somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলামি ব্যাংকিংয়ে সুদের কোনো প্রশ্নই আসে না: এক্সিম ব্যাংক এমডি

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া- এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী। মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর থানার হাজি মোহাম্মদ আরশাদ আলী এবং হামিদা বেগম দম্পত্তির ঘরে ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ইবরাহিমপুর ইশ্বরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা জবিন শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও মাস্টার্স, লন্ডন ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি অ্যান্ড রিসার্চ থেকে ম্যানেজমেন্ট এবং মার্কেটিং বিষয়ে এমবিএ সম্পন্ন করেন। পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন আমেরিকান ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা (ডিআইবিবি) বোথ পার্ট সম্পন্ন করেন এবং ইসলামিক ব্যাংকিং এণ্ড ইন্সুরেন্স বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা অর্জন করেন লন্ডন থেকে।

১৯৮৪ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড -এ প্রফেশনারী অফিসার পদে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর ব্যাংকিং জীবনের সূচনা। একজন আদর্শ ইসলামি ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। আজকেরই এই অবস্থানে অধিষ্ঠিত হওয়ার নেপথ্যে আল্লাহ মহানের রহমত ও সহযোগিতার পাশাপাশি তাঁর ঐ স্বপ্ন, যোগ্যতা এবং কঠোর-ঐকান্তিক পরিশ্রমকেই মূল পুজি বলে মনে করেন তিনি। ইসলামি ব্যাংকিং বিষয়ে লিখেছেন বেশ কিছু বই। হ্যান্ডবুক অব ইসলামিক ব্যাংকিং, ইসলামিক ব্যাংকিং ল এণ্ড প্র্যাকটিস তাঁর লেখা অন্যতম বই। জনাব হায়দার আলী মিয়া অংশ নিয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধেও। একটি বিনিয়োগবান্ধব ব্যাংক হিসেবে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর রয়েছে দেশজোড়া সুনাম-খ্যাতি। সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম পরিচালনায় বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্যাংকটি।

বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা, এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর নানাবিদ কার্যক্রম এবং বিশ্ব পরিমণ্ডলে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের বর্তমান অবস্থান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত নানান প্রসঙ্গ নিয়ে দীর্ঘ আলাপচারিতা হয় এক্সিম ব্যাংকস্থ তাঁর কার্যালয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রিয়.কম -এর বিভাগীয় প্রধান মাওলানা মিরাজ রহমান
2

প্রিয়.কম : এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর প্রতিষ্ঠা, পথচলা এবং বর্তমান কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু বলুন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া : ১৯৯৯ সালের ৩ আগস্ট এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর যাত্রা শুরু হয়। উল্লেখ্য, একটি সুদি ব্যাংক হিসেবে প্রথম এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো। পরবর্তীতে ব্যাংকটির পরিচালনা পরিষদ ও গ্রাহকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং আগ্রহের ভিত্তিতে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডকে শতভাগ শরিয়াহহ সম্মত পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত করা হয়। সুদি ব্যাংক থাকাকালীন তখন আমাদের মোট ২৬টি শাখা ছিলো। বর্তমানে ৮০টি শাখা রয়েছে। এছাড়া বর্তমানে আমাদের ডিপোজিট রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা এবং ইনভেস্টমেন্ট রয়েছে প্রায় সাড়ে পনের হাজার কোটি টাকা। আমাদের ব্যাংকটির নাম ও কাজের মাঝে চমৎকার মিল রয়েছে। আমরা নামেও যেমন এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কাজেও তেমন। ২০১৩ সালে আমরা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট বিজনেস করেছি ২৮ হাজার কোটি টাকা। ইস্টিটোন্ট ব্যাংকগুলোর চেয়েও যা অনেক বেশি। সুতরাং আমরা এ কথা গর্বের সাথে বলতে পারি যে- আমাদের নামের সাথে কাজে চমৎকার সামঞ্জস্য রয়েছে। বর্তমানে আমাদের ইনভেস্টমেন্ট প্রোডাক্ট রয়েছে ৪৬টি এবং ডিপোজিট প্রোডাক্ট রয়েছে ৬২টি। ইসভেস্টমেন্ট প্রোডাক্টগুলোর ক্ষেত্রে মুরাবাহা, বাইয়ে মুয়াজ্জাল, বাইয়ে সালাম ও ওয়াজিলত বিল ওকালা পদ্ধতিতে আমরা বিনিয়োগ করছি এবং ডিপোজিটগুলো সবই আমরা মুদারাবা পদ্ধতিতে গ্রহণ করছি।

