somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মেংগো পিপোল
আজ কাল নিজেকে আমার অচেনা লাগে। চেনার জন্য নিজের চেহারায় হাত বোলাই। বোয়সের ছাপ পরা চেহারা জানান দেয়- সময় হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে দিন দিন, একটু একটু করে।

সে আমি এবং একটি কুকুর

২২ শে মে, ২০১২ রাত ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :










হুমায়ুন স্যার বসে আছেন, তার প্রিয় জায়গা, নুহাশ পল্লীতে। পাশে ঝিম ধরে বসে আছেন মিসির আলি। ঝিমানির এক ফাঁকে তিনি তার মহাত্মা গান্ধী টাইপ চশমা পরিষ্কার করলেন, আশে পাশে প্রচুর ধুলা, বালি, মাছি। প্রকৃতি মাছি গুলোকে উড়াচ্ছে, মাছি গুলো উড়ছে। উড়ে এসে ডিম পারছে মিসির আলির চশমার কাঁচে। মাছিরা কি বুঝতে পারছে, তারা বৃথা চেষ্টা করছে? যদি বুঝতে পারে বা মাছির যদি ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় থাকে তাহলে ওরা বুঝেও কেন মিসির আলির চশমার কাঁচে ডিম পাড়ছে? প্রকৃতি কেন মাছিকে দিয়ে ডিম পাড়াচ্ছে তার চশমার কাঁচে। এতে প্রকৃতির স্বার্থ কি? প্রকৃতির একটা স্বার্থের কথা তিনি কল্পনা করতে পারছেন। সেটি হচ্ছে-- কৌতুহলের সঙ্গে প্রকৃতি একটি পরীক্ষা চালাচ্ছে। তার চোখের সামনে মাছির জীবনের আরম্ভটা তাকে দেখানো এবং এটা দেখে তিনি কি করেন?

মিসির আলিরও ইচ্ছা মাছির ডিম ফুটে কি ভাবে মাছি বের হয়? তা দেখার। কিন্তু বড়ই আফসোস তাকে চশমার কাঁচ পরিস্কার করতে হচ্ছে। তাতে ডিম গুলো ধ্বংস হচ্ছে। কষ্টে তার চোখে জল চলে আসছে, কিন্তু তিনি তার চোখের জল ধরে রাখলেন। এত তুচ্ছ কারনে চোখের জল নষ্ট করা বুদ্বিমানের কাজ হবেনা। মানুষের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় মনে হয় মাছির মতন অতটা দুর্বল নয়। অনেক কিছুই সে ধরতে পারে, হয়তো এই লোকটি যার পাশে তিনি বসে আছেন, তার পাশে আর বসা হবেনা কখনো, বা এই লোক তার চরিত্র নিয়ে আর কোনদিনই লিখবেন না। মিসির আলি আগ্রহ নিয়ে হুমায়ুন স্যার কে দেখছেন। মানুষটা অনেক রোগা হয়ে গেছেন। রোগা হওয়ার কারনে তাকে অনেকটা লম্বাও মনে হচ্ছে। মুখ দেখা যাচ্ছেনা, তিনি মাথায় পরে আছেন হ্যাট। হ্যাটের ধরন দেখে মনে হয় কেমোতে চুল পরে যাবার করনে হ্যাটটা ব্যাবহার করেছেন। থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরেছেন, পায়ে কাঁদা লেগে আছে। মনে হচ্ছে এখানে বসার আগে খালি পায়ে হেটেছেন, কিছুক্ষন।

হুমায়ুন স্যার কিছুটা নড়ে চড়ে বসলেন। তার থ্রিকোয়ার্টার প্যান্টের
ফাক দিয়ে পায়ের কিছু অংশ বের হয়ে আছে, সেখানে প্রচুর মাছি বসেছে। হিমু মাছি গুলোর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে যে দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে একে বলে তিক্ষ্ণ দৃষ্টি। মাছি গুলো এক জায়গায় শান্ত হয়ে বসে থাকছে না, এরা ছোটা- ছুটি করছে। এদের ছোটা-ছুটি থেকে এদের মনের অবস্হা বলা সম্ভব? মন শান্ত মাছি যে ভঙ্গিতে ছোটা-ছুটি করে, অশান্ত মাছি কি সেই ভাবেই ছোটা ছুটি করে? এই বিষয়ে কোনো গবেষনা কি হয়েছে?

