বরাবর,
ফতোয়া বিভাগ,
জামিয়া গাফুরিয়া দারুসসুন্নাহ ইসলামপুর,
ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ।
বিষয়: রাগের মাথায় তালাক দেয়া প্রসঙ্গে।
আমি মোঃ নুরুল ইসলাম। গত ২৮/০৮/২০১৪ ইং বৃহ.বার আমি ঢাকা থেকে রাত ৯টার দিকে বাড়িতে আসি। আসার পরপরই আমার আম্মা আমার কাছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার স্ত্রীর বিরোদ্ধে অভিযোগ করতে থাকে এবং আমার স্ত্রীও এসব কথার পাল্টা জবাব দিতে থাকে।
এতে আমি রাগান্বিত হয়ে স্ত্রীকে চুপ থাকতে বলি। কিন্তু সে আমাকে মায়ের কথাগুলোও শুনতে দিচ্ছে না বরং চিল্লাচিল্লি করতে থাকে। এতে অমার প্রচন্ড রাগ উঠে যায় এবং কোন লাঠি না পেয়ে রুটি তৈরী করার বেলান দিয়েই তাকে মারতে যাই। সে খাটে মশারির ভেতর শুয়ে ছিল। আমি মশারি ছিড়ে ফেলি এবং তাকে প্রহার করি। পরে আমার ভাবি এসে ফিরায়।
আমি ক্লান্ত শরীর নিয়ে না খেয়েই ভীষণ রাগের অবস্থায় শুয়ে পড়ি। তারপরও সে বিভিন্ন কথা বলে চিল্লাচিল্লি করতে থাকে এবং আমি তাকে ছেড়ে দিতে বলে। এতে আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় ভীষণ রাগের মাথায় বলি-“ যা তোকে ছাইড়া দিলাম”।
এরপরও সে ভীষণ চিল্লাচিল্লি করে এবং বলে, এভাবে ছাড়লে হবে না, দশজন নিয়ে ছাড়তে হবে, আরও বিভিন্ন কথা বলতে থাকে। তারপর আমি আর আমার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। আমি সম্পূর্ণ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তখন আমি নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় বলি- “যা তরে ৩ তালাক”।
আমি আল্লাহর নামে কছম করে বলছি যে, একথাগুলো বলার সময় আমার কোনরুপ হুশ-জ্ঞান ছিল না। তখন আমি স্বজ্ঞানে কথা বলিনি।
অতএব, এখন আমি মাননীয় মুফতি সাহেব হুজুরের কাছে এ বিষয়ে শরীয়তের মাসআলা জানতে চাই।
নিবেদক
মুহা. নুরুল ইসলাম
তাং- ১৩/০৯/২০১৪ ইং
শরয়ী সমাধান
حامدا و مصليا و مسلما، اما بعد-
প্রশ্নের লিখিত বর্ণনা ও জনাব নুরুল ইসলামের কসমের দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, প্রচন্ড রাগের মাথায় নিয়ন্ত্রণহীন এবং হিতাহিত জ্ঞান শুন্য অবস্থায় নুরুল ইসলাম তাঁর স্ত্রীকে তালাক প্রদান করে। তাই ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী তাঁর এ তালাক গ্রহনযোগ্য নয়। অতএব তাঁর স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হয়নি। পুর্বের ন্যায় তাঁরা ঘর সংসার করতে পারবে।
প্রমাণাদী
১। আবুদাউদ শরীফ।
২।তিরমিযী শরীফ
৩। আউনুল মা'বুদ।
৪। মা'রেফাতুস সুনানি ওয়াল আছার লিল বাইহাকী।
৫। উমদাতুল ক্বারী।
৬।ফাতাওয়ায়ে শামী।
৭। হিদায়া।
৮। আশরাফুল ফাতাওয়া।