প্রিয়.কম : একটি কনভেনশনাল ব্যাংক থেকে ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হওয়ার ঐতিহাসিক পটভূমি সম্পর্কে কিছু বলুন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড -এর প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের প্রতিষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। এই ব্যাংকের পথচলা ও সফলতা-ধারাবাহিকতা দেখে অনুপ্রাণীত হয়ে পরবর্তীতে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়, তারপর সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ১ জুলাই পরিচালনা পরিষদের সর্ব সম্মতিক্রমে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড সুদি ব্যাংক থেকে ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়। ২৬টি শাখা নিয়েই একযোগে আমরা ইসালমিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হই। সুদি ব্যাংক হিসেবে আমাদের পূর্বেকার সব হিসাবণ্ডনিকাশগুলোকে ইসলামিক ব্যাংকিং সামঞ্জস্য করে মাইগ্রেশন করি। মাইগ্রেশনের সময় কিছু কিছু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিলো। সেই সব জটিলতাগুলোকে নিরসন করার জন্য প্রথমেই আমরা নিজস্ব একটি শরিয়াহ বোর্ড গঠন করি এবং শরিয়াহ বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী এক এক করে সব বিষয়গুলোকে ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবিক পরিচালিত করি। সাথে সাথে আমাদের পরিচালনা পরিষদ, ম্যানেজমেন্ট ও সর্ব পর্যায়ের জনশক্তিকে ইসলামিক ব্যাংকিং ও অর্থনীতিতে পারদর্শী করে তোলার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করিয়েছি। মালয়েশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক আল-নিগারাসহ বিভিন্ন ইসলামিক ব্যাংকগুলোর সাথে আমরা মিটিং করেছি, প্রশিক্ষণ নিয়েছি এবং বিভিন্ন ওর্য়াকশপে অংশ গ্রহণ করেছি। আমাদের তখনকার সব গ্রাহকের কাছে ইসলামিক ব্যাংক করার মর্মে চিঠি প্রদান করা হয় এবং সবার কাছ থেকেই আমরা ইতিবাচক আগ্রহ পাই। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে বিজ্ঞাপণ প্রদান করি- এভাবে সর্ব প্রকারের সব অনুমোদন পাওয়ার পর; প্রক্রিয়াগত সব কাজ পরিপালন করার পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আমরাই সর্বপ্রথম কনভেনশনাল ব্যাংক থেকে ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হওয়ার অনুমোদন লাভ করি। একটি কনভেনশনাল ব্যাংককে ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে ম্যামোরে-ম আর্টিকেলটি পরিবর্তন করানোর জন্য সর্বোচ্চ আদালত থেকে অনুমোদন নেওয়াসহ আরো বেশ কিছু জটিলতা ছিলো- আল্লাহর অশেষ রহমত এবং আমাদের পরিচালনা পরিষদের ঐকান্তিক ইচ্ছায় সব প্রকারের সব জটিলতাকে আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান করি এবং সর্বোচ্চ আদালত ও বাংলাদেশে ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডকে ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত করি। পূণার্ঙ্গ সুদি ব্যাংক থেকে পূণার্ঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হয়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের ব্যাংকিং সেক্টরে একটি বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড।


প্রিয়.কম : পরিচালনা পরিষদের মাঝে কনভেনশনাল ব্যাংক থেকে ইসলামিক ব্যাংকে রূপান্তরিত হওয়ার যে চেতনা সৃষ্টির কথা আপনি বললেন, এই চেতনা সৃষ্টির নেপথ্যে প্রধান কারণ কি ছিলো? ইসলামিক শরিয়াহ ব্যাংকিংগত মূল্যবোধ নাকি ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অর্থনৈতিক সফলতা?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি- আমাদের মাঝে এই দুটি কারণই কাজ করেছে। আমরা চেয়েছি ইহকালীন ও পরকালীন সফলতা ও কল্যাণ। সুদের কুফল ও ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের কল্যাণমুখিতা বিষয়ক কোরান-হাদিসের আলোচনাগুলোকে আমাদের পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা সবাই অনুধাবন করেছেন এবং সবাই মিলে একসাথে সিন্ধান্ত নিয়েছেন যে, আমরা আর সুদি ব্যাংকিং পরিচালনা করবো না।

প্রিয়.কম: বাংলাদেশে দুই ধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। এক. সুদি ব্যাংকিং। দুই. ইসলামিক ব্যাংকিং। এই দুই ধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যকার পার্থক্য এবং সুবিধা-উপকারিতা কি?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: আমরা সবাই জানি বাংলাদেশে দুটি ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রয়েছে। এক. সুদি ব্যাংকিং ব্যবস্থা। দুই. ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা। এই দুই ধারার ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাঝে মৌলিক কিছু পার্থক্য রয়েছে। যার অন্যতম একটি হলো- ইসলামিক ব্যাংকিং হলো সুদহীন ব্যাংকিং ব্যবস্থা আর অন্যগুলো হলো সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা।

ইসলামিক ব্যাংকিং এবং সুদি ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্যে উদ্দেশ্যগত পার্থক্যটাই প্রধান- ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে লাভ-ক্ষতির ভিত্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা করা। আর সুদি ব্যংকগুলো কেবল লাভের উদ্দেশ্যেই ব্যবসা পরিচালনা করে থাকে।

