somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মজনু শাহ-র নিকট ব্লগীয় চিঠি: ভাষা সংক্রান্ত স্বীকারোক্তি

২১ শে জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় মজনু ভাই,
আপনার দীর্ঘ একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে এই লেখার অবতারনা। (নিচে মন্তব্যটি তুলে দিলাম) । অনেক কথা চলে আসছে বলে আলাদা পোস্ট দিলাম। প্রথমে আপনার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। কারন প্রথমতঃ আপনার মন্তব্যটি আমাকে এমন কিছু ভাবনা দিয়েছে যা আমি আগে ভাবি নাই; এবং দ্বিতীয়তঃ আপনাকে আমি একরকম অভিভাবক মনে করি আর এই মন্তব্যটা প্রমান করে যে আমার তা মনে করাটা ভুল নয়।

প্রথমেই বলে নেই- এই লেখাটি আপনার মন্তব্যের পাল্টা যুক্তি দেখানোর কোন প্রয়াস নয়, বরং এক ধরনের আত্মস্বীকারোক্তি । আপনার কথা সত্য - নির্দ্বিধায় স্বীকার করছি। আমার কবিতার ভাষা এবং মন্তব্যের ভাষা স্পষ্টতই ভিন্ন এবং তা ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে এক ধরনের শঠতা বলে চিহ্নিত করা যায়, অবশ্যই সত্য। তা আপনার এবং আরো অনেকেরই হয় তো বিরক্তির কারন হয়েছে এবং এজন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত । এই দুই ক্ষেত্রে ভাষার ভিন্নতা নিয়ে আমি নিজেও সচেতন। এখন এইরকম লেখার কারনটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি। আমি কিন্তু কথা বলি এই ‘খাইতেসি/ করতেসি’ জাতীয় মিশ্র কথ্য ভাষাটিতে । কবিতা লেখা আর কথা বলা এই দুই ক্ষেত্রে আমার ভাবনার ভাষা সত্যিকার অর্থে দুইরকম। যখন আমি কবিতা নিয়ে ভাবি, কবিতার পঙক্তিগুলো যখন আমার মাথায় তৈরি হতে থাকে তখন আমি মান চলিত ভাষাতেই চিন্তা করি। সম্ভবত: এই ভাষাতেই বেশির ভাগ কবিতা পড়েছি আর কবিতার ক্ষেত্রে এই ভাষাতে প্রথম থেকে ভাবতেই আমি অভ্যস্ত বলে। যদি আমি কথ্য ভাষায় কবিতার কথা ভাবতে পারতাম তাহলে সেই ভাষাতেই লিখতাম। এতে ভাষার দূষণ হয় কি না জানি না, আমি আসলে ভাষার বিশুদ্ধতায় বিশ্বাস করি না। আবার যখন মন্তব্যের জবাব দেই, তখন তা একধরনের আলাপচারিতা বলে মনে হয় । এবং অনেক সময় কেউ যদি মানভাষায় মন্তব্য করে তাহলে দেখা যায় জবাবটাও ওই ভাষাতেই লিখছি । কারন তখন ভাবনাটা মান ভাষাতেই করা হয় । যখন আমি যেভাবে ভাবি তখন ঠিক সেভাবেই লিখি। তবে কিছু শব্দ আছে যেগুলো ইচ্ছাকৃত ভাবে ব্যবহার করি । আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন যে এই ব্লগের নিজস্ব কিছু শব্দ আছে যা কথ্য বা মান চলিত ভাষা থেকে ভিন্ন । এখানে কিছু শব্দ ইচ্ছা করেই খানিকটা বিকৃত করে লেখা হয় যেমন: বোলগ, পুষ্ট, কোবতা ইত্যাদি। প্রথম যখন ‘কোবতা’ শব্দটা এখানে পেলাম তখন সত্যি বলতে খানিকটা আহত হয়েছিলাম। পরে দেখলাম, মূলতঃ মজা করার জন্যই এইরকম লেখা হয়। আমিও এই শব্দগুলো নিছক মজার জন্যই ব্যবহার করেছি, আর কিছু ভাবি নি ।

