somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং এবং সর্বশক্তিমান-সর্বজ্ঞানীর জগৎ-পর্ব ৬

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

( লেখাটি অনেকদিন পরে লিখলাম। পাঠকদের কাছে আমি সত্যিই দুঃখিত আমার এই সময় ক্ষেপনের জন্য )

ক্যামব্রিজ বিশ্ব-বিদ্যালয়ের বিশ্বখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানী বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং সম্প্রতি লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে মৃত্যুপরবর্তী জীবন ও স্বর্গ সম্পর্কিত বিশ্বাসকে রূপকথা আখ্যা দিয়েছেন। হকিং-এর বিবেচনায় এসব হচ্ছে মৃত্যুভীতিতে আক্রান্ত মানুষের বানানো গল্প। তিনি বলেন “আমি মস্তিষ্ককে কম্পিউটার হিসাবেই বিবেচনা করি, যার যন্ত্রাংশগুলো নষ্ট হয়ে গেলে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। নষ্ট কম্পিউটারের কোন পরকাল নেই, কম্পিউটারের জন্য কোন স্বর্গও অপেক্ষা করছে না। পরকাল-স্বর্গ এগুলো অন্ধকারকে ভয় পায় এমন লোকদের জন্য তৈরি রূপকথা। এমতাবস্থায় স্টিফেন ডব্লিউ হকিং-এর মতো বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানীর মন্তব্য একশ্রেণীর মানুষকে ধর্মহীনতার পথে নিয়ে যেতে পারে।

খ্রীষ্ট ধর্মের চরম অত্যাচার এবং কতিপয় বিজ্ঞানীর প্রাণহানির ঘটনায় বিজ্ঞানী সমাজ আজও পর্যন্ত নাস্তিকতার বিষয়বস্তুকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমর্থন দিয়ে থাকে। একজন সাধারণ নাস্তিক মানুষের কোন বক্তব্য একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হলেও হকিং-এর মত বিশ্বখ্যাত ব্যক্তিদের মন্তব্যের ক্ষতিকর প্রভাব মানবজাতির জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অতএব এসব ক্ষতিকর মন্তব্য, বক্তব্যের প্রতিরোধ ও প্রতিকার প্রয়োজন। কারন যখন কোন অপকর্ম, অঘটন, খুন-ডাকাতি ইত্যাদির সম্ভাবনা থাকে সেক্ষেত্রেও ধর্ম প্রতিরোধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। একজন চোর-ডাকাত খুনী পর্যন্ত ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। ধর্মই ঐসব কুকর্ম, খারাপ পথ থেকে তাকে ফিরিয়ে আনে, রক্ষা করে। ইতিহাসে এমন সব ঘটনারও ভূরি ভূরি প্রমাণ আছে। পৃথিবীর কোটি কোটি নারী-পুরুষ তাদের ধর্মবিশ্বাস অটুট রেখে নীতি নৈতিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে বৈবাহিক সামাজিক জীবন-যাপন করে চলেছেন। কারণ একজন মানুষের নীতি-নৈতিকতা রক্ষায়ও ধর্মের ভূমিকা অপরিসীম। সেই ধর্মবোধের অন্যতম একটি বিষয় পরকাল। এই পরকাল ধর্ম বিশ্বাসের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। পরকালের বিশ্বাসবোধ একজন ধার্মিকের ঈমানদার হওয়ার অন্যতম শর্ত। অথচ সেই পরকাল নিয়েই বিজ্ঞানী ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং সন্দেহ প্রকাশ করেছেন! শুধু সন্দেহই নয় বিষয়টি বাতিল করে দিয়েছেন। স্টীফেন ডব্লিউ হকিং পরকাল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলে কি হবে? পরকাল ইদানিং বিজ্ঞানীদের নতুন চিন্তার খোরাক যোগাচ্ছে। নতুন গবেষনাতে পরকালের বাস্তবতারই নির্দেশ দিচ্ছে। পাঠক আসুন আমরা পরকালের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে আধুনিক বিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ন কিছ চিন্তা চেতনা তুলে ধরি।