প্রতিটি ইসলামিক ব্যাংকের নিজস্ব শরিয়াহ বোর্ড থাকে। এছাড়া বাংলাদেশের সব ইসলামিক ব্যাংকের সমন্বয়ে গঠিত আলাদা সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ডও রয়েছে। শরিয়াহ বোর্ড প্রতিটি ব্যাংকের ইনভেস্টমেন্ট ও ডিপোজিট প্রোডাক্টগুলো ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবিক হচ্ছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করে। পক্ষান্তরে সুদি ব্যাংকগুলোতে কিন্তু কোনো শরিয়াহ বোর্ড থাকে না এবং তাদের প্রেডাক্টগুলো শরিয়াহ মোতাবিক যাচাই-বাছাইও হয় না। যার কারণে সুদি ব্যাংকগুলো মদ-সিগারেটের কারখানায়ও ইনভেস্ট করতে পারে কিন্তু একটি ইসলামিক ব্যাংক তা পারে না। ইসলামিক ব্যাংকের প্রতিটি ইনভেস্টমেন্টের জন্য শরিয়াহ অনুমোদিত প্রজেক্ট হতে হয়।

ইসলামিক ব্যাংকগুলো সিএসআর কার্যক্রমের ওপর বেশ গুরুত্ব প্রদান করে থাকে কিন্তু সুদি ব্যাংকগুলো এক্ষেত্রে তেমনভাবে এগিয়ে আসে না। ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের লক্ষ্য হচ্ছে উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা এবং সমাজের অবহেলিত মানুষকে সহযোগিতা প্রদান করার মাধ্যমে কল্যাণ সাধন করা। আর সুদি ব্যাংকের নীতি হচ্ছে তৈলাক্ত মাথায় আরো তেল ঢালা।



ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে প্রফিট বা লাভ মূখ্য নয়, মূখ্য হলো সামাজিক দায়বদ্ধতা। সুদি ব্যাংকগুলো কল মানি থেকে নির্দিষ্ট রেট-সুদে টাকা বৃদ্ধি করতে পারে কিন্তু ইসলামিক ব্যাংক তা করে না। এ জন্যই বাংলাদেশে ইসলামিক মানি মার্কেট করা হয়েছে। আমরা সেই ইসলামিক মানি মার্কেট থেকে গ্রহণ করি। অর্থাৎ আমরা ইসলামিক ব্যাংক থেকে টাকা নেই আবার ইসলামিক ব্যাংককে টাকা প্রদান করি। আরো একটি ব্যাপার হলো- ইসলামিক ব্যাংকগুলো কিন্তু সব সময় লাভ-ক্ষতির ভিত্তিকে বিনিয়োগ করে পক্ষান্তরে সুদি ব্যাংকগুলো একমাত্র লাভের উদ্দেশ্যে ঋণ প্রদান করে। ঋণ সব সময় সুদের সাথে সম্পৃক্ত আর বিনিয়োগ লাভ-লোকসানের সাথে সম্পৃক্ত। ব্যবসায় লাভও হতে পারে ক্ষতিও হতে পারে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবিক পরিচালিত ব্যাংকিং কার্যক্রমের প্রতিটি পদক্ষেপই কোরান-হাদিস মোতাবিক ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রভুর দরবারে এর একটি প্রতিদান গচ্ছিত থাকবে। সুদি ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে তা ভাবাই যায় না।

প্রিয়.কম: নিউইর্য়কের একটি সভার এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডকে আপনি বাংলাদেশের আধুনিক ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের পথিকৃৎ বলেছিলেন- বিষয়টি দয়া করে ব্যাখ্যা করুন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডই যে বাংলাদেশের আধুনিক ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের পথিকৃৎ -এ কথার বহু প্রমাণ রয়েছে। এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সুইজারল্যাণ্ডের টি২৪ নামক একটি সফটওয়্যারের ইসলামিক ভার্সনটি আমরা ব্যবহার করি। এটি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের সর্বোচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন ইসলামিক ভার্সন সমৃদ্ধ একটি সফটওয়্যার। বাংলাদেশে ইসলামিক ভিসা কার্ডের মাধ্যমে আমরাই প্রথম এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করি। ইসলামিক ব্যাংক কিন্তু টাকার সাথে টাকা লেনদেন করে না। পণ্যের বিপরীতে টাকা প্রদান করাই ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের মূলনীতি। আমাদের এই ভিসা কার্ড ব্যবহার করে যখন কোনো গ্রাহক কোনো পণ্য ক্রয় করে তখন আমাদের কাছে একটি ক্যাশ মেমো চলে আসে এবং আমরা নিশ্চিত হই যে গ্রাহক পণ্য ক্রয় করেছে। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইসলামিক ভিসা কার্ড পদ্ধতির এমন প্রযুক্তি বাংলাদেশে এক্সিম ব্যাংকই প্রথম চালু করেছে।

শতভাগ শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতি মোতাবিক ক্যাপিটাল মার্কেটের ইসলামিক প্রোডাক্টের শেয়ার কেনা-বেচা করার জন্য আমরাই প্রথম এক্সিম ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড নামে মার্চেন্ট ব্যাংকিং চালু করি। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত এমন উদ্যোগ আর কেউ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়নি।