ডেমোগ্রাফি
মাছি মনের গতি প্রকৃতি এবং লম্ফ জম্ফ।

খুব সম্ভব এদের কে তৈরী করা হয়েছে ছোটা- ছুটি করার জন্য। বানর দের বানানো হয়েছে ভ্যাংচ্যাং দেবার জন্য। দুনিয়ায় মানুষ একমাত্র প্রাণী যে ভ্যাং- চ্যাং, ছোটা- ছুটি সবই করে।

সে ভাবছে, আগ্রহ নিয়ে ভাবছে। "হঠাৎ যদি মাছি হয়ে যাওয়া যেতো" খুব একটা খারাপ হতো না। সে হবে হলুদ মাছি। মাছির মাথায় থাকবে মানুষের ঘিলু। সে ভ্যান, ভ্যান করবে না। মানুষের গলায় কথা বলবে। তার গায়ে কোন কাপড় থাকবেনা। কেবল ডানা আর চোখ গুলো হবে হলুদ, সে হলুদ ডানায় ভর দিয়ে রুপার শোবার ঘরে উঁকি ঝুঁকি দেবে। হঠাৎ রুপার কানের কাছে গিয়ে ভ্যান ভ্যান সুরে বলবে এই রুপা তুমি কেমন আছো? আমি হিমালয়, আমার নাম হিমু, মাছি সমাজে আমকে এখন ডাকা হয় ইটের চাকা ওদের কাছে ইটের চাকা মানেই হিমালয় সদৃশ, এই জীবন ভালই লাগছে, হাটার কষ্ট নাই, খালি পাখা নাড়াতে কষ্ট, তবে সুযোগ ও অনেক মন চাইলো আইস্ক্রীম খাবো বসে পরলাম কোন শিশুর আইসক্রীমের উপর, তবে রিস্ক ও আছে কখন কে চড় থাবরা দিয়ে মাইরা ফেলে বলা মুশকিল। রুপা কি করবে? ঐ মেয়ে চমকাবার মেয়ে নয়, সে ঠান্ডা মাথায় বলবে আমি ভালো আছি, তুমি কেমন আছো? ফ্রিজে রসমালাই আছে। কুমিল্লা থেকে তোমার জন্য আনিয়ে রেখেছি, সেদিন তো আসবে বলেও এলেনা। আজ কিন্তু না খেয়ে যাবেনা।

অনেক দিন রুপার সাথে দেখা হয়না হিমুর। রুপা অবশ্য তাকে একটা মোবাইল পাঠিয়ে ছিলো, মোবাইল তার সাথে নাই। হিমুদের কোন বন্ধন থাকতে নেই, হিমু হবে বন্ধন মুক্ত। আর তাছাড়া, তার তো পান্জাবীতে পকেটই নাই। মোবাইল রাখবে কোথায়? হুমায়ুন স্যার কে বলতে হবে, পান্জাবীতে একটা পকেটের ব্যাবস্হা করতে। পাদুকার ও দরকার হয়ে পরেছে। রাস্তায় খানা খন্দকের অভাব নাই, খালি পায়ে হাটলে পা কেটে গল-গল করে রক্ত ঝরে। স্যার অবশ্য এখন কিছু টা ঝিম ধরা অবস্হায় আছে, স্যার কে এখন একটু চমকে দিলে কেমন হয়? ভেবে আবার সে তার বাবার কথা ভাবেছে, ঝিমুনির ব্যাপারে বাবা কি তার ডাইরিতে কিছু লিখেছিলেন? না তেমন কিছু লিখেছেন বলে তো মনে পরেনা। তবে বাবা শেষের দিকে বলে ছিলেন,

