প্রতীকী হলেও অন্ততঃ একজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার আমি এই জন্মে দেখে যেতে চাই। একাত্তর পরবর্তী আমাদের এই স্পর্ধিত প্রজন্মই পারবে আপোষকামী সরকারের চোখ খুলে দিতে, পারবে ঘাতক দালালদের গলায় দড়ি পরাতে - পুনর্বার।
আজ এখানে দাড়িয়ে এই রক্ত গোধূলিতে
অভিশাপ দিচ্ছি।
আমাদের বুকের ভেতর যারা ভয়ানক কৃষ্ণপক্ষ
দিয়েছিলো সেঁটে,
মগজের কোষে কোষে যারা
পুঁতেছিলো আমাদেরই আপনজনের লাশ
দগ্ধ, রক্তাপ্লুত,
যারা গনহত্যা
করেছে শহরে গ্রামে টিলায় নদীতে ক্ষেত ও খামারে
আমি অভিশাপ দিচ্ছি নেকড়ের চেয়েও অধিক
পশু সেই সব পশুদের।
ফায়ারিং স্কোয়াডে ওদের
সারিবদ্ধ দাঁড়
করিয়ে নিমিষে ঝা ঝা বুলেটের বৃষ্টি
ঝরালেই সব চুকে বুকে যাবে তা আমি মানি না।
হত্যাকে উতসব ভেবে যারা পার্কে মাঠে
ক্যাম্পাসে বাজারে
বিষাক্ত গ্যাসের মতো মৃত্যুর বীভৎস গন্ধ দিয়েছে ছড়িয়ে,
আমি তো তাদের জন্য অমন সহজ মৃত্যু করি না
কামনা।
আমাকে করেছে বাধ্য যারা
আমার জনক জননীর রক্তে পা ডুবিয়ে দ্রুত
সিড়ি ভেঙ্গে যেতে
ভাসতে নদীতে আর বনবাদাড়ে শয্যা পেতে নিতে
অভিশাপ দিচ্ছি আজ সেই খানে দজ্জালদের।
- অভিশাপ দিচ্ছি
শামসুর রাহমান
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১০:৩৮