সকাল ধড়মড় করে উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হা হয়ে আছি,
ঘড়িতে ৭.৫৫ বাজে!!
তিন তিনটা এলার্ম দিয়ে রেখেছিলাম, কাজ হয়নি।
সকাল ৮.টায় কোচিং এ ক্লাশ নিতে হবে, তাও শান্তিনগর ব্রান্চে।
আর এখন ৭.৫৫ মিনিটে আমি বারিধারায় আমের খাটের উপ্রে!!!
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি কোচিং এর ডিরেক্টর সাহেব ফোন দিয়েছেন।
বললাম, "ভাই, আজ তো উদ্বোধনী দিন, আপনাদের উদ্বোধনী বক্তব্য কতক্ষন চলবে?"
বলল '৮.৩০ এর আগে আসলেই হবে"।
এক লাফে খাট থেকে বেসিন এর সামনে গিয়ে মনে হয় পেস্ট না লাগিয়েই ব্রাশ করে ৫ মিনিটের মধ্যে রেডি।
দৌড়ে বসুন্ধরা গেট আসলাম সিএনজির খোজে,
ওমা দেখি, বসুন্ধরা গেইট থেকে বাড্ডার দিকে যতদূর চোখ যায় গাড়ি আর গাড়ি।
ঘড়িতে তখন ৮.০৫!
মূহুর্তের মধ্যে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন, এই জ্যামে সিএনজি হোক আর টেক্সি হোক, দুই ঘন্টার আগে শান্তিনগর যাওয়া সম্ভব না।
আবার দৌড় দিলাম বাসায়,
ফরমাল ড্রেসের নিকুচি করি, বাসায় ঢুকেই ফরমাল ড্রেসটা চেন্জ করে টি-শার্ট পরে সাইকেল নিয়ে বের হলাম।
কোচিংএ ফোন করে বললাম, আপনারা ৮.৪০ পর্যন্ত বক্তব্য চালালে ভাল হয়।
রাস্তায় নেমেই বিসমিল্লাহ পড়ে রং সাইড ফাকা পেয়ে দিলাম টান। ১৫ মিনিটে রামপুরা পৌছেই একটু সাহস পেলাম।
কিন্তু বিধি বাম।
টিভি সেন্টারের একটু সামনে বিশাল জ্যাম, একটা গাড়ি ও নড়ছেনা।
শুনলাম, শ্রমিকরা রাস্তা আটকিয়ে রেখেছে। এবার ফুটপাথ মিশন।
চালিয়ে, হাটিয়ে, মাথার উপর নিয়ে একদম সামনে গিয়ে দেখি শ্রমিকরা কাউকে যেতে দিচ্ছেনা ঐদিকে, পুলিশও কিছু বলছেনা।
সাইকেল হাটিয়েই রওনা দিলাম, ওদের ভেতর দিয়ে দিয়েই হাজিপাড়ার কাছে চলে আসলাম। ঘামে আমার এমন অবস্হা হয়ে ছিল, আমাকেও বোধয় ওরা স্বজাতি মনে করে আটকালো না।
হাজিপাড়ার পর বামদিকে রাস্তা পুরা ফাকা।
আবার ও ৩ বাই ৭ এ টান দিলাম।
একটানে যখন আমি শান্তিনগর মোড়ে, তখন ঘড়ির কাটায় ৮.৪২.
অফিসে ডুকে ফ্রেস হয়ে ড্রেসটা চেন্জ করে ফুল বাবু হয়ে ঢুকে গেলাম লেকচার নিতে।
তৃপ্তি ভরে ক্লাশ নিলাম, হাসাইতে হাসাইতে পেটে খিল ধরিয়ে ফেলেছি স্টুডেন্টদের।
ক্লাশ টা নিয়ে বের হয়ে ভাবলাম আজকে পঙ্ক্ষীরাজ টা না থাকলে হয়ত আমি এতক্ষনে বাসে বা সিএনজিতে থাকতাম।
নিচে এসে আমার পঙ্ক্ষীরাজটাকে স্যালুট দিয়ে ঢুকে গেলাম পরের লেকচার নিতে...
লাভ ইউ মাই পঙ্ক্ষীরাজ...