somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খেলাফত ঘোষনার ব্যাপারে শরীয়াহর হুকুম

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার জন্য৷

দুরুদ সালাম নবীয়ে কারীম স. এর উপর এবং তার পরিবার ও সাথীবর্গের উপর৷
বিগত বেশ কিছুদিন ধরে খেলাফতের শরয়ী দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে৷ যে খেলাফতের ব্যপারে ‘দাওলাতুল ইসলাম ইরাক ওয়াশ শাম’ (isis) ঘোষণা করেছে৷ উক্ত বিষয়টিতে শরীয়তের নির্ভেজাল দৃষ্টিকোন গ্রহণ করতে নিরপেক্ষ প্রয়াস চালিয়েছি, তাই আল্লাহকে সাহায্যকারী বানিয়ে আর ইখলাস ও সরলতা ও সওয়াবের আশা রেখে আমার আলোচনা শুরু করছি৷
অনেকে মনে করে যে, “শরয়ী নেতৃত্ব (ইমামত) খেলাফত ব্যাতিতই সম্ভব……..অথচ উভয়টাই ভিন্ন ভিন্ন বিষয়৷”এটা একটা ভুল চিন্তা…! বাস্তবে শরয়ী নেতৃত্বই হল খেলাফত৷ অথচ শরীয়তে উভয়ের মধ্যে কোন ভিন্নতা নাই৷ কাজেই যেখানেই ইসলামী নেতা পাওয়া যাবে সেই খলিফা, চাই মানুষ তাকে খলিফা বলে সম্বোধন করুক অথবা আমীর৷এ মাসআলায় বাস্তব শরীয়ত আর প্রচলিত (উরুফ)এর মধ্যে পার্থক্য না করার কারনেই এ ভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে৷
তাই শরীয়তের মর্মের দিকে গভীর মনোনিবেশ করে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছা আবশ্যক, আর কোন বিষয়ের হুকুমের দিকে গভীরে দৃষ্টিপাত করলে তার বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা বের হয়ে আসে৷ আর প্রচলিত রাজনীতি ও খেলাফতের মধ্যে পার্থক্য বুঝাও আবশ্যক৷ কেননা খেলাফত হল শরিয়তের একটা বিষয় যা রাজনীতিতে অচল৷ এখন আমরা যদি খেলাফত ফিরিয়ে আনার আবশ্যকতা নিয়ে কথা বলি, তাই বলে আমাদের মাঝে শরীয়ী খেলাফতের অনুপস্থিত আছে এ মর্মে আমাদের স্বীকৃতি দিচ্ছি ব্যপারটা এমন নয়, বরং আমরা আল্লাহর দ্বীন, হুকুম মেনে আসছি সেদিন থেকে, যে দিন থেকে তালেবানদের হাতে ইসলামী হুকুমত কায়েম হয়েছে৷ কিন্তু যে খেলাফত আমাদের মাঝে অনুপস্থিত সেটা হল প্রচলিত রাজনীতির নিয়মানুসারে খেলাফত৷ এ কথা ভালভাবে সাব্যস্ত করার জন্য বলব-
খেলাফতে শরইয়্যাহ হল ‘বড় নেতৃত্বের জন্য মুসলমানদের কোন ব্যক্তির হাতে বায়আত দেওয়া৷ যদিও বা সেই বায়আত কালে অথবা পরে বায়আত সমস্ত মুসলিম দেশের উপর তার কতৃর্ত্ব ক্ষমতা বলবত্* থাকুক বা না থাকুক৷ তবে শর্ত হল তার পূর্বে অন্য কারো উপর বায়আতকর্ম সংগঠিত না হতে হবে৷ আর খিলাফাতে উরফিয়্যাহ (বর্তমানে প্রচলিত খেলাফতের সংজ্ঞা) হল যেটা “প্রচলিত রাজনৈতিক ধারনা” তা হল, মুসলিম বিশ্বের সকল রাষ্ট্র তার কর্তৃত্ব স্বীকার আর ধর্মীয়গুরু হিসেবে তার আনুগত্য ও মান্য করা৷
