২ দিন আগের ঘটনা,
একটা কাজে কিছু টাকার দরকার ছিল। ধানমণ্ডি ব্রাঞ্চের কার্ড নিয়ে বুথে গেলাম। বুথে ব্যালেন্স চেক করে তো আমার চোখ বড় হয়ে গেল। বিশ্বাস হল না। আবার ব্যালেন্স চেক করলাম। না আমি ভুল দেখি নি। আমার ব্যালেন্স আগে ছিল ১,৫৮৪ টাকার মত, কিন্তু এখন দেখি ব্যালেন্স অনেক। ব্যালেন্স কত আছে সেটা থাক আর বললাম না। এক কথায় বিশ্বাস হচ্ছিল না যে এতো টাকা আমার একাউন্টে কিভাবে?।
চিন্তা করতে থাকলাম কেউ কি ভুল করে আমার একাউন্টে টাকা পাঠাল নাকি? না কেউই তো আমার এ একাউন্ট এর কথা জানে না। তাহলে পাঠাবে কেন? মাথায় চিন্তা ঘুরতেছে। তাছাড়া আব্বু তো এখন পাঠানোর কথা না। শেষে আমার মনে হল ভগবান হয়তো আমাকে ভালবেসে আমার শীতের শপিং করার জন্য আমাকে টাকাগুলো গিফট করেছে।
যাই হোক উক্ত আগত ব্যাংক ব্যালেন্স নিয়ে প্ল্যানিং শুরু করে দিলাম। খাজা বাবার দরবারে ২,০০০ টাকা দিবো, আর বাকিটা আমার জন্য খরচ করবো, সিলেট যাবো, নিঝুম দ্বীপ যাবো, টাকা বাচলে আরও কোথাও যেয়ে ঘুরে আসবো, আর হ্যাঁ, অবশ্যই ফোন অফ করে রাখবো নাইলে অন্য কেউ আমার এ টাকার মাঝে ভাগ বসাবে, আরও কত শত প্ল্যান ......ফিলিং অস্থির!!!
অলরেডি বুথ থেকে কিছু টাকা উঠিয়েছি। সেই ফেলিংস এ আছি। হঠাৎ কল আসলো। ফোন রিসিভ করলাম, দেখি আব্বু ফোন করেছেন।
-আব্বু কেমন আছো?
ভালো, আব্বু আপনি কেমন আছেন?
-এতো খুশি কেন আব্বু?
এমনি, পরীক্ষা শেষ তো তাই একটু মন টা খুশি।
-ও, শুন, তোমার একাউন্ট এ একটু আগে (......) টাকা পাঠিয়েছি, পেয়েছ?
কিসের টাকা আব্বু?
-তুমি তোমার একাউন্ট একটু চেক করে নাও। আর টাকাটা তোমার অমুক আঙ্কেল কে সন্ধ্যার মধ্যে দিয়ে আইস। আর আমাকে জানাও পাইছ কিনা?
ওকে আব্বু আমি জানিচ্ছি !!!
আমার মনে হল, আমি আর এই পৃথিবীতে নাই। অলরেডি সে টাকা থেকে কিছু খরছ করা শেষ। আমার সব স্বপ্ন শেষ। তাইলে কি আমার সিলেট, নিঝুম দ্বীপ ঘুরতে যাওয়া হবে না? আমার কান্না করতে ইচ্ছে করতেছে।
আব্বু আবার ফোন দিল আমাকে। জিজ্ঞেস করলো টাকা আসছে কিনা? আমি বলেছি আব্বু আসছে, কোন চিন্তা করবেন না। আমি সন্ধ্যার মধ্যে আঙ্কেল কে টাকা দিয়ে আসবো।
আমি আর কিছু না বলে ফোন রেখে দিলাম। কান্না করতে ইচ্ছা করতেছে আর একটা গান এর কথা মনে পড়তেছে
''চলে যদি যাবি দূরে স্বার্থপর, আমাকে কেন জোছনা দেখালি???"