somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জনপ্রশাসন বিসিএস ও উপেক্ষিত তারুণ্য

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবি হেলাল হাফিজ তাঁর ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ নামক কবিতায় লিখেছেন, ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়’। কবির এ কথার সঙ্গে ভিন্নমত পোষণের সুযোগ কারও আছে বলে মনে হয় না। যৌবন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। সেই শ্রেষ্ঠ সময়টি কাজে লাগাতে তৎপর থাকে ব্যক্তি স্বয়ং, সমাজ ও রাষ্ট্র। এ সময়েই সে জীবনসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর এ সংগ্রাম তো যুদ্ধই বটে।
কিন্তু ব্যতিক্রম দেখছি আমাদের রাষ্ট্রকাঠামোয়। সে ব্যতিক্রম নানা পরিসরে। একাত্তর-পূর্ববর্তী সময়ে সাধারণত ২১ বছর বয়সে বিশ্ববিদ্যালয়জীবন শেষ হতো। ২৫ তো ছিল সরকারি চাকরিতে প্রবেশের শেষ সময়। মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে পড়াশোনা বিঘ্নের ক্ষতিটুকু মিটিয়ে নিতে সেই সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ২৭। আশা করা হয়েছিল, কয়েক বছরের মধ্যেই এটা আবার আগের মতো ২৫-ই হবে। তা হলো না; বরং হয়েছে ৩০। কারণ তো অবশ্যই আছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, শিক্ষাঙ্গনের সেশনজট এতে রাখছে মুখ্য ভূমিকা। আর সেই সেশনজটের জন্য হরতাল, অবরোধ, অসহযোগসহ অনেক কিছুই দায়ী। এই সেশনজট নিরসনের কোনো কার্যকর উদ্যোগও লক্ষণীয় নয়। তাই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা এরূপই হয়তো থাকবে। এমনকি বাড়িয়ে দেওয়ার দাবিও আছে। উল্লেখ্য, এই বয়সসীমাটি কিন্তু চাকরির জন্য আবেদন করার সময়কালের। এরপর বিভিন্ন ঘাট পেরিয়ে চাকরি পেতে আরও কত সময় লাগে, তা ভুক্তভোগী অনেকেই জানেন। তাহলে ধরে নিতে হয়, তারুণ্যের এই চমৎকার সময়টুকুর পাঁচ-সাত বছর আমরা এমনিতেই হেলাফেলায় নষ্ট করলাম।
এভাবে নষ্ট হওয়া সময়ের আরেকটি করুণ অধ্যায় সৃষ্টি করে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। ৩৪তম বিসিএসের কথাই ধরা যাক। দীর্ঘ ৩১ মাস সময় নিয়ে সুপারিশ চূড়ান্ত করেছে। সুপারিশের তালিকায় বিভিন্ন ক্যাডারের ২ হাজার ১৫৯ জন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ঢাকঢোল পিটিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলো ২০১৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। সে বছরেরই ২৪ মে প্রায় ১ লাখ ৯৬ হাজার পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারিতে অংশ নেন। প্রিলিমিনারির মূল্যায়ন হয় কম্পিউটারে। তা–ও দেড় মাস লেগেছে এই কাজটি সারতে। ৮ জুলাই প্রকাশিত ফলাফল বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেল, ১২ হাজার ৩৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। তীব্র প্রতিক্রিয়া হলো। আর সেই প্রতিক্রিয়া কমসংখ্যক প্রার্থী উত্তীর্ণ হওয়া নিয়ে নয়; মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে। এখানেই কোটা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। অনেকে কম নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে যান। বেশি নম্বরধারীরা পড়েছিলেন বাদ। অথচ প্রথাসিদ্ধভাবে প্রাধিকার কোটার প্রশ্ন আসে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল একীভূত করে মেধাতালিকা তৈরির পর।
