somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারাবিহ রাকাত সংখ্যা : একটি চিন্তা ভিত্তিক পর্যালোচনা

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


রমাদান শুরু হওয়ার পর থেকে তারাবিহ সালাতের রাকাত সংখ্যা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে । ০৮/২০ কোনটা হবে ? হানফি বা মাযহাবী আবার আহলে হাদিস বা সালাফী ? কিন্তু তারাবিহ নিয়ে আমার ভিন্ন চিন্তা রয়েছে ।





আমি শুরুতেই তারাবিহ শব্দটার সাথে একমত নই । কেননা কুরআন ও হাদিসের পরিভাষা এটি নয় । হাদিসের পরিভাষা হল কিয়ামুল লাইল । তাই তারাবিহ নয়, বরং কিয়ামুল লাইল বলাটাই সুন্নহ সম্মত ।





রাসুলুল্লাহ স: রমাদান ও রমাদানের বাইরে কিয়ামুুল লাইল করতেন । তিনি অধিকাংশ সময় ০৮ রাকাত আদায় করতেন । অবশ্য রমাদানে তার আমল সম্পর্কে আলাদা কোন বর্ননা পাওয়া যায় না । কিন্তু সাহাবীদের পক্ষ থেকে ২০ রাকাতের দলিল পাওয়া যায় । একদিকে রাসুলের ০৮ রাকাত অন্যদিকে সাহাবিদের ২০ রাকাতের ইজমা দ্বারা প্রমাণিত হয়ে যে, কিয়ামুল লাইলে রাকাত সংখ্যা গুরুত্ব পুর্ন নয় । এবং তা শরীয়া প্রণেতা দ্বারা নির্ধারিতও নয় । আর তার পিছনের মৌলিক কারন হচ্ছে, কিয়ামুল লাইল হচ্ছে নফল ইবাদাত , এটি ফরজ নয় । সুতারং ঐচ্ছিক বিষয়ের দাবিই হচ্ছে তার বিষয়ে বান্দাকে স্বাধীনতা দেয়া ।





এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, রাসুল সা: কেন অধিকাংশ সময় ০৮ সালাত আদায় করতেন? কেন তিনি ০৬/১০/১২/১৪ বা তারও বেশি আদায় করতেন না ? এর মৌলিক কারন বুঝতে হলে আমাদেরকে রাসুল সা: এর অভ্যাস দেখতে হবে । আল্লাহর রাসুল সা: স্বাধারনত সালাতুল ইশা আদায় করেই ঘুমিয়ে যেতেন । এবং রাতের অর্ধেক বা দুই তৃতীয়ংশ শেষ হলে কিয়ামুল লাইল করতেন । ফলে তার কিয়ামুল লাইল এর সময়ের পরিমান হত বেশ দ্বীর্ঘ । আমরা অনুমান করলে তা প্রায় ২-৩ ঘন্টা । তিনি এই লম্বা সময়ে বিজ্ঞান ভিত্তিক ভাবে সময়কে ভাগ করেছেন । কিছু সময় তেলাওয়াত , কিছু সময় রুকু , সিজদা এবং তাশাহুদে কাটান । ফলে শারিরিক ও মানসিক ভাবে তিনি থাকেন শক্তিশালি । এবং তা আল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ার পথে বেশ সহায়ক ।





সুতরাং রাসুলের সা: নিয়মিত অভ্যাস থেকে আমরা যে মৌলিক সুন্নত বুঝতে পারি তা হল, কিয়ামুল লাইলের সংখ্যা বিবেচ্য বিষয় নয় ; বরং বিবেচ্য বিষয় হল কত সময় ধরে কিয়াম করা হচ্ছে । টাইম ইজ ইমপর্টেন্টে । এখন আপনি যদি ২/৩ ঘন্টার বেশি সময় ধরে সালাত আদায় করেন তাহরে ০৮ রাকাতের বেশি আদায় করুন । আবার যদি ০১ ঘন্টা বা তার চেয়ে কম সময় কিয়াম করেন তাহলে ০৮ রাকাতের কম আদায় করুন । তাই কিয়ামুল লাইলের রাকাত নির্ভর করছে আপনার সময় দানের উপর ।





আমাদের কে একথা ভাল করে বুঝতে হবে যে , সালাত আদায় মানে কেবল হুটহাট ওঠা বসার নাম নয় । কিংবা না বুঝে তেলাওয়াত করে যাওয়ার বিষয় নয় । বরং তা হচ্ছে মহান মালিকের সাথে তার বান্দার এক গভীর ভালবাসার মিলন । এক ধরনের ভাবের বিনিময় । সুতরাং তারাহুড়া করে সালাত আদায় করার নাম কিয়ামুল লাইল হতে পারে না । তাছাড়া একথা সত্য যে, নফল সালাতের উদ্দেশ্য ফরজের মত নয় । এখানে দায়িত্ব পালন থেকে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক তৈরির চিন্তা বেশি । তাই স্বাধারনত নফল সালাতে সময় ও মনযোগ বেশি দেয়ার দাবি করা হয় । এখন আপনি যদি তাড়াহুড়া করে তা আদায় করেন তাইলে সম্পর্ক কিভাবে উন্নয়ন সম্ভব ? আবার কেউ কেউ কিয়ামুল লাইল থেকে তারাবিহ নামে আলাদা সালাতের আবিষ্কার করেন । বস্তুত এমন টা করার সুযোগ নেই । আবার অনেকেতো কিয়ামুল লাইল বা তারাবিহ কে আবশ্যকীয় মনে করেন । কিন্তু তা হাদিসের ভাষায় প্রমাণিত নয় ।





সুতরাং আপনার যদি ২০ রাকাত সালাত আদায় করার জন্য পর্যাপ্ত সময় ও শক্তি না থাকে তাইলে কম আদায় করুন । যদিও তা ০৮ রাকাতের কম হয় । তাড়াহুড়া করে ৪০ রাকাত পড়ার চেয়েও ধির স্থির ভাবে ০২ রাকাত আদায় করা অনেক উত্তম এবং তাই সুন্নত ।





আসুন আমরা ইসলামের মৌলিক চেতনা কে সঠিক ভাবে আকড়ে ধরি । এবং কিয়ামুল লাইল আদায় করে জীবনের সকল গুনাহ কে মাফ করায়ে নেই ।আমিন
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×