somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতটা পরিবর্তিত পৃথীবি

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকা শহর মেয়েদের জন্য একা বসবাসের জায়গা না । এই বোধদয় সচেতন সব অবিভাককেরই । একটু বেশি বোধ হয় মধ্যবিত্ত পরিবারের । কিন্তুু কেন ???
আশাহত সমালোচনা দেখা যায় ঢাকাবাসী মানুষদের কাছ থেকেও । তরুণ প্রজন্ম কেও হতাশ হতে যে দেখা যায়না তাও নয় ।
কথা বলে কিছুর উত্তর মিললেও অনেকটা ই অজানা । খুজেঁ বের করতে হবে কারণ । আর তার যথাযথ সমাধানও করতে হবে ।
প্রথম অভিযোগ :::::::::এখানে মেয়েরা যথেষ্ট নিরাপদ নয় ।

২০০৬ -২০০৭ শিক্ষাবর্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে (অপেক্ষারত ) একজন মেয়ে সে বছর যথেষ্ট যোগাযোগ রাখতে না পারায় তার ভাইভা কবে হয়েছে জানেনা । সে কারনে সে বছর তাকে মেধা তালিকা থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় । এখানেও একই পরিনতি । জেলার প্রায় শেষদিকে বাড়ি হওয়াতে সেখান থেকে যোগাযোগ ঘাটতি থাকায় কবে রেজিষ্ট্রেশন হয়েছে জানেনা । পরে এ ভর্তিও বাতিল ।

সিদ্ধান্ত হয় বিয়ে দেবে । কিন্তু মেয়েটি ইতিমধ্যে স্বপ্ন দেখে ফেলেছে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে । একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ হবে তার । সে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াবে । আদর্শ মেয়ে হয়ে পথ দেখাবে । কিন্তু একি হল তার । এসময় ভাল যোগ্য পাত্র পাওয়া যাচ্ছেনা । আর মেয়েটি টাকার থেকে শিক্ষা পছন্দ করে । তেমন পাত্র কোথায় যে মেয়েটিকে বুঝবে ? বিশ্ববিদ্যালয়ে না পড়বার অপরাধে অযোগ্য সে আজ ।

পরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটা কলেজ থেকে বিএসএস( পাস) কোর্সে ১৩ নম্বরের অভাবে সে ৭৬৭ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করে । যা তার প্রথম বছরের কমতি নম্বর । কারন তার পড়া ই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল প্রায় ।

কথা একটা ই বাইরের পৃথীবিটা ভালনা । তোমাকে একা কোথাও যেতে দেয়া হবেনা ।

এই ভালবাসা একসময় অথর্ব অপদার্থ করে দিতে পারে ।

পরে সে জেলা শহরে আসে পরিবারের সাথে স্নাতকোত্তর পড়ার প্রয়োজনে । এখানে এসে দৃষ্টি প্রসারিত করার একটু চেষ্টা আবার করে ।
এসময় সেশন জোটের সমস্যাকে ইতিবাচক সুযোগ হিসাবে কাজে লাগায় সে । স্নাতকত্তোর পড়ার পাশাপাশি
এখানে থেকে শিক্ষায় স্নাতক লাভ করে । এর পর যখন আবার শিক্ষায় স্নাতকত্তোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয় প্রথমে পরিবারের আপত্তি থাকলেও পরে সে ১ম মেধা তালিকায় সুযোগ পায় তখন কোন রকমে ভর্তিটা হতে পারে । কিন্তু পড়া টা শেষ হবেতো ?????????????

প্রশ্ন ঢাকা শহরের ব্যয় তার উপর কলেজটা ধানমন্ডি , ঢাকা যেখানে ব্যয় আরো বেশি । এবার আর পরিবার কে নিয়ে যাওয়া হয়না মেয়েটির । আবার মেসে কিংবা হলে রেখে ও পড়াতে নারাজ এ পরিবার । মেয়েটি তবু আশা ছাড়েনা ।

বাবা বলে দেন তুমি যেতে পারো পড়তে পরো এক শর্তে প্রতিদিন যাবে আবার ক্লাশ শেষ করে চলে আসবে । যেখানে প্রতিদিন যাতায়াতে প্রায় ১৫ ঘন্টা সময় ১৫০০ টাকা খরচ হয় । এক বছর এ পড়া পড়তে কত টাকা লাগতে পারে ???? আর এ দীর্ঘ জার্নির শর্তটাই বা মেয়েটি কিভাবে মেনে নেবে ?? সব রক্ত বিক্রয় করেও তো এতো টাকা পাওয়া যাবেনা । যেখানে পড়তে মাত্র ৪০০০ টাকা খরচ । শুধুমাত্র ঢাকা শহরের অনিরাপদ পরিবেশ / নিরাপত্তাহীনতার দায়ে মেয়েটির পড়া হবেনা ???????

