somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"এই হাত দিয়ে আমি দেড় লক্ষ পৃষ্টার অধিক লিখেছি" - ড. বাশশার আওয়াদ মা'রুফ

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[[ ড. বাশশার বিন আওয়াদ বিন মা'রুফ।সমকালীন ইলমি দুনিয়ার পরিচিত-প্রশিদ্ধ একটি নাম। তিনি একজন মুহাক্কিক, ঐতিহার এবং ইসলামী স্কলার। ১৯৪০ ঈসায়ী তে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে তাঁর জন্ম। ছোট বেলায় আব্বার কাছে কুর'আন শরিফ পড়েছেন। এরপর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৬০ ঈ তে জামি'আ বাগদাদ( বাগদাদ ইউনিভার্সিটি) এ ইতিহাস অনুষদে ভর্তি হন। ১৯৭৬ ঈ তে জামি'আ বাগদাদ থেকে ডক্টেরট ডিগ্রী অর্জন করেন। ইতিহাস বিষয়ে তিনি ডিগ্রী অর্জন করলেও ইলমে হাদিছের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসা তাঁকে হাদিছের ময়দানে নিয়ে আসে। হাদিছ, রিজাল-শাস্ত্র এবং ইতিহাস বিষয়ক অনেক মাখতুতাতের(পাণ্ডুলিপি) তাহকিক(সম্পাদনা) করেছেন তিনি। সেই সাথে ভিবিন্ন বিষয়ে তাঁর অনবদ্য রচনা আর প্রবন্ধও আছে। তবে তিনি ইলমি ময়দানে একজন যোগ্য মুহাক্কিক হিসেবে প্রশিদ্ধ। আল্লামা মিযযি'র তাহযিবুল কামাল, ইমাম যাহাবির তারিখুল ইসলাম, সিয়ারু আ'লামিন নুবালা, আল্লামা ইবনে জারির এর তাফসিরে তাবারি ইত্যাদি সহ হাদিছের অনেক কিতাবের তিনি তাহকিক করেছেন। নিচের লেখাটি মিসরের ইস্কান্দারিয়ার একটা জামি'আর তালিবুল ইলমদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত অনুলিখন।
— অনুবাদক।]]


... আমাকে আমার জীবন শিখিয়েছে, যে মানুষের জন্য তার জীবনের একটি মুহুর্তও নষ্ট করা উচিত নয়; বরং সব সময় নিজের মূল্যবান সময় কে ইলম অর্জন এবং আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি তালাশের মাধ্যমে ব্যয় করা উচিত। নিজের আখেরাতের জন্য সব সময় ফিকির করা উচিত। পৃথিবী র জীবনটাকে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি এবং ইলমে নববী অর্জনের মাধ্যমে অতিক্রম করা উচিত।

মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে, আপনি এতগুলো কিতাব কীভাবে তাহকিক করেছেন, এত লেখালেখি কীভাবে করেছেন?
আমি তো আমার এই হাত দিয়ে দেড় লক্ষ পৃষ্টারও অধিক লিখেছি।
পঞ্চাশ বছর ধরে আমি প্রতিদিন সব সময় চিন্তা-ফিকির করি, যে আজকে আমি কতগুলো সময় কাজে লাগালাম। কতগুলো সময় আজকে আমি লেখালেখি, গবেষণা এবং তাহকিক না করে নষ্ট করলাম।
চল্লিশ বছর ধরে আমি নিয়মিত একটা রুটিন করে রেখেছি, যে আমি প্রতিদিন কমপক্ষে ষোল পৃষ্টা লিখবো। অনেক সময় আমি দিনে বিশ পৃষ্টাও লিখে ফেলতাম। এয় ভয়ে যে, হয়তো কালকে আমি ষোল পৃষ্টার লেখা পূর্ণ করতে পারবো না। হতে পারে কালকে কোন ঘটনা কিংবা দূর্ঘটনা ঘটতে পারে, যার ব্যাপারে আমি জানি না।

মানুষ বলে, ড. বাশশার কিতাবের উপর শুধু তার নাম লিখে দেন। লেখালেখি এবং তাহকিক করেন অন্যরা। তিনি শুধু তার নামটা কিতাবের উপর লিখে দেন।
আমি তো কিতাবের সর্বশেষ সম্পাদনা, এমনকি কিতাব প্রেসে যাওয়ার আগের সম্পাদনাটাও পর্যন্ত নিজেই করি। আলহামদুলিল্লাহ।

মানুষ সব সময় চেষ্টা করে, যেন সে তার জীবনে ভালো কোন কাজ আঞ্জাম দেয়। এবং সেই কাজ নিয়ে তার জীবনের উপর সন্তুষ্টি থাকার চেষ্টা করে।
বিশেষকরে ইলমে হাদিছের পবিত্র এই খেদমত। দুঃখের সাথে বলতে হয়, কোন জামি'আ তে আমার হাদিছ পড়ার সৌভাগ্য হয়নি। ইলমে হাদিছের উপর আমার কোন সনদ, কোন মাস্টার্স এবং ডক্টেরট ডিগ্রী নেই।
কিন্তু আমি ইলমে হাদিছ কে ভালোবাসি। ইলমে হাদিছের ভালোবাসা আমার শরিরের শিরায় শিরায় প্রবেশ করেছে। এমনকি ইলমে হাদিছ আমার অন্তরও দখল করে নিয়েছে।

আমি ভিবিন্ন দেশে সফর করি। উলামা-মাশায়েখের সাথে মুলাকাত করার জন্য। তাদের ইলম থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য। তাদের সান্নিধ্যে কিছু সময় অতিবাহিত করার জন্য।( এই কথা বলার পর তিনি কান্না শুরু করে দিলেন)
আমাদের বন্ধু শায়খ ড. আব্দুর রাজজাক ইস্কান্দার* (হাফিযাহুল্লাহ) বলেন,
"আমি আমার শায়খ আল্লামা ইউসুফ বিন্নুরি রহ. এর কদমের পাশে বশে যতটুকু ইলমি ইস্তিফাদা করেছি, এরকম আর কোথাও ইস্তাফাদা করতে পারিনি। আমি যখন উনার খেদমত করতাম, যখন উনার পা দাবিয়ে দিতাম, এবং তিনি তখন আমার সাথে কথা বলতেন, তখন আমি তাঁর ইলম থেকে উপকৃত হতাম।"
আমরা যখন সেসব দেশে সফর করি —হিন্দুস্তান, পাকিস্তান সহ পৃথিবীর আনাচে-কানাচে— এবং সেখানকার তালিবুল ইলমদেরকে দেখি, যেরকম এখানে(ইস্কান্দারিয়ায়) তালিবুল ইলমদের পবিত্র চেহেরা দেখছি। তারা মৌমাছির বাসার মত দল বেঁধে বেঁধে কুর'আন তেলাওয়াত করছে। হাদিছ শরিফ পড়ছে। তখন সত্যিই আমাদের গর্ব হয়।ইসলামের সম্মান তো এভাবেই প্রকাশ হয়।.......


ভাষান্তর: ইসহাক ওমর
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ভোর ৬:১৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×