মুদারাবা পদ্ধতিতে আমরা ডিপোজিট গ্রহণ করছি এবং মুশারাকা পদ্ধতিতে আমরা বিল পাচের্স করছি। যেটা ইল্যান্ড বিল পাচের্স নামে পরিচিতি। এই ক্ষেত্রেও এক্সিম ব্যাংক এককভাবে এগিয়ে রয়েছে। ওয়াজিলত বিল ওকালা পদ্ধতিতে বিকল্প নগদ সুবিধা প্রদান নামে আমাদের একটি কার্যক্রম রয়েছে আমাদের। বাংলাদেশে ব্যাংক থেকে ক্যাশ ইনসেন্টিফ হিসেবে যে অর্থ প্রদান করা হয় তার বিপরীতে ওয়াজিলত বিল ওকালা পদ্ধতিতে এ্যাডভান্স ফাইন্যান্স করার একটি কার্যক্রম বাংলাদেশে আমরাই প্রথম চালু করেছি। এছাড়া আমাদের রয়েছে মুদারাবা দেনমোহর এ্যাকাউন্ট, আমাদের রয়েছে মুদারাবা ওয়াকফ ডিপোজিট এ্যাকাউন্ট- যা বাংলাদেশের সর্বপ্রথম আমরাই চালু করেছি। বাংলাদেশের বর্তমান ৫৭টি ব্যাংকের মাঝে কোনো ব্যাংক কর্জে হাসান প্রদানের কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করেনি। কিন্তু চলতি বছরসহ সর্বমোট ২৭৮ জন গরিবণ্ডমেধাবী ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য আমরা প্রফিট ফ্রি লোন হিসেবে কর্জে হাসান প্রদান করেছি এবং এ কর্জে হাসানা প্রদান করার পদ্ধতিতে আমরা অনুসরণ করছি শরিয়াহ সম্মত নীতিমালা। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে তাদের সার্টিফিকেটগুলো জমা রেখে কর্জে হাসানা প্রদান করা হয় এবং প্রত্যেকের কাছ থেকে পড়াশুনা শেষে চাকুরীকালীন মূল টাকা সুবিধা মতো পরিমাণ ও পদ্ধতিতে ফেরত প্রদানে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো ছাত্র-ছাত্রী যদি আল্লাহ প্রদত্ত কোনো কারণে মৃত্যু বরণ করে; আমরা তাহলে তার কর্জ মাফ করে দেই। আর এই কর্জে হাসানা প্রদান করার ক্ষেত্রে আমরা কোনো প্রকারের কোনো সার্ভিস চার্জ গ্রহণ করি না। এমন আরো অনেক প্রোডাক্ট-আয়োজন এবং উদ্যোগ-সফলতার বিবেচনায় এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডই বাংলাদেশের আধুনিক ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের পথিকৃৎ। আমি বলবো, কেবল পথিকৃৎ নয় বাংলাদেশের আধুনিক ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার।

প্রিয়.কম: আপনার এই দীর্ঘ ব্যাংকিং জীবনে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে এমন কোনো বিষয় কি রয়েছে- যা আপনি করতে চেয়েছেনে কিন্তু করতে পারেন নি?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: সব চাওয়া পৃথিবীতে পাওয়া হয় না। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী পৃথিবী এমন একটি জগত যেখানে মানুষের কিছু চাওয়া পূরণ করা হবে এবং কিছু পূরণ করা হবে না। ইসলামিক ব্যাংকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন ছিলো আমার, আল্লাহর রহমতে সেই স্বপ্ন থেকেই আমি আমার আজকের এই অবস্থানে। আমার ব্যাংকিং জীবনে ইসলামিক ব্যাংকিং নিয়ে আমার যা যা স্বপ্ন ছিলো অত্যন্ত স্বাধীনভাবে সব কিছুই আমি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমি চেয়েছি এক্সিম ব্যাংককে ইসলামিক ব্যাংক করতে; সেক্ষেত্রে আমি সফল হয়েছি। আমার ইচ্ছা ছিলো কল মানি মার্কেট; তা হয়েছে। ইসলামিক রি-ফাইন্যান্স করাও আমার ইচ্ছা ছিলো; সেটাও হয়েছে। ইসলামিক বণ্ড হয়েছে। এখন আমার ইচ্ছা রয়েছে সুকুক বণ্ড চালু করা, সেটাও হবে ইনশাআল্লাহ। এক্সিম বাংক পরিচালনা পরিষদ সুকুক বণ্ডকে অনুমোদন প্রদান করেছেন। বস্তুত আমাদের দেশটা যেহেতু এখনও সুদি সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে বিরাজ করছে তাই কিছু বিষয় এখনও আমরা করতে পারছি না।



প্রিয়.কম: ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের মৌলিক নীতিমালা-বৈশিষ্টগুলো কি কি, সংক্ষেপে যদি বলতেন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: একটি ইসলামিক ব্যাংককে মৌলিক যে সব নীতিমালা মেনে চলতে হয় সেগুলো হলো- একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা প্রদান করতে হবে। কর্জে হাসান প্রদানমূলক কার্যক্রম থাকতে হবে। শরিয়াহ বোর্ড থাকতে হবে। আর্থিক কার্যক্রম ও সেবায় কোরান-হাদিস ও ইজমা-কেয়াসের পরিস্কার প্রয়োগ থাকতে হবে। ইসলামিক রীতি-নীতি অনুযায়ী জনশক্তিকে তৈরির জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য একটি ফাউণ্ডেশন থাকতে হবে। ব্যাংকের কার্যক্রম ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবিক পরিচালিত হচ্ছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করার জন্য মুরাকিব থাকতে হবে। প্রতিটি ইসলামিক ব্যাংককে তার আয়ের একটি অংশকে ইসলামিক বিধান অনুযায়ী জাকাত হিসেবে প্রদান করতে হবে- এটা ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের প্রধান একটি বৈশিষ্ট। প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর কথা-বার্তা, আচার-ব্যবহার হতে হবে শালীন ও ইসলামিক শরিয়াহ সম্মত। সুদমুক্ত অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি এই সব বৈশিষ্টগুলো প্রতিটি ইসলামিক ব্যাংকে বিদ্যমান থাকা আবশ্যক।

