somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ইহতিশাম আহমদ
একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে ক্যামেরাপারসন হিসাবে চাকুরীরত। ত্রিকোন চলচ্চিত্র শিক্ষালয় নামে একটি ফিল্ম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক। গল্প, কবিতা লেখা ও অভিনয়ের অভ্যাস রয়েছে।

অভাব (ছোটগল্প)

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফয়েজ সাহেব সাহসী কোন মানুষ নন। তবে ত্যাড়াবাঁকা কোন কাজের সাথে তিনি নাই। আর তাই ভয়ে ভীত হওয়ার প্রয়োজন তার খুব একটা পড়ে না।তিনি যা করেন, খুব নিয়মতান্ত্রিক ভাবে করেন। যা বলেন, স্পষ্ট করে বলেন। তাই বলে অহেতুক বীরত্ব দেখানোর মত বদঅভ্যাসও তার নেই। মোট কথা, পুরোদস্তুর র্নিঝঞ্ঝাট মানুষ তিনি।

ছোটখাট একটা ব্যবসা আছে তার। তাই দিয়ে তার সংসার দিব্যি চলে যায়। তার সংসার খুব একটা বড় নয়। তিনি, সোমা আরতাদের এক মাত্র সন্তান পান্থ। পান্থ বর্তমানে ক্লাস ফাইভে পড়ে। এতদিনেও আর কোন সন্তান কেন নেয়া হয়নি, আত্মীয় বন্ধুদের এই প্রশ্নের উত্তরে ফয়েজ সাহেব বেশ মজা করে বলেন, “কাজ কর্ম নিয়ে এত ব্যস্ত থাকতে হয়, আরেকটা বাচ্চা নেয়ার সময়ই বের করতে পারতেছি না।”

তবে ইদানিং পান্থ অভিযোগ করছে তার কোন ভাই বা বোন নেই কেন। তার বড় খালার দুই ছেলেমেয়ে, চাচার দুই মেয়ে। বড় ফুপুর তিন ছেলেমেয়ে। ঈদে পরবে দেশের বাড়িতে গেলে তাদের সাথে সময় যে কোনদিক দিয়ে পার হয়ে যায় ছেলেটা টেরও পায় না। ঢাকায় ফিরে এসে নিজেকে তার বোধহয় খুব একা লাগে। সেদিন সে বলছিল, “আব্বু আমার একটা ভাই, না তো একটা বোন থাকলে তার সাথে খেলতে পারতাম।”

“হুম.. তোমার ভাই, না তো বোনকে তোমার খেলনার ভাগও তো দিতে হত।”

“ঠিক আছে, দিতাম.... আব্বু ঝগড়া করার জন্যেও তো একটা ভাই না তো বোন দরকার। তাই না?”

এই যুক্তির পরে আর কোন কথা চলে না। তারপরও ফয়েজ সাহেব আরেকটা বাচ্চা নেয়ার ব্যাপারে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভোগেন। সমস্যাটা সময় নিয়ে নয়। রোমান্স করবার জন্যে ফয়েজ সাহেব আর সোমার হাতে অনেক সময়। তাদের বয়সও ত্রিশের কোঠা পেরোইনি। সমস্যাটা অন্যখানে। তিনি নিজে ৪ ভাইবোনের পরিবারে মানুষ হয়েছেন।বাবা মোটামোটি একটা সরকারী চাকরী করতেন। সংসারে প্রাচুর্য না থাকলেও অভাব তেমন একটা ছিল না।তারপরও পরিবারের সবাই এক ভাবে বেড়ে ওঠেনি।

দুই বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবচেয়ে ছোট। বড় আপা সবচেয়ে বড়। দরদী, মমতাময়ী। দুলাভাইও খুব ভাল মানুষ। ভাল আছে বড় আপা। এখন বরং আগের চেয়ে আরো মমতাময়ী হয়েছে। ছোট আপা স্কুল লাইফ থেকে প্রেম করা শুরু করেছিল। একজনের সাথে হলে সমস্যা ছিল না। ছোট আপার প্রেম ছিল এক সংগে অনেক ছেলের সাথে। বিষয়টা ফয়েজ সাহেবরা জানতে পারেন যখন পাড়ার লোকেরা ছোট আপাকে একটা ছেলের সাথে এক ঘরে তালা লাগিয়ে বাবার কাছে নালিশ জানাতে আসে।