আমি নিজে এখন অসুস্হ, সময় ঘনিয়ে আসছে এরুপ মনে হয়। তোমাকে পূর্ণাঙ্গ ট্রেনিং দিয়ে যেতে পারব বলে মনে হচ্ছেনা। যে সব শিক্ষা দিয়ে যেতে পারবনা, আমার আদেশ, সে সব শিক্ষা নিজে গ্রহন করবে।


হুমায়ুন স্যার ও অসুস্হ স্যারের ও কি সময় ঘনিয়ে আসছে? তার আধ্যাত্বিক কোন ক্ষমতা নেই এটা সে জানে, তবুও সে খুব বুঝতে পাড়ছে হুমায়ুন স্যার আর বেশি দিন নেই তাদের মাঝে, তিনি মৃত্যু পথযাত্রি। অনেক মৃত্যু পথযাত্রির কিছু ইচ্ছা থাকে, স্যারের শেষ ইচ্ছা কি হবে? যদি স্যারের শরিরে কেমো কাজ না করে। স্যারের দেয়াল লেখাটা নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। স্যারের কি পান্ডুলিপিটাকে মলাটে গড়া বই হিসেবে দেখতে ইচ্ছে করছে? আফসোস দুনিয়াতে মানুষের সব ইচ্ছা অতি সহজে পূরন হয়না।
হিমু স্যারের দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখে জল, একজন সার্বিক বিষয়ে নির্বিকার মানুষের চোখে এভাবে জ্বল চলে আসাটা কি ঠিক হচ্ছে? সে কি মহা পুরুষদের মতন চরম নিরাসক্তদের একজন হতে পারেনি?!
বাবাতো বলে ছিলো,
"মহা পুরুষ দের, অতি আবেগী হয়ে চোখের অশ্রু ফেলা সাজেনা।"

মিসির আলি সন্দেহ নিয়ে লোকটিকে দেখছেন, রোগা লম্বা একজন মানুষ, মুখের রং তামাটে, রোদে পোড়া। গায়ে হলুদ পান্জাবী, পান্জাবীর কিছু জায়গায় ঘামের সাদা লবন জমেছে। এই লোক যে খালি পায়ে হাটে সেটা বোঝা যায় পা দেখে। পায়ের পাতা শক্ত এখানে ওখানে কাটার দাগ। তিনি তার মনের ভেতরে লোকটার সম্পর্কে একটা ধারনা তৈরী করেছেন, খুব সম্ভব লোকটা ছিচকে চোর শ্রেনীর। কারন তার মাথার চুল গুলো চাছা, কেবল চুলই চাছা নয় তার ভ্রুও চাছা। মিসির আলি লোকটির বয়স আন্দাজ করার চেষ্টা করলেন। কুড়ি থেকে পচিশের মধ্যে হবার কথা। এই বয়সের যুবক দের চেহারায় এক ধরনের আভা থাকে এর তা নেই। এর চেহারায় কিছুটা চোর চোর ভাব আছে। পায়ে জুতোও নেই। মনে হয় কারো পকেট মারার পর তাকে ধরে মৃদু প্রহার করা হয়েছে। এবং তার পর সে লেজ গুটাইয়া ভো দৌড় দিয়েছে এবং এখন হুমায়ন স্যারের কাছ থেকেও কিছু চুরি করার মতলব করছে।