প্রিয়.কম: বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে কিছু বলুন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ১৯৮৩ সাল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের এক যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা হয়। শুরুতে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার স্থায়ীত্ব নিয়ে অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করলেও এখন আর সে ধারনা কারোরই নেই। এখন সবাই স্বীকার করছে যে, ইসলামিক অর্থনীতি এবং ব্যাংকিংই ভালো। বাংলাদেশে বর্তমানে ২৪টি ব্যাংক ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তার মাঝে ৮টি সম্পূর্ণভাবে ইসলামিক ব্যাংক, ১০টিতে রয়েছে ইসলামিক শাখা ব্যাংকিং এবং ৬টিতে রয়েছে ইসলামিক উইন্ডো ব্যাংকিং। বাংলাদেশের সমগ্র অর্থনীতিতে ইসলামিক ব্যাংগুলোর ৩৬% কন্ট্রিবিউশন রয়েছে এবং এর গ্রোথ রেট রয়েছে ২৬%। এছাড়া ফাইন্যানসিয়াল স্ট্যাবিলিটির দিক বিবেচনায়ও বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলো ফাস্ট পজিশনে অবস্থিত রয়েছে। তৃণমূল পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবার বিস্তৃতির দিক বিবেচনায় বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা সারা বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে।

প্রিয়.কম: সারা বিশ্ব আজ ইসলামিক অর্থব্যবস্থা তথা ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের দিকে অগ্রসমান- এর কারণ কি বলে আপনি মনে করেন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিমণ্ডলে বিশাল একটি ভূমিকা পালন করছে ইসলামিক অর্থনীতি তথা ইসলামিক ব্যাংকিং। বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রায় পনের হাজারের মতো ইসলামিক ব্যাংক এবং ইসলামিক ফাইন্যানসিয়াল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদের মূল এ্যাসেটের পরিমাণ হচ্ছে ২১০০ বিলিয়ন ইউএস ডলার এবং প্রতি বছর এদের গ্রোথ রেট রয়েছে ২৬%। লট্স ব্যাংক, কমার্স ব্যাংক, হংকং সাংহাই ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, বার্কলেস ব্যাংক- এমন বিশ্ব বিখ্যাত সব ব্যাংকেই এখন ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো রয়েছে। তারা এখন এই কথাটি উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে যে, ইসলামিক ব্যাংকিংই উপকারি। কারণ তারা দেখছে, ইসলামিক ব্যাংক রিয়েল এ্যাসেটের বিপরীতে বিনিয়োগ করে থাকে। ইসলামিক ব্যাংকগুলোর প্রতিটি প্রকল্প, প্রতিটি চুক্তির মাধ্যমে শতভাগ রিয়েল এ্যাসেট তৈরি হয়। তারা উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে যে, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, বেকারত্ব দূরীভূত করা, মানি ইনফ্লিশন না থাকা এবং সিএসআর কার্যক্রমকে তড়ান্বিত করার ক্ষেত্রে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনার তুলনা হয় না। তাই আজ সারা বিশ্বে ইসলামিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা সমাদৃত হচ্ছে। এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ২১০০ মতো ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। তার মাঝে একটিও ইসলামিক ব্যাংক ছিলো না। বিশ্বের ব্যাংকিং ইতিহাসে এমন কোনো নজির আজও সৃষ্টি হয়নি। পৃথিবীর কোনো একটি দেশে কোনো একটি ইসলামিক ব্যাংক বা ইসলামিক ফাইন্যানসিয়াল প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে এমন কোনো প্রমাণও পাওয়া যায় না।



প্রিয়.কম: যদি কখনো এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড-এর কোনো প্রক্রিয়া ইসলামিক শরিয়াহ পরিপন্থী বলে সাক্ষ্য-প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হয়, সেক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা কি হবে?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড-এ শরিয়াহ পরিপন্থী কোনো কাজ, কোনো প্রজেক্ট বা কোনো লেনদেন হওয়ার কোনো প্রকারের কোনো অবকাশ নেই। কারণ আমাদের নিজস্ব শক্তিশালী শরিয়াহ বোর্ড রয়েছে এবং শরিয়াহ বোর্ডের সদস্যরা আমাদের সর্ব প্রকার ইনভেস্টমেন্ট-ডিপোজিট ও লেনদেনকে প্রতিনিয়ত মনিটর করছেন। তাঁদের অনুমোদন ছাড়া আমরা কোনো ইনভেস্টমেন্ট-ডিপোজিট ও লেনদেন করি না। ২০০৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড-এ ঘটেনি এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে না ইনশা আল্লাহ। তদুপরি আপনার প্রশ্নের উত্তর হিসেবে বলছি- যদি কখনো এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড-এর কোনো প্রক্রিয়া ইসলামিক শরিয়াহ পরিপন্থী বলে সাক্ষ্য-প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত হয় তাৎক্ষণিকভাবে আমরা সেটাকে রিজেক্ট ঘোষণা করবো এবং ঐ খাত থেকে আসা আয়কে আমরা কখনোই ব্যাংকের আয়ে অর্ন্তভূক্ত করবো না।

