ট্রাইব্যুনালে বিচারের নানা দিক নিয়ে বেলজিয়ামে অবস্থানরত ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের স্কাইপি কথোপকথনে উঠে এসেছে প্রসিকিউশনের সঙ্গে কীভাবে শলাপরামর্শের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়াটি চলছে। চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর স্কাইপি কথোপকথনে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম প্রসিকিউটর জিয়াদ আল মালুম সম্পর্কে বলেন, ‘মালুম খালি লাফায় লাফায় ওঠে। না, মানে যখন ওঠে যৌক্তিক কারণ নিয়া তো ওঠে না।’ অপরদিক থেকে ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘কী সেইটা বলেন?’ জবাবে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম জানান, ‘না কোনো কারণ নাই। আমি ধমক দিয়ে বসায় দিছি। পরে আবার রুমে ডাকছি। পরে কইছে এইডাই ঠিক আছে। আমি দাঁড়াইয়া যামু, আপনি আমারে বসাইয়া দেবেন। লোকে দেখুক আমাদের মধ্যে কোনো খাতির নাই।’ এছাড়া অন্যান্য প্রসিকিউটরদের যোগ্যতা এবং দক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে দুইজনের কথোপকথনে। কথোপকথনের একপর্যায়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, কাকে আর এখানে আনা যেত। ড. কামাল হোসেন ক্রিমিনাল বোঝে না। আমির উল ইসলাম গ্যানজাম করবে। এছাড়া বেসরকারি সংস্থা বিলিয়ার সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী ঘরানার সাবেক আমলা ওয়ালিউর রহমানকে চোর বলে আখ্যায়িত করা হয়। সুলতানা কামালের সাক্ষ্য এবং তার সঙ্গে আলোচনার বিষয় নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হয় সেদিনের স্কাইপি কথোপকথনে।
উল্লেখ্য, একটি বিদেশি সূত্র থেকে স্কাইপি কথোপকথনের বিস্তারিত তথ্য আমার দেশ-এ আসার পর এ নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। এই অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম নিয়মিত ড. আহমদ জিয়াউদ্দিন ও যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বাংলাদেশী নাগরিক রায়হান রশিদের সঙ্গে বিচার প্রক্রিয়া ও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে নানা রাজনৈতিক আলোচনা করেন। তবে গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিচারপতিরা স্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনা করা থেকে বিরত থাকেন, যা গত শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় ইকোনমিস্টের অনলাইন সংস্করণে উঠে এসেছে। অথচ বৃহস্পতিবার ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে রুল জারি করে এক আদেশে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনটি বাংলাদেশে একটি নতুন ধারণা। এই আইন সম্পর্কে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছেন। ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনসহ অন্যদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়টিও তিনি আদেশে স্বীকার করেন। কিন্তু আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, বিচারপতিরা কোনো মামলায় আইন বিশেষজ্ঞ ব্যাখ্যার প্রয়োজন মনে করলে সেই বিষয়ে অভিজ্ঞদের অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগের রেওয়াজ রয়েছে। এর বাইরে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে ব্যক্তিগত পর্যায়ে বা পক্ষভুক্ত কোনো ব্যক্তিপর্যায়ে আলোচনা বা পরামর্শ নেয়ার সুযোগ নেই। বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম ও ড. আহমদ জিয়াউদ্দিনের গত ১২ সেপ্টেম্বরের স্কাইপি আলোচনা বিস্তারিতভাবে পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা হলো।
১২ সেপ্টেম্বরের কতোপকথন
বিসতারিত এখানে

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