যা-ই হোক, কিছুটা পিছু হটল পিএসসি। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই সংশোধিত ফলাফল প্রকাশিত হয়। উত্তীর্ণ হন ৪৬ হাজার ২৫০ জন। তখনই আশঙ্কা করা হয়েছিল, যাত্রাপথ মসৃণ হবে না। মোটে ২ হাজারের কিছু বেশি চাকরি। তার মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে মাত্র ৪৪২টি। সেখানে এত অধিকসংখ্যক প্রার্থীকে প্রিলিমিনারি থেকে লিখিত পরীক্ষায় ডাকা হলে বিপত্তি হবেই। তা-ই হয়েছে। লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১৪ সালের মার্চে। এর ফলও প্রকাশ করা হয় দুই দফায়। সেই বছরের ১৪ ডিসেম্বর ও ৩০ ডিসেম্বর। হাজার দশেক লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০১৫-এর ২১ জানুয়ারি থেকে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। চলে ১ জুন পর্যন্ত। মৌখিক পরীক্ষার পর সুপারিশ প্রণয়নে তিন মাস সময়ক্ষেপণ অনাকাঙ্ক্ষিত। কোনো মন্দ উদ্দেশ্য না-ই বা থাকল, অদক্ষতার ছাপ তো সুস্পষ্ট। ফলাফল প্রকািশত হলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশি তদন্তে চলে যাবে হয়তো বা আরও ছয় মাস। তাহলে যাঁরা বিসিএসের বিভিন্ন ক্যাডারে চাকরি পাবেন, তাঁরা শুধু পিএসসি পর্যায়েই হারালেন জীবনের তিনটি বছর। ধারণা করা হয়, মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০-এর কম বয়সী স্বল্পই থাকবেন। জানা বা শেখার এই সুবর্ণ সময়ের একটি অধ্যায় তাঁরা হারিয়েছেন। জাতি বঞ্চিত হলো একঝাঁক প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ-তরুণীর সময়োচিত সেবা পেতে। বৃদ্ধ মানুষের ভারে পৃথিবীর বেশ কিছু দেশ হিমশিম খেতে শুরু করেছে। আর আমরা হেলাফেলা করছি তারুণ্যের উদ্দীপনাকে কাজে লাগাতে।
সমস্যাটি জটিল। এরূপ আর কখনো ঘটেনি, এমনটা হয়তো নয়। তবে এবারের ঘটনাটি অনেকটা অদক্ষতার ফসল, এমনটা বলা চলে। সমস্যার মন্ত্রবৎ সমাধানও নেই। শিক্ষাঙ্গনের যে সেশনজট, তা নিয়ে আলোচনা পৃথক নিবন্ধে হতে পারে। তবে এটাও
ভাঙা দরকার। আর অসম্ভবও নয়। আমরা পরিস্থিতির কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে যুগের পর যুগ কাটাতে পারি না। অন্যদিকে বিসিএস নিয়োগ-প্রক্রিয়ার সময় যথেষ্ট কমিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে পিএসসির। আরেকটি পিএসসি করার কথা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এটা খুব কঠিন বা বিশাল ব্যয়বহুল কোনো কার্যক্রমও নয়। সেই পিএসসি গঠন করে কারিগরি পদ এবং সরকারি কলেজের শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করার দায়িত্ব দেওয়া যায়। কারিগরি পদে খুব বেশি প্রার্থী থাকেন না। তাঁদের সিলেবাসও কিছুটা পর্যালোচনা করে দেখা যেতে পারে। বিশেষায়িত পদে যাঁরা যাবেন, তাঁরা সে বিষয়েই পড়াশোনা করেছেন। তাঁদের সেই সব পরীক্ষার ফলাফলই প্রধান নিয়ামক হতে পারে বাছাইয়ে। অবশ্য কিছু লিখিত আর মৌখিক পরীক্ষা তো থাকবেই।
