================================
এই চিঠিটি অনেক বড় হওয়ায় তিনটি ভাগে ভাগ করে দেয়া হল।
================================
বহরমপুর নদীয়া,ভারত ০২/০৮/১৯৭১
মা,
তোমার শরীর ও মন ভাল আছে তো? আমি কোনোমতে বেঁচে আছি। তোমার দোয়া ও আল্লাহর রহমত ছাড়া কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের গোয়ালগাঁ যুদ্ধ থেকে কোনভাবেই বাচঁতে পারতাম না। তোমার চোখের জল ও বুকের যন্ত্রণা অবশ্যই থাকবে না।গত দশটি দিন আমি গ্রেনেডের আটটি স্প্লিন্টার-এর যন্ত্রণা নিয়ে বহরমপুর হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের ১৬ নং বেডে খুব কষ্টে আছি মা।আমি তোমার একমাত্র দুরন্ত সন্তান। মাস্টারদা সরকারি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত আমি প্রথম হয়ে পাস করেছি। কাজেম, হজরত, সামাদ, রজব স্যারের স্নেহ ও আদর আমি কখনো ভুলতে পারি না।সিক্স ও সেভেনেও আমি প্রথম হয়ে অষ্টম শ্রেণীতে ওঠার পরপরই বঙ্গবন্ধুর সতই মার্চের বাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে স্বাধীন করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছি। মা, গোয়ালগাঁ-এর তেফায়েলউদ্দিনের বাড়িতে গত ২২/০৭/১৯৭১ তারিখের রাত্রিতে ২৫ সদস্যের উচ্চ প্রশিক্ষিত একটি প্লাটুন নিয়ে অবস্থান নিলাম দুই কিলো দূরে মঠমড়িয়া গ্রমে এক পাকসেনা ক্যাম্প গুড়িয়ে দেবার জন্য। ৪০/৫০ জন পাকসেনা ও রাজাকার মিলে ১০০ জনের দলটিকে নিশ্চিহ্ন করাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। বাড়িওয়ালা টিনশেডের পাকা দুই রুমে আমাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করলেন। জানো মা, গোয়ালগাঁও-এর পাশ দিয়ে প্রবাহিত হাইলি নাদিতে এখন প্রচণ্ড স্রোত আর পানিতে ভরপুর।এখন বর্ষাকাল, চারদিকে পানি আর পানি! বাড়িওয়ালা পুঁটি ভাজি, শোল মাছের ঝোল আর কলাইয়ের ডালদিয়ে আমাদের...পরের অংশ এখানে)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই মে, ২০০৯ রাত ১:৪৪