হিমু মিসির আলীর দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছে, সে চাচ্ছে সামনে বসে থাকা পৌরো মানুষটাকে একটু হক চকিয়ে দিতে, লোকটাকে হক চকিয়ে দেয়ার ব্যাবস্হা সে করে ফেলেছে, সে তার হাতের মুঠ থেকে মিসির আলীর সিগারেটের প্যাকেটা টা বের করে মিসির আলির দিকে বারিয়ে দিলো, মিসির আলি নির্লিপ্ত ভাবে সিগারেটের প্যাকেট টা নিয়ে তার পকেটে রাখলেন এবং ভাবলেন তার ধারনা একদম ঠিক এই ছেলে কেবল চোর নয়, মহা চোর, সে চোরের সর্দার। দুনিয়াতে যদি পাচজন সেরা চোরের তালিকা তৈরি করা হয় সেখানে এই ছেলের নাম দুই নাম্বারে থাকবে, আর এক নাম্বরে থাকবে তার নাম। কারন ছেলেটা যখন তার পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা সরিয়েছে তখনই তিনি সেটা টের পেয়েছেন।

হিমু নির্লিপ্ত ভাবে বলল মিসির সাহেব একটা সিগারেট দিন একটু আরাম করে টানি। মিসির আলী এবারও চমকালোনা, ছেলেটা তার নাম জানেনা তার পরও তার নাম বলছে শুনে। কারন তিনি জানেন ছেলেটা তার নাম তার সিগারেটের প্যাকেটের উপরে লেখা দেখেছে, মিসির আলীর এই এক স্বভাব নিজের যেকোন জিনিসের উপর নাম লিখে রাখার। তিনি ঠিক করলেন ছেলেটাকে একটা সিগারেট তিনি দিবেন,

মঞ্চ নাটকে কি হয়? অতি আবেগ ঘন মুহুর্তে ভিলেনের প্রবেশ ঘটে, নাটকের ভাষায় ক্লাইমেক্স তৈরী হয়।
ক্লাইমেক্স তৈরী হয়ে গেলো, ভিলেন হিসেবে মঞ্চে প্রবেশ করল সকালের পত্রিকা। পত্রিকাতে একটি হেডলাইন দিয়েছে," দেয়াল নিষিদ্ব" হুমায়ুন স্যার একপ্রকার অনাগ্রহ নিয়ে হেডলাইন টা দেখলেন, এর পর অন্য খবরের দিকে চোখ বুলাতে লাগলেন। মিসির আলি তিক্ষ্ণ চোখে স্যারের দিকে তাকিয়ে আছেন। প্রথমে তার মনে হল স্যারের হয়তো মন খুব খারাপ হবে বিষন্ন হয়ে বসে থাকবেন। কিন্তু স্যার শক্ত মানুষ, সহজে মন খারাপ করবেন না। নিজেকে সামলে নেবেন। হ্যা, তাই হচ্ছে। তিনি নিজেকে সামলে নিচ্ছেন। সকালের চায়ে চুমুক দিয়ে বললেন,"চায়ে চিনি হয়েছে তো"? এরপর একা একাই বললেন আমি মনের আনন্দে লিখি। যেটা যেভাবে লিখেছি সেটা সেভাবেই থাকবে।
মিসির আলি হাসলেন। কী অদ্ভুত লাগছে স্যারের চেহারাটা।

