somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাবান-বিস্কুট এবং জলরঙাতঙ্ক

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এমনিতে বিস্কুট খাই না। ভালো লাগে না মোটেও। কিন্তু আজকে প্যাকেটের উপর 'প্রবঞ্চনাকারী' পিকচার দেখে হঠাৎ আধখানা বিস্কুট (আস্ত একটাই উঠাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বিস্কুটটা তার বেটার হাফের সাথে আগেই ডিভোর্স নিয়ে রেখেছিল সেটা টের পাই নাই:|) হাতে তুলে নিলাম।
কথা ঠিক, মানুষের স্নায়ু মাথায় খবর পৌঁছাতেও কিছুটা সময় নেয়। সেই সমটুকুর মধ্যেই আমি সাবানের গন্ধযুক্ত বিস্কুটকে আমার মুখের ভিতর প্রসেসড করে নিয়েছি। ফল স্বরূপ বাকিটুকু গেল ওয়েস্ট বাস্কেটে। কিন্তু যেটুকু আমার মুখে রইল সেটা আমাকে একটা সবুজ সবুজ ফিলিংস দিতে লাগল।:|:|
তাড়াতাড়ি পানি খেতে উঠে গেলাম। ডাইনিংয়ে গিয়ে দেখি আমার ব্যক্তিগত মগ টেবিলে নাই। কারণ আমি বোহেমিয়ান স্টাইলে চা খেয়ে সেটি ড্রইংরুমে রেখে এসেছি। আমার মুখের ভিতর দিয়ে সবুজ সাবানের গন্ধ আমার পেট পর্যন্ত চলাফেরা শুরু করল (এটার মধ্যে নিশ্চয়ই কোন সবুজ কালারের সাবান দেয়া হয়েছে যার গন্ধ আমার মস্তিষ্ক রং-সহ সেভ করে রেখেছে, কিন্তু যথারীতি.... সাবানটার নামটা ভুলে গিয়েছে)।
অবশেষে নিজের মগ ধোয়ার হাত থেকে বাঁচতে আমি আমার ছোট বোনের বিরাটাকার মাটির মগ টেবিল থেকে উঠিয়ে নিলাম এবং সেখানে পানি ঢেলে এক নিঃশ্বাসে খাওয়া শুরু করলাম। সাবান-বিস্কুট আমার গলা বেয়ে পেটে নেমে যেতে লাগল......./:)/:)/:)

ইন দ্য মিন টাইম টের পেলাম আমার ত্যাড়া ব্যাকা দাঁতের ফাঁকে সাবান -বিস্কুট জায়গা করে নিয়েছে।
ছোটবোনের বাটি টাইপের ক্ল্যাসিক মাটির মগের তলায়ও যে এত পানি ধরতে পারে তা কে জানত?
তাছাড়া সময়মত পানি না খেয়ে তৃষ্ণা জমানোর ফলে দম আটকে মরে যাবার যোগাড় হওয়া পর্যন্ত পানি খেেয়ই গেলাম।
গলায় পানি ঠেকতে ঠেকতে ঠেকল না। এখন সেইভাবেই বসে রয়েছি, মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত আমি যা করতে চাচ্ছি না তা করেই সাবান-বিস্কুট খাবার প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।