নাস্তিক্যবাদী বিজ্ঞান মহাবিশ্বের ফাইন টিউনিং বিষয়টিকে গুরুত্বহীন করার তাগিদে মাল্টিভার্স তত্ত্ব দাড় করিয়ে প্রমান করতে চেয়েছিলো অসংখ্য মহাবিশ্বের মধ্যে আমাদের পৃথিবী একটি। কাকতলীয় ভাবে এগুলি মিলে গেছে। তাই আমরা এ পৃথিবীতে আর্বিভুত হয়েছি। এ যেনো অন্ধের হস্তি দর্শনের মতো ব্যাপার! কারন বহুমহাবিশ্ব এখন আবার গোদের উপর বিষফোড়া হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পরকালের বিষয়টি উঠে আসবার কারনে কেউ বা বহুমহাবিশ্বকে হাইপোথিসিস বলে বিষয়টির অগ্রযাত্রাকে রোধ করতে চাইছে। তথাপিও এই তত্ত্ব ক্রমশই এগিয়ে চলছে। ইদানিং বহুমহাবিশ্ব তত্ত্ব মানুষকে পরকালের নিত্যতার বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করছে। ‘পরকাল’ আধুনিক গবেষনার চুড়ান্ত বিষয়ে উঠে এসেছে আর সেই বিষয়টিই হলো বিজ্ঞানের বহুল চর্চিত একট বিষয় বহুমহাবিশ্ব। বিজ্ঞানীরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপলদ্ধি করতে পেরেছেন এই মহাবিশ্বের প্রাণশক্তি আরেকটি মহাবিশ্বে জীবন রুপে প্রতিষ্টিত হতে পারে । এই মহাবিশ্বের হারিয়ে যাওয়া জীবনীশক্তি হতে আবার নতুন করে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হতে পারে। সেই মহাবিশ্বের সৃষ্টিশীলতা অথবা টাইমিং কম্পোজিশন হতে পারে ভিন্ন রকম। সৃষ্টির গাঠনিক উপাদানও হতে পারে ভিন্ন রকম।



আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের চূড়ান্ত কিছু সীদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে চক্রাকার মহাবিশ্ব নামক একটি তত্ত্ব। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী পল স্টেইনহার্ট ও নেইল টুরকের চক্রাকার মহাবিশ্ব “Endless Universe “ নামক একটি তত্ত্বে বলেছেন এই মহাবিশ্ব বারে বার সৃষ্টি এবং ধ্বংশ হয়। ষ্ট্রিং তাত্তিকদের উদ্ভাবিত মেমব্রেন এই সৃষ্টি ও ধ্বংশের কারন। তারা তাদের “Endless Universe” বইয়ের মাধ্যমে এসকল তথ্য জানিয়েছেন। তাদের মতে এ মহাবিশ্বের কোন শুরু নেই শেষ ন্ইে। এ এক চলমান বিষয়, অনন্ত, অফুরন্ত। সৃষ্টি এবং ধ্বংশের চক্রে আবদ্ধ। এই মহাবিশ্ব যেমন একদা সৃষ্টি হয়েছিলো এবং আবারও তা হবে; শুরু করবে নতুন চক্রের। আজ থেকে ট্রিয়ন বছর পর আবারও শুরু হবে নতুন চক্রের। ঘটবে নতুন সূচনা। একেকটি চক্র একেকবার মহাবিশ্বকে সৃষ্টি এবং ধ্বংশ করে। স্ট্রিং তত্ত্বের সমীকরণ বিশ্লেষণ করে আরো একদল স্ট্রিং তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী বলছেন আমাদের মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল দুটি ব্রেনের সংঘর্ষের কারণে । দুটি ব্রেনের এরকম সংঘর্ষের ফলেই ইনফ্লেশনের সৃষ্টি হয় । এরকম সংঘর্ষ কিন্তু কোন নির্দিষ্ট একটি স্থানে হয় না, বরং আমাদের মহাবিশ্বের বাইরের শুন্যতায় এরকম সংঘর্ষ হয়েই চলেছে, ফলে সৃষ্টি হয়ে চলেছে অসংখ্য মহাবিশ্ব । ব্রেনের সংঘর্ষের কারণে এভাবে মহাবিশ্ব সৃষ্টির এই তত্ত্বকে ইকপাইরোটিক থিওরি (Ekpyrotic Theory) বলা হয় ।

