somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যানজট হীন ঢাকায় একদিন

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি নগরের বাসিন্দারা প্রতিদিন সকাল-বিকেল যাতায়াত করেন অফিস-আদালতে, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এবং স্কুল-কলেজে। মাঝে মাঝে যাতায়াত করেন শপিংয়ে, আত্মীয়-বন্ধুদের বাড়িতে, সামাজিক অনুষ্ঠানে, সভা-সেমিনারে ও হাসপাতাল-ক্লিনিকে। প্রতিদিনের যাতায়াতে নগরবাসী গণপরিবহন ব্যবহার না করে যদি প্রাইভেট কার নিয়ে বের হন, তবে যানজট অসহনীয় হবেই। কারণ, দুটি প্রাইভেট কারে দুজন যাত্রী সড়কের যে জায়গা দখল করেন, সেই জায়গায় গণপরিবহনের একটি বাস জনা পঞ্চাশেক যাত্রী বহন করতে পারে। ঢাকায় গতিশীল ও নির্ভরযোগ্য গণপরিবহন না থাকায় অনেক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারও তিন-চার লাখ টাকার সেকেন্ড/থার্ডহ্যান্ড গাড়ি প্রতিদিনের যাতায়াতে সড়কে নামান। অথচ প্রাইভেট কার ব্যবহার হওয়া উচিত মাঝে মাঝে যাতায়াতের ক্ষেত্রে।
ঢাকায় মেট্রোরেল/পাতালরেল নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে, যা সময়সাপেক্ষ। কম সময়ে বাস-ক্যাবের মতো গণপরিবহনকে গতিশীল করা সম্ভব। তিন হাজার নতুন বাস একযোগে সড়কে নামবে। এই প্রকল্প সার্থক করতে ভালো কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক মানের বাস লাগবে। কম দামি বাস পুরো প্রকল্প ব্যর্থ করবে। শতভাগ শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাস দরকার। একই রঙের, একই মডেলের বাস শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় সহায়ক। তবে রুটভেদে বাসের নম্বর আলাদা থাকবে, যা বাসের সামনে-পেছনে দুই পাশে সহজে দৃশ্যমান হবে। পেছনের ২৫টি সিট গ্যালারি আকারে এবং সামনের ২০টি থাকবে সমান্তরাল ডেকে। সামনের সিটে প্রতিবন্ধী, সন্তানসম্ভবা, বয়স্ক ও নারীদের অগ্রাধিকার থাকবে। ২০ জনের দাঁড়িয়ে চলার ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটি সিটের পেছনে ঢাকা শহরের বাসের টোটাল নেটওয়ার্ক ডায়াগ্রাম থাকবে।
বাসের সঙ্গে সড়কগুলোরও উন্নয়ন দরকার। বাসস্টপেজগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত থাকবে। বাস থামার আলাদা লেন থাকবে। সমস্ত বাসস্টপেজ ও যাত্রী ছাউনি হবে একই প্ল্যান, ডিজাইন ও নির্মাণসামগ্রীর। যাত্রী ছাউনির পেছনের ওয়ালে ঢাকা শহরের বাসের নেটওয়ার্ক ডায়াগ্রাম বড় ম্যাপ আকারে থাকবে। সঙ্গে স্টপেজ নম্বর এবং বাস নম্বরের লিস্ট থাকবে। নামগুলো বাংলা ও ইংরেজিতে। মফস্বল থেকে ঢাকায় প্রথম আসা যে কেউ বা কোনো বিদেশিও যেন সহজে বাসের পুরো নেটওয়ার্ক বুঝতে পারেন।
ড্রাইভারদের লাইসেন্স মান হবে ১০০। ট্রাফিক নিয়মকানুন অমান্যের কারণে বিভিন্ন মানের পয়েন্ট কাটার ব্যবস্থা থাকবে। পয়েন্ট ৩০-এর নিচে নেমে এলে লাইসেন্স বাতিল হবে এবং নতুন করে পরীক্ষা দিয়ে লাইসেন্স নিতে হবে
ঢাকার নির্ধারিত সীমানার মধ্যে একই ভাড়া নির্ধারণ করা যেতে পারে। ঢাকায় ২০ টাকা বা বৃহত্তর ঢাকায় ৫০ টাকা। বাসস্টপেজ বা বাসের মধ্যেও টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে না। এক, তিন ও ছয় মাসের পাস থাকবে বিভিন্ন রুটে, যা বাস কোম্পানির নির্ধারিত ব্যাংক ইস্যু করবে। পাসের ওপর যাত্রীর ছবি ও এক্সপায়ার তারিখটি বড় আকারে থাকবে, যেন ড্রাইভার সহজে দেখতে পান। পাস না থাকাদের জন্য বাসের টিকিট এজেন্টের মাধ্যমে যত্রতত্র পাওয়া যাবে মোবাইলের ফ্লেক্সিলোডের মতো। যেকোনো সংখ্যার টিকিট কেনা যাবে। এই পাস/টিকিট বাসে ওঠার দরজায় থাকা ডিজিটাল মেশিনে যাচাই হবে।
এই বাসগুলো হবে ওয়ানম্যান বাস, অর্থাৎ বাসে শুধু ড্রাইভার থাকবেন, হেলপার থাকবেন না। নির্ধারিত রুটের জন্য রেকর্ডেড মেসেজ থাকবে, যা যাত্রীদের স্টপেজসহ অন্যান্য নির্দেশনা দেবে। বাসে দরজা থাকবে দুটি, সামনেরটা ওঠার এবং মাঝের দরজা নামার। যেকোনো যাত্রী বাসের মধ্যে থাকা বোতাম টিপে পরবর্তী স্টপেজে নামার সংকেত দেবেন। ওয়ানম্যান সার্ভিস যাত্রীদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়ার প্রবণতার অবসান ঘটাবে।
ঢাকা থেকে সব সিএনজিচালিত অটোরিকশা তুলে দিয়ে সমসংখ্যক সাশ্রয়ী ক্যাব নামাতে হবে। ক্যাবগুলো টেকসই মানের হতে হবে,যেন ৮-১০ বছর চালু থাকে। সঙ্গে বেশি সিসির (১৫০০ থেকে ২০০০ সিসি) পর্যাপ্ত সংখ্যার ক্যাব থাকবে। সব সিগন্যাল বাতি টাইম কাউন্টডাউন সম্পন্ন হতে হবে,যা সড়কগুলো গতিশীল রাখতে সহায়ক। সড়ক পারাপারের জন্য কয়েকটি সেকশনে পাতালপথ নির্মাণ করলে ভালো হয়। পাতালপথের প্রস্থ অন্তত চার মিটার, উচ্চতা তিন মিটার, ওপরে ওঠার জন্য স্কেলেটর এবং পর্যাপ্ত বাতির ব্যবস্থা থাকবে। সড়কের ওপর দিয়ে পারাপারের স্থলে জেব্রাক্রসিংগুলো সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত থাকবে। জেব্রাক্রসিংয়ে সবুজ সিগন্যাল বাতির সঙ্গে একটি জনপ্রিয় গানের মিউজিক বাজবে। বাসা/কর্মস্থল থেকে বাসস্টপেজ পর্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটার ফুটপাত থাকা অপরিহার্য।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৫৬
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×