somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্প: গায়ে হলুদ এবং অজানা চেনা যুবক।

২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ তমার হলুদ সন্ধ্যা লিখা একটা ককসিট লাভ আকারে ঝুলানো। গায়ের হলুদের অনুষ্ঠান, প্রচণ্ড শব্দে গান বাজছে। মুরুব্বী, শিশু,যুবক- যুবতি সহ অনেক মানুষ উপস্থিত। যুবকরা সবাই এক কালার হলুদ পাঞ্জাবী আর যুবতীরা সবাই হলুদ শাড়ী পরেছে। তমার খালাতো বোন জুই ও তার বোনের বিয়ের জন্য বেড়াতে এসেছে।কিছু ছেলে পটানোর চেষ্টা করছিল তাকে, কেউ কেউ মোবাইল নাম্বার চাইল আবার কেউ কেউ নাম্বার ছোট ছোট কাগজে করে নাম্বার লিখে নিয়ে এসেছে।এসব কিছু সব সে অনেক উপভোগ করছে। কেউ কেউ তলে তলে নাম্বার আদান করছে।এসব থেকে তার মনোযোগ চলে গেল অন্য দিকে,সে অনেকক্ষন ধরে লক্ষ্য করছে একটা ছেলে এক কোনায় বসে একদৃষ্টিতে তমার দিকে তাকিয়ে আছে,একটু আগে যেভাবে দেখেছিল এখন ও একই ভাবে তাকিয়ে আছে।চোখের পলক একবার ও ফেলে নি। সে ও হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে আছে,বাইরের লোক হওয়ার কথা না,কিন্তু সে এভাবে বসে আছে কেন? উচ্চশব্দে কোথাও গান বাজলে এমনিতেই গানের তালে তালে পা মাথা নড়ে কিন্তু তাকে দেখা যাচ্ছে এক চুল নড়ছে না।তমা একটা শরবতের গ্লাস নিয়ে পরিচিত হতে গেল।

:- হাই।

-হ্যালো,( নিরাসক্ত গলায়)

:-আমি জুই,তমা আপুর খালতো বোন।আপনি?

-আমি কে আপনার না জানলে ও চলবে।

:- বিরক্ত হচ্ছেন কেন? আপনি কি তমা আপুর বন্ধু?

-হ্যা, শুধু বন্ধু না বয়ফ্রেন্ড ছিলাম।

:-বয়ফ্রেন্ড ছিলেন!!! বয়ফ্রেন্ড হয়ে গালফ্রেন্ড এর গায়ে হলুদে? আপনি গিনিজ বুকে নাম লেখাবেন দেখছি। জুস খাবেন?

- থ্যাংকস, আমি জুস খাবো না।

:-প্লিজ, নিন না। আপনি বোধহয় আসার পর থেকেই কিছু খাননি।

- আমি কিছু খাই না।

:-'কিছু খান না, মানে?'

- মানে কিছুই খাই না। হাওয়া খেয়ে বাঁচি। হাহাহা...

------------------------------------

জুই বুঝতে পারলো বেচারার গালফ্রেন্ড এর বিয়ে তাই হইতো মন খারাপ। কিন্তু নিজের গালফ্রেন্ড এর গায়ে হলুদে ও যে কেউ আসে এটা সে সিনেমাতে হোক আর বাস্তবেই হোক প্রথম দেখেছে। তারা কি কোন বদ মতলব আছে? তমা আপু কে এখান থেকে পালিয়ে নিয়ে যাবে।তার কি এ বিষয়টা সবাইকে গিয়ে বলা উচিত? এখন সবাই অনুষ্ঠানে ব্যস্ত, বিরক্ত করার দরকার নেই।সে কি ছেলেটাকে কথায় ব্যাস্ত রাখবে?

-: আপনার নাম টা তো বললেন না!