অভিমানে গলাটা ভারী হয়ে আসে মেয়েটির । অশ্রুতে ভিজে দৃষ্টি অস্পষ্ট হয়ে আসে । মেয়েটি আপ্রাণ চেষ্টা করে এ অশ্রু যেন পরিবারের কেউ না দেখে । যদি বাবাকে কেউ বলে দেয় যে সে কাঁদছে হয়তো বাবা এ কান্না মোছাতে তার সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবে । হারাতে হতে পারে অনেক বড় কিছু । যা হয়তো অর্থমূল্যে ফেরতের অযোগ্যও হতে পারে । সব বাবারাই চান তার সন্তান অনেক বড় হোক অনেকটা পড়ুক । মেয়েটি জানে তার বাবা আরো একটু বেশি চান । বাবার কষ্ট হবে এটা ভেবে সব ভুলে যাবার চেষ্টা করে । তবু........।

কিন্তু এটা কি এমন জরুরী পড়া ????? কি পাবে তার বিনিময়ে ??? না পড়লে কি হয় ??????

এসব কিচ্ছু জানেনা মেয়েটি । শুধু জানে সুযোগ থাকলে চেষ্টা করতে হবে । এ পড়াটা শেষ করতে পারেলে তার অতীতের গ্লানি মুছতে হয়তো কিছু সাহায্য হবে ।
আবার অভিযোগ আছে পরে যদি কোন কাজে লাগে এ পড়া তখন সবাই বলবে তুই তো পড়লিনা । আমরা তো বলেছিলাম ই । মেয়েটির সব এলোমেলো হয়ে যায় যেন সে আর কিছুই ভাবতে পারছেনা ।

সত্যিই কি ভাবনা ছেড়ে দেবে ???????

সমাধান :::::::
১।ঢাকা শহরকে আরো নিরাপদ বাসযোগ্য শহর হিসাবে গড়ে হবে ।
এখানে পড়াশুনার জন্য শুধু যথষ্ট প্রতিষ্ঠান রাখলে হবেনা তাতে যেন মেয়েরা সম্ম্মানের পড়তে থাকতে পারে । নিরাপদে সব কাজ করতে পারে তা দেখতে হবে ।
বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছেলেরা ভাগ্য পরিবর্তনের যুদ্ধে এখানে আসছে । কোনরকমে থাকছে । তাদের মানবেতর জীবন হয়তো অর্জন দেয় কারো কারো আবার অনেকটা বেশি মূল্য দিতে হয় ।

২। অনেক আগে দেখেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রদের বিশেষ প্রশিক্ষন এর মাধ্যমে দক্ষ করা হচ্ছিল ।
অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের এভাবে কাজের ব্যবস্থা করা যেতে পারে বিভিন্ন উন্নয়নমুখী প্রকল্পের বাস্তবায়নের মাধ্যমে ।

৩। আর থাকার ব্যাপারে সরকারী উদ্যোগে বিশ্রাগার বিশেষ করে মেয়েদের জন্য ব্যবস্থা করার বিশেষ অনুরোধ ।
৪। এ টু আই একসেস এর মাধ্যমে এসব বিশ্রামাগারের ব্যাপারে তথ্য যেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ জানতে পারে সুফল নিতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে ।
না জানি কত কত মানুষ নিত্য ব্যথিত চিত্ত নিয়ে পিছিয়ে পড়ার অভিযোগে অভিযুক্ত এটুকুর অভাবে ।
৫ । বড় কিছু প্রতিষ্ঠানকে শহরের একটু বাইরে অথবা অন্য জেলা শহর গুলোতেও দিয়ে ভারসাম্য আনা যায় ।
এভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ এর মাধ্যমে আরো উন্নত সমৃদ্ধ নিরাপদ ভবিষ্যৎ পেতে পারি । যেখানে নারীরা পুরুষের সাথে বাহ্যিক প্রতিযোগিতায় নয় জ্ঞানে গুণে বিদ্যায় সর্বত্র পাশে থাকতে পারি । ।
৬ । তথ্য জনগণের দোরগড়ায় পৌঁছাতে বর্তমানে প্রচলিত প্রচেষ্টাকে আরো কাযর্করী করতে হবে । যেন মৌলিক বিষয়গুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় । যেন তা শুধু ব্যবসায়িক প্রয়োগে সীমাবদ্ধ না থাকে ।

২০০৬ সালে মেয়েটি পড়া ছাড়েনি ইতিবাচক পরিবর্তিত পৃথীবির আশায় । আমরা কতটা দিতে পেরেছি সেই পৃথীবি ??????? কতটা পরিবর্তন করতে পেরেছি ??????? পরিবর্তিত হতে পেরেছি ????? আজও কেন অভিভাবকগণ উচ্চিশিক্ষায় একনও এমনটাই ভাবছেন ????? এ লজ্জা থেকে মুক্তি পেতে হবে । আমরাই পারি আমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করতে । দৃষ্টি ভঙ্গি বদলে ফেলতে হবে ।

ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে অনেকগুলো সফলতা । তার ই ধারাবাহিকতায় আরো সফলতা আসবে বলে আশা রাখি ।

সুদিনের আশায় আবারো শুভ কামনা রইল ।

ছবির কৃতজ্ঞতায় :::::::: http://ttcdhaka.edu.bd/ এর ফোটো গ্যালারী

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×