
টপস- জিনস, টিশার্ট, স্কাট ইত্যাদি ওওয়েস্টার্ন পরলে একটি মেয়েকে যেমন স্মার্ট দেখায়, বোরখা পড়লেও স্মার্ট দেখায়। কেউ যদি মনে করে একটা মেয়ে বোরখা পরে ফলে সে স্মার্ট না সে আসলে বলদ। বরং আমাদের দেশে মেয়েদের হিজাবেই বেশী সুন্দর লাগে। হিজাব পড়তে হবে আল্লাহর ভয়ে। ফ্যাশানের জন্য যদি কেউ বোরখা পরিধান করেন তবে তা নাকি হারাম। অথচ ইসলামে মনের ও চোখের পর্দা করতে বলা হয়েছে। কালো কাপড় দিয়ে পুরা শরীর ঢেকে যদি মনে নোংরামি হিংসা থাকে, অন্যের ক্ষতি করার মানসিকতা থাকে, গীবত পরকিয়া করে তবে এই পর্দার কোন মূল্য নেই। আবার একটি মেয়ে ওয়েস্টার্ন পরে কিন্তু মনে প্যাঁচ নেই, হিংসা নেই, গীবত করেনা, আল্লাহর কোন সৃষ্টির ক্ষতি করেনা তবে সে আল্লাহর কাছে মন নোংরা কিন্তু বোরখা পরা মেয়েটার চেয়ে বেশি প্রিয় হওয়ার কথা।
যাই হোক মুল পোস্টে আসি। কিছুদিন আগে বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাচ্ছিলাম শ্যুটিং এর কাজে পুরা টিম। আমাদের বাসে ছিলেন একজন হুজুর পাশে আগাগোড়া বোরখা দিয়ে ঢাকা উনার মেয়ে। ভদ্রমহিলা পানিও খাচ্ছেন এমন ভাবে যেন কেউ না দেখে। বাসে যারা ঢাকা টু চট্টগ্রাম ভ্রমণ করেন তারা জানেন এখন বাস গুলো নামাজের বিরতি দেয়। চট্টগ্রাম থেকে ৩.১৫ তে ছাড়া বাস ফেনি আসার পর মাগরিবের নামাজের জন্য বাস থামে। উনার বাবা বাস থেকে নেমে নামাজে যান। উনার অপোজিট সীটে বসা ছিল আমাদের একজন সিনেমাটোগ্রাফার সানা।
বাবা নামতেই মেয়েটি মুখ থেকে পর্দা সরালেন। জোরে নি:শ্বাস নিলেন। আমাদের ক্যামেরা গেট সেট আপ দেখে মহিলা বুঝতে পেরেছিলেন আমরা শ্যুটে যাচ্ছি। নিজ থেকে সানার সাথে কথা বললেন।এমন সুন্দর মেয়ে আমি খুব কম দেখছি। আমাদের অনেক নায়িকার/মডেলের সৌন্দর্য এই অপরূপার সামনে জাস্ট মলিন হয়ে যাবে। তিনি জানালেন, চট্টগ্রামের ইস্ট ডেলটা ইউনিতে পড়ছেন। ঢাকায় যাচ্ছেন পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তার মডেলিং কারার খুব ইচ্ছা ছিল। কিন্তু তার বাবা ভাই জানতে পারলে খুন করে ফেলবে। মডেলিং তো দূরের কথা জব করা পর্যন্ত নিষিদ্ধ। পড়ালেখা বন্ধ করে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে মৌলবাদী পরিবার। সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে মেয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
বি বি এস ফার্স্ট সেমিস্টারে পড়া ১৯ বছর বয়সী তরুণীর আমাদের মত ইয়ারফোনে গান শুনতে শুনতে জার্নি করতে ইচ্ছা করে কিন্ত্য তার জন্য গান শোনা নিষিদ্ধ। কোন ছেলের সাথে বন্ধুত্ব করা দুরের কথা, কথা বলাও ওর জন্য হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। তার স্বপ্ন গুলোকে বোরখায় ঢেকে দেয়া হয়েছে জোর করে। নামাজ শেষ। মুসল্লিরা বাসে উঠতে শুরু করছেন। মেয়েটি আবার মুখে হিজাব টেনে দিলেন। মাইশাকে ফিসফিস করে বললেন আমাদের সাথে পর্দা খুলে কথা বলেছে তা যেন কোন ভাবেই তার বাবা টের না পায়।
বোরখা পরা সে মেয়েটির জন্য খুব মায়া হচ্ছিল। না জানি কত লাখ লাখ সৌন্দর্য/প্রতিভা/মেধাবীদের মৌলবাদীরা বিকশিত হতে দিচ্ছেনা। গলা টিপে তাদের স্বপ্ন গুলোকে হত্যা করছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