- আমার নাম রাকিব,রাকিব হাসান।প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তাম।

-: পড়তেন মানে? এখন কি লেখাপড়া ছেড়ে দিসেন? আচ্ছা থাক এসব কথা পড়ে বলেন, আপনার আর তমা আপুর প্রেম নিয়ে কিছু বলুন।

- এসব এখন বলে আর কি হবে!!তমা আমাকে কথা দিয়েছিল আমার সাথে সারাজীবন থাকবে।দুজনে মিলে মধ্যবিত্ত পরিবারের মতো সারাজীবন সংসার করব। কিন্তু সে তার কথা রাখে নি , সে আরেকজন কে বিয়ে করছে। আরেকজন কি বলব সে তার চামড়া টাকার কাছে বিক্রি করছে।

-:আপনি এখনো তাকে ভালবাসেন। আপনার জন্য আমার কষ্ট হচ্ছে।


-----------------------------------
ডিনারের জন্য বুফের আয়োজন করা হয়েছে। সবাই যার যার মতো নিচ্ছে, খাচ্ছে।জুই য়ের ছেলেটার প্রতি একটা মায়া জন্মেছে।ছেলেটা এখনো সেই জায়গায় বসে আছে,আগের মতো। মনে হয় কিছু খায় নি এখনো।জুই কিছু খাবার প্লেটে করে রাকিবের জন্য নিয়ে গেল।

-: আপনার জন্য।

- আমার জন্য? আমি কি আপনাকে বলেছি? আপনাকে বলেছি না আমি কিছু খায় না।

-: কখনই কিছু খান না? তাহলে বেচে আছেন কি করে?

- কে বলল আমি বেচে আছি।

-: জুই য়ের মনে হলো প্রচণ্ড হতাশায় মনে হয় সে এসব আজগবি কথা বলছে ছেলেটি।সে মনে মনে চিন্তা করছে তমা আপুকে কথা গুলো জানানো উচিত।

------------------------------

জুই দেখলো লোকজনের আনাগোনা হলুদের স্টেজ থেকে কমেছে, অনুষ্ঠান মনে হয় শেষ । তমার রুমে জুই ডুকলো। কেউ নেই কথাগুলো এখনই বলা উচিৎ তার


-:আপু তুমি কি এই বিয়েতে খুশি? নাকি পরিবারের চাপে করতেছো?

- ;তুই হঠাত এই কথা বলতেছিস?

- : রাকিব ভাই, তোমার বয়ফ্রেন্ড এসেছিল।বয়ফ্রেন্ড বলছি কেন,সে তো এখন এক্স হয়ে পড়েছে।

- কি বলছিস এসব, পাগল হয়ে গেলি নাকি?

- পাগল হব কেন? পাগল তো তুমি হয়েছো। যাকে ভালবেসেছো তাকে বিয়ে না করে, চামড়া বিক্রি করতেছো।

- তুই ভুল বুঝছিস। তুই যার কথা বলছিস সে ৬ মাস আগে রোড এক্সিডেন্ট এ মারা গিয়েছিল। যার কারনে আমি ২ মাস মেন্টাল হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম


-তাহলে আমি কার সাথে এতক্ষন কথা বলেছিলাম!!!!!


তমা আর কোন কথা না শুনে দৌড়ে বাহিরে গিয়ে দেখলো সে জায়গায় কেউ নেই।তমা তাকে একটা ছবি দেখিয়ে বলল এ ছেলে কিনা? রাত হলে ছেলেটার চেহেরা সে স্পষ্ট দেখেছিল, হ্যা এই সে ছেলে।তমার চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেল।সে কি বিয়েটা করবে?তা নিয়ে দ্বিধায় আছে। আর জুই য়ের চোখ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে ঐ চেয়ারটার দিকে।
---- ----- - -; সমাপ্ত------------------

ব্লগার ভাই বোনেরা আপনারা অবশ্যই ভালো বা খারাপ মন্তব্য করবেন প্লিজ।আপনারা মন্তব্য না করলে নতুন ব্লগার রা লিখতে উৎসাহ পাবে না।

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×