somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আড়িয়াল বিল সংঘর্ষ ও মেহেরজান সুসমাচার

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম আলোতে কাবেরী গায়েন, রোবায়েত ফেরদৌস, মাহামুদুজ্জামান বাবু ও ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিনীর লেখার ধারাবাহিকতা রা করে ফাহমিদুল হক স্যারও একখান লেখা পয়দা করেছেন, আবার তা প্রথম আলোতে প্রকাশও করেছেন। গেল ৩০ জানুয়ারিতে ২০১১ ফাহমিদ স্যার তার ওই রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ (!!!!) উপসম্পাদকীয়তে লিখেছেন মেহেরজান ছবিটি না কি ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। স্যারের কাছে বাংলায় বললে মহোদয়ের কাছে এ প্রশ্ন করার ধৃষ্টতা দেখাতে চাই যে কোন পদার্থ তাকে এ চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করল যে মেহেরজান ছবিটি ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে? বিগত এক মাস ধরে আড়িয়াল বিলের মেহনতি জনতা একের পর এক মিছিল মিটিং করছে, মুক্তাঙ্গণে সমাবেশ করতে এসে বাধার মুখে ফিরে গেছে, তাদের শতাধিক নারী পুরুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে;কিন্তু মেহেরজান নিয়ে কয়টি মিছিল, সমাবেশ হয়েছে এমন কি মানব বন্ধন কি হয়েছে? হয় নি। ও আচ্ছা একে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া বলে তাই না? আমার কাছে ভাল কোন অভিধান নেই। আফসোস।

গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। অন্তত তেমনটাই পড়েছি। সেই স্তম্ভের কাজ হচ্ছে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি লোকজনকে জানানো, প্রয়োজনে ভবিষ্যতের দিক নির্দেশনা দিতে কার্যকর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা। তো আড়িয়াল বিল নিয়ে যখন মুন্সিগঞ্জের লোকেরা জীবন পণ লড়াই করছে তখন প্রথম আলো পাতার পর পাতা ভরে ফেলছে মেহেরজান সুসমাচার দিয়ে। এটা কিন্তু শুধু প্রথম আলো নয় অন্যান্য মিডিয়ারও চরিত্র। এ খেলায় তারা সঙ্গে নিয়েছে কাবেরী গায়েন, ফাহমিদুল হক দেরÑ মনে রাখনের বিষয় এ স্যার ম্যাডামরা কিন্তু গণযোগাযোগের শিক; গণমাধ্যমের শিার্থীও বটে। তাহলে চলচ্চিত্র নিয়ে আলাপ তোলার মত যথেষ্ট যোগ্যতা দতা তাদের আছে। তবে আলাপটা কিন্তু চলচ্চিত্র আলোচনার দতা নয় আলাপটা হচ্ছে আড়িয়াল বিল টাইপের জরুরি বিষয় থেকে চোখ সরানোর দতাতে। যখন আড়িয়াল বিল অঞ্চলে জনরোষ দাবনলের মত ছড়িয়ে পড়ছে তখন প্রথম আলোর সুযোগ্য অনুসন্ধিৎসু রিপোর্টার টিপু সুলতান গলদঘর্ম হয়ে বহু কাঠ খড় পুড়িয়ে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন হাজির করেছেন। কাঠ খড় পোড়ানোর কথা বললাম এ কারণে যে এ রিপোর্টটা আসল আন্দোলন শুরুর অনেক পরে। অথচ তিনি তার রিপোর্টে যেসব তথ্য দিয়েছেন সে তথ্য নিয়মিত ব্লগিং করা ফাহমিদ স্যারের হাতের নাগালেই থাকে সর্বদা। কিন্তু যেহেতু তিনি মনে করেন নি যে আড়িয়াল তেমন কোন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পেরেছে যেমন ব্যাপক ভাবে পেরেছে মেহেরজান সেহেতু তিনি এ বিষয়ে লিখতে আগ্রহী হন নি। অবশ্য দুনিয়ার সব বিষয়েই যে উনার লিখতে হবে তেমন আহাম্মকি দাবী আমিও করছি না তবে তিনি না লিখে ওই জায়গাটুকু এ বেচারা গণমানুষের পে লেখার জন্য ছেড়ে দিতে পারতেন। কিংবা মিডিয়াকে এ বিষয়ে তৎপর হওয়ার নসিহত দিতে পারতেন। এ নসিহত দেওয়ার দায়িত্ব উনাদেরই কারণ উনাদের গবেষণার পয়সা এ জনতাই দেয়। সেই পয়সা দিয়ে উনারা যে গবেষণা করবেন তা এ জনতার জন্যই হওয়া উচিৎ।

কিন্তু উনারা সেই অপ্রয়োজনীয় (!) দায়িত্বটা নিজের ঘাড়ে নেন নি। বরং আমরা অন্ধরা যাতে উনাদেরকে কখনও দোষারোপ করতে না পারি তাই মেহেরজান বিতর্ক তুলেছেন। যার টিকিট কেনার সামর্থও এই অভাগাদের নেই। তার জবাবও কিন্তু আড়িয়াল বিল বাসী দিয়েছে। তারা নিজেদের শত্র“ হিসেবে পুলিশের পাশাপাশি এই অকাল কুষ্মান্ড মিডিয়াকেও পিটিয়েছে। পিটিয়ে তারা বুঝিয়ে দিয়েছে তোমাদের জায়গা ভদ্র পল্লীতে। এই ধুলোর জগতে তোমাদের আসার দরকার নেই। পরদিন (মানে আজ ১ ফেব্র“য়ারি ২০১১) মিডিয়ার বোধদয় হয়েছে উনারা লিখেছেন সংঘর্ষ নয় চাই আলোচনা। তা ভাই মার খাওয়ার পরে আলোচনার কথা মাথায় আসল আর এতদিন মেহেরজানের মোহর নিয়ে খেলেছেন?

খুবই কষ্ট লাগছে নিহত পুলিশ ভাইটির জন্য, মায়া লাগছে সাংবাদিক ভাইগুলোর জন্য যারা ওই রোষাণলে পড়েছেন। তার চেয়েও বেশি শঙ্কিত আড়িয়াল বিলটির জন্য যেখানে লাক জীব বৈচিত্র্য ছাড়াও হাজারও মানুষের মুখের খাবার রয়েছে। কিন্তু আতঙ্কিত এই বুদ্ধিজীবি মহলকে নিয়ে যারা জনগণের পয়সায় দিনের পর দিন পকেট ফোলাচ্ছেন আর মেহেরজান ছবি দেখে তা নিয়ে উন্মত্ত বিতর্কে লিপ্ত আছেন। শুধু তাই নয় তাদের ভাবে মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রি একে তারা রাষ্ট্রীয় ইস্যু বানাবেন।

অবশ্যই স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আমি ফাহমিদ স্যারকে পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা করি। তিনি আমার শিক (পরো)। উনার কাছ থেকেই সমালোচনা বা আলোচনার নির্দেশনা পেয়েছি। যে কথাগুলো বলেছি সেভাবে চিন্তা করার পদ্ধতি কিন্তু উনাদের কাছ থেকেই শেখা।

শুধু হতাশা উনিও জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে বড়লোকের ড্রইংরুমের আলাপে লিপ্ত হয়েছেন।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×