বিশিষ্ট বিজ্ঞানী আন্দ্রে লিন্ডের তত্ত্ব অনুযায়ী এবং আধুনিক পর্দাথবিজ্ঞানীগণ বিশেষ করে স্ফিতিতত্ত্ব নিয়ে যারা গবেষনা কবছেন তারা ইদানিং বুঝতে পারছেন বিগব্যাংগ মহাবিশ্বের মূল কারন নয়। বিগব্যাংগের পূর্বে কিছু একটা ঘটেছিলো! ইদানিং ষ্ট্রিং তাত্ত্বিকেরা এম তত্ত্বের মেলবন্ধনে গানিতিক ভাবে দেখিয়েছেন ইনফ্লেশন যখন শুরু হয় তখন অসংখ্য ভ্যাকুয়া ষ্টেট এর উদ্ভব ঘটতে পারে এবং সেই অসংখ্য ভ্যাকুয়া ষ্টেট অসংখ্য বিগব্যাংগ এর জন্ম দিতে পারে। এ ধরনের ইনফ্লেশন অবিরামভাবে স্ব-পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে প্রতি মূহুত্ত্ইে তৈরী করছে নতুন নতুন মহাবিশ্ব। এই প্রক্রিয়া অতীতে যেমন চলছে ভবিষ্যতেও চলবে। আসলে এটি অনন্ত মহাবৈশিক সিস্টেমের কোন শুরু নেই শেষ নেই। স্ট্রিং তত্ত্ব অনুসারে বিভিন্ন ধরনের প্রকাশ্য নিয়ম সম্বলিত বিভিন্ন মহাবিশ্বের উদ্ভব হয়। প্রতিটা মহাবিশ্বের নিজস্ব অর্ন্তবতী জগত ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পেচিয়ে থাকে। আর এই ভিন্ন ভিন্ন পেচিয়ে থাকার কারনে মহাবিশ্বের হিসাব নিকাশ অথাৎ নিয়ম ভিন্ন ভিন্ন হয়। এভাবে স্ট্রিং তত্ত্বের নিজস্ব নিয়মগুলো থেকে আমাদের মহাবিশ্বের মত প্রাকৃতিক নিয়মযুক্ত, বিভিন্ন ধরনের মহাবিশ্ব উদ্ভব হতে পারে । এম তত্ত্বের এমন সব সমাধান আছে যেখানে অর্ন্তবতী জগতের প্যাচ বহু উপায়ে হতে পারে। অথাৎ এ তত্ত্ব মতে ১০ ‘৫০০ সংখ্যক ভিন্ন ভিন্ন মহাবিশ্ব সম্ভব যাদের প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব নিয়মাবলী। এখন প্রশ্ন হচ্ছে প্রতিটি মহাবিশ্বের জন্য এই সকল ভিন্ন নিয়ম নির্ধারন হচ্ছে কি করে? এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে আমাদের যেতে হবে সেলুলার অটোমেশন এবং তৎসংক্রান্ত বিষয়ে। ১৯৭০ সালে সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনে একটি কলাম প্রকাশিত হয়। সেই কলামে জন কনওয়ে দ্বিমাত্রিক সিএ এর নামকরন করেন “গেম অফ লাইফ” বা জীবনের খেলা। গেম অফ লাইফের বিভিন্ন নিয়মসমূহের অসংখ্য সেটের সাথে মহাবিশ্বের সাদৃশ্যময়তা রয়েছে। গেম অফ লাইফ বা জীবনের খেলার আপনাকে নির্ধারন করে দিতে হচ্ছে আপনি কোন সেটটি চাইছেন। আপনি যে সেটটি চাইছেন গেম অফ লাইফে ঠিক সেই সেটটি আপনার সামনে প্রকাশ ঘটবে। এই গেম অফ লাইফ নিয়ে ষ্টিফেন ডব্লিউ হকিং তার গ্রান্ড ডিজাইন বইতে লিখেছেন “প্রশ্ন আসে আমাদের মহাবিশ্বকে চালনাকারী মৌলিক নিয়ম (প্রকাশ্য নিয়ম সমূহ নয়) কিভাবে নির্ধারিত হলো? কনওয়ের মহাবিশ্বের মতো আমাদের মহাবিশ্বের বিবর্তনও একটা নির্দীষ্ট অবস্থা থেকে এসব নিয়ম মেনেই ঘটে। কনওয়ের জগতে আমরাই হচ্ছি সৃষ্টিকর্তা। যারা ঐ মহাবিশ্বের আদি অবস্থায় ব্স্তুমূহের অবস্থান ও প্রকৃতি নির্ধারন করে দিচ্ছি।” কনওয়ে গেম অফ লাইফে যিনি খেলে তাকে নির্ধারন করে দিতে হয় সে কোন সেটটি চাইছেন। পাঠক, একবার গভীর ভাবে ভেবে দেখুন কনওয়ের জীবনের খেলাই কেউ একজন সৃষ্টিকর্তা হয়। তবে মহাবিশ্ব নামক এই বিশাল রাজ্যপটে মহাবিশ্বের এই নিয়ম নির্ধারন করেছিলেন কে? নিশ্চয় একটি সত্ত্বা, একটি চেতনা জাগ্রত রয়েছেন যিনি সকল মহাবিশ্বের নিয়ম নির্ধারন করে দেন। অর্থাৎ অমনিভার্স এর মাঝে সচেতন অবস্থা বিদ্যমান। গেম অফ লাইফ যদি আপনার দেওয়া নির্ধারিত সেটটিই প্রকাশ ঘটায় তাহলে অসংখ্য মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে এই নিয়ম বা সুত্র অথবা মহাবিশ্বটা কেমন হবে তা নির্ধারনের দায়িত্ব পালন করে একটি চেতন সত্ত্বা ? র‌্যান্ডমলি হলে এতটা ফাইন টিউনিং হয়। