somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

FIRST CRUSH: যখন বয়স ছিল কম, আর মনে ছিল রং...

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ দুপুর ২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস সিক্স।
বয়স বোধহয় বারো বা তেরো।
স্কুল থেকে বাসায় ফিরিতেছিলাম। যথারীতি একটা দার্শনিক ভাবের মধ্যে আছি.........
এমন সময়......
পাশ দিয়ে একটা রিকশা গেল।
যেতেই পারে, রিকশা ইম্পর্টান্ট না, তার উপর বসা মানুষটা ইম্পর্ট্যান্ট। রিকশার উপর বসে ছিল এক ভাই (ভাই না বলে আংকেল বলা ভালো বোধহয়, কিন্তু আমার কাছে ভাই বয়সী মনে হইল).....
ভাইয়ের চেহারাটা আমার নবীন চোখে বড়ই সুন্দর লাগল:P। শুধু যে সুন্দর লাগল তা না। ভাইয়ের ভাবটাও ভালো লাগল খুব। ভাই লুঙ্গি পরে রিকশায় বসে আছে, তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। মাটির পৃথিবী তার নজরে নাই। এখন দেখলে বলতাম, "মিয়া আসমান দিয়া কি হুর পরী যায়?" কিন্তু তখন এত স্কেপটিক স্বভাব আছিল না। আমার কাছে ভাইকে বড় সোন্দর্য লাগল। কেবল সোন্দর্য না। ভালো লাগল:D:D....
কিন্তু ভাই আছিল রিকশার উপর, তাহার চোখ আছিল আকাশে, আর আমি যাইতেছিলাম পায়ে হাঁটিয়াX(:|....
দার্শনিক ভাবধারা নিয়া ভাই রিকশা চড়িয়া আমারে পাশ কাটায় চলিয়া গেল। :((:((:((
আহা রোমান্টিক শোকে শোকাহত আমি... বাসায় ঢুকিলাম....
ভাই যে লুঙ্গি পরিয়াছিল, ইহা যে আনস্মর্ট কাউন্ট করা যাইতে পারে, ভাইয়ের যে চাপা স্লাইটলি ভাঙ্গা -এইসব কিছুই মালুম হইল না আমার। মনের মইধ্যে প্রজাপতি পাংখা মেলিয়া ফর ফর করিয়া উড়িতে লাগিল.... আহা সে কী অনুভূতির বিস্তার.....
মনের মধ্যে একটি ছেলে রিকশা চড়ে দুলে দুলে যায়......
:D:D:D
এক সপ্তাহ গেল (খালি ব্রাদারের কথা মনের মধ্যে ঘুরিতে লাগিল)
দুই সপ্তাহ গেল (ভাইয়ের চেহারার ডিটেইলস ভুলে যেতে শুরু করলাম)
তিন সপ্তাহ (ভাইয়ের কেবল ভঙ্গিটা মনের মধ্যে বাকি আছে)
..... আরো দিন যায়........
জল পড়ে,
পাতা নড়ে,
ভাইয়ের কথা-
অল্পবিস্তর
মনে পড়ে......


ইহার পর......
একদিন.............
ইস্কুল ছুটি হইতেছে। খাড়ায় আছি বান্ধবীর লগে। কখন ভাইয়া নিতে আসবে সেই অপেক্ষা। কড়া রোদ। উদাস দুপুর।
হঠাৎ দেখি সেই উদাস পোলা।
আমার দিকে হাঁইটা আসতেসে!!!!!!
:-*:-*:-*:-*
আমার বান্ধবী বলিল, খোদা হাফেজ। মামা নিতে আসছে। যাই।
:|:|:|
উদাস বালকের দেখা পাইয়া অল্পবিস্তর প্রীত হইলেও একটা অসোয়াস্তি দেখা দিল। ভাগ্যিস বান্ধবীকে বেফাঁস কিছু বলি নাই!!!
আরো বহুদিন গেল।
ভাইয়ের চার্ম তেমন নাই।
নিত্য নতুন ক্রাশের ঠেলায় ভাইয়ের কথা আর মনেই পড়ে না। পথে ঘাটে এত সুন্দর সুন্দর ইস্মাট ছেলে যে কারো কথাই বেশিদিন মনে থাকে না।
যাহোক।
স্কুলের একটা গ্রুপ ওয়ার্কের জন্য বান্ধুবীর বাসায় যাওয়া লাগল।
আমার কিন্তু ততদিনে আর ভাইয়ের কথা তেমন মনে নাই। অসোয়াস্তিও নাই।
বান্ধুবীর বাসায় গেলাম।
ড্রইংরুমে বসতে দিল।
কিন্তু আমার গায়ের মধ্যে তো স্প্রিং লাগানো, আমি উঠে এদিক সেদিক ঘোরা শুরু করলাম। বান্ধুবী ঘুমায়, তাকে ডাকতে গেলাম।
ফিরে আবার ড্রইং রুমে চা খেতে আসতেসি।
এমন সময় হঠাৎ কোত্থেকে ভাই উঠে এল (ভাই না বলে মামা বলা ভালো)......
তিনি সোফার উপর লেপ কান্থা মুড়ি দিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। গেস্ট আসছে টের পেয়ে লুঙ্গি গিঁট দিতে দিতে উঠে এলেন। বেচারী আধা ঘুমন্ত মানুষ, তাহার সামনে আমি আসিয়া দাঁড়াইয়া গেলাম।
লুঙ্গি গিট দিয়ে উনি ডানে সরে আমাকে যাওয়ার জায়গা করে দেয়, এদিকে আমিও ডানদিকে সরে উনাকে যাবার জায়গা করে দেই.....
আবার উনি বামে সরে
আমিও বামে সরি....
এবার আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম
উনিও দাঁড়ায় পড়লেন....
আবার আমি বামে.....
উনিও বামে।
শেষকালে আমি স্টিল পিকচার হয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম। উনি যাইতে পথ পাইলেন।
পিছন হইতে আমার বান্ধুবী হাসিতে লাগিল খ্যাক খ্যাক করিয়া। যেন এমন মজার দৃশ্য সহজে তাদের বাসায় ঘটে না।
.................
ইহা আমার প্রথম ক্রাশ।

আমার প্রথম ক্রাশ আংকেলকে সর্বশেষবার দেখার সময় চেহারা এবং ফিচারের সমস্ত দোষত্রুটিগুলোই চোখে পড়তে লাগল। মনে হইল, আমি কী দেখিয়া এত অভিভূত হইয়াছিলাম?
আসলে,
বয়সটা রঙ্গিন আছিল। এখন বুঝি। নাইলে এখন চোখের কী দোষ ঘটসে যে, ছেলে হোক, মেয়ে হোক দেখা হওয়ার পর, পরিচয়ের পরই তার খুঁটিনাটি দোষ বাইর করতে বসি?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২৬
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×