somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

বিপ্লব৯৮৪২
জীবন ঘনিষ্ট বিষয় নিয়ে লেখালেখি করি। চেতন ভগতের মতো বাংলাদেশেও পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখি। সেই পরিবর্তন শুরু হবে আমার নিজ জেলা কুমিল্লা থেকে, পরে ছড়িয়ে পড়বে সারা বাংলাদেশে-এই আমার বিশ্বাস।

টু স্টেটস

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একেকজনের একেক ধরনের বই পড়ার শখ। আবার রিভিউ লেখার উদ্দেশ্যও সবার এক নয় । কেউ লেখকের কাছ থেকে সৌজন্য কপি পায়, পরিচিত বন্ধু লেখকের অনুরোধে রিভিউ লেখে। কেউ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদকের অনুরোধে সম্মানীর বিনিময়ে রিভিউ লেখে। সবার উদ্দেশ্য ভাল- পাঠকের সাথে লেখকের পরিচয় করিয়ে দেয়া। যেহেতু তারা পেশাদার খ্যাতিমান রিভিউ লেখক তাই তাদের লেখাও চমৎকার। আর আমি কোন পেশাদার লেখক নই, কিন্তু নাম না জানা, অচেনা যে কোন লেখকের প্রথম লেখা বই নগদমুল্যে খরিদ করি কোন রকম দরদাম করি না । তারপর অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়ি, তারপর রিভিউ লিখি। উদ্দেশ্য একটাই লেখক যেন তার লেখা চালিয়ে যান, দ্বিতীয় বইটি বের করেন ।


অবশ্য আজকের লেখক ইতিমধ্যেই তারকালেখক হিসেবে খ্যাতি পেয়েছেন, তার বেশ কয়েকটি বই বের হয়েছে, সেই সব বই নিয়ে সিনেমাও তৈরি হয়েছে। তাই তাকে হাইলাইট করার কোন প্রয়োজন নেই বা তাকে উতসাহ দেয়ারও কিছু নেই। তিনি তার আপন গতিতে লিখে যাবেন। সেই খ্যাতিমান জনপ্রিয় লেখক হলেন চেতন ভগবত, তার লেখা প্রথম বই টু স্টেটস নিয়ে আজকের আলোকপাত । আমি চেষ্টা করব ভারত নয়, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে লেখকের উল্লেখিত সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে। বইটি আমি ধারে পেয়েছি, সদুর ময়মনসিংহ থেকে বিশিষ্ট বিদ্যোতসাহী ওয়াহিদ ইমন অনুগ্রহ করে আমাকে বইটি পড়তে দিয়েছেন।

ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্ররাজনীতি নেই। তাই লেখক বর্নিত ছাত্রজীবনে সিট দখল, কেন্টিনে ফাও খাওয়া, মিছিল-মিটিং, সহপাঠী অন্য ছাত্রদের উপর লাঠিসোটা-অস্ত্র নিয়ে চড়াও হওয়া, চাঁদাবাজি এসব নেই। একজন ছাত্র তার মুখ্য কাজ পড়াশোনাই করে। কেউ হয়ত মুখস্ত করে ডিগ্রি নিচ্ছে, কেউ হয়ত আত্নস্থ করছে । কিন্তু পড়াশুনা ব্যাতিত অন্যকিছুর দিকে কারো কোন নজর নেই। অর্জিত জ্ঞান মুখস্ত না আত্নস্থ তার উপর ভিত্তি করে শিক্ষাজীবন শেষে ক্যাম্পাসেই যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকুরী পেয়ে যাচ্ছে।
সবাই একটা সনদ আর একটা নিয়োগপত্র নিয়ে ঘরে ফেরে- বাংলাদেশে আমরা যা কল্পনাও করতে পারি না।
ছাত্রজীবনশেষে শুরু হয় চাকরিজীবন, অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগ নিয়ে পারিপাশ্বিকের সাথে কঠিন যুদ্ধ। লেখক চাকরী পেয়েছিলেন সিটি ব্যাংক এ। চাকরীর পরিবেশ ভালো- সমস্যা একটাই সিনিয়রদের ভুলের মাশুল দিতে হয় জুনিয়রদের।
উর্ধতন কর্তপক্ষ ভাবে সব দোষ নিচের কর্মকর্তাদের। বাংলাদেশে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সংখ্যক প্রাইভেট থাকায় ব্যাংকিং সেক্টরে কাজের পরিবেশ আর আগের মত নেই। বাড়তি বোনাস হিসেবে আছে ডিরেক্টরদের পোষ্যপুত্রদের উতপাত, নোংরা রাজনীতি, যখনতখন টারমিনেট। অপদার্থরা থাকে বহাল তবিয়তে, প্রমোশন চাইলেই পায়।
লেখকের বাড়ি দিল্লি, পড়তে গিয়ে পরিনয় হওয়া প্রেমিকার বাড়ি চেন্নাই। দিল্লি ও চেন্নাই দুটি রাজ্য- টু স্টেটস।
প্রেমিকার বাবা মাকে রাজী করানোর জন্য প্রথম পোস্টিং নিতে হয় চেন্নাই। সেখানে গিয়ে হবু শ্বশুর-শাশুড়ির মন পাওয়ার জন্য কত উদ্ভট চেষ্টা। তামিলানাডুর পরিবার পাঞ্জাবী পরিবারের সাথে সম্পর্ক করতে রাজী নয়।
এই ব্যাক্তিত্ব ও আঞ্চলিকতার দ্বন্দ বাংলাদেশেও প্রবল।এই দেশের আয়তনই বা কত ভারতের একটি রাজ্যের সমান। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা মানুষকে
নোয়াখাইল্ল্যা, কুমিল্লা, সিলেটি, মংগা এলাকা, আবাদী, দরিয়া ভাংগা প্রভৃতি বলে এড়িয়ে চলি বা হেয় করার চেষ্টা করি। আমার দৃষ্টিতে তা মুলত
১। আমরা মানুষটির যোগ্যতার সমকক্ষ নই ।
২। নিজের মাঝে বিরাজমান আত্ম-অহমিকা।

এই দুটিই মুল কারন।

বিয়ের পর লেখকের দুটি জমজ সন্তান হয়। নার্স জিজ্ঞেস করে তাদের পরিচয় কি হবে – তামিল না পাঞ্জাবী । লেখক তাদের কোলে নিয়ে বলে তারা পরিচিত হবে ভারতীয় হিসেবে। বিচিত্র ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, রীতিনীতি, ধর্ম সবকিছুতে এত বৈচিত্রতা থাকার পরও রাস্ট্র হিসেবে ভারত যে কিভাবে টিকে আছে তা এক বিরাট বিস্ময়। অনেকেই বলে তাদের দেশপ্রেমেই নাকি এর মুল কারন।
আমরা বাংলাদেশিরা দুর্নীতি-লুটপাট করে বৃটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই, সিংগাপুর, হংকং এসব নিরাপদ স্থানে একটি ফ্ল্যাট বা বাড়ি করে এক পা দিয়ে রাখি, ধরা পড়ামাত্র অন্য পা বাংলাদেশ থেকে তুলে নিই।

আমরা কখনোই আমাদেরকে বাংলাদেশি বলে ভাবতে পারি না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১৯
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×