somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুরা ইউনুস (আয়াত ৬৮-৭০) : মারঈয়ামপূত্র ইশা আ: কেবল-ই আল্লাহর রাসুল ! আল্লাহ মহান ও পবিত্র !

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ১১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৬৮) লোকেরা বলে, আল্লাহ কাউকে পুত্র বানিয়েছেন৷ *৬৬ সুবহানাল্লাহ -তিনি মহান-পবিত্র! *৬৭ তিনি তো অভাবমুক্ত৷ আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তার মালিকানাধীন৷ *৬৮ একথার সপক্ষে তোমাদের কাছে কি প্রমাণ আছে? তোমরা কি আল্লাহর সপক্ষে এমন সব কথা বলো যা তোমাদের জানা নেই?
_____________________________________

*৬৬ . ওপরের আয়াতগুলোতে মানুষের জাহেলী ধ্যান-ধারণা ও মূর্খতার সমালোচনা করা হয়েছিল৷ সেখানে বলা হয়েছিল , তোমরা নিজেদের ধর্মের ভিত রাখো প্রত্যয় মিশ্রিত জ্ঞানের পরিবর্তে আন্দাজ ও অনুমানের ওপর৷ তারপর যে ধর্মের অনুসারী হয়ে তোমরা এগিয়ে যাও তার পেছনে কোন যুক্তি প্রমাণ আছে কি না, কোন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এ মর্মে অনুসন্ধান করার কোন চেষ্টাই করো না৷ এখন এ প্রসংগে খৃষ্টান ও অন্যান্য কতিপয় ধর্মাবলম্বীদের এ অজ্ঞতার সমালোচনা এ বলে করা হয়েছে যে, তারা নিছক আন্দাজ -অনুমানের ভিত্তিতে আল্লাহর পুত্র বানিয়ে নিয়েছে৷
_____________________________________

*৬৭ . সুবহানাল্লাহ শব্দটি কখনো বিস্ময় প্রকাশ করার জন্য বলা হয় আবার কখনো এর আসল অর্থেও ব্যবহৃদ হয়৷ অর্থাৎ আল্লাহ সকল দোষ-ত্রুটি মুক্ত৷ এখানে এ শব্দটি থেকে এ উভয় অর্থই প্রকাশ হচ্ছে৷ লোকেরা যে কথা বলছে তার ওপর একদিকে বিস্ময় প্রকাশ করাও যেমন উদ্দেশ্য, তেমনি অন্যদিকে এ মর্মে তাদের জবাব দেয়াও উদ্দেশ্য যে, আল্লাহ তো ত্রুটিমুক্ত, কাজেই তার সন্তান আছে একথা বলা কেমন করে সঠিক হতে পারে!
_____________________________________

*৬৮ . এখানে তাদের এ বক্তব্যের প্রতিবাদ তিনটি কথা বলা হয়েছে৷ এক, আল্লাহ ত্রুটিমুক্ত৷ দুই, তার কোন অভাব নেই, তিনি কারোর মুখাপেক্ষী নন৷ তিন, আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত বস্তুই তার মালিকানাধীন সামান্য একটু ব্যাখ্যা করলে এ সংক্ষিপ্ত জবাবটি সহজেই অনুধাবন করা যেতে পারেঃ

পুত্র দুই রকমের হতে পারে৷ ঔরসজাত অথবা পালিত৷ তারা যদি কাউকে ঔরসজাত অর্থে আল্লাহর পুত্র গণ্য করে তাহলে এর মানে হবে যে, তারা আল্লাহকে এমন এক জীবের মত মনে করে, যে স্বভাব -প্রকৃতির দিক দিয়ে মরণশীল এবং যার অস্তিত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য তার কোন স্বজাতি থাকতে হবে আবার এ স্বজাতি থেকে তার একজন স্ত্রী হতে হবে এবং তাদের দুজনের যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে তার সন্তান উৎপন্ন হবে৷ এ সন্তান তার প্রজাতীয় সত্তা এবং তার কাজ টিকিয়ে রাখবে৷ এ ছাড়া তার অস্তিত্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা হতে পারে না৷ আর যদি কাউকে দত্তক অর্থে আল্লাহর পুত্র গণ্য করে তাহলে এর দুটি অর্থ হবে৷ এক, তারা আল্লাহকে এমন এক মানুষের মতো মনে করে, যে নিসন্তান হবাব কারণে নিজের উত্তারাধিকারী করার এবং সন্তানহীনতার দরুণ তার যে ক্ষতি হচ্ছে নামমাত্র হলেও তার কিছুটা প্রতিকার করার উদ্দেশ্য নিজের প্রজাতির কোন একজনকে সন্তান হিসেবে গ্রহণ করে ৷ দুই, তারা মনে করে আল্লাহ ও মানবিক আবেগের অধিকারী৷ এ কারণে নিজের অসংখ্য বান্দাদের মধ্য থেকে কোন একজনের প্রতি তার স্নেহ ভালোবাসা এমন পর্যায়ে পৌছে গেছে যে, তাকে নিজের পুত্র হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছেন৷

