ব্লগে আসতে এখন আর আগের মত আরাম পাই না। বিদেশ ভুঁইয়ে কাজ করি, দেশের গন্ধ পাওয়ার জন্য ব্লগে ঢু মারি। কিন্তু ইদানিং ব্লগে যে সব পোস্ট দেখি সেইগুলো পড়ে কোন আরাম পাই না। হাতে গনা দুই অল্প কিছু পোস্ট ছাড়া ভালো কোন পোস্ট নাই। সবচেয়ে বেশি কমেন্ট আসে ধর্ম বিষয়ক পোস্টে। আগে আস্তিক নাস্তিক ক্যাচাল হইত এখন ক্যাচাল হয় আস্তিক বনাম আস্তিক। হাদীস নিয়া এক পোস্ট আসছে, সেখানে মারামারি করতেছে আস্তিক বনাম আস্তিক। এক সময় আস্তিক ভাইয়েরা ধর্ম প্রচারের জন্য যুদ্ধ করছে নাস্তিক ভাইদের বিরুদ্ধে, নাস্তিকদের অধ্যায় শেষ। এখন কামড়াকামড়ি চলতেছে নিজেদের ভেতরে। এর পরের স্টেজে আস্তিক ভাইয়েরা কার সাথে যুদ্ধ করেন সেটা দেখার বিষয়। দেখা যাবে ডান হাত দিয়া বাম হাতরে দাবাইয়া বলতেছে - শালার বাম হাত! তুই শয়তান। কোপা! কোপাকোপিতে বাম হাত শহীদ হবার পর যুদ্ধ শুরু হবে ডান হাতের বিরুদ্ধে। ডান হাত গেলে যুদ্ধ হবে মুখ দিয়া। এইভাবে আস্তিক ভাইদের দেহের বাকি অন্য ভিন্নমত না নেয়ার কারনে নিজেকে নিজে শেষ করে দিয়ে পৃথিবী থেকে ধর্ম দুরে দিবেন।
আল্লাহ বলছেন একদিন দুনিয়াতে তাঁর নাম নেয়ার কেউ থাকবে না আর সেদিনই কেয়ামত হবে। আগে বুঝতাম না, দুনিয়ায় কিভাবে আল্লাহ নাম হারাইয়া যাইতে পারে। এখন বুঝছি, কিভাবে ঘটনাটা ঘটবে। এইভাবেই হাত পা মুখ কৃতকর্মের সাক্ষী দিবে।
রাজনীতি নিয়া পোস্ট লিখে সোনাগাজী মিয়া। দুনিয়ার সবাই ভোদাই, সে একমাত্র চালাক। দুনিয়ার কারো মাথায় মাল নাই, সব মাল তার ভেতরে আটকা পড়ছে। ফলে মাঝে মাঝে যখন কিছু মালের বোঝা কমে, শান্তি পাইলে দুই চাইরটা পোস্ট প্রসব করে যেখানে মোটামুটি লজিক থাকে, আলোচনা করা যায়। ব্লগ টিমকে পরামর্শ সোনাগাজী যেন মাল বর্জন সংক্রান্ত কোন জটিলতায় না পড়ে। অবশ্য এই কাজ ভালো করতে পারবে উনার দুই মুরিদ - রাজীব নূর আর বিশিষ্ট মডেল হান্টার।
অবশ্য একজন ভগ্নমনস্কতা বা সিজোফ্রেনিয়া রোগী হিসাবে নুর সাহেবের প্রতি আমার সমবেদনা আছে। ব্লগার নূরু আবার নিজেকে সিজোফ্রেনিয়ার রোগী ভাইবেন না। টুকলিফাইকে সম্পাদনার নামে আনাম পোস্ট হিসাবে চালানোকে আপনি একটি শিল্পে পরিনত করেছিলেন। কিন্তু ইহা যে শিল্প হিসাবে স্বীকৃতি পাইছে - তাহার প্রকৃত লেখা আছে 'আলিবাবা ও ৪০ চোরের' মধ্যে।
বুঝলাম এই ব্লগে এখন আর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গল্প, প্রবন্ধ বা ফিচার নিয়ে লেখার লোকগুলো নাই। অপু তানভীরকে ধন্যবাদ তিনি এক সময়ে সকল সিচুয়েনে প্রেমে পড়ার গল্প লেখার হাত থেকে বেরিয়ে এসেছেন। একটা সময় ছিলো যখন এমন কোন ঘটনা বা পরিস্থিতি ছিলো না যার প্রেক্ষিতে তিনি প্রেমে পড়ার গল্প লিখতে পারতেন না। ধরেন নায়ক বাথরুমে গেলো প্রবল প্রাকৃতিক চাপে হয়ত দেখা গেলো বাথরুমের ভেন্টিলেটরের ফাঁক দিয়ে সামনের বাসার কোন মেয়েকে দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়ে গেলেন।
তখন ব্লগে ইটিশ পিটিশ করার মত অনেক মেয়ে ব্লগার ছিলো। তারা এই সব গল্প প্রচুর খেত! ভাগ্যিস ঐ টাইপের মেয়েরা এখন আর ব্লগিং করে না। নইলে আমাদের ব্লগের অনেক নারী ব্লগার তাদেরকে অভিশাপ দিতেন এই ধরনের নন ইসলামিক কাজ করার জন্য। কিন্তু নিজেরা আবার চামে চিকনে ফিসফিস করে আসতেন। তো এখন অপু বিভিন্ন ভ্যারাইটি বিষয়ে লিখছে বা চেষ্টা করছে এটা ভালো।
তবে নতুন ব্লগারদের জন্য এখনও ভাগ্য ভালো। আমাদের সময়ের কিছু ব্লগার এখনও ব্লগিং করে যাচ্ছে। এদের থেকে নতুন ব্লগারা কতখানি শিখছে আল্লাহ ভালো জানেন। যেমন, ব্লগার সোনাবীজ ও ধুলোবালি ছাই, আহমেদ জি এস, জুন, মনিরা সুলতানা প্রমুখ এবং পরবর্তীতে যুক্ত হয়েছেন সেনাবাহিনীর এক সাবেক অফিসার - খায়রুল আহসান ভাই সহ আরো দুই একজন ব্লগার। আমি পুরানো ব্লগার হইলেও আমার কাছ থেকে কিছুই শেখার নাই।
ব্লগ টিমের কাছে কোন আশা নাই। আমার পুরানো আইডিতে এখনও ঢুকতে পারতেছি না ইমেইল পরিবর্তন না করে দেয়ায় জন্য। তারা গাটের পয়সা খরচ করে ব্লগ চালাচ্ছে এটাই বড় ব্যাপার। মামলা হামলা আর তো কম হলো না এই ব্লগ নিয়ে। তবুই এই ব্লগে আসি, কারন বাংলা ব্লগ মানে সামুকে মনে হয় আমাদের নিজেদের সামাজিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম। আমি ব্লগ টিমকে একটা আইডিয়া দিয়ে মেইল করেছি, দেখা যাক তারা কি বলে! বিদেশে কাজের ফাঁকে যখন ব্লগ ঢুকি, তখন বুকের মধ্যে একটা ধুপধুপ হয়!