একটা সুন্দর গ্রাম । গ্রামের মাঝখানে বিশাল খেলার মাঠ । একটাই মাত্র খেলার মাঠ ছিল ঐ গ্রামে । খেলার মাঠের দুই দিকে দুটি পাড়া যা উত্তরপাড়া আর দক্ষিনপাড়া নামে সবাই জানত । এ দুই পাড়ায়ই ছিল অনেক বাঘা বাঘা লোকজনের বাস । কেউ কারো থেকে মোটেই কম নয় । এ দুই পাড়ার মধ্যে সম্পর্ক ছিল সাপ- বেজির সম্পর্ক । অনেকটা দুই বাঘে সিংহে লড়ায়ের মতও বলা যায় । আর সে লড়াই খেলাকে কেন্দ্র করে মারাত্মক আকার ধারন করত । কখনো কখনো রক্তের দাগ পর্যন্ত দেখা যেতে লাগল ।
দিন যেতে না যেতে সে হিংস্রতা ক্রমে বাড়তে থাকে । এক পরুষ থেকে অন্য পরুষ কোন ভাবেই সে লড়াই থামে না । এক সময় খেলার মাঠ আর খেলার মাঠ রইল না , হয়ে গেল কারুক্ষেত্র । এ যেন রক্তের হলি খেলার মাঠ !! এক সময় ঐ মাঠের নাম হয়ে গেল ষাড়ের মাঠ । কেন জানিনা হয়ত ওখানের মানুষগুলো দেখতে ষাড়রে মত ছিল তাই ।
যেদিন উত্তরপাড়ার লোকজন খেলার মাঠে আসত সেদিন আর দক্ষিনপাড়ার কাউকে ঐ মাঠের আশে পাশে দেখা যেত না । কারন আসলেই গন ধোলাই খেয়ে জীবন শেষ !! আবার ঠিক দক্ষিনপাড়ার খেলার দিনে উত্তরপাড়ার কাউকে পেলে রাম ধোলাই !! এভাবেই দুই গ্রামের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বেড়ে উঠছে খেলার মাঠে ।
এভাবে যুগ আপডেট হল । লড়াই কেবল খেলার মাঠেই থাকল না । লড়াই এসে গেল বাজারের প্রতিটি দোকানে । লড়াই গেল স্কুলের পন্ডিতের টেবিলে , ছাত্রতের ব্যান্চে । চায়ের দোকানের প্রতি কাপ চায়ের ধোয়ার সাথে হিংস্রতা ছড়ালো প্রতি জনে । এক অঞ্চলের লোকেরা অন্য অঞ্চলকে বাশ দেয়ার জন্য সব সময় লেগে থাকল ।
হত্যা - খুন, মারামারি- কাটাকাটি করতে করতে একদিন খেলার মাঠ শুন্য হয়ে এল । কিছু কাউয়া ( কাক ) আর শকুন মাঝে মধ্যে উড়ে এসে ঐ মাঠে রোদ পোষাত । আস্তে আস্তে পুরো মাঠ জুড়ে হাত খানেক লম্বা ঘাস জন্ম নিল । ঐ মাঠের চারপাশ আজও বিরান ভুমি হয়ে পড়ে আছে । কেউ আর সেখানে যায়না অতীত ভয়ের স্মৃতি চারন করে ।
বি: দ্র: এটি একটি রূপক চিত্র । যার বাস্তবতা আমরা দেখছি আমাদের চার পাশে । পাচ বছর ধরে দেখে দেখে এখন শুন্য মাঠের দিকে যাচ্ছি । আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজাত করুন । আমিন ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:৫৪