কেমন আছিস পদ্ম ?
আর থাকা দাদু,তোমার জল নিয়ে কোন রকম বেঁচে আছি।
জানিস পদ্ম,আজ কাল তোর মায়ের কথা প্রায়ই মনে পড়ে।
তোর মা যেদিন জন্ম নিল,সেদিন আমার সেকি আনন্দ।
তারপর তোর খালা,মামারা মিলে এক সময় আমার পুরো বুকটা দখলে নিল।
আমার এতোদিনের একাকিত্ব দূর হল,তাদের পেয়ে।
তুমি অনেক বার সে গল্প বলেছে দাদু।
আচ্ছা দাদু,আমার মা নাকি আমার থেকে অনেক বেশি সুন্দর ছিল?
সে আর বলতে হয় রে,তোর মায়ের লাল টকটকে রং দেখে মনে হতো,
এ যেন বিজয়ার দিন,মা দূর্গার সিতির লাল টকটকে সিদূর।
কি দিন ছিলরে পদ্ম।
দাদু তোমার মনে আছে,
বছর দশেক আগের সেই বালিকার কথা?
কোন বালিকা,ঐ যে সাদা আর লাল আচঁলের শাড়ির ?
হা গো দাদু হা।যুবকটি মেয়েটিকে বলেছিল,
বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে সুনীলের মতো
তোমার জন্য ১০৮ নীলপদ্ম আমি আনতে পারিনি।
আমি তোমার জন্য এনেছি লালপদ্মের এক বদ্ধ পুকুর।
হে বালিকা তুমি গ্রহন করো এ পদ্ম,গ্রহন করো এ পবিত্র ভালবাসা।
আর বলিস না পদ্ম।মেয়েটির হাসির শব্দ এখনো কানে বাজে,
কি গভীর আর পবিত্র ছিল তাদের ভালবাসা।
দাদু আজকাল আর ভাললাগে না।
বছর দুয়েক ধরে একটি ছেলে প্রায় আসে,তুমি খেয়াল করেছ?
পদ্ম আর বলিস নে তার কথা।
কটা মেয়েকে নিয়ে এলো সে।সবাইকে একি কথা।
আর প্রতিবার আমার বুক খালি করে নিয়ে যায়,
একটি পদ্ম।গাছের ঝোপে কলুসিত হয় তাদের ভালবাসা।
অপবিত্র শরীরে আমার পানিতে হাত বুলায়।
আমার ঘেন্না হয়।কতবার থুথু দিয়েছি তার মুখে।
দাদু আজ বড্ড ইচ্ছে হয় জানতে।
সুনীল,জীবনানন্দ,সমরেশ এই কিংবা ধরো
পূর্ণেন্দু পত্রী কিংবা রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
তারা কি হাঁরিয়ে গিয়েছে,তাদের কবিতা ও কি আজ
বিলুপ্ত?কোথায় গেল সেই ভালবাসা,
সেই ভালবাসার গভীরতা?
কি দাদু,কিছু বল।নীরব কেন?
বদ্ধ পুকুর নীরব।সে খুঁজে ফিরে পদ্মের উত্তর।
তার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়,
সুনীল,সুকান্তরা আজ হারিঁয়ে গিয়েছে।
ভালবাসার দেহে হানা দিয়েছে,রসময় গুপ্ত
নামের কিছু কুৎসিত শকুন।।