এটা আমাদের স্কুল। আমার প্রাণের স্কুল। ভবেরচর ওয়াজীর আলী উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুলে ভর্তি হই নবম শ্রেণীতে।
আমি যখন অষ্টম শ্রেণী পাশ করি তখন আমার নানা আব্বুকে বলেন “তুমারা তো সরকারি চাকরি করো। যখন তখন বদলী হতে পারো। একবার নাইনে রেজিষ্ট্রেশন হয়ে গেলে, তারপর তুমাদের যদি বদলী অর্ডার আসে তাহলে তো সমস্যা। তাই্ আমাদের এখানে ভর্তি করিয়ে দেও।” যেই ভাবা সেই কাজ। নবম শ্রেনী তে উক্ত স্কুলে ভর্তি হই। এসএসসি থেকে অনার্স পযর্ন্ত নানী বাড়ি থেকে কমপ্লিট করি।
নানা ভাই ব্যাংকে চাকরি করতেন। শেষের দিকে সোনালী ব্যাংক, ভবেরচর শাখা তে পোস্টিং ছিলেন। ইচ্ছে করেই আমাদের গ্রামের সেই শাখাতে ট্রন্সফার হয়েছিলেন।
কতই সুখের দিন ছিলো। আমি ক্লাশ শেষ করে আবুল হোসেন স্যারের ইংরেজী প্রাইবেট পড়তে যেতাম। প্রাইবেট শেষ শেষে বাসায় যেতে যেতে সাড়ে পাঁচটা বাজতো। নানা আমার জন্য বারান্দাতে বসে বসে অপেক্ষা করিতেন। আমার নানী আমার জন্য দুপুরের খাবার দিতেন। ভাত খেয়ে বাহিরে একটু ঘুরতে যেতাম বা একটু শুয়ে থাকতাম। ক্লাস এবং প্রইবেট শেষ করে যখন বাসায় যেতাম তখন যেই সুখ লাগতো তা এখন কোন শব্দে প্রকাশ করতে পারবো না। আর এই সুখ কে আমি খুব মিস করছি।
আমার সাথে নূরে আলম আর মেহেদী বাসায় ফিরতো। কারন তখন আমরা একই গ্রামে থাকতাম এবং একসাটে ইংরেজী প্রাইবেট পড়তাম।
শীত কালে অবশ্য বাহিরে যেতে পারতাম না। কারন সাড়ে ৫ তে সন্ধ্যা হয়ে যেতো।
ক্লাস নাইনে এবং টেইনে কাকতালীয় ভাবে প্রথম ক্লাস ছিলো ইংরেজী। শেষ ক্লাস ছিলো বাংলা ১ম পত্র। আমার তখন ঐচ্ছিক বিষয় ছিলো কম্পিউটার। প্রথম ক্লাসে ১১৫ জনের মধ্যে গড়ে ১০০ বা ৯০ জন থাকিতেন। আর শেষের বাংলা ক্লাসে ১০ থেকে ৫০ জন থাকিতেন।
ফরম ফিলাপের অনেকদিন পর আমার নানা মারা যায়। আমার এসএসসি পরীক্ষা তিনি আর দেখে যেতে পারলেন না। তিনি ডিসেম্বর ২০১০ সালে হঠাৎ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়।
আমি আমার নানা কে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
আমি আরও স্মরণ করছি সে সকল শিক্ষককে, যাঁদের সহযোগিতায় আজ আমি এখানে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:৩২