বাবার সেদিনকার চেহারাটা ফয়েজ সাহেবের এখনও চোখে ভাবে। এই ঘটনায়খুব কেঁদেছিলেন বাবা। সেদিন সালিশে কি হয়েছিল বাড়ির ছোট ছেলে হিসাবে ফয়েজ সাহেব জানতে পারেননি। শুধু এইটুকু জানেন,সেদিনই সবাই মিলে ঐ ছেলের সাথে ছোট আপার বিয়ে দিয়ে দেয়। আর পরের মাসেই তারা বদলী হয়ে ঐ শহর ছেড়ে নুতন শহরে চলে আসেন। সেই থেকে ছোট আপা হাতে গোনা মাত্র কয়েকবারই তাদের বাড়িতে এসেছিল। এখনও তার সাথে তাদের তেমন একটা সর্ম্পক নেই।

বড় আপা আর ভাইয়া পিঠাপিঠি হলেও ভাইয়া আপার মায়া মমতার কিছুই পায়নি। প্রায় প্রতিদিনই তার কারো না কারো সাথে মারামারি লেগেই থাকত। এই জাতীয় ছেলেরা কখনও একা থাকে না। কোন না কোন ভাবে রাজনৈতিক দলের সাথে ভীড়ে যায়। ভাইয়ার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ছোট আপার বিয়ের পর বাবার জন্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল, মাঝ রাস্তায় ভাইয়াকে রামদা হাতে অন্য একটা ছেলেকে তাড়া করতে দেখা। এই দৃশ্য দেখার পরে বাবা যেন পাথর হয়ে যান। তার কয়েক বছর পরে শহরে একটা মার্ডার হয়। ভাইয়া তাতে জড়িত ছিল কিনা জানা যায়নি। তবে আরো তিনজন আসামীর সাথে ভাইয়ারও পাঁচ বছরের জেল হয়।

সব মিলিয়ে ঘটনাবহুল কৈশোর পার করেছেন ফয়েজ সাহেব। সংগ দোষে নাকি লোহাও পানিতে ভাসে। ছোট আপা আর ভাইয়ার উশৃংখল জীবনের প্রভাব ফয়েজ সাহেবের উপরেও কিছুটা পড়েছিল। বাড়ি থেকে টাকা চুরি করে তিনি স্কুলের বন্ধুদের সাথে সিনেমা দেখতে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে মায়ের হাতে ধরা পড়ে যান। ধরা পড়ার পরে প্রথম বারের মত উপলব্ধি করলেন, তিনি কি পরিমান ভীতু। মায়ের প্রথম কয়েকটা গালি তিনি শুনতে পেয়েছিলেন। তারপরে তিনি শুধু মায়ের ঠোঁট নড়তে দেখেছিলেন। কোন কথা তার কানে ঢুকেনি। চোখের সামনে যেন সারা দুনিয়া দোলনার মত দুলছিল। দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে তিনি কোন মতে খাটের একটা স্ট্যান্ড ধরে বিছানায় বসে পড়েছিলেন।

মা বোধহয় ছোট ছেলের অবস্থা বুঝতে পেরেছিলেন। তাই সেদিন আর কিছু বলেননি। আর বাবা তো কয়েকদিন তার সাথে কোন কথা বলেননি। এই কয়টা দিন যখনই ফয়েজ সাহেব বাবার সামনে পড়েছেন সাথে সাথে তার হাত পা কাঁপতে শুরু করেছিল। তবে ভাইয়া গোটা ব্যপারটাকে বেশ বিনোদন হিসাবে নিয়েছিল। বেশ কৌতুক করে একদিন জানতে চেয়েছিল, “কত টাকা চুরি করছিলি রে?”

