সময় এগিয়ে চলে সামনের দিকে এক পর্যায়ে দ্বিতীয় আরেকটি আল্লাহর গুণ নিয়ে আলোচনা উঠলো। যা কুরআনুল কারীমের সাত জায়গায় ইরশাদ হয়েছে- الرحمن على العرش استوى করুনাময় আল্লাহ যিনি আরশের উপর সমাসীন রয়েছেন। (সূরা ত্বহা-৫)
এআয়াতের মর্মকথা হচ্ছে- আল্লাহ তা‘য়ালা মাত্র ছয়দিনে আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তারপর তিনি এর শাসনভার কারও হাতে ছেড়ে দেননি (যেমনটি হিন্দু ও মুশরিক সম্প্রদায়ের বিশ্বাস)। বরং তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন এবং নিজেই সমগ্র জাহান পরিচালনা করছেন।
আল্লাহ তা‘য়ালা আরশে সমাসীন হওয়ার অর্থ কি ?
সালফে সালেহীনের মধ্যে ইমামে আহলে সুন্নাত হযরত ইমাম মালেক রা. এবং সুফিয়ান সাওরী এবং এক বর্ণনা অনুযায়ী উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামা রা. কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এই সমাসীন হওয়ার অর্থ কী ? তারা সকলেই উত্তর দিয়েছেন-
الاستواء معلوم والكيف مجهول والايمان به واجب والسوال عنه بدعة.
সমাসীন হওয়ার আভিধানিক অর্থ জ্ঞাত, রূপ-ধরণ অজ্ঞাত। তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন অনিবার্য এবং এ নিয়ে প্রশ্ন করা বিদআত।
অর্থাৎ সামান্য আরবি ভাষার জ্ঞান যার মধ্যে আছে সেও আয়াতে উল্লিখিত استواء (ইসতিওয়া) শব্দের অর্থ জানেন। অর্থ হলো সোজা হয়ে বসা। সুতরাং আল্লাহ আরশে সমাসীন হয়েছেন এতটুুকু আমরা জানি। কিন্তু বসার ধরণ, পদ্ধতি সম্পর্ক আমরা জানি না। তবে এ বিষয়ের উপর ঈমান রাখা ঈমান বিল গায়েবের অন্তর্ভূক্ত ও জরুরী।
মোট কথা : আমাদের এই মহান পূর্বসূরীগণ বলেছেন, যথাযথভাবে আরশের উপর সমাসীন হওয়াটা আল্লাহর গুণ ও সিফাত যা অদৃশ্যের বিষয় তাই তা পরিপূর্ণরূপে উপলব্ধি ছাড়াই মানতে হবে। যেমন না দেখে না বুঝেই আমরা জান্নাত ও জাহান্নামের ব্যাপারে ঈমান এনেছি। এসব বিষয়ে সামান্য হয়তো বুঝা যাবে কিন্তু পরিপূর্ণ রূপ বুঝা সম্ভব নয়। তাই আল্লাহ আরশের উপর কীভাবে সমাসীন হলেন এনিয়ে প্রশ্ন করাটাও বিদআত। এটাই পূর্বসূরীদের মত। তারা ছিলেন প্রকৃত সালাফ, তাদেরকে যারা অনুসরণ করে তারাই প্রকৃত সালাফী। তবে বর্তমানে দাবীদার সালফি সেই সালাফি নন।