জাবের রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “দ্বীনের দুরবস্থা এবং চরম মূর্খতা-যুগে দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করবে। পৃথিবীতে তার অবস্থান-মেয়াদ হবে চল্লিশ দিন। প্রথম দিনটি এক বৎসর, দ্বিতীয় দিনটি এক মাস, তৃতীয় দিনটি এক সপ্তাহ এবং অবশিষ্ট (৩৭) দিনগুলো স্বাভাবিক দিনের মত হবে। দুই কানের মাঝে চল্লিশ গজের ব্যবধান- এমন গাঁধায় সে আরোহণ করবে। মানুষের কাছে এসে বলবে- “আমি তোমাদের পালনকর্তা!” (অথচ আল্লাহ -কানা নন!) তার দুই চোখের মাঝে ك ف ر (কাফের) লেখা থাকবে। শিক্ষিত অশিক্ষিত সকল মুমিন সেটি পড়তে পারবে। মক্কা-মদীনা ছাড়া প্রতিটি শহরে-প্রান্তরে সে পৌঁছুবে। মক্কা-মদীনার প্রতিটি দরজায় সেদিন আল্লাহ পাক ফেরেশতাদের সমন্বয়ে প্রহরী নিযুক্ত করবেন।-” (মুসনাদে আহমদ)
যে সকল স্থানে দাজ্জালের আগমন ঘটবে
আনাছ রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “মক্কা-মদীনা ব্যতীত পৃথিবীর এমন কোন শহর নেই, যেখানে দাজ্জাল গিয়ে পৌঁছবে না।-” (বুখারী-মুসলিম)
অপর বর্ণনায়- “মদীনার দরজায় সবসময় ফেরেশতা নিযুক্ত থাকে। দাজ্জাল এবং মহামারী মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না।-” (বুখারী-মুসলিম)
নবী করীম সা. বলেন- “মদীনার উদ্দেশ্যে পূর্বদিক থেকে দাজ্জাল আসবে, এমনকি উহুদ পাহাড়ের অপর প্রান্তে সে অবস্থান নেবে।-” (বুখারী)
যে সকল হাদিসে দাজ্জাল আবির্ভাবকে কেয়ামতের বৃহত্তম নিদর্শনরূপে চিহ্নিত করা হয়েছেঃ
হুযাইফা বিন উছাইদ গিফারী রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “দশটি (বৃহৎ) নিদর্শন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে নাঃ ধূম্র, দাজ্জাল, অদ্ভুত প্রাণী, পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়...” (মুসলিম)
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “কেয়ামতের তিনটি নিদর্শন- প্রকাশের পর নতুন কারো ঈমান গ্রাহ্য হবে না, যদি না পূর্বে থেকে ঈমান এনে সৎকর্ম করে থাকে।-” (মুসলিম)
কে এই দাজ্জাল?
সে আদম সন্তানের-ই একজন। মুমিনদের পরীক্ষার জন্য আল্লাহ পাক তাকে অলৌকিক কিছু বৈশিষ্ট্য দেবেন। তার দৈহিক ও চরিত্রগত গুণাবলী বর্ণনা করে নবী করীম সা. স্বীয় উম্মতকে তার থেকে বেঁচে থাকার আদেশ করেছেন।
প্রকাশ-স্থল
আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “নিশ্চয় দাজ্জাল প্রাচ্যের খোরাছান এলাকা থেকে আত্মপ্রকাশ করবে। স্থূল বর্ম সদৃশ চেহারা-ধারী কিছু প্রজাতি তার অনুসারী হবে।-” (তিরমিযী, মুসনাদে আহমদ)
দাজ্জালের প্রাথমিক প্রকাশ ও প্রসিদ্ধি (আল্লাহই ভাল জানেন) শাম ও ইরাকের মধ্যবর্তী কোন স্থান থেকে হবে।
নাওয়াছ বিন ছামআন রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “সে (দাজ্জাল) শাম এবং ইরাকের মধ্যবর্তী একটি সড়ক থেকে আত্মপ্রকাশ করবে।-” (মুসলিম)
এক কথায় দাজ্জাল খাট, বিশাল দেহ, বিশাল মাথা, উভয় চোখে ত্রুটিযুক্ত, ডান চোখটি ভাসমান আঙ্গুর সদৃশ (কানা), বাম চোখে চামড়া, ঘন কুকড়ো ও অগোছালো চুল, সাদা চামড়ার দেহ, দুই নলার মধ্যবর্তী স্থানে যথেষ্ট ফাক এবং দুই চোখের মাঝে ك ف ر (কাফের) লেখা বিশিষ্ট হবে।
দাজ্জাল কিসের দাবী করবে?
মহা-দুর্ভিক্ষের কালে দাজ্জাল খাদ্যদ্রব্য নিয়ে এসে বলবে, “আমি হচ্ছি সমগ্র জগতের পালনকর্তা। হে লোকসকল! তোমরা আমার প্রতি ঈমান আন! আমি তোমাদের খাদ্য দেব, পানীয় দেব, সম্পদ দেব, যা চাও- সব দেব”। নবী করীম সা. বলেছেন- “স্মরণ রেখো! দাজ্জাল কিন্তু একচোখে কানা হবে। আর তোমাদের প্রকৃত পালনকর্তা কানা নন!!” (বুখারী)
সামনে আরো বিস্তারিত বিবরণ আসছে ইনশাল্লাহ..।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৮