তিনি হিমুর দিকে তাকালেন, হিমু তাকিয়ে আছে মাছি গুলোর দিকে, সে অবাক বিস্ময় নিয়ে মাছি গুলো কে দেখেছে, সে দেখতে পাচ্ছে একটা হলুদ পাখা ওয়ালা মাছি চোখ গুলো হলুদ। উড়ছে মাছিদের ভিড়ে। একটি মাছি হলুদ ডানা ওয়ালা মাছিটাকে বলছে এই শুনছো দেয়াল নিষিধ্ব হয়েছে, হিমু অদ্ভুত ভাবে দেখলো যে মাছিটা তার সাথে কথা বলছে তার চোখে মহাত্মা গান্ধি চশমা। হিমুর গায়ে এবার স্বজোড়ে ধাক্কা পরে, হিমু মিসির আলির দিকে তাকায়। মিসির আলি হিমুকে পত্রিকার দিকে তাকাতে বলে। হিমুও দেখে বড় বড় অক্ষরে লাল কালিদিয়ে লেখা "দেয়াল নিষিধ্ব"। দেয়ালের দুইটা অধ্যায় হিমু দেখেছে, কিছুটা আবাক ভাব নিয়েই দেখেছে। সে চেয়েছিলো সোবাহান বাগে গিয়ে হরিদাসের দোকানের জায়গাটা খুজে বের করে সেখানে বসে মাথার চুল কেটে ফেলে নেড়া হয়ে যাবে। সে একটা ব্লেডেরও ব্যাবস্হা করেছে, ব্লেডের নাম বলাকা। এই ব্লেড কি ১৯৭৫ এ পাওয়া যেতো কিনা তার জানানাই, তবে পুরানো ব্লেডর মধ্যে বলাকা নামটাই তার মাথায় এসেছে, আহারে বেচারা "হরিদাস", স্যারইতো প্রথম লিখলো হরিদাসের কথা, বেচারার সাধ ছিলো শেখ সাহেবের চুল কাটবে। তার আগে সে নিজেই কাটা পড়লো ট্যাংকের চেইনে, আহারে।

মিসির আলীর মুখটা বিমর্ষ শেখ সাহেবের সাথে তার কখনো দেখা হয়নি। মানুষটার সাথে দেখা হলে হয়তো বলতো

- "কিরে মিসির খুব নাকি জ্ঞানী হইছিস, কি সব হাবি জাবি গোয়েন্দা গিরি করিস? আয়, দেখি একটা ধাধার জবাব বল। দেখি তোর কতদুর জ্ঞান।"

তার মতন মানুষ তো এভাবে কথা বলাটা মোটেও অস্বাভাবিক না বরং স্বাভাবিক, তাইনা হলে বঙ্গবন্ধু। অফসোস বঙ্গবন্ধু নাই, আহারে এইরকম একটা মানুষ হারাইলাম আমরা। কার ভুলে?! অফসোস বড়ই আফসোস।

রাত বারটার দিকে, হিমু আর মিসির আলি দাড়িয়ে আছে সরফরাজ সাহেবের বাসার সামনে। আকাশে একটা খুব বড় চাদ উঠেছে, মিসির আলী চাদটার দিকে তাকিয়ে আছে, সে হিমু কে বলল- "হিমু খেয়াল করছ চাঁদটা দিন দিন বড় হয়ে যাচ্ছে, এটা কি কেয়ামতের আলামত না কি? হাদিসে নাকি আছে কেয়ামতের আগে চাঁদ ধিরে ধিরে বড় হবে। চাঁদের আলোয় তাদের দুজনের লম্বা ছায়া পরেছে, তারা লক্ষ করলো একটা বিদঘুটে সাদা কুকুর এসে তাদের পাশে দ্বাড়িয়েছে। মিসির আলি হিমুর দিকে তাকালেন। হিমু কিছু বলছেনা সে দৌড়তে আরম্ভ করেছে, মিসির আলীও তার পাশে দৌড়াচ্ছে তারা চিৎকার করে বলছে "মুজিব হত্যার বিচার হয়েছে"।


উৎসর্গঃ
একদিন বিকেলে একটা দোতলা বাড়ির ছাদে বসে নীল মলাটের একটা বই পড়ে ছিলাম। বইটার নাম ছিলো "হিমুর হাতে কয়েকটি নীল পদ্ম"। কৈশর শেষ করে যৌবনের প্রথম পড়া কোন উপন্যাস। হুটকরে বুকের ভেতের একটা অনুভুতি পেয়েছিলাম, আমার হাতেও কি নীল পদ্ম আছে? সেই পদ্মের খোজে একে একে পড়েছি, এবং হিমু, হিমু, একজন হিমু ও কয়েকটি ঝিঁঝিঁ পোকা, এভাবে শেষ হিমুর বই টাও। "শেষ হিমুর বই" কথাটা লিখতে বুকের ভেতর মুচড়ে ওঠে আর হিমুকে নিয়ে বই লেখা হবেনা। সময়, অন্য বা কাকলি প্রকাশের সামনে আর লাইনে দাড়াবো না, বইমেলায় হুমায়ুন স্যারের অটোগ্রাফ নিতে। যার লেখা পড়ে আবেগি হয়েছি, নিজেকে চিনতে শিখেছি সেই শ্রদ্বেয় প্রিয় মানুষ হুমায়ুন স্যার কে।