প্রিয়.কম: ব্যাংকে কর্মরত জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ প্রদানের কথা বললেন আপনি। আপনি কি মনে করেন যে, শুধু নলেজগত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমেই ব্যাংকিং সেক্টরের সর্ব প্রকার অনৈতিক কাজ বা লেনদেনগত দূনীর্তি বন্ধ করা সম্ভব?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ব্যাংকে কর্মরত জনশক্তির মধ্যে থেকে দূনীর্তিপ্রবণ মানসিকতা দূর করার জন্য নলেজগত প্রশিক্ষণ প্রদানের সাথে সাথে আরো বেশ কিছু জিনিসের দরকার রয়েছে। ভালো কাজ ও খারাপ কাজ সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা থাকতে হবে এবং ভালো ও খারাপ কাজের প্রতিদান-পরিণাম জানা থাকতে হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ব্যাংকে কর্মরত জনশক্তির মাঝে এসব চেতনা সৃষ্টি করা এবং চিন্তাগত মটিভেশন করা সম্ভব হয়। আর চেতনা সৃষ্টির মাধ্যমেই মানুষের মাঝে আগ্রহ তৈরি হয়।

প্রিয়.কম: ২০০৪ সালে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড ইসলামিক ব্যাংকিং শুরু করেছে। বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অগ্রগতিতে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর ভূমিকা কি?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অগ্রগতিতে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড দৃষ্টান্তমূলক বিভিন্ন ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। দশ বছরের এই ব্যাংকিং জীবনে প্রায় ২৪০০ জনশক্তিকে আমরা ইসলামিক ব্যাংকিং ও অর্থনীতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত এই বিশাল জনশক্তি বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের অন্যতম একটি অর্জন। গুড গর্ভনেন্স এবং গুড কর্পোরেট কালাচার প্রতিষ্ঠার বিবেচনায়ও এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড অন্য সব ব্যাংকগুলোর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ব্যাংকে কর্মরত জনশক্তির মাঝে ইসলামিক মোয়ামালাত এবং পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধকে সমুন্নত রাখার পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। আমাদের রয়েছে এক্সিলেন্ট কর্পোরেট ম্যানেজমেন্ট। ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং প্রতিষ্ঠানের সার্বিক মানসম্পন্নতার বিবেচনায় ইউকে ওয়াল্ড ফাইন্যান্স কর্তৃপক্ষ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেডকে বেস্ট ইসলামিক ব্যাংকিং এ্যাওয়ার্ড ২০১৩ প্রদান করেছে। আমাদের মার্কেটিং প্রোডাক্টগুলো ইউনিক এবং এক্সিলেন্ট। আমাদের ডেলিভারি এক্সিলেন্ট। মাত্র দশ বছরে ৬২টি ডিপোজিট প্রোডাক্ট এবং ৪৬টি ইনভেস্টমেন্ট প্রোডাক্ট তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। বাংলাদেশের বিদ্যমান ইসলামিক ব্যাংকগুলোর মাঝে আমাদেরই সর্বোচ্চ পরিমাণ ডিপোজিট প্রোডাক্ট রয়েছে। এছাড়া এই দশ বছরে একটি আদর্শ শরিয়াহ বোর্ড ডেভেলপ করতে সক্ষম হয়েছে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড। আমি বলবো, মাত্র দশ বছরে বাংলাদেশের ইসলামিক অর্থনীতি তথা ইসলামিক ব্যাংকিংয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার মাধ্যমে এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি আদর্শ ইসলামিক ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