ভাইয়ার মুখে চুরি শব্দটা শুনে বুকের ভেতরটা নড়ে উঠেছিল ফয়েজ সাহেবের। মৃদু কন্ঠে বলেছিলেন, “পাঁচশ।”

“হা হা হা.... মাত্র পাঁচশ টাকা চুরি করে তোর এমন গরু চোরের মত অবস্থা। কালকে আমার সাথে যাবি। সাহস বাড়বে। এই পৃথিবীতে সাহস ছাড়া চলে না বুঝলি।”

পরের দিন ভাইয়ার সাথে বের হয়েছিলেন ফয়েজ সাহেব। সারাদিন কিছুক্ষণ পরপরই তার দুনিয়া টলে উঠেছিল। তার অবস্থা দেখে ভাইয়া সারক্ষণই মুচকি মুচকি হেসেছে। রাতে বাড়ি ফেরার সময় বলেছিল, “নাহ, তোকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না। চুড়ই পাখির কলিজা তোর।”

অপমানে লেগেছিল কথাটা। কিন্তু নিজের ঘরের নিরাপদ আশ্রয়ে এসে মনে হয়েছিল দরকার নাই তার বীরপুরুষ হওয়ার। এত ঝুঁকি সে নিতে পারবে না। বিছানায় বসে বুকের ধুকপুকুনি যখন সামলাচ্ছিলেন ফয়েজ সাহেব, তখন বাবা এসে তার ঘরে ঢুকেছিল। অনেকদিন পরে বাবাকে তার ঘরে আসতে দেখে হঠাৎ করে বুকের মাঝে কোত্থেকে যেন একরাশ আবেগ উথলে ওঠে। দৌড়ে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরেন ফয়েজ সাহেব। বাবার কাঁধে মাথা রেখে হাঁউমাঁউ করে কেঁদে ওঠেন। ছোট ছেলের কান্নার মাঝে সেদিন বোধহয় আশার আলো দেখতে পেয়েছিলেন বাবা।

এরপর থেকেই বাবা আবার যেন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেন। যতক্ষণ তিনি বাড়িতে থাকতেন ফয়েজ সাহেবকে নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। তাকে এটা শেখাতেন, ওটা শেখাতেন। এই গল্প, সেই গল্প। তার সব গল্প কথার মাঝে ফয়েজ সাহেব যেন একটা আকুতিই শুনতে পেতেন, ভাল মানুষ হওয়ার আকুতি। বাবা এখন বেঁচে নেই। ফয়েজ সাহেব জানেন না তিনি ভাল মানুষ হতে পেরেছেন কিনা। তবে তিনি যে খারাপ মানুষ নন একথা বুক ঠুকে বলতে পারেন। নিজের ছেলেকেও তিনি ভাল একজন মানুষ বানাবেন।

রক্তের ধারায় নাকি পূর্ব পুরুষদের ভাল মন্দ সবই প্রবাহিত হয়। ছোট্ট পান্থকে যেদিন তার স্কুলের রেজাল্ট শিটে বন্ধুর পরামর্শে বাবার সিগনেচার নকল করেছিল, সেদিন যেন চোখের সামনে দুনিয়াটা বহুদিন পরে আরেকবার টলে উঠেছিল ফয়েজ সাহেবের। প্রিন্সিপালের কাছ থেকে একগাদা কথা শুনে বাড়িতে এসে বেদম পিটিয়েছিলেন পান্থকে। ফয়েজ সাহেবকে শান্ত করতে সোমার ভীষন বেগ পেতে হয়েছিলসেদিন। রাতে সোমা জানতে চেয়েছিল,
“কি হইছিল তখন তোমার? এত খেপলা ক্যান? তুমি তো কখনও এত খেপ না। বাচ্চা ছেলে, একটা ভুল করছে....”