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী পল ডেভিস বলছেন: “এমন ধারণা মনে স্থান দেয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা খুবই কঠিন যে, বিশ্বজগতের বিদ্যমান কাঠামো যা কিনা ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতম পরিবর্তনের ব্যাপারের স্পর্শকাতর যত্নের সঙ্গে চিন্তা-ভাবনা করেই অস্তিত্বে আনা হয়েছে।”-(Paul Davies, God and the New Physics, New York: Simon & Schuster, 1983, p.189) আমেরিকার এই জ্যোতির্বিদ প্রফেসর তার The Symbiotic Universe নামক গ্রন্থে বলছেন: “(বিশ্বজগতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা) বিভিন্ন সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করবার পর, তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের মনে যে-চিন্তার উদয় হয় তা হচ্ছে: (বিশ্বজগত সৃষ্টির পেছনে) নিশ্চয়ই কিছু অতিপ্রাকৃতিক এজেন্সির(some supernatural agencies) হাত আছে।”-(দেখুন: Hugh Ross, The Fingerprint of God, 2nd ed., Orange, CA: Promise Publishing Co., 1991, p.114-115) প্রাণী জগত উৎপত্তির মতো সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হতো না। এব্যাপারে আমি বিশিষ্ট বিজ্ঞানী শন ক্যারলের একটি সাক্ষাৎকার তুলে ধরি। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী শন ক্যারল লস এ্যাঞ্জেলস টাইমস্ এর সাথে একটি সাক্ষাতকারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেছিলেন। আমি আপনাদের সুবিধার স্বাথে সাক্ষাৎকার টি তুলে ধরলাম। সাক্ষাৎকারে তিনে বলেন “ আপনি যদি বিশ্বাস করে নেন যে মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে এবং এর আগে কিছুই ছিলো না, তাহলে সমস্যাটা ব্যাক্ষা করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। পর্দাথবিজ্ঞানে এমন কোন সুত্র নেই যাতে বলা হয়েছে, মহাবিশ্বকে নিম্ন এনট্রপি থেকে শুরু হতে হবে এবং ধীরে ধীরে এনট্রপির পরিমান বাড়তে থাকবে। কিন্তু বাস্তবে মহাবিশ্ব এমন আচরনই করেছে। আমার অনেক স্মার্ট কলিগ ঠিক এ কথাটাই বলেন। তারা বলেন “তুমি এটা নিয়ে কেনো চিন্তা করছ? আদি মহাবিশ্ব ছোট ছিলো এবং তার এনট্রপি ছিলো খুব কম, এটাই তো সবচেয়ে যুক্তিযুক্ত ”। কিন্তু আমি এটা মনে করি এটা এক ধরনের প্রেজুডিস। আমাদের মহাবিশ্বে বিষয়টা এরকম, এ কারনে আমরা মনে করি এটাই প্রাকৃতিক তথা স্বাভাবিক, অন্য কথায় এটাই প্রকৃতির নিয়ম। হ্যা, পর্দাথবিজ্ঞানের বর্তমান সুত্রগুলো দিয়ে এর ব্যাক্ষা করা সম্ভব না। কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি, বিষয়টা ধ্রুব সত্য বলে মেনে নেওয়া উচিত নয়। এক প্যাকেট কার্ড নিয়ে প্যাকেট থেকে সেগুলো বের করলে হয়তো দেখা যাবে, সবগুলো ক্রমান্ময়ে সাজানো আছে। কিন্তু, এক প্যাকেট কার্ড থেকে দৈবভাবে কিছু কার্ড নিলে এটাই স্বাভাবিক যে, সেগুলো অগোছালো হবে। নিম্ন এনট্রপির সাথে উচ্চ এনট্রপির সংর্ঘষটাও এখানে। কার্ডেও প্যাকেট খুললে সবগুলো কার্ড সাজানো অবস্থায় দেখা যায়। এটা দেখে আপনি আশ্চার্যান্বিত হন না। কারন এটা নয় যে, সাজানো অবস্থায় থাকাই স্বাভাবিক এবং প্রাকৃতিক। বরং মূল কারন হচ্ছে, কার্ডের প্যাকেট কোন বদ্ধ ব্যবস্থা নয়। প্যাকেটটাও এ থেকে বড় কোন ব্যবস্থা থেকে এসেছে যে ব্যবস্থায় একটা কারখানা ছিলো আর সে কারখানাতেই কার্ডগুলো সাজানো হয়েছে। তাই আমি মনে করি, এর আগে আরেকটি মহাবিশ্ব ছিলো যা আমাদের তৈরী করেছে। আমরা সেই বৃহৎ মহাবিশ্ব থেকে বেরিয়েছি। এটা বৃহত্তর কোন স্থান-কাল থেকে এসেছে যাকে আমরা পর্যবেক্ষন করতে পারি না। উচ্চ এনট্র্রপির কোন বৃহত্তর স্থানের অতি সামান্য এক অংশ থেকে আমাদের এই মহাবিশ্ব এসেছে। ”