প্রিয়.কম: বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকিং নিয়ে জনগণের মাঝে নেতিবাচক কিছু কথার প্রচলন রয়েছে। অনেকেই বলে, ইসলামিক ব্যাংকগুলোর ভেতরের অবস্থা আর বাহিরের অবস্থা এক নয়। আবার অনেকে বলে, ইসলামিক ব্যাংকগুলো ঘুরিয়ে সুদ খায়- একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে এসব মন্তব্যকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: এসব কথা যারা বলে তারা আসলে না জানার কারণে এমনটা বলে। ইসলামিক ব্যাংকিং এবং সুদি ব্যাংকিংয়ের পার্থক্যই আসলে তারা জানে না। সুদ এবং মুনাফা সম্পূর্ণ আলাদা দুটি বিষয়। আল্লাহ তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। আমাদেরকে আগে জানতে হবে এবং বুঝতে হবে সুদ কি এবং মুনাফা কি। কোনো নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের উপর নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট হারে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করাকে সুদ বলা হয়। আর মুনাফা হচ্ছে লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে পুজির অতিরিক্ত উপার্জন। দুটি ব্যবস্থার মাই-সেটই আলাদা। ইসলামিক ব্যাংকগুলো মুনাফার ভিত্তিকে ব্যবসা পরিচালনা করে। আর মুনাফা ঘুরিয়ে খাওয়া সুদ নয়। তাই আমি বলবো, যারা এসব কথা বলে, ইসলামিক ব্যাংকিং সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারণে তারা এমনটা বলে। এমন কথা রাসুল [সা.]-এর জামানাতেও মানুষ বলেছে। আল্লাহ তায়ালা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম- এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর লোকেরা রাসুল [সা.]-কে বলেছিলো ব্যবসা তো সুদের মতোই। প্রকৃত সত্য হলো- ব্যবসা সুদ নয় এবং সুদ ব্যবসা নয়। কোনো ইসলামিক ব্যাংককে সুদি ব্যাংকের মতো বলার সুযোগ নেই। ইসলামিক ব্যাংকের টার্ম, টার্মলজি, পেপার এবং সব ডকুমেন্টই ইসলামিক শরিয়াহ মোতাবিক তৈরি করা।

প্রিয়.কম: অনেক সাবেক ব্যাংকারের কাছ থেকে আমরা শুনেছি বা বিভিন্ন ব্লগে কিছু সাবেক ব্যাংকারের লেখাও আমরা পড়েছি। তাদের বক্তব্য হলো- আমরা যেমনটা ভেবে ইসলামিক ব্যাংকে চাকুরী নিয়েছি, ঠিক তেমনটা না পেয়ে চাকুরী ছাড়তে বাধ্য হয়েছি। এমন মন্তব্যকে আপনি কীভাবে দেখেন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: প্রকৃত কথা হচ্ছে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে এখনও গতানুগতিক পদ্ধতির সুদি অর্থ ব্যবস্থার প্রচলনই বেশি। সুদি অর্থব্যবস্থার এই রাজ্যে ইসলামিক ব্যাংকিং ও অর্থনীতি একটি নিউ কনসেপ্ট। বিভিন্ন ইসলামিক ব্যাংকে কর্মরত অনেক জনশক্তি এখনও ইসলামিক ব্যাংকিংকে পুরোপুরিভাবে আয়ত্ব করতে সক্ষম হননি। আপনি সে সব সাবেক ব্যাংকারদের কথা কোড করে বলছেন, তাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা হয়তো এমন হয়েছে যে, নতুন কোনো অফিসারের আন্ডারে তিনি ছিলেন এবং ঐ অফিসার তাকে ইসলামিক ব্যাংকিং বুঝাতে সক্ষম হননি। সর্বপরি কথা হলো- কোনো একজন ব্যক্তি বা কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে দলির হিসেবে গ্রহণ করে গোটা ইসলামিক ব্যাংকিংকে দোষী করা যাবে না।



প্রিয়.কম: বাংলাদেশের ইসলামিক ব্যাংকগুলো শতভাগ সুদমুক্ত কিনা?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: বাংলাদেশে যে ২৪টি ব্যাংকে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে আমার দৃষ্টিতে তাদের সবাই শতভাগ সুদমুক্তভাবে শরিয়াহ সম্মত পদ্ধতিতে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং সবার নিজস্ব শরিয়াহ বোর্ড রয়েছে। প্রতিটি শরিয়াহ বোর্ডে দেশ-বরেণ্য আলেম-উলামা, অভিজ্ঞ ব্যাংকার, আইনবিদ, মুরাকিব এবং বিশিষ্ট ফকিহগণ রয়েছে- তাদের পরামর্শ এবং নিদের্শনা অনুযায়ী প্রতিটি ইসলামিক ব্যাংক পরিচালিত হয়। সুতরাং সুদযুক্ত হওয়ার কোনো প্রশ্নই থাকে না। কথাটি আমি আগেও বলেছি, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে এখনও গতানুগতিক পদ্ধতির সুদি অর্থ ব্যবস্থার প্রচলনই বেশি। নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিটি ইসলামিক ব্যাংককেই একটি রিজার্ভ রাখতেই হবে এবং সেই রিজার্ভ থেকে একটি ইনকাম হয়- কিন্তু কোনো ইসলামিক ব্যাংকই ঐ ইনকাম বা এমন আরো যে সব ইনকাম আছে সেগুলোকে ব্যাংকের আয়ে যুক্ত করেন না। এই আয়গুলো সরাসরি সাদাকা ফাণ্ডে চলে যায় এবং ইসলামিক শরিয়াহ অনুযায়ী সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কাজে ব্যয় হয়।