“আজকে একটা করছে, কালকে দুইটা করবে। বংশে তো জেল খাটার রেকোর্ড আছেই।”

“বংশে তো তোমার আর বড় আপার মত মানুষও আছে।”

হঠাৎ করে দিশেহারা বোধ করেন ফয়েজ সাহেব। “সোমা, আমার ছেলেটা যদি তার চাচার স্বভাব পায়?”

“পাবে না। তুমি আছো না।”

“জানি না.... ভয় হয়। সোমা আমরা আর কোন বাচ্চা নিব না, ঠিক আছে? পান্থকে ভালমত মানুষ করতে হবে।”

সোমা প্রথমে আর কোন সন্তান না নেয়ার ব্যাপারটাকে হালকা ভাবে নিয়েছিল। কিন্তু পরে বুঝল ফয়েজ সাহেব বিষয়টাতে সিরিয়াস। সোমাও আর পরে এই নিয়ে কোন কথা তোলেনি। ফয়েজ সাহেবকে যেরকম তার বাবা তার পুরোটা অবসর দিতেন, তেমনি ফয়েজ সাহেবের পুরোটা অবসরও পান্থের জন্যে বরাদ্দ। মাঝে মাঝে হিংসা হলেও বাপবেটার খুনসুটি বেশ ভালই লাগে সোমার। পান্থও এরপরে আর কোন রকম নেতিবাচক কাজে জড়ায়নি। একটা শিশুর সব চাওয়া পাওয়া যখন বাড়িতেই পূরণ হয় তখন সে আর বাইরের মানুষের কাছে স্নেহ ভালবাসা খুঁজতে যায় না। মোট কথা, বেশ ভাল চলছিল ফয়েজ সাহেবের সংসার।

তবে ভাগ্যের উপর তো সবার হাত নেই। আর অভাগা এই দেশে প্রতি পাঁচ বছর পরপরই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেই উত্তাপে কারো প্রাণ যায়, কারো আয় রোজগারে ভাটা পড়ে। রাজনৈতিক এই জ্বালাও পোড়াও-এ ফয়েজ সাহেবের ব্যবসায় বেশ বড় রকমের একটা ধাক্কা লাগে। ইলেকশনের পরে দেশের রাজনীতি স্থিতিশীল হলেও ফয়েজ সাহেবের ব্যবসা আজ ছয় মাস ধরে ধুঁকে ধুঁকে চলছে। খাওয়ার খরচটা জোগাড় হলেও প্রতি মাসে বাড়ি ভাড়া, ইন্টারনেটের বিল, ডিসের বিল সময় মত জোগাড় করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। এর ওর কাছে ধার দেনাও হয়েছে অনেক। মাঝে মাঝে পাওনাদারদের ভয়ে ফোন বন্ধ করে রাখেন ফয়েজ সাহেব। তাতেও সমস্যা, ব্যবসায়ী মানুষের ফোন বন্ধ রাখাটা ব্যবসার জন্যে সুবিধাজনক নয়।

ইদানিং প্রায় প্রায়ই ফয়েজ সাহেবের দুনিয়া দোলনার মত দুলতে থাকে। দাঁতে দাঁত চিপে নিজেকে সামলান ফয়েজ সাহেব। এখন তিনি এক সন্তানের বাবা। তার সন্তান তাকে দেখে শিখবে। তার কাছে আশ্রয় নেবে। তিনি যেমন তার বাবার কাছে আশ্রয় নিয়েছেন। পান্থকে সাহসী বানাতে হবে। সৎ মানুষ বানাতে হবে। মাঝে মাঝে তার খুব রাগ হয় উপরওয়ালার প্রতি। তিনি তো সারা জীবন ভাল মানুষ হয়ে থাকার চেষ্টা করেছেন। তবে তার জীবনে এমন হবে কেন? না, তাকে মজবুত হতেই হবে। সমস্ত ঝড়-ঝাপটা শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে হবে। পান্থর উপরে কোন আঁচ আসতে দেয়া যাবে না।

