যারা ১৯৭১ সালের হত্যাযজ্ঞের সাথে ২০১৭ সালের রোহিংগা গণহত্যার তুলনা করেন তাদের বলব, ‘৭১ আর ‘১৭ এর মধ্যে বিস্তর পার্থক্য আছে। ’৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের আগে বাংগালীর আন্দোলন সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যার বীজ সেই ১৯৪৭ সালেরও আগে প্রথিত। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ‘৫৪এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ‘৬৬ সালে ছয়দফা, ‘৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নিরংকুশ সংখাগরিষ্ঠতা, এই সব কিছুই বলে দিচ্ছিল এক আলাদা জাতি সত্ত্বা গঠনের পথে চলেছে এই বাঙ্গালীরা। এছাড়া ছিল এক আলাদা সুসংগঠিত রাজনৈতিক দল এবং যোগ্য নেতৃত্ত্ব। সংকটকালীন সময়ে যারা জাতীর হাল ধরে জাতীকে স্বাধীনতার তীরে পৌছে দিয়েছিল।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ছিল আলাদা স্বীকৃতি। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী লন্ডনে বাংলদেশের পক্ষে স্টিয়ারিং কমিটি খোলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বব্যাপি প্রচারনা চালান। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন, ভারত এই সুসংগঠিত শক্তির হাতে তুলে দেয় অস্ত্র।
অপরদিকে বহুজাতিসত্ত্বার দেশ মায়ানমারে ক্ষুদ্র একটি জাতিগোষ্ঠি রোহিংগা। এই অশিক্ষিত পশ্চাতপৎ জাতিগোষ্ঠির নিজেদের কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তাদের মধ্যেও স্বাধীন হওয়ার প্রবনতা পরিষ্কার নয়।
গনহত্যার মুখে পালিয়া এসে তারা শুধু বিশ্ববাসীকে মানবতার সুরসুরি দিতে পেরেছে। নিজেদের আলাদা সত্ত্বার কোন চেতনা তারা দিতে পারে নি। তাদের মধ্যে নেই কোন বলিষ্ঠ নেতৃত্ত্ব। সবচেয়ে বড় কথা অভিযান শেষে তারা যে নিজেদের দেছে ফিরে যাবে এ ধরনের কোণ সম্ভাবনাও নেই।
একটি সুসংগঠিত শক্তি বলিষ্ঠ নেতৃত্ত্বের অধীনে বিশ্বমাঝে একটি আলাদা পরিচয় ছিনিয়ে এনেছে। ২০১৭ তে যার সবগুলোরই অভাব। তাই বলব ৭১ ও ১৭ এর মধ্যে বিস্তর ফালাক।