অস্থিরতায়, অনিশ্চয়তায় হাঁটছে বাংলাদেশ। সরল পথ পেতে আর কতদিন এভাবে পার করতে হবে জানা নেই আমাদের। আমাদের সবার অপ্রিয় সাবজেক্ট বুঝি ইতিহাস। কেবইলই পঠিত বিষয়। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে নারাজ আমরা। স্বাধীনতার পর থেকে যারাই বাংলাদেশের রাস্ট্রক্ষমতায় এসেছে তাদের সবারই প্রাণান্তর চেস্টা ছিলো ক্ষমতাকে স্থায়ীকরণ। কিন্তু এমনটা যে টেকেনা বা টিকবেনা সে অভিজ্ঞতাকে আমরা স্বীকারই করিনা। গণতন্ত্রের নামে জয়ী হওয়ার আপ্রাণ চেস্টা পরিবারতন্ত্রের। এর ফল কে কতটা পেলো তা রাজনিতিক ক্যালকুলেটরে ফল মিললেও ফল পায়না কেবল সাধারণ জনগন।
আতঙ্ক ভর করেছে গ্রামে গঞ্জে শহরে সবখানে। গত বছরের ৫ই জানুয়ারির পর থেকে এমন সময় যে বাংলাদেশে আর কখনো আসেনি তা হলফ করেই বলা যায়। হরতাল, অবরোধ, পেট্রোল বোমা, গুম, খুন, ক্রসফায়ার আতঙ্কের পাশাপাশি গ্রাপ্তার আতঙ্কতো আছেই। গত দেড় মাসে গ্রেপ্তার সংখ্যা ৪৫ হাজার ছাড়িয়েছে। আটক লক্ষাধিক। বার্ন ইউনিটগুলোতে মানুষ পোড়া গন্ধ।
শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন ভাটা আর কখনো পরেনি। সিদ্ধান্ত হয়েছে হরতাল অবরোধের মধ্যেও দেশের সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ক্লাশ পরীক্ষা চালু থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে।
প্রধানমন্ত্রীর একটি কথা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে- ঘরে ঘরে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে। বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসতেই পারে। হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় করতিপক্ষ কিভাবে পাহারা দেবে। কে নিশ্চিত করে বলতে পারে কোন আদম সন্তান দগ্ধ হবেনা পেট্রোল বোমায় !
তবুও সাধারণ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নামছে। যারা দিন আনে দিন খায় তাদের নাজুক অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা কেউ বলছেন দেশের মানুষ হরতাল অবরোধ মানছে না। যারা এসব করছে তারা সন্ত্রাসী। তাদের কেউ আবার স্বীকার করেই নিচ্ছেন দেশ অর্থনীতিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাপক আকারে।
বক্তৃতা, বিবৃতিতে তাদের অবস্থানও স্পষ্ট নয়। ওদিকে আন্দোলনকারীরাও তাদের অবস্থানে অনড়।
এক পক্ষ আরেক পক্ষকে তুলোধনা করতেই অস্থির।
কিন্তু খেটে খাওয়া প্রান্তিক মানুষরা কি ভাবছে। তারাতো রাজনীতির মার প্যাঁচ বুঝেনা।
তারা না হরতাল অবরোধের পক্ষে না ক্ষমতাসীনদের চলা পথের পক্ষে।
তাদের একটাই চাওয়া শান্তি। দেশে কোন অরাজকতা না আসুক। তারা জাতিসংঘ বুঝেনা। তারা নিয়ম বুঝেনা, নির্বাচন আগে হলে কি বা পরে হলেই কি এসবের ধারে কাছে নেই। তারা শুধু চায় একটা সমাধান আসুক। সেটা আন্দোলন কারীদের সাথে ক্ষমতাসীন দলের আলোচনায় হোক বা অন্য উপায়েই হোক। স্থায়ী সমাধান একটা চাই।