এ তিনটি অবস্থার যে কোনটিই সঠিক হোক না কেন, সর্বাবস্থায়ই এ বিশ্বাসের মৌল তত্ত্বের মধ্যে আল্লাহর প্রতি আরোপিত হবে বহু দোষ-ত্রুটি ,দুর্বলতা ও অভাব ৷ এ কারণে প্রথমে বাক্যাংশে বলা হয়েছে তোমরা আল্লাহর ওপর যেসব দোষ-ত্রুটি ও দুর্বলতা আরোপ করছো সেসব থেকে তিনি মুক্ত৷ দ্বিতীয় বাক্যাংশে বলা হয়েছে , তিনি এমন ধরনের অভাব থেকেও মুক্ত যার কারণে মরণশীল মানুষেদের সন্তানদের দত্তক নেবার প্রয়োজন হয়৷ তৃতীয় বাকাংশে পরিষ্কার বলে দেয়া হয়েছে যে পৃথিবীতে ও আকাশে সবাই আল্লাহর বান্দা ও তার দাস৷ তাদের কারোর সাথে আল্লাহর এমন কোন বিশেষ বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই যার ফলে সবাইকে বাদ দিয়ে তিনি তাকেই নিজের পুত্র বা একমাত্র পুত্র অথবা উত্তরাধিকারী মানোনীতি করবেন৷ বান্দার গুণের কারণে অবশ্যি আল্লাহ একজনের তুলনায় আর একজনকে বেশী ভালোবাসেন৷ কিন্তু এ ভালবাসার অর্থ এ নয় যে, কোন বান্দাকে বন্দেগী পর্যায় থেকে উঠেয়ে নিয়ে আল্লাহর সার্বভৌম ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের অংশীদার করার পর্যায়ে উন্নীত করবেন৷ বড়জোর এ ভালোবাসার দাবী ততটুকুই হতে পারে যা এর আগের একটি আয়াত বলা হয়েছে৷ সেখনে বলা হয়েছেঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়ার নীতি অবলম্বন করেছে তাদের কোন ভয় ও মর্মযাতনা নেই৷ দুনিয়া ও আখেরাত উভয় স্থানেই তাদের জন্য আছে শুধু সুসংবাদ৷
.
_____________________________________

৬৯) হে মুহাম্মাদ ! বলো, যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে তারা কখনো সফলকাম হতে পারে না৷

.
_____________________________________

৭০) দুনিয়ার দুদিনের জীবন ভোগ করে নাও, তারপর আমার দিকে তাদের ফিরে আসতে হবে, তখন তারা যে কুফরী করছে তার প্রতিফল স্বরূপ তাদেরকে কঠোর শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করাবো৷

Click This Link

মায়েদা: ৭৫

মারয়াম পুত্র মসীহ্ তো একজন রসূল ছাড়া আর কিছুই ছিল না? তার পূর্বেও আরো অনেক রসূল অতিক্রান্ত হয়েছিল। তার মা ছিল একজন সত্যনিষ্ঠ মহিলা। তারা দু’জনই খাবার খেতো। দেখো কিভাবে তাদের সামনে সত্যের নিদর্শনগুলো সুস্পষ্ট করি। তারপর দেখো তারা কিভাবে উল্টো দিকে ফিরে যাচ্ছে।১০০


১০০) এখানে মাত্র কয়েকটি শব্দের মাধ্যমে ঈসার ‘আল্লাহ’ হওয়া সম্পর্কিত খৃস্টীয় আকীদার এমন সুস্পষ্ট প্রতিবাদ করা হয়েছে যে, এর চাইতে ভাল ও দ্ব্যর্থহীনভাবে আর কোন প্রতিবাদ করা সম্ভবপর নয়। হযরত ঈসা মসীহ্ সম্পর্কে যদি কেউ জানতে চায় যে, তিনি আসলে কি ছিলেন তাহলে এ আলামতগুলো থেকে সম্পূর্ণ সন্দেহাতীভাবে সে জানতে পারবে যে, তিনি নিছক একজন মানুষ ছিলেন। মোট কথা, যার জন্ম এক মহিলার গর্ভে, যার একটি বংশ তালিকা আছে, যিনি মানবিক দেহের অধিকারী ছিলেন, যিনি এমন সব সীমারেখা ও নিয়ম-কানুনের চার দেয়ালে আবদ্ধ এবং এমন সব গুণাবলী সমন্বিত, যা একমাত্র মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট। যিনি ঘুমাতেন, খেতেন, ঠাণ্ডা-গরম অনুভব করতেন, এমনকি যাঁকে শয়তানের মাধ্যমে পরীক্ষার মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছিল, তাঁর সম্পর্কে কোন বিবেকবান ব্যক্তি একথা কল্পনাই করতে পারেন না যে, তিনি নিজে আল্লাহ বা আল্লাহর কাজে তাঁর সাথে শরীক ও তাঁর সমকক্ষ। তাছাড়া খৃস্টানরা নিজেদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলোতে হযরত মসীহ আলাইহিস সালামের জীবনকে সুস্পষ্টভাবে একটি মানুষের জীবন হিসেবে পেয়েছে। এরপরও তারা তাঁকে আল্লাহর গুণাবলী সমন্বিত পূজনীয় সত্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য জোর দিয়ে যাচ্ছে। এটাকে মানব মনের বিভ্রান্তি ও গোমরাহী প্রীতির এক অদ্ভুত প্রবণতা ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে? আসলে যে ঈসা মসীহ আলাইহিস সালামের আবির্ভাব বাস্তবে ঘটেছিল সে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব ঈসা মসীহকে তারা মানে না। বরং তারা নিজেদের মনোজগতে ঈসার এক উদ্ভট কাল্পনিক ভাবমূর্তি নির্মাণ করে তাকেই আল্লাহর স্থানে বসিয়ে দিয়েছে।

Click This Link
.
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×