অন্যদিকে সাধারণ ক্যাডারের চাকরির সুপারিশের দায়িত্ব বর্তমান পিএসসির হাতে থাকতে পারে। নন-ক্যাডার পদগুলোর নিয়োগ-প্রক্রিয়া কর্মবৈশিষ্ট্য অনুসারে দুটি কমিশনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া যায়। সাধারণ ক্যাডারে নিয়োগে তারা ভারতের ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দৃষ্টান্তকে সামনে রাখতে পারে। সেই কমিশন শূন্য পদসংখ্যার ১০ গুণ প্রিলিমিনারি থেকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নিয়ে থাকে। আর মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয় শূন্য পদের দ্বিগুণ। পিএসসি এই দ্বিগুণ আর ১০ গুণ আমাদের সমাজকাঠামোর নিরিখে কিছুটা পরিবর্তনও করতে পারে। ভিন্ন কোনো ভালো প্রক্রিয়াও আনতে পারে সামনে। তা না করে চলমান নিয়মে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে আড়াই বছর কাটিয়ে দেওয়ার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। এই গোলকধাঁধা থেকে বের হয়ে আসতেই হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাতালিকা তৈরি করে এত দিনকার চলমান নিয়মে কোটা প্রয়োগ করা যায়। আর সেই কোটা পদ্ধতিও যৌক্তিক পর্যায়ে পুনর্বিন্যাস করে মেধা কোটা বৃদ্ধির সরকারি প্রতিশ্রুতি রয়েছে। এভাবে পরীক্ষা নিলে প্রতিবছর বিসিএস পরীক্ষা হতে পারে। সুপারিশ চূড়ান্ত হতে পারে সেই বছরই।
যতটুকু জানা যায়, সাধারণ ক্যাডারে শূন্য পদসংখ্যা ৪৪২টির বিপরীতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন প্রায় ছয় হাজার। অর্থাৎ শূন্য পদের ১৪ গুণের অধিক প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছে পিএসসি। এতে তাঁদের মূল্যবান সময় নষ্ট হলো। পাশাপাশি প্রার্থীদের বিরাট অংশও ছুটলেন মরীচিকার পেছনে। প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার বাদ গেলেন। হয়তো বা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স তাঁদের অনেকের চলে গেছে। বেশ কিছুসংখ্যক হারিয়ে ফেলেছেন নতুন করে লড়ার উদ্যম। করবেনটা কী? বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সামর্থ্য বা সুযোগ আছে কজনের? আর বেসরকারি চাকরি তো দেশে অনেক পরিমাণে নেই। পিএসসির বাইরে সরকারি চাকরি ছোট-বড় যেদিকে যা আছে, তা পেতে তদবির আর টাকার খেলার কথাও তো সবারই জানা। আবার টাকা দিয়েও অনেকে ঠকেন। পিএসসি নিয়েও এ অভিযোগ ছিল বা আছে। তবু তুলনামূলকভাবে নির্ভর করার মতো প্রতিষ্ঠান এটিই। একে আরও জোরদার করা যায়। একসময় তা করা হয়েছিল। এর সুফলও পেয়েছিল দেশ।
আমরা আশা করব, প্রতিষ্ঠানটি আবারও ঘুরে দাঁড়াবে দৃঢ়ভাবে। মেধাবী চাকরিপ্রার্থীদের প্রধান আশ্রয়স্থল হবে এটিই। অবশ্য প্রচলিত প্রক্রিয়া চালু থাকলে নিয়োগপর্বে কমবেশি এমনটাই ঘটবে। কিন্তু অবহেলিত তারুণ্যের দায় আমরা এড়াতে পারি না। যখন যাঁদের যুদ্ধে যাওয়ার কথা, তখনই তাঁদের তথায় পাঠাতে হবে। অন্যথায় বিরূপ ফল পড়বে রাষ্ট্রকাঠামোয়। আর তা পড়ছেও। এই অমূল্য তারুণ্যকে দ্রুত কাজে লাগানো গেলে বিষয়টি বিপরীতমুখী হবে। আর তা-ই তো হওয়া সংগত।
আলী ইমাম মজুমদার: সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×