এককথায় বলা যায় আমাদের মহাবিশ্বের ধ্বংশের পর এই মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশনের সারাংশ হতে সৃষ্টি হতে পারে আরেকটি মহাবিশ্ব। সেখানে আবার আমরা পুনরাত্থিত হতে পারি। শুরু হতে পারে আমাদের নতুন জীবন। সেই জীবনের সুখ দুঃখ আমাদের নিকট হতে পারে শাস্তি অথবা পুরস্কার। এই পৃথিবীর কোটিপতি ঐ পৃথিবীর রাস্তার ফকির রুপে শাস্তি পেতে পারে। ফকির কোটিপতি হতে পারে। বিজ্ঞানী মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। মানসিক প্রতিবন্ধী বিজ্ঞানী রুপে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। এক কথায় পূর্বের মহাবিশ্বের হিসাবনিকাশের উপর ভিত্তি করে আগামীর মহাবিশ্বের পুনরাত্থান অথবা শাস্তি-পুরস্কার নির্ধারিত হয়। বিশিষ্ট বিজ্ঞানী আন্দ্রে লিন্ডে ভাষায় “মহাবিশ্ব যদি কখন ধ্বংশ হয়ে যাইও জীবনের মূল সত্ত্বাটি হয়তো টিকে থাকবে অন্য কোন মহাবিশ্বে অন্য কোন ভাবে।” এবার আসি আমরা ধর্ম গ্রন্থগুলোর বক্তব্য অনুসারে মহাবিশ্ব সৃষ্টির বর্ননা কিরুপ আছে। আল কোরআন মহাবিশ্বের পুনরায় সৃষ্টির বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন আয়াতে উল্লেখ আছে “ সেদিন আমি আকাশকে গুটিয়ে নিবো। যেমন গুটানো হয় লিখিত কাগজপত্র। যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছিলাম, সেভাবে পুনরায় সৃষ্টি করিবো। আমার ওয়াদা নিশ্চিত আমাকে তা পালন করতেই হবে।” (সুরা আম্বিয়া 21: 104) এই আয়াতটিতে মহাবিশ্বকে কিভাবে শুন্য শক্তির পর্যায়ে উপনীত করা হবে। কিভাবে আমাদের সৃষ্টির মূল উৎস উচ্চ এনট্রপির বৃহত্তর কোন স্থান কালে প্রবাহিত করা হবে । (উচ্চ এনট্রপির স্থান কাল নিয়ে আসলে আমাদের কোন ধারণ নেই) উচ্চ এনট্রপির বৃহত্তর কোন স্থান কালে ধ্বংশশীল শক্তির মূল সারাংশ যাবে এবং আবার সৃষ্টি করবে নতুন মহাবিশ্ব। “আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংশশীল, বিধান তাহার এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।”(২৮:৮৮) এই আয়াতে বিধান বা বিধি বা সুত্র বা নিয়ম তার এবং তিনিই এটা নির্ধারন করেছেন বলা হচ্ছে। আল্লাহই যে এ সুত্র বা নিয়ম নির্ধারনের ক্ষেত্রে গ্রহনযোগ্য ব্যাক্ষা তা একটু বিবেক খাটালেই বোঝা যায়। একবার গভীরে গিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন-এই মহাবিশ্ব কি করে এত সুন্দর নিয়মের অধীন হয়ে এবং ফাইন টিউনিং এর সামঞ্জস্যতা রেখে এই প্রানী জগতের বিকাশে ভূমীকা রাখতে পারলো! নি:সন্দেহে অতি জাগতিক একটি শক্তির হস্তক্ষেপ এখানে বিদ্যমান। হোয়াইট হেড, আর্থার এডিংটন, জেম্স জীন্স (১৮৭৭-১৯৪৬) সহ বিরাট সংখ্যক বিজ্ঞানী স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, Nature is alive ‘প্রকৃতি এক জীবন্ত সত্তা’। কেবল জীবন্ত নয়, বরং ডব্লিউ.