আর শরয়ী আহকাম সমূহ বর্তমানে প্রচলিত ধারনার বানে প্লাবিত হবে না৷ একমাত্র শরিয়তের চিরন্তন বাস্তবতাই কার্যকর হবে৷ অর্থাত্* খেলাফতের দায়িত্ব একমাত্র তিনিই পালন করবেন যিনি প্রথমে খেলাফতের বায়আত নিয়ে আমির হিসেবে নির্বাচিত আছেন যদিও সে নিজেকে খলিফা দাবী না করে৷ কেননা শরিয়তের আলোকে ঐ বায়আতই খেলাফত ৷ বাস্তব খেলাফতের মর্মের ব্যপারে উপরোক্ত ভাবনা নিজের বুদ্ধি থেকে আনিনি বরং এদিকেই শরীয়তের নসসমূহ (দলিল) দিকনির্দেশ করে ৷ শরিয়ত একাধিক নেতৃত্বকে নিষেধ করে আর খেলাফতের দায়িত্ব প্রথম ব্যক্তির উপরই বর্তায়৷
ইসলামী দেশ সমূহ কোন ব্যাক্তিকে শরয়ী বায়আত প্রদান করল অতপর অন্য কোন ব্যক্তি উক্ত দায়িত্বের দাবী করল এ কথা বলে যে, আপনাকে দেয়া বায়আত তো হল শুধু ইমারতের আমিরের হিসেবে আর আমি তো মুসলিমদের বায়আত নিচ্ছি খেলাফতের যে, আমি খলিফাতুল মুসলিমিন৷ এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না৷ এমন ধরনের দাবী শুধু ‘ইমারত’ ও ‘খেলাফত’ শব্দের পার্থক্যের ভিত্তিতে, শরিয়তে যার কোন ভিত্তি নাই৷ খেলাফাত হল মুসলমানদের দায়িত্বভার গ্রহণ করা, আর যেই মুসলমানদের দায়িত্বভার গ্রহণ করবে শরিয়তের দৃষ্টিকোন থেকে তাকেই খলিফা বলা হবে৷ এখন বাকী রইল শুধু নিদৃষ্ট করা একাধিক আমিরের আভির্ভাব হলে এই (খেলাফতের) পদের হক্বদার কে হবে৷
প্রিয় পাঠক! সাধারণ নেতৃত্ব যার মধ্যে সাধারণ মুসলিমগণ অন্তর্ভূক্ত আর যুদ্ধের নেতৃত্ব অথবা মুসলিম সাধারণের একটি জামাতের নেতৃত্বের মাঝের পার্থক্যের ব্যপারটা ব্যখ্যা করছি৷ নিম্নোক্ত কথাগুলো শাইখ আবু মুনযিরের যা ঐসমস্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দলিল হবে যে উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করে না যা পরিত্যজ্য বলে বিবেচিত হবে৷[মুনিরুত তাওহিদ ওয়াল জিহাদ]
এমনিভাবে ফিকহী দৃষ্টিকোন থেকে মুসলিম জনপদসমূহের আমীরের (যদি সে প্রথম বায়আতপ্রাপ্ত না হয় তবুও) মাঝে খলিফাতুল মুসলিমীন পদের মাঝে কোন পার্থক্য নাই৷ শুতরাং নেতার যে অধিকার উভয়ের (আমির এবং খলিফা) অধিকার এক৷ নেতার যে দায়িত্ব উভয়ের (আমির এবং খলিফা) একই দায়িত্ব৷ উভয়ের মাঝে শুধু পার্থক্য হল প্রথমজন ইসলামী বেশ কিছু রাষ্ট্রসমূহে অথবা সমস্ত মুসলিম বিশ্বে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়নি৷ আর দ্বিতীয়জন কিছু রাষ্ট্রসমূহে অথবা সমস্ত মুসলিম বিশ্বে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে। নেতৃত্বের জন্য ‘কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা’ ইসলামী শরীয়তের হুকুমে কোন প্রভাব ফেলবে না৷ কারণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা নেতৃত্বে জন্য শর্ত নয়৷ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা হয় বায়আতের মাধ্যমে, কর্তৃত্বের দ্বারা নয়৷ এ অর্থে শরয়ী সীমরেখায় খেলাফতে উসমানী আর খেলাফতে তালেবানীর মধ্যে কোন পার্থক্য নাই৷
ইসলামিক স্টেট বাংলাদেশ

যদি সমস্ত মুসলমানদের এক আমীরের নেতৃত্বে একতাবদ্ধ করতে হয় তবে একাধিক ‘ইমারত’ বৈধ হতে পারে না৷
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×