চলিত যে মানভাষায় আমরা লিখছি সে ভাষাটাকে আমি সাহিত্য ছাড়া আর কোথাও তো অস্তিত্বশীল দেখি না। মানুষ কথা বলে ‘করতেসি/যাইতেসি’ এই মিশ্র কথ্য ভাষায় নয়তো কোন আঞ্চলিক ভাষায় । রাইসুদা এবং আরো কয়েকজন এই মিশ্র কথ্য ভাষাটিকে কবিতায় প্রয়োগ করছেন। এইটা আমার ভালোই লাগে। রাইসুদা’র কিছু লেখা পড়ে খুব মজা পেয়েছিলাম । যাই হোক, আমার ব্যক্তিগত অভিমত হল - এই মিশ্র কথ্য ভাষাটিতে ‘কবিতা’ লেখা অত্যন্ত কঠিন ব্যাপার। এর জন্য অনেক প্রতিভাবান হওয়া প্রয়োজন। এবং আমি আসলে মান চলিত ভাষাতেই কবিতা লেখার পক্ষপাতী। কারন আমার মনে হয় এখনো এই ভাষাতেই বৃহত্তর পাঠকের সাথে কম্যুনিকেট করা যায়। অদূর ভবিষ্যতেও অবস্থা এই রকম থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস। এবং এই ব্যাপারেও আমার কোনই সন্দেহ নাই যে যদি আমার কোন লেখা টিকে থাকে তবে আমার মান চলিত ভাষায় লেখা কবিতাগুলোই টিকে থাকবে, কথ্য ভাষায় করা মন্তব্যগুলি টিকে থাকার বিন্দুমাত্র কোন সম্ভাবনা নাই। আর এই মিশ্র কথ্য ভাষায় কবিতা লেখা আমার সামর্থ্যে কুলাবে বলেও মনে করি না।

আগেই বলেছি আমি ভাষার বিশুদ্ধতায় বিশ্বাসী না। আজ যে ভাষাকে আমরা স্ট্যান্ডার্ড বলে ধরে নিচ্ছি তা ৫০ বা ১০০ বছর পর আর স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে গন্য হবে বলে ভাবি না। তাই ভাষার দূষণ সংক্রান্ত ইস্যুতে সম্ভবত: আমাদের মতভিন্নতা থাকবে।

এই লেখাটি কিন্তু মান চলিতভাষায় লিখলাম। অনেস্টলি এইভাষাতেই চিন্তা করেছি লেখার সময়। তবে আপনার মন্তব্যটি আমাকে যথেষ্ট প্রভাবিত করেছে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এই ভাষাতেই এখন থেকে লিখব- কবিতা, অন্য লেখা বা মন্তব্য- সবই। ভাষা আসলে সামন্জস্যপূর্ণ হওয়াই উচিত। অন্যথায় পাঠকের বিরক্তি উৎপাদন হলে তাকে খুব একটা দোষ দেয়া যায় না। ব্যাপারটা এভাবে ধরিয়ে দেয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

প্রবাস জীবন কেমন কাটছে? আলিফ কেমন আছে? আর আপনার নতুন লেখা রোমান হরফে হলেও পোস্ট করুন প্লিজ, পড়তে চাই।
ভাল থাকবেন।

অনেক শুভেচ্ছা জানবেন ।


"prothome bole rakhi kobita-ta valo laglo.

aj ami ektu onno bisoye montobbo korte chai, seta holo, jevabe, je vashay tumi lekho, ar je vashay tumi pathokke sara dao sobsomoy, tar moddhe ekta doitota ase. doitota dekhle hasi pay, kenona eta ek dhoroner shothotao bote, ontoto vashar khetre.

likhbar belay tumi man-vasha ar montobber belay ekta odvut jogakhichuri toiri koro... dekhe kemon khotka lage, tokhon vabi, konta tomar vasha ?

kobi nijei jodi tar kobitake kobte bole, tahole pathok setake kobte bolei vabte obvosto hoye uthbe ekdin.
kenona ekta style dariye jay ei korte korte. ami tomar kobitar mugdho pathok, kintu tomar oi lagtase jaitase hattase khaitae ...boro srutikotu lage ...

raisu e bepare honest. se jevabe bole sevabei lekhe.


kintu tomar kobita porar por, montobber ghore jokhon lagtase jaitase khaitase dekhi... tokhon vabi, banglavashata ekhon torun kobir hat dhore
koi jaitase ?

othocho etodin sune elam, kobirai naki vashatake jabotiyo dushoner hat theke bachanor lorai kore...


vul sune elam tobe ?"


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১২:৪২
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×