এন. সুলিভানের ভাষায় বিজ্ঞানীদের বক্তব্যের সার নির্যাস হল, The ultimate nature of the universe is mental. ‘বিশ্বলোকের চূড়ান্ত প্রকৃতি হল মানসিক’। যদি তাই হয় যেখানে স্বয়ং এই চেতনসম্পন্ন প্রকৃতি যেখানে মানসিক সেখানে এই প্রকৃতি উদ্ভুত হয়েছে যেই বৃহৎ প্রকৃতি হতে সেই চেতনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হবে বোকামী। আল কোরআন বলে “আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংশশীল, বিধান তাহার এবং তাহারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হইবে।”(২৮:৮৮) লক্ষ্য করুন বলা হচ্ছে সমস্তুটাই ধ্বংশশীল । মায়া! বলতে পারেন হলোগ্রাম। আবার বলা হচ্ছে নিয়ম, বিধান বা পর্দার্থের সুত্র আল্লাহর। এবং যা প্রত্যবর্তিত হবে তা হলো আমরা বা জীবনের মূল সারাংশ বা চেতনা। এক্ষেত্রে বলা যায় সমস্তটাই ধ্বংশশীল এবং শুধুমাত্র জীবনের মূল সারাংশ আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হয়। প্রত্যাবর্তিত হয় উচ্চ এনট্রপির বৃহ্ত্তর কোন স্থান কালে এবং সেখান থেকেই আবার সৃষ্টি হয় নতুন পৃথিবীর পুনরাত্থান হয়। আল কোরআন বলে ““নিশ্চয় তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি পুনর্বার সৃষ্টি করবেন। যাতে তিনি বিশ্বাসী ও সৎকর্মশীলদের যথাযথ পুরস্কার দিতে পারেন। আর যারা অবিশ্বাস করে তারা প্রাপ্ত হবে উত্তপ্ত পানীয় ও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের অবিশ্বাসের প্রতিফল স্বরূপ’ (ইউনুস ১০/৪)। তিনিই সেই সত্তা যিনি সৃষ্টির সূচনা করেছেন। অতঃপর পুনরায় সৃষ্টি করবেন। আর এটি তার জন্য অধিকতর সহজ। নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে সর্বোচ্চ মর্যাদা তাঁরই এবং তিনিই মহাপরাক্রান্ত ও প্রজ্ঞাময়’ (রূম ৩০/২৭)।“মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থি সমূহ একত্রিত করিব না? পরন্ত আমি তার আঙ্গুলের অঙ্গুলিভাগ পর্যন্ত সঠিকভাবে সুবিন্যস্ত করতে সক্ষম” (আল কোরআন-75”3-4)।

ইদানিং একটি তত্ত্ব বিজ্ঞানমহলে আড়োলিত হয়েছে । এর নাম ‘বায়োসেন্ট্রিজম’ (biocentrism) তত্ত্ব। এই তত্ত্ব মতে যেহেতু মহাবিশ্বের সংখ্যা অসীম সুতরাং জীবন-মৃত্যুর সংখ্যাও অসীম। কোথাও হয়ত সে মৃত। অন্য অসংখ্য মহাবিশ্বে তার জীবিত অবস্থা বিদ্যমান। ‘আমি কে?’—শুধু এই অনুভূতিই মস্তিষ্কে ২০-ওয়াট শক্তি সঞ্চালন করতে পারে। এই শক্তি কি মৃত্যুর সময় বিলুপ্ত হয়ে যায়? মোটেই নয়! নতুন এই তত্ত্ব বলছে, এই শক্তি এক মহাবিশ্ব থেকে আরেক মহাবিশ্বে সঞ্চালন হয়। আর এই তত্ত্বের সবচেয়ে বড় ভিত্তি শক্তির নিত্যতা সূত্র। এই সুত্র মতে সূত্রের অবিনশ্বর। তাহলে মস্তিষ্কের ওই শক্তি ঝর্না মৃত্যুর পরে কোথায় যায়? এই প্রশ্নের আপত সমাধান এই ‘বায়োসেন্ট্রিজম’ তত্ত্ব। সম্প্রতি ‘সায়েন্স’ নামের এক জার্নালে এই তত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে। এই তত্ত্বে দেখানো হয়েছে, কিভাবে কোনো শক্তির বা বস্তুর বিপরীতমুখী পরিবর্তন ঘটতে পারে। এ তত্ত্বের মূল বিষয় যেকোনো বস্তুর যেকোনো অবস্থার বিপরীতে আরেকটি অবস্থা দাঁড় করানো। এই অবস্থানটা হবে তার বর্তমান অবস্থার ঋণাত্মক। উদাহরণ হিসেবে আমরা প্রতি-পদার্থর কথা ভাবতে পারি। প্রতি-পদার্থ আছে নিশ্চয় প্রতি পদার্থের একটা জগৎও আছে। আর সেই জগৎ হবে আমাদের জগৎ অর্থাৎ এই মহাবিশ্বের বিপরীত একটা মহাবিশ্ব। এই মহাবিশ্বের খুব জনপ্রিয় নাম প্যারালাল ইউনিভার্স। যদি প্রশ্ন করা হয় আমাদের মহাবিশ্বে যখন একটা বস্তুর জন্ম হচ্ছে তখন প্যারালাল মহাবিশ্বে সেই বস্তুটির