বায়তুশ শরফের প্রধান রূপকার হাদিয়ে জামান শাহ সুফি আল্লামা শাহ মোহাম্মদ আবদুল জব্বার রহঃ-এর দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে গতকাল। এ উপলক্ষে চট্টগ্রামের বায়তুশ শরফ প্রাঙ্গণে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাতের আয়োজন করে বায়তুশ শরফ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ। এ ছাড়া সারাদেশে মরহুমের ভক্তরাও যথাযোগ্য মর্যাদায় দোয়া-মুনাজাতের মাধ্যমে ইসলামের এই একনিষ্ঠ সাধকের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৮ সালের এই দিনে চট্টগ্রাম ধনিয়ালাপাড়ার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের নিজ হুজরা শরীফে আকস্মিকভাবে তিনি ইন্তেকাল করেন। পরদিন চট্টগ্রাম রেলওয়ে পলোগ্রাউন্ড ময়দানে প্রায় ২ লাখ মুসলমানের অংশগ্রহণে স্মরণকালের বৃহত্তম জানাজা শেষে কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ মসজিদের পাশে তাকে কবরস্থ করা হয়। তার সময়কালে তিনি ছিলেন অন্যতম আলেমে দীন, পীরে কামেল, মসজিদভিত্তিক সমাজসেবার পুরোধা, শিরক-বিদআতের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর, ইসলামি শিক্ষার প্রচার ও প্রসারে নিবেদিতপ্রাণ, দুস্থ মানবতার সেবায় সদা সক্রিয়।
ইন্তেকালের সময় তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদ্রাসাসহ ১৬টি মাদ্রাসা, ১২টি এতিমখানা ও হিফজখানা, বাংলাদেশের প্রধান প্রধান শহর-নগর-বন্দর-জনপদে ৬০টি বায়তুশ শরফ মসজিদ এবং পর্যটন নগরী কক্সবাজারে একটি পূর্ণাঙ্গ চক্ষু ও পঙ্গু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া তিনি একটি হাইস্কুলসহ পাঁচটি প্রাইমারি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন।
একজন সফল লেখক ও অনুবাদক হিসেবে তিনি ছোট-বড় ১৫টি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। জীবনে ৩৩ বার পবিত্র হজব্রত পালন করেন। তিনি বায়তুশ শরফ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সাংগঠনিক কার্যক্রম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বুলগেরিয়া, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, ইরাক, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান সফর করেন।
এই মহামনীষী ১৯৩৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আপার বার্মার থাংগু জেলার পিনজুলুক রেলস্টেশন সংলগ্ন বাঙালি কলোনিতে জন্মগ্রহণ করেন।