somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মন্ত্রীর প্রথা ভঙ্গের সুবোদয়

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মন্ত্রী কোথাও যাবেন আর তার সঙ্গে ছুটবে দলে দলে সাংবাদিক আর ফটো-সাংবাদিক। কাগুজে পত্রিকা, অনলাইন, বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের লোকজন। সব মিলিয়ে রীতিমতো মিছিল। মন্ত্রীরাও চান প্রচার। তারা জানেন প্রচারেই প্রসার। সবচেয়ে বড় আকর্ষণ টিভিপর্দায় নিজের চেহারা দেখানো। এরই মধ্যে মন্ত্রীদের কারো কারো ক্যামেরাপ্রীতি নার্সিসিজমের পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। তারা যেখানেই যান, কারণ যতো তুচ্ছই হোক, পেছনে ছোটেন ডজন-ডজন সাংবাদিক-ফটোসাংবাদিক। ‘যেখানে মন্ত্রী, সেখানেই ক্যামেরা’
এর খারাপ-ভালো দুটো দিকই আছে। মন্ত্রীর উপস্থিতির কারণে কোনো কোনো সময় সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান যেমন মেলে, পাশাপাশি পথেঘাটে যানজট, জনজটসহ নানান দুর্ভোগও বাড়ে।সবচেয়ে খারাপ ব্যাপারটা ঘটে তখনই, মন্ত্রীরা যখন একদল ফটোসাংবাদিক নিয়ে পাবলিক পরীক্ষার হলে বা হাসপাতালে মরণাপন্ন রোগীর শিয়রে গিয়ে উপস্থিত হন।

পরীক্ষার হলে যা ঘটে তা এক কথায় পীড়াদায়ক। একে তো মন্ত্রী মহোদয় এবং সেইসঙ্গে তাকে ঘিরে এতো-এতো ক্যামেরা, ফ্ল্যাশ-লাইট-ক্লিকের মধ্যে জীবনে প্রথম বা দ্বিতীয়বার পাবলিক পরীক্ষায় বসা কিশোর-কিশোরীদের আক্কেল গুড়ুম হবার যোগাড় হয়। তারা ভড়কে যায়, তাদের মনসংযোগ নষ্ট হয় এবং সর্বোপরি নষ্ট হয় তাদের মহামূল্যবান সময়। কেননা পরীক্ষার হলে প্রতিটি মিনিট বা সেকেন্ড বড়ই মূল্যবান। পরীক্ষার হলে মনোসংযোগের সামান্য ব্যাঘাত হলে পরীক্ষার্থীকে সারাজীবন তার খেসারত দিতে হয়।

দেরিতে হলেও ব্যাপারটা অনুধাবন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। অন্যবারের মতো গতকাল ৩ এপ্রিল শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষার হলে তিনি ঢোকেননি। বরং বারান্দা থেকে শুধু তাকিয়ে দেখেছেন। তাঁর এই প্রথাভাঙ্গা আচরণ খুবই সুবিবেচনাপ্রসূত। নিজেকে ‘...আমি সাড়ে ১২ লাখ বাচ্চার বাবা-মা’ বলে ঘোষণা দিয়ে কাল তিনি ইতিবাচক নজির স্থাপন করলেন। অন্যদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকুক।

মন্ত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের ফটকে প্রবেশ করে মন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি শুধু বারান্দায় যাবো, ভেতরে যাবো না।’ মন্ত্রী এসময় কারণও ব্যাখ্যা করেন: ‘...আগে মেট্রিক পরীক্ষা বা আইএসসি পরীক্ষায় রেওয়াজ ছিল হলে হলে যাই, দেখি।

কিন্তু আমরা ২/৩ বছর ধরে বিবেচনা করছি এটা দুই কারণে-- আগে মিডিয়ার সংখ্যা এতো ছিল না। ২, ৪, ৫, ১০ জন সাংবাদিক ছিল, যার ফলে চোখে লাগতো না ভাগ করে গেলে সমস্যা হতো না।এখন যদি আমরা একটা রুমে প্রায় ৫০ জন লোক ঢুকি তাহলে ওখানে ছাত্রসংখ্যা ৫০ বা ১০০ বা ২০০ হোক তখন স্বাভাবিকভাবে ওরা বিরক্ত হয়, তাদের মন অন্য দিকে যেতে পারে। আর একটি হলো তারা এতো উত্তেজনার মধ্যে পরীক্ষা দিচ্ছে, সবাই যদি গিয়ে ঢুকি তাহলে তাদের মধ্যে একটা প্রভাব পড়তে পারে।মিডিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আগের মত করা সম্ভব না। যুগ পাল্টে গেছে, জগৎ পাল্টে গেছে, আমাদের বাস্তবতার সঙ্গে চলতে হবে। আপনারা তথ্য, ছবি নিলেন বা কেন্দ্র সচিবের সঙ্গে কথা বললেন- সেটা নিতে পারবেন।’
শিক্ষামন্ত্রীর এই দৃষ্টান্তটি অন্যরাও যদি অনুসরণ করেন, জনগণের কিসে ভালো হবে বা মন্দ হবে তা মাথায় রাখেন তাহলেই একটু একটু করে বদলে যাবে বাংলাদেশ। এমন ছোট ছোট নজিরই আরও বড় ইতিবাচকতার অভিমুখ রচনা করবে একদিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৮
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×