কী ঘটছে। ধরে নিলাম তার সেখানে তার প্রতি-বস্তুর জন্ম হচ্ছে। এ পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু অন্যমাত্রার অন্য মহাবিশ্বগুলোতে কী ঘটছে? এখানেই কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলছে, যদি আমাদের চারমাত্রিক জগতের জন্ম বা মৃত্যুর কথা হিসাব করি তবে অন্যমাত্রার অন্য মহাবিশ্বগুলোতে একই হিসাব খাটবে না। ধরা যাক, আমাদের মহাবিশ্ব (একই সাথে প্যারালাল মহবিশ্বে) কেউ মৃ্ত্যুবরণ করছে তাহলে আমাদের মহাজগতের জন্য এই মৃত্যু নির্দিষ্ট ঘটনা। তাহলে অন্য আরেকটি মহাবিশ্বের জন্য এই মৃত্যু নির্দিষ্ট নয়। তখন এরটা হিসেব করতে গেলে অসীম কোনো মানে চলে যাবে। তেমনি অন্য আরেকটি মহাবিশ্বে যদি ওই বস্তুটার মৃত্যু ঘটে তবে আমাদের মহাবিশ্বের এই মৃত্যুর হিসাব আসবে অসীম। অর্থাৎ জীবিতও আসতে পারে। জন্ম নিতে পারে কেউ অন্য মহাবিশ্বে। প্যারালাল মহাবিশ্ব তত্ত্বে জন্ম এবং মৃত্যু এক অবস্থা বা মহাবিশ্ব থেকে আরেক অবস্থা বা আরেক মহাবিশ্বে স্থানান্তরিত হয়। আধুনিক বিজ্ঞান বহুমহাবিশ্ব নিয়ে বিভিন্ন তত্ত্ব উত্থাপন করলেও আল কোরআন ঠিক তদ্রুপ কথা বলে “এটাই তাদের শাস্তি। কারন তারা আমার নিদর্শনসমূহ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে আমরা যখন অস্থিতে পরিনত ও চূর্ণবিচূন হয়ে যাবে তখনও কি আমরা নতুনভাবে সৃজিত হয়ে উত্থিত হবো। তারা কি দেখে নি যে আল্লাহ আসমান জমিন সৃজিত করেছেন, তিনি তাদের মতো মানুষও পূনরায় সৃষ্টি করতে সক্ষম। তিনি তাদের জন্য স্থির করেছেন একটি নিদীষ্ট কাল, এতে কোন সন্দেহ নেই। অতঃপর জালেমরা অস্বীকার ছাড়া কিছুই করেনি।” (আলকোরআন : সুরা ইসরা-17:98-99) “তিনি মৃত থেকে জীবিতকে বর্হিগত করেন জীবিত থেকে মৃতকে বর্হিগত করেন। “( সুরা রুম-30:19)



ইদানিং কিছু কিছু নাস্তিক্যবাদী বিজ্ঞানী বহুমহাবিশ্বের মধ্যে একটি মহাবিশ্ব টিকে গেলো কেনো এই প্রশ্নের উত্তরে বলছেন আমাদের এই মহাবিশ্বটাই যোগ্য তাই টিকে গেছে। ঠিক যেনো বিবর্তনের পথ ধরেই তারা আকস্মিক একটি দূর্ঘটনা বলে চালিয়ে যেতে চাইছে। অসংখ্য মহাবিশ্ব যাত্রা শুরু করলে একটি মহাবিশ্ব টিকে যাওয়াটাকে আকস্মিক একটি দূর্ঘটনা বলেই সঠিক সত্যকে রোধ করতে চাই কিছু কিছু নাস্তিক্যবাদী বিজ্ঞানী। যখন ইনফ্লেশন শুরু হয় তখন অসংখ্য ভ্যাকুয়া ষ্টেট এর উদ্ভব ঘটে এবং সেই অসংখ্য ভ্যাকুয়া ষ্টেট অসংখ্য বিগব্যাংগ এর জন্ম দেয়। সেই বিগ ব্যাংগ থেকে অসংখ্য মহাবিশ্ব জন্ম নিলেও টিকে থাকে একটি। আর সেটিই আমাদের এই মহাবিশ্ব। মহাবিশ্ব যখন ধ্বংশ হয়ে যাবে তখন আবার নির্দীষ্ট সময় পর ইনফ্লেশন শুরু হবে এবং উদ্ভব হবে অসংখ্য ভ্যাকুয়া স্টেট। সেখান থেকে জন্ম নেবে আরেক মহাবিশ্ব। এই শ্রেনীর বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নিয়মের পর্যাপ্ত ব্যাক্ষা দিতে পারে না। তারা জীব বিজ্ঞানের সাথে মহাবিশ্বের তুলনা করে। কানাডার প্রিমিয়ার ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক লি স্মোলিন একটু অন্যভাবে সমস্যাটা নিয়ে ভাবছিলেন। লি স্মোলিন ভাবলেন, জীবজগতের বিবর্তনের নিয়মের মত ‘কিছু একটা’ সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্বের বিবর্তনের জন্যও প্রযোজ্য হতে পারে কিনা। ইনফ্লেশনের ফলশ্রুতিতে মহাবিশ্বের ইতিহাসে যে অগুনতি সিঙ্গুলারিটি তৈরী হয়েছিলো, এমনও তো