দুই মাসের বাড়ি ভাড়া বাকি। ইন্টারনেটের লাইন কেটে দিয়েছে। ডিসের ৪০০ টাকা দেয়া বাকি। যে কোনদিন ছেলেটা বিল নিতে আসবে। ডিসের ছেলেটার মাঝে কোথায় যেন একটা কাবুলীওয়ালা ভাব রয়েছে। অবশ্য ব্যবসায়িক অবস্থা ভাল থাকাকালীন ছেলেটাকে কখনও এমন মনে হয়নি। ইদানিং ফয়েজ সাহেব পা টিপে টিপে সিঁড়ি পার হন। আস্তে করে ঘরের দরজা লাগান। তিনতলায় বাড়িওয়ালা থাকেন। তার দরজা লাগানোর শব্দ শুনে যদি বাড়িওয়ালা এসে হাজির হয়। দোতলা থেকে তিনতলা খুব বেশী দূরে নয়। পরপর কয়েকবার তারিখ দিয়েও পাওনা টাকা দিতে পারেননি ফয়েজ সাহেব।

আজ শুক্রবার। সকাল থেকেই বুক কাঁপছে ফয়েজ সাহেবের। আজ পুরো দুই মাসের ভাড়া না হলেও, কিছু না কিছু দেয়ার কথা। কিন্তু ব্যবস্থা হয়নি। পকেটে মাত্র ৫০ টাকা আছে। বন্ধের দিন, তাই বাড়ির বাইরেকোথাও গিয়ে পালিয়ে থাকার উপায়ও নেই। নিশ্চিত ভাবেই বাড়িওয়ালা আজ তাকে ধরবেন। ভাবতে ভাবতেই দরজার বেল বাজল। নিজের বেডরুমে বসে কেঁপে উঠলেন ফয়েজ সাহেব। দরজা খুলে পান্থ এসে বলল, “আব্বু উপরতলা থেকে আসছে।”

কয়েক সেকেন্ড সময় নিলেন ফয়েজ সাহেব বুকের ধুঁকপুকানি থামাতে। তারপর দরজায় দাঁড়ানো বাড়িওয়ালাকে বললেন, “চাচা, টাকার ব্যবস্থা হয় নাই.....”

“তাইলে কেমন করে হবে? কি শুরু করছেন আপনি.........”

আর কিছু শুনতে পেলেন না ফয়েজ সাহেব। চোখের সামনে তার দুনিয়াটা টলতে লাগল। হাত বাড়িয়ে কোন মতে দরজার হাতলটা ধরলেন তিনি। বাড়িওয়ালা পাঁচ/দশ মিনিট চিৎকার চেঁচামেচি করে চলে গেলেন। কাঁপাকাঁপা হাতে দরজাটা লাগিয়ে কোনমতে নিজের ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লেন ফয়েজ সাহেব।

“কি হইছে তোমার? খারাপ লাগতেছে?” জানতে চাইল সোমা।

ফয়েজ সাহেব কোন উত্তর দিলেন না। নিজেক শান্ত করতে ব্যস্ত তিনি। সোমা পাশে বসে তার বুকে হাত বোলাতে লাগল। পান্থও বাবার পাশে এসে বসেছে।কতক্ষণ সময় পেরিয়েছে জানানেই ফয়েজ সাহেবের। আচমকা আবার কলিং বেল বেজে উঠল। পান্থ লাফ মেরে বিছানা থেকে নামল। দরজা খুলবে। কে হতে পারে ভাবতে গিয়ে ফয়েজ সাহেবের মনে হল,নিশ্চয় ডিসের ছেলেটা। ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠে পান্থকে ডাকলেন তিনি। বললেন, “পান্থ, ডিসের লোক আসলে বলিস আমি বাসায় নাই।”

অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকালো পান্থ। কিন্তু কিছু করার নাই ফয়েজ সাহেবের। তার দুনিয়া তখন টলছে। অভাবের সাথে লড়াই করে পান্থকে ভাল মানুষ বানানো বোধহয় আর হল না দুর্বল ফয়েজ সাহেবের।

রচনাকাল- ১৬/০৯/২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×