ঢাকা থিকা (অফিসের পরে) আইমু ময়মনসিং, রেডি হইতে গিয়া অফিসে যাইতে দেরি হয়া গেল। দৌড়াইতে দৌড়াইতে আইলাম বড় রাস্তায়। টাকা তুলার দরকার আছিল, সময়ের অভাবে পারলাম না। খাড়া একটা টেম্পুতে উইঠা দুয়া করতে থাকলাম যাতে তাড়াতাড়ি ছাড়ে। ছাড়ল মুটামুটি তাড়াতাড়িই, নামার পরে মুবাইলে দেখলাম ৩ মিনিট আছে। দৌড়ের স্পিডে হাইটা অফিসে পৌছলাম এক্কেরে শেষ টাইমে। আর একটু পরেই শোকজ মার্কা দরখাস্ত দেয়া লাগত।
যাই হোক, অফিস থিকা বাইর হইলাম তখন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা। হাইটা আইলাম খামারবাড়ি মোড়ে। খুব খারাপ অবস্থা। মহাখালী বাস টার্মিনালে যাওয়ার জন্য জায়গাটা খুব বেগতিক। সিএনজি যাবেনা বেশি দূর না বইলা, দুইটারে জিজ্ঞেস কইরাই ক্ষ্যান্ত দিলাম। রিকশা যাবেনা ভিআইপি রাস্তার জন্য। বাস আছে তরঙ্গ, ২৭ নাম্বার আর আরেকটা টিকেটের বাস (আজিম্পুর থিকা উত্তরা যায় নামটা মনে আসতেছেনা)। সমস্যা হইল তরঙ্গ কাউন্টার ফার্মগেটের কাছে আর টিকেট কাইটাও ঝুইলা ঝুইলা যাইতে হয়। ২৭ নাম্বার আবার ফ্লাইওভারের উপরে দিয়া যায়, মাইল দুয়েক হাটতে হইব বাস স্ট্যান্ডে যাইতে। কি করি, কি করি ...
চিন্তা ভাবনা কইরা হাটা দিলাম ফার্মগেটের দিকে। কান্ধের ব্যাগে আমার আদিকালের ল্যাপ্টপ। ব্যাগ একবার এই কান্ধে আর একবার ওই কান্ধে দিয়া আইলাম ফার্মগেট পুলিশ বক্সের সামনে, এখন তিন নাম্বার বা ছয় নাম্বার একটা পাইলেই হয়। মিনিট দশেক খাড়ানের পরে পাইলাম একটা তিন নাম্বার, আয়া পড়লাম মহাখালি রেলগেটে। নাইমা আবার হাটা দিলাম বাস স্ট্যান্ডের দিকে। আবারো ব্যাগ একবার এই কান্ধে আর একবার ওই কান্ধে। একেক্টা বাস যায় আমি আশা কইরা দেখি, এনা বা সৌখিন হইলে যদি হাটাটা মাফ পাই। কিন্তু না, উইনার যায়, টাঙ্গাইলের বাস যায় কিন্তু এনা/সৌখিন দেখি না।
ময়মনসিংহের গেইটলক গুলার কাহিনি বেশ মজার। একটা থাকে ভাল আর আরেকটা ছ্যাচড়া। আগে সৌখিন ভাল ছিল, নিরাপদ ছিল ছ্যাচড়া আর এখন এনা এসে ভাল পজিশন নিছে, সৌখিন হইছে ছ্যাচড়া। নিরাপদ পুরাই গায়েব। ভাল সার্ভিসটা রাস্তা থেকে লোক তুলবেনা আর খারাপটা লোক কম থাকলে ছাড়বেই না। সমীকরণের ফলাফল উভয়দিকেই টার্মিনাল পর্যন্ত যাইতে হইব।
গেলাম টার্মিনালে, এনা পাইলাম, গাড়ি ছাড়লোও তাড়াতাড়ি। রাতের বেলা বাস জার্নির মজা হলো ঘুমাইতে ঘুমাইতে যাওয়া যায়, কিন্তু এনা আবার ভিডিও সার্ভিস। গাড়ি কাকলী পার হওয়ার আগেই শুরু হইয়া গেল পূর্নদৈর্ঘ্য (কলকাতার) বাংলা ছায়াছবি। প্রথমে কিছুক্ষন কাটানোর চেষ্টা করলাম, মুবাইলে মেইল দেইখা, অপেরা মিনি খুইলা খোমাকিতাব, সামু আর ক্রিকইনফোর আর্টিকেল পইড়া আধা ঘন্টা কাটায়া দিলাম। কিন্তু মুবাইলে এত্ত ছুট্টু লেখা বেশিক্ষণ পড়া যায় না। শব্দের মধ্যেই কতক্ষন ঝিমাইলাম কিন্তু শেষমেষ আর পারলাম না। দেখা শুরু করলাম একশন, রোমান্স, ট্রাজেডি, কমেডি, ইত্যাদি ইত্যাদিতে ভরা টালিউডের ছিঃনেমা।
(মুভি রিভিউটা পরের একটা পুস্টে দেয়ার ইচ্ছা আছে, দুয়া রাইখেন)
শেষদিকে কাহিনির প্যাচে পইড়া চিন্তায় পড়ছিলাম যে সিনেমা শেষ হওয়ার আগেই কি বাস জার্নি শেষ হয় কিনা। কিন্তু না, সব হিসাব করা। সিনেমাও শেষ হইলো, দশ মিনিটের মধ্যে বাসও আইসা পড়ল। অফিস করার পরে রেস্ট না পাওয়ার কারনে জাম মাথা লয়া বাস থিকা নামলাম। রিকশা ভাড়া ১০/১২ টাকার জায়গায় ২৫ টাকা চায়। শেষে এক বুড়া রিকশাওয়ালা পাইলাম ১৫ টাকায় রাজি হইল। আস্তে আস্তে কইরা রিকশা আইতাছে, নতুন বাজার আইসা অন্যদিকে যাওয়া শুরু করল। জিগাইলাম কই যান? একটা বেক্কল মার্কা হাসি দিয়া কইল ওহহো ভুল হইয়া গেছে। কইয়া থাইমা গেল। বুঝলাম বেচারা বেমালুম ভুইলা গেছে। আবার মনে করায়া দিলাম আর রাস্তা দেখায়া দিলাম। সাড়ে এগারোটায় রিকশা বাসায় আইসা পৌছাইল।
বিঃদ্রঃ কি রকম হইছে কয়া গেলে ভাল হইত। উন্নতি করার চেষ্টা করতে পারতাম (অবশ্য আমি যে আইলসা ...)
পাঠক চাহিদা থাকলে মুভি রিভিউ পুস্ট দিবার ইচ্ছা আছে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




