে।
আবার পানির ওজন যদি বস্তুটির ওজনের সমান বা বেশি হয়, তবে তা ভেসে উঠবে। সমান ওজনের ক্ষেত্রে বস্তুটি নিমজ্জিত অবস্থায় ভাসবে। অর্থাৎ পানির একটু নিচে থাকবে।



সাধারণত বস্তুর ঘনত্ব পানির ঘনত্ব থেকে কম হলে বস্তুটি পানিতে ভাসে। উদাহরণস্বরূপ-কাঠ, কর্ক প্রভৃতি পানিতে ভাসে এর কারণ হলো তাদের ঘনত্ব পানির ঘনত্ব থেকে কম। পানির ঘনত্ব থেকে যেসব বস্তুর ঘনত্ব বেশি সেসব বস্তু পানিতে ডুবে যায়।
কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে একই সাথে তিনটি ব্যাপার ঘটে।

১।প্রথমে কিছুক্ষন ভেসে থাকে।
২। তারপর ডুবে যায় এবং
৩। শেষে ভেসে উঠে।


তিনটি ব্যাপার কেন হয়। এবার আমরা তা নিয়ে একটু আলোচনা করি।
জীবিত মানুষের ফুসফুসে পানিতে থাকে, তাই তার ঘনত্বও অনেক কম থাকে। তাই সে কিছুক্ষন ভেসে থাকে। সাতার না জানা মানুষও এই একই কারনে কয়েক সেকেন্ড ভেসে থাকে।

কিন্তু যখন মানুষের ফুসফুসে বা শরীরে পানি ঢুকে কিংবা কোন লাশকে ইট-পাথর বা অন্যকোন ভার দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়া হয়, তখন তার ঘনত্ব অনেক বেড়ে যায়।
তখন লাশ কতৃক অপসারিত পানির ওজন লাশের ওজনের চেয়ে কম হয়। তাই লাশটি ডুবে যায়।

পানিতে ডুবে যাওয়া লাশের বেলায় আবার দুটি ঘটনা ঘটে। এটা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা পচতে শুরু করে আবার লাশে পানি প্রবেশ করে এটা ফুলতে শুরু করে এবং এর ঘনত্ব কমতে শুরু করে। লাশের পরিবারের ভাগ্য ভালো হলে, ব্যাকটেরিয়াদ্বারা পচে যাওয়ার আগেই তার ঘনত্ব বা আয়তন এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে, তখন লাশদ্বারা অপসারিত পানির ওজন লাশের নিজের ওজনের চেয়ে বেশি বা সমান হয়। এবং লাশটি ভেসে উঠে।

শীতলক্ষ্যা নদীও এর বাইরে নয়। কাজেই শীতলক্ষ্যাতে লাশ ভেসে উঠবেই। এতে শামীম ওসমান বা অন্য কারো দিকে আজ্ঞুল তুলে লাভ নাই। এটা বিজ্ঞান।



দোষ যদি কারো থেকে থাকে তবে তা, বিএনপির। তারা কেন তিস্তার পানির জন্য লং মার্চ করে। তাদের উচিত ছিল, শীতলক্ষ্যাকেও তিস্তা বানানোর জন্য লং মার্চ করা। তাইলে নদীও থাকত না, লাশও ভাসত না।

নিহতদের পরিবারের প্রতি রইল সমবেদনা। আল্লাহ্‌ তাদের ধৈর্য্য ধরার তৌফিক দিন। আর মরহুমদের জান্নাত নসীব করুক।
১৬টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×