ভয়ংকর প্রায়শ্চিত্ত, দাঁত মাজতেই হবে। X((X((X((
এ থেকে আবার মনে করে নেবেন না যে, আমি দাঁত না মাজা 'ডার্টি মনস্টার' (যদিও কথাটা সত্যি:|)....
আসলে দাঁত মাজার উদ্দেশ্য আমার কাছে যতটা না দাঁতের যত্ন নেয়া, তার চেয়ে বেশি নিজের মুখের গন্ধ অন্যের নাকে না পৌঁছানো। এতে অন্যদের অধিকার রক্ষা হয়। আমি আবার অপরের সুবিধা অসুবিধার ব্যাপারে খুবই যত্নশীল:)...
এজন্যই ভার্সিটিতে ক্লাস নাই এবং আমিও দাঁত মাজি নাই।
অর্থাৎ ছুটির দিনে একটু শান্তিতে 'মুখ যথাসম্ভব বন্ধ রেখে এবং অন্যদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থেকে' বই পড়ছিলাম। সব নষ্ট করল সাবান-বিস্কুট। মনে হচ্ছে এই ছুটির দিনেও আমাকে 'সকাল-সকাল' দাঁত মাজতে হবে, রাতে না।X(
........................
কিছু কাজ আছে মানুষ জানে যে করতে গেলেই ডিজাস্টার হবে, তাও করে। মনে মনে ভাবে- ''এইবার হবে না''। আমিও এরকম মাঝে মাঝে যা কখনো করবো না বলে ঠিক করে রেখেছি তাই করি। আজ যেমন বিস্কুট খেতে গিয়েছি। আমি জানি বিস্কুট জিনিসটা আমার জন্য না। আমি খাইও না, পছন্দও করি না। কখনো 'সম্ভবত' করবোও না। কিন্তু এই 'সম্ভবত' টার্মটাই হল আসল ভাইরাস। আমি মনে মনে বিশ্বাস করে রেখেছি, কোন এক সময় তো হতেও পারে যে আমার কাছে কোন স্পেসিফিক টাইপের বিস্কুট ভালো লেগে গেল.... যদিও আসলে কখনোই লাগবে না।
তবু এই 'এনিথিং ইজ পসিবল' টাইপ নীতির কারণে আমি মাঝে মােঝ বিস্কুট ট্রাই করি। কিংবা কেউ এমন করে সাধে যে খেতে খুব 'tempted' হলাম।
ব্যাস, এরপরই অনুতাপ।:|
মুখে সাবান বিস্কুটের গন্ধ নিয়ে টাইপ করতে করতে ভাবছি এরকম আরো কিছু কাজ আছে যেটা 'জানি পারব না, তাও করি'। যেমন ওয়াটার কালারে ছবি আঁকা। বহুবার নিজের কাছেই প্রমাণ হয়ে গেছে এটা আমার কম্ম না। তাও করি। এতে নতুন করে প্রমাণ হয় 'আসলেও ওয়াটার কালার আমার জন্য না'। তাও আমি মাঝে মধ্যে কী মনে করে যেন ট্রাই করি.... তারপর মাথা গরম করে উঠি এবং নতুন করে শপথ করি- 'আর জীবনেও ওয়াটার কালার না।' X((X((
..................................
একটু আগে বড়বোন সিনেমা আপডেট দিয়ে গেল। পাশের টিনের বস্তিতে বাংলা সিনেমা চলছে। নায়িকা নায়ককে ভয় দেখায় যে তাকে ভালো না বাসলে সে 'পটাসিয়াম কার্বনেট' খাবে। নায়ক তাতে নির্দয় হাসি হেসে বলে, 'হ্যা দেখা যাবে বোতলে করে কোক খাবে'।B-)
কী ভয়াবহ নিষ্ঠুর!
কিন্তু আমার জানামতে স্মার্টেস্ট স্পিকিং বাংলা-ছবির-নায়ক যার কিনা সেন্স অব হিউমার আছে;)
যাহোক, পরের দিন নায়ক এবং তার বন্ধু গল্প করতে থাকে। তখন টিচার এসে বলে,'তোমরা কী করছ? রুমানা কোথায়? সকাল থেকে ল্যাবে পটাসিয়াম কার্বোনেটের শিশিটা পাওয়া যাচ্ছে না।'
তখনই ঢু- ঢু- ঢু বাজনা বেজে ওঠে।এই বাজনার অর্থ 'আসন্ন বিপদ'। তখন নিশ্চয়ই নায়কের হৃদয়ে বান ডেকে গেছে, তার সেন্স অব হিউমার লস্ট হয়ে গেছে। কিন্তু আমি সেগুলো দেখতে পেলাম না।
আর তাছাড়া আমার পেটের মধ্যে এখন ঢু- ঢু-ঢু করতেসে... খাইতে যামু। কিন্তু তার আগে মুখ থেকে সাবানের গন্ধটা রিমুভ করা দরকার। মুখ খুললেই সাবানী- স্মৃতি ব্রেনে ফিরে আসে..........
ভয়াবহ!
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×