somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উ মা ই য়া সম্রাজ্ঞী (পর্বঃ১)

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পৃথিবীর প্রাচীনতম নগরী দামেশক।ব্যাস্ততম শহর দামেশক আজ জনশূন্য। রাস্তাই নেই কোন মানুষ। বাজারে নেই কোন কোলাহোল।
হ্যাঁ! দামেশক নগরী আজ বিরাণভূমির মত।
জনগনের সমাগম আজ 'খেলাফত-প্রসাদে'।অর্ধ পৃথিবী শাসনের কেন্দ্রবিন্দু -রাজধানী 'দামেশক '।সেখানেই রয়েছে খলিফার প্রসাদ।
উমাইয়া খলিফার প্রসাদ প্রাঙ্গণে আজ দামেশক নগরীরর সর্বস্থরের মানুষের ভীড়।
প্রসাদের বারিন্দায় শহরের বড় বড় নেতৃবৃন্দদের মুখ দেখা যাচ্ছে।সবার চোখে মুখে এক ধরণের অস্থিরতারর ছাপ।মনে হচ্ছে সবাই অনাকাঙ্খিত কিছুর অপেক্ষায় আছে।
কারন, উমাইয়া খলিফা সুলাইমান বিন আব্দুল মালিক এখন মৃত্যু শয্যায় শয়িত।জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি।
খলিফার পাশে শুধু মাত্র তার আস্থাভাজন এবং উপদেষ্টারা-ই রয়েছে।আর কেউ নেই।

মহলের বাহিরের মত ভিতরের অবস্থাও একি-ই রকম।উমাইয়া নেতৃবৃন্দদের বিবি এবং কন্যা-জায়ারা নতুন সংবাদ শোনার জন্য ব্যাস্ত।তাদের অগ্রভাগে রয়েছে ইয়াজিদ,হিশাম,মাসলামাদের স্ত্রী এবং খলিফার বোনেরা।সবাই খুশির সংবাদ শুনতে চাচ্ছে যে, "আমার স্বামী-কেই পরবর্তী খলিফা হিসেবে নির্বাচিত করা হোক।"
একদিকে তারা খলিফার মৃত্যুতে চিন্তিত,শোকাহত।অন্যদিকে তারাই আবার খলিফার মৃত্যু কামনা করে, ক্ষমতার লাগাম ধরার প্রতিযোগীতায় ব্যাস্ত।
মারাত্নক আশ্চার্য!!!

মহলের এক কোনে বসে আছে সুন্দরী এক যুবতী। মান-সম্মানে উঁচু পর্যায়ের এক যুবতী। তার পরণে এমন মূল্যবান চাকচিক্যময় কাপড় রয়েছে,যা মহলের কারো কাছে নেই।তার মুখ থেকে শান্ত-সুন্দর মর্যাদাময় ভাব প্রকাশ হচ্ছে,যা অন্য নারীর চেহেরায় নেই।
মনে হচ্ছে মহলের অন্যান্য যুবতীদের আশা-উদ্দীপনায় তার অংশীদারিত্ব নেই।সে তার অর্জন নিয়েই তুষ্ট,সন্তুষ্ট।
বাস্তবে সে সবকিছুই পেয়েছে, যা প্রতিটি যুবতী আশা করে।সৌন্দর্য এবং সম্মান,ভদ্রতা এবং যোগ্য স্বামী।উচ্চ বংশ,আরাম আয়েশ এবং স্বাচ্ছন্দ।সবকিছুই তার অর্জিত।
আমিরুল-মু'মিনিনের বাসভবনে,খিলাফতের বিছানায় তার জন্ম।সম্মান এবং ইজ্জতের কোলে তার প্রতিপালন।সুখ-শান্তির মধ্যে তার দিন গুজরান।
সে চেয়েছে,কিন্তু পায় নি।এমন কিছু নেই।যা চেয়েছে সব পেয়েছে।যা ইচ্ছা সব পুরণ করেছে।
চিত্র এবং চরিত্রের দিক দিয়ে সে ছিল সৃষ্টিগত সুন্দরী। তার জামাল(সৌন্দর্য) এবং কামাল(পরিপূর্ণতা)ছিল ভরপুর।
তার চারপাশে সে যাদেরকে পেত,সবাই তাকে আদর করত,ভালবাসত।নৈরাশ কি জিনিস!তা তার জীবনে ছিল না।

জানেন সেই যুবতী কে?কে তার মহান পিতা??
জানেন,আজকের মরক্কো থেকে সিন্দু পর্যন্ত, রাশিয়া থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত কতগুলো রাষ্ট রয়েছে???
তার পিতা একাই সবগুলো রাষ্টের শাসক ছিলেন।এসব রাষ্টে তার উপর আর কোন 'রাষ্টপতি' ছিল না।
হ্যাঁ!
তার পিতার নাম আব্দুল মালিক বিন মারওয়ান।উমায়্যা খলিফা।
আর সেই রূপসী যুবতীর নাম হল,ফাতিমা বিনতে আব্দুল মালিক।
ফাতিমা!খলিফা তনয়!
ফাতিমা!খলিফার বোন,পরে খলিফার স্ত্রী!।

ফাতিমা যখন যুবতী।
উমাইয়া গোত্রের সকল যুবকদের দৃষ্টি তার দিকে।সবাই তাকে কামনা করতে লাগল।
কিন্তু,তার পিতা তার জন্য নির্বাচিত করলেন উমাইয়া বংশের শ্রেষ্ঠ যুবককে।উমাইয়া বংশের সম্মান-মর্যাদা এবং গৌরব ভিত্তি করে যার উপর।যে উমাইয়া বংশের শ্রেষ্ঠ খলিফা।সে হচ্ছে ওমর ইবনে আব্দুল আযিয।
আব্দুল মালিকের প্রিয় ভাতিজা।ফাতিমার চাচাতো ভাই।

ফাতিমা এখন খলিফার প্রসাদ থেকে ভাবি খলিফার প্রসাদে।বিলাসিতার এক সাগর সাতঁরিয়ে সে এখন আরেক সাগরে।
তার সচ্ছলতা আরো বেড়ে গেল।সুখ-শান্তি তার চারপাশে ভীড় করতে লাগল।
............
...................
.........................(ক্রমশ...ইতিহাসের কথা সিরিজে আমাদের সঙ্গে থাকুন....
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:২৭
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×