কি ভাবছেন ? খুন হচ্ছে হররোজ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ? আলবৎ হচ্ছে। রক্ত মাংস নিয়ে বেঁচে থাকাই শুধু বেঁচে থাকা নয়। সবকিছু হারিয়ে বেঁচে থাকা আর খুন হওয়া দুটোই সমান। উচ্চ শিক্ষা নেবার অধিকার সবার হলেও সেটা পায় কয়জন। উচ্চ শিক্ষা সবার নেয়ার ইচ্ছা থাকলেও সেটা নিতে পারে কয়জন। ব্যবসা বড় কাস্টমারের কাছে যতটা না হয় তার চেয়ে বেশী হয় খুচরা আর ছোটো কাস্টমারের কাছে বেশী। আমাদের দেশে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আগে এক সময় পড়তে খরচ লাগতো ২০ থেকে ২৫ লক্ষ বা আরো বেশী। মালিকরা শিক্ষা সবার ঘরে পৌঁছে দেবার নাম করে অল্প টিউশন ফি নিয়ে দারুন ব্যবসা ফেঁদেছে। ফলে অনেকে জমি বেঁচেও পড়ছে প্রাইভেটে। আজব দেশ। একই সার্টিফিকেট এক বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগে বিশ লাখ, আরেক জায়গায় লাগে দুই লাখ।
ইয়ো ইয়ো জামাই নয় ইয়ো ইয়ো গ্র্যাজুয়েট বানাচ্ছে তারা(সব অবশ্য একই না)
। দুদিন পর পর এসাইনমেন্ট নেট থেকে নামাও। প্রিন্ট কর আর জমা দাও।
দুদিন পর পর প্রেজেন্টেশন। কি ভাবছেন ! আপনি গরিব। নরমাল প্যান্ট শার্ট পড়ে পরিপাটী হয়ে যাবেন ! জি না। আপনাকে টাই পড়তে হবে, আপনাকে সুটেড বুটেড হয়ে থাকতে হবে। আপনি ইংলিশ পারেন না। তবুও বলতে হবে।
আপনাকে শেখাবেনা। বাট বলতে হবে। জনাব এখানে চা ফা বাদাম চলেনা। এমন এক পরিবেশ দু দিন পর বন্ধুদের নিয়ে পার্টিও দিতেই হয়। কেউ বাধ্য করেনা বটে বাট পরিবেশটাই অমন। নইলে আপনি খ্যাঁত খুত আরকি।
অধিকাংশতো সব ভারাটে টিচার। সেসব টিচারদের আচরণ যেন ভাড়া করে নিয়ে আসা।
যারা একেবারে কম সচ্ছল পরিবার থেকে আসা তারা এসব হম্বি তম্বি দেখে মনঃকষ্টে ভুগে রুমে বসে। না পারে উচুদের সাথে মিশতে, না পারে নিজের জায়গায় সন্তুষ্ট থাকতে। চার মাসে ছয় মাসে হয় সেমিস্টার। বই এর পাতা না খুলতেই সময় শেষ। দু দিন না যেতেই মিড এক্সাম। ওরে বাপ তার আগে জমা দিতে হবে টিউশন ফি। মরে গেলেও আপনি পরিক্ষা দিতে পারবেনা না টাকা না দিয়ে।
আপনি মরেন আর বাঁচেন। হ্যাঁ অনেক ইউনিভার্সিটিতে ভালো পরাশুনা হয় , ল্যাব হয়। কিন্তু টাকার বেলায় কেউ কি ছাড় দেয় ?
লেবুর ডলা দেয়া হয় ছাত্রছাত্রীদের। যতক্ষণ টাকা শেষ না হচ্ছে ততক্ষন ডলা হচ্ছে।
আর অধিকাংশ ইউনিভার্সিটিতো রাজধানীতে। এখানে থাকা খাওয়ার টাকা ম্যানেজ করতেই ত্রাহি অবস্থা। ভালো মন মানসিকতা নিয়ে আর পড়ায় মন বসাবে কি করে...
এভাবে একটা ছাত্র যখন পড়া শেষে বের হয় তখন সে কি আর মানসিকভাবে জীবিত থাকে আসলে ? সে কি খুন হলনা ?