বিখ্যাত চিত্রপরিচালক এবং বাঙলাদেশের চলচিত্র আন্দোলনের একজন প্রথম সারির ব্যক্তি তারেক মাসুদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রস্তাব জ্ঞাপন করছি।তারেক মাসুদ তার বাল্যকালের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছিলেন মাদ্রাসায়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার মাদ্রাসা শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধের পর তিনি সাধারণ শিক্ষার জগতে প্রবেশ করেন এবং একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তিনি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন এবং দেশে-বিদেশে চলচ্চিত্র বিষয়ক অসংখ্য কর্মশালা এবং কোর্সে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৮২ সালের শেষ দিকে তিনি জীবনের প্রথম ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এই ডকুমেন্টারিটি ছিল প্রখ্যাত বাংলাদেশী শিল্পী এস এম সুলতানের জীবনের উপর। এরপর থেকে তিনি বেশ কিছু ডকুমেন্টারি, এনিমেশন এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ২০০২ সালে তার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মাটির ময়না মুক্তি পায়। এই চলচ্চিত্রটি কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয় এবং দেশে-বিদেশে বিশেষ প্রশংসা অর্জন করে। বাংলাদেশের বিকল্প ধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সংগঠন শর্ট ফিল্ম ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তিনি। ১৯৮৮ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের কো-অরডিনেটর হিসেবে কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে যোগ দেয়ার পাশাপাশি কয়েকটি সাময়িকী ও পত্রিকায় চলচ্চিত্র বিষয়ে লেখালেখি করতেন।
তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ একজন মার্কিন নাগরিক। ক্যাথরিন এবং তারেক মিলে ঢাকায় একটি চলচ্চিত্রা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন যার নাম অডিওভিশন। চলচ্চিত্র নির্মাণ ছাড়া তারেক মাসুদের আগ্রহের বিষয় ছিল লোক সঙ্গীত এবং লোক ধারা।
বিকল্প ধারার এই চলচিত্রকার ২০১১ সালের ১৩ই আগষ্ট ঢাকার অদূরে মানিকগঞ্জ জেলায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে ঘিওর নামক এলাকায় মর্মান্তিক এক সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন। কাগজের ফুল নামের চলচিত্রের শুটিং স্পট দেখার জন্য মানিকগঞ্জের আছামতি নদীর তীরে কাছে তারা গিয়েছিলেন। একই দূঘর্টনায় তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ গুরুত্ব আহত হন(Click This Link)।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই আগস্ট, ২০১১ দুপুর ২:৪২