প্রিয়.কম: বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রমগত বর্তমান বিস্তৃতি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক সহযোগিতা প্রদান করেছে। আমাদের জানা মতে এখনও বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যাক্ট হয়নি- এ সম্পর্কে আপনি কিছু বলুন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিং কার্যক্রমগত বর্তমান বিস্তৃতি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক সহযোগিতা প্রদান করেছে এবং তাদের বিভিন্ন সহযোগিতাগুলো ভূয়সী প্রশংসার দাবিদার। বাংলাদেশ ব্যাংক আমাদেরকে ইসলামিক ব্যাংকিং গাইডলাইন প্রদান করেছে, ইসলামিক ব্যাংকিং রি-ফাইন্যান্স ফ্যাসালিটি পেয়েছি আমরা। ইসলামিক বণ্ড মার্কেট, ইসলামিক কল মানি মার্কেট, ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপ হয়েছে। ইসলামিক শরিয়াহ পদ্ধতিতে ইনট্রিগেডেট ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট ও মার্চে- ব্যাংকিং ডেভেলপ হয়েছে। শুধু এখন বাকি আছে ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যাক্ট। পৃথিবীর সব জায়গাতেই অ্যাক্ট আগে হয়েছে গাইডলাইন বা অন্য সব কাজ পরে হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটু ব্যাতিক্রম হয়েছে। আমাদের অন্য সব কাজই আগে হয়েছে কিন্তু অ্যাক্ট এখনও হয়নি। ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যাক্ট -এর কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর মহোদয়ও এ ব্যাপারে খুব আন্তরিক। ইসলামিক ব্যাংকস কনসালল্টেটিভ ফোরামও (আইবিসিএফ) অ্যাক্ট নিয়ে কাজ করছে। ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যাক্ট সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে গেছে এবং কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে খুব শীঘ্রই অনুমোদন হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

প্রিয়.কম: বর্তমানে বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে কি কি সমস্যা রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: বাংলাদেশে ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে এখন আসলে তেমন বড় আকারের কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহ মহানের রহমতে সমস্যার সময়টা পেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি আমরা। তবে এখনও কিছু সমস্যা রয়েছে। যেমন- ইসলামিক ব্যাংকিং অ্যাক্ট হলে ইসলামিক ব্যাংকিং পরিপূর্ণতা লাভ করবে। ইসলামিক ব্যাংকিং বিষয়ে যোগ্যতা ও জ্ঞানগত কিছু সমস্যা রয়েছে। আরেটা হলো ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাণ্ডর্ড এ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে এখনও আমরা পিছিয়ে রয়েছি। আমরা চাচ্ছি সবগুলো ইসলামিক ব্যাংকই একটি ইউনিফর্ম এ্যাকাউন্টিং সিস্টেমের আওতায় থাকবে।


প্রিয়.কম: ইসলামিক ব্যাংকিং বিষয়ে আপনার পড়া কিছু ভালো বই ও প্রকাশনার কথা বলুন?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ইসলামিক ব্যাংকিংয়ের ওপর এখন অনেক বই রয়েছে। তবে পাকিস্তানের লেখক ড. ওমর চাপরার বইগুলো আমাকে খুব বেশি আকৃষ্ট করে। বাংলাতেও অনেক বই এখন হয়েছে। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডও ভালো কিছু প্রকাশনা করেছে। আমার নিজের লেখা কিছু বইও রয়েছে।

প্রিয়.কম: ব্যাংকিং কার্যক্রমের পাশাপাশি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড -এর আর কি কি সেবামূলক কার্যক্রম রয়েছে?

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ব্যাংকিং কার্যক্রমের পাশাপাশি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড বৃহৎ পরিসরে সিএসআর কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং এক্সিম ব্যাংক ফাউ-েশনের মাধ্যমে সিএসআর কার্যক্রমের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই আমরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছি। একটি স্কলারশীপ প্রকল্প রয়েছে আমাদের- প্রায় ২৭০০ শিক্ষার্থী আমাদের এই প্রকল্পের আওতাধীন রয়েছে। আমাদের রয়েছে কর্জে হাসান প্রকল্প, রয়েছে এক্সিম বাংক হাসপাতাল। মুক্তিযোদ্ধদেরকে এই হাসপাতালে বিনামূল্যে এবং দরিদ্র-অসহায়দেরকে স্বল্পমূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৩০ বেড সমৃদ্ধ অত্যাধুনিক বার্ন ইউনিটটি এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত। বিডিআর বিদ্রোহে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০টি পরিবারের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব এক্সিম ব্যাংক বহন করছে। রানা প্লাজার যে দূঘটনাটি ঘটলো এক্সিম ব্যাংক সেখানে বৃহৎ অংকের একটি সহযোগিতা প্রদান করেছে। চাপাইনবাবগঞ্জে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি আমরা। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও প্রতিষ্ঠানে ট্রান্সর্পোটের ব্যবস্থা করে দিয়েছে এক্সিম ব্যাংক। আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে ৫টিসহ বিভিন্ন হাসপাতালে এম্বুলেন্স প্রদান করেছি আমরা। এছাড়া বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূযোগে এক্সিম ব্যাংক সর্বোচ্চ পরিমাণ সহযোগিতা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।

প্রিয়.কম: শত ব্যস্ততার মাঝেও প্রিয়.কমকে সময় প্রদান করার জন্য আনাকে ধন্যবাদ।

ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া: ইসলামিক ব্যাংকিং নিয়ে কাজ করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রিয়.কমকে এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রিয়.কম কর্তৃপক্ষকে।

লিনক: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:০৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×