গোলাম মহিউদ্দিন নসু, নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালী জেলায় গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি অস্বাভাবিক ও মর্মান্তিক ঘটনায় মোট তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একটি হত্যাকাণ্ড আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে এবং বাকি দু’জনের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
আধিপত্যের দ্বন্দ্বে কিশোর খুন (বেগমগঞ্জ):
শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন ব্রিজের কাছে আরমান হোসেন বিজয় নামে এক কিশোরকে প্রতিপক্ষের লোকজন মারধর ও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে যায়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রেক্ষাপট:
প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহতের স্বজনরা এটিকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যা দাবি করছেন। পুলিশের দাবি, বিজয়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, খুন ও রাহাজানির একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য:
বেগমগঞ্জ থানার এসআই কুতুবউদ্দিন লিয়ন জানান, ঘটনার সময় বিজয়ের সঙ্গে থাকা দু'জন যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করেও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। শনিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো মামলা হয়নি।
চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা (বেগমগঞ্জ):
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের রাজারামপুরে মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে আব্দুর রহমান ওরফে শুক্কুর (৩৫) নামে এক যুবককে স্থানীয় কয়েকজন যুবক সালিশী বৈঠকের পর মারধর করে। এতে শুক্কুর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মৃত্যু: প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আইনি পদক্ষেপ:
এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ (হাতিয়া):
হাতিয়া উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নের প্রকল্প বাজার এলাকায় জাফর (১৮) নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) সকালে প্রকল্প বাজারের প্রধান সড়কের পাশে গাছের সঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
অভিযোগ:
নিহতের বাবা মো. জাকেরের অভিযোগ, বিএনপি নেতা সোহেল মাহমুদের বাড়ি থেকে চুরি করার মিথ্যা অভিযোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় জাফরকে আটক করে সালিশ বৈঠক ডাকা হয়। এরপর বাবাকে বাড়িতে পাঠিয়ে জাফরকে আটকে রেখে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
বিএনপি নেতার বক্তব্য: অভিযুক্ত চানন্দি ইউনিয়ন পশ্চিম শাখা বিএনপির সভাপতি সোহেল মাহমুদ চুরির অভিযোগ স্বীকার করলেও হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি সকালে ঘুম থেকে উঠে মৃত্যুর বিষয়টি জানতে পারেন।
পুলিশের ভাষ্য:
হাতিয়ার মোর্শেদ বাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (এসআই) মহিউদ্দিন জানান, এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তদন্তের অগ্রগতি:
শনিবার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো দ্রুত দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