মুখবন্ধঃ
মাঝে মাঝে খুব আফসোস হয় কেনো ১৯৬০ এর দিকে আমার জন্ম হয় নাই, তাহলে আমরা আজকে যে ইতিহাস জানি তার কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা নিজেই বুঝতে পারতাম, স্কুল জীবনে চাচা চৌধুরীর কমিকস পড়ার পালা শেষ করার পর যে ক'জন লেখকের লেখা গিলতাম তার মধ্যে হুমায়ূন স্যার প্রধান। হয়তো তাই বই মেলায় কেবল স্যারের হিমু বিষয়ক বইটাই কিনতাম। অন্য বইয়ের ধারে কাছেও যেতাম না, দেয়ালের প্রথম দুই কিস্তি আগ্রহ নিয়ে পড়েছি, ভালো লেগেছে। এর আগে জোছনা ও জননীর গল্পটা ও পড়েছি ভালো লেগেছে। ভেবেছিলাম নতুন কোন সত্য হয়তো জানতে পারবো দেয়ালের মাধ্যমে। যা হোক তা তো নিষিধ্ব হয়ে গেলো, মরা ছেলে নিয়ে কেদে আর কি হবে? তবুও অপেক্ষায় থাকি যদি মানুষ গুলর সুমতি হয়, মৃত একজন মানুষের শেষ অনেক গুলো ইচ্ছার মধ্যে, একটা ইচ্ছা অন্তত কেউ পূরন করে। দেয়াল কে মুক্তি দেয়া হোক।

ও ভালো কথা জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর জন্য কার বাসার সামনে গিয়ে বলতে হবে জিয়া হত্যার বিচার চাই, আমার জানা নাই, জানলে বলতাম। দেশের সব হত্যার বিচার হোক।

আমি হুমায়ূন স্যারের লেখার নখের যোগ্যতাও অর্জন করতে পারিনাই। জানি স্যার কোনদিন এ লেখা পড়বেন না, তবে আপনারা যারা স্যারের লেখার ভক্ত তারা সবিনয়ে আমাকে ক্ষমা করবেন, স্যারের বানানো দুইটি চরিত্র নিয়ে স্যটেয়ার লেখার দায় থেকে। আর উপরে আমি যে ছবিটা ব্যাবহার করেছি সেটা আমার এডিট করা কিছু ডায়লগ স্যারের কয়েক টি বই থেকে নেয়া, ধন্যবাদ।

২৪/০২/২০১৩
শুনলাম দেয়াল মুক্তি পেয়েছে, কাল যাব দেয়াল বইটা খুজতে। পেলেই কিনব। এবারতো হিমুর বই কেনা হয় নি, তাই দেয়ালই সই।

২৫/০২/২০১৩
দেয়াল বইটা কিনলাম আজকে। অতি আবেগ নিয়ে পড়ছি। তবে সূচনা থেকে, ভুমিকা পর্যন্ত লেমন একটা নেই নেই অনুভুতি কাজ করছে। হুমায়ুন স্যার আমরা আপনাকে ভুলবোনা।

আমার আগের লেখা একটি পোষ্টের লিংকঃ
হাইপ্রফাইল(এটি কোন ১৮+ লেখা নয়।)
ফেইস বুকে আমাকে আমার পেইজ দেখতে চাইলে নিচের লিংকে যানঃ
View this link
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৬
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×