মাঝে মাঝে বিখ্যাত ব্যক্তিদের স্মৃতিচারন পত্রিকায় বা সুসদৃশ মলাটের কঠিন নিরাপত্তায় প্রকাশ পায়। তাই বলে ইতিহাসের মনে না রাখা সভ্যতা নির্মানের কারিগর যে তুচ্ছ শ্রমিক সে ও দু'দন্ড বসে স্মৃতিচারন করে না তা নয়। সে ঐ সভ্যতার স্থপতির মত এত পাঠক এবং টাকা দিয়ে কেনা শ্রোতা পায় না ঠকই কিন্তু তার স্ত্রী, ছেলে পুলেরা হয় তার নিষ্ঠাবান শ্রোতা। কিন্তু আমি যে ঐ সভ্যতার স্থপতিও নই, নই সে গুরুদায়িত্ব পালনকারী কর্মী। আমার স্মৃতি যে শুধুই বিস্মৃতি! কড়াই থেকে উনুনে লাফ দেয়ার মত বর্তমান থেকে আমি অতীতে যেতে চাই না।
সবারই বাল্যকালের কথা মনে পড়ে। দুঃখিত আমারটা স্ক্র্যাচ পড়া ডিভিডির মত অল্প কিছু ডাটাই রিকভার করার যোগ্য। তার মধ্যে যতটুকু মনে পড়ে- তখন সবার চিন্তা চেতনা ছিল ক্লিয়ারলি এহেড(রবির ভুল ভাষান্তরের মত এক ধাপ এগিয়ে)। আমার দুবাইওয়ালাদের মত স্ট্রং ফিডব্যাক ছিল না। তাই বেশ কয়েকধাপ পিছনেই ছিলাম।
হায়! হয়তো তেমনটাই আছি। আমার সাথে আমি। মহাকাশের কোথাও কোন অঘটন ঘটলে মানুষের যেমন ভাবান্তর থাকে না। তেমনই আমারো আমার চারপাশ নিয়ে ভাবান্তর নেই। কেমন যেন জড় পদার্থ! শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকা। তবে তাতে হতাশা নেই। কারন আমি যে জানি এবং এটা দেখছি ঘটছে! এটা কি উর্ধে পতিত হওয়া নাকি নিম্নে উচ্চারোহন বলতে পারব না তবে এ যে আমার জন্য প্ররনাদায়ক নয় তা ঠিকই বুঝতে পারছি।
সবার জীবনটা(life কে তো জীবনই বলে নাকি?) দম দেয়া পুতুলের মত। এই বলে অনেকে হা হুতাশ করে। আমি বলি হ্যা আমারটাও তবে স্প্রিংটার ইলাস্টিসিটি এক তৃতীয়াংশ কমে গেছে! মাঝে মাঝে দমটা কিছুদূর গিয়ে আটকে যায়।
বলতে পারেন চারপাশে যেমন খারাপ অবস্থা এতে তো আর মানুষের মত জীবন যাপন করা যায় না। এখন যেভাবে আমরা আছি তাকে তেলাপোকার মতই বেঁচে থাকা বলে... ... না ভাই, আমার ক্ষেত্রে উৎকৃষ্ট উপমা হতে পারে অন্যকিছু। সেটা হল 'ব্যাঙ'! তেলাপোকারাও তো ইচ্ছামত ছোটাছুটি করে। তারাও কারো না কারো সাথে থাকে। আর ব্যাঙ? ঝিম মেরে বসে থাকা যেখানে ঘাড়বিহীন অবস্থায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে চারপাশটা ভালভাবে দেখাও দুষ্কর। তার উপর আবার সাপ খোপের ভয়। শুনেছি মানুষ নাকি এখন খাদ্যাভাবে ব্যাঙের দিকে হাত বাড়িয়েছে! হ্যা অবাস্তবতাটাই যখন হয়ে ওঠে বাস্তব, কারো জন্য তা চরম আনন্দের হলেও কারো ক্ষেত্রে তা অপরিহার্য অক্সিজেন বেহিসেবে নষ্ট করার সামিল।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হইতে দু পা ফেলিয়া
একটি ধানের শীষের উপর, একটি শিশির বিন্দু।
শিশির বিন্দুর সৌন্দর্য বা শাহজাহানের তাজমহলের অপরুপ। আমি না হয় কোনটাই নাই দেখলাম। কাস্টমাইজ করা হিউম্যান হলার যেভাবে ছুটে চলে তেমনই তীব্র গতিতে ছুটে চলা আমার জীর্ন সি পি ইউ এর ধুকে ধুকে জ্বলা LED-র আলো দেখেই না হয় দিনাতিপাত করব...
এতক্ষন যা পড়লেন, ভাবতে পারেন প্রচন্ড হতাশা থেকেই লিখছি। কিন্তু আমি একে ভিন্ন ভাবেই দেখতে চাই। ঠিক যেন এক গ্লাস পানিতে ছেড়ে দেয়া কিছু চিনির দানা। উপরেও নয় তলানিতেও নয় পানির পুরো অস্তিত্ব জুড়েই যেন চিনির অবস্থান, পানি তাকে যতই অগ্রাহ্য করুক না কেন। ঠিক যেমন আমি মিশে আছি আমার চার পাশে...
বড় হবার সিঁড়ি সবাই খোজে। আফসোস আমি সিঁড়ির ধাপে বসে ভাবছি, আর কত?
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৫১