হতে পারে যে, এদের মধ্যে শেষ পর্যন্ত একটিমাত্রই টিকে রইল, যেভাবে মানবদেহে নিষেক ঘটানোর অভিপ্রায়ে মিলিয়ন শুক্রানুর মধ্যে টিকে রয় একটিমাত্র স্পার্ম বা শুক্রাণু। তাহলে কি যোগ্যতম শুক্রাণুর মত কোন এক যোগ্যতম অদ্বৈতবিন্দু থেকেই ‘প্রাকৃতিক নির্বাচনের’ মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে আমাদের এই পরিচিত মহাবিশ্ব? কেন আমাদের মহাবিশ্বই টিকে রইল, অন্যগুলো রইলোনা – এ প্রশ্নটির সমাধান দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, বায়োলজি বা জীববিদ্যা হয়ত এক্ষেত্রে আমাদের পথ দেখাতে পারে। জীববিজ্ঞানে এ ধরনের ঘটনার হাজারো উদাহরণ আছে। কড মাছ মিলিয়ন মিলিয়ন ডিম পাড়ে, তার মধ্যে খুব কমই শেষ পর্যন্ত নিষিক্ত হয়, আর নিষিক্ত ডিম থেকে জন্ম নেয়া অধিকাংশ পোনাই আবার বিভিন্ন কারণে মারা যায়, কিংবা অন্য মাছদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়, শেষ পর্যন্ত দেখা যায় খুব কম পোনাই টিকে থাকে আর তারপর পূর্ণাংগ মাছে পরিণত হতে পারে। বিজ্ঞানীরা হিসেব করে দেখিয়েছেন যে একটা কড মাছের ডিমের নিরানব্বই শতাংশই প্রথম মাসে কোন না কোন ভাবে ধ্বংস হয়ে যায়, আর বাকি যা বেঁচে থাকে তারও নব্বই ভাগ প্রথম বছরেই ধ্বংস হয়ে যায়। মানুষ সহ প্রতিটি স্তন্যপায়ী প্রাণীরই কোটি কোটি স্পার্মের প্রয়োজন হয় কেবল এটি নিশ্চিত করতে যে এদের মধ্যে একটি মাত্র স্পার্মই বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ডিম্বানুকে নিষিক্ত করবে। জীববিজ্ঞানের বিষয়বস্তু নিয়েই যদি মহাবিশ্বের উৎপত্তির বিষয় নির্ধারিত হয়ে থাকে তাহলে জীববিজ্ঞান নিয়েই আলোচনা করতে হবে। পাঠক আসুন আমরা প্রানী উৎপাদন এবং জেনিটিক নির্ধারনের ক্ষেত্রে একটি প্রানীর আচার আচারন গঠনের নির্ধারিত বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করি। একটি স্তন্যপায়ী প্রানীর লক্ষ লক্ষ স্পাম থেকে একটি স্পাম ডিম্বানুকে নিষিক্ত করবে। কিন্তু কেন এই একটি মাত্র স্পাম যোগ্য হলো? যেই স্পামটি যোগ্য ছিলো সেই স্পার্মটিই জাইগোট রুপে বা সন্তান রুপে সৃষ্টি হযে থাকে। কিন্ত মিলিয়ন স্পামের মধ্যে কি নির্দীষ্ট কোন স্পামকে নিদীষ্ট করে রাখা হয় অথবা নিদীষ্ট সেই স্পামকে বা তার যোগ্যতাকে কি অদৃশ্য কোন এক জগত থেকে নির্ধারন করে দেওয়া হয়? এটাই এখন প্রশ্ন! যৌন মিলনের সময় কিছু কিছু শুক্রানু জরায়ুর মুখ থেকে সাঁতরে জরায়ুর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। মেয়েদের তখন ডিম্বাণুর নি:সরণ হয । সে সময় শুক্রানু গর্ভাশয়ের মধ্য দিয়ে সাঁতরে ডিম্বনালী (ফেলোপিয়ান টিউব) এ প্রবেশ করে। ডিম্বানু স্থির হয়ে এক জায়গায় স্থির হয়ে বসে থাকে আর শুক্রানু ডিম্বাণুর দিকে সাঁতরে যায় কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র একজনই ডিম্বাণুকে পায়। শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলে হয়ে যায় জাইগোট। কিন্তু শিশুটি তার যোগ্যতা গুনাগুন আচরন এসকল কিছু কিভাবে পাই? এই গুলো পাই শিশুর মাইওসিস বিভাজনের সময়। মাইওসিস বিভাজনের মাধ্যমে ক্লোমোসম এর গুনাগুন শুধু মাত্র অঙ্কুরিত ব্যক্তিটা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকেনা বরং এটা বংশানুক্রমিক ভাবে ও বংশধরদের মধ্য দিয়েও ও গড়াতে থাকে। মাইওসিস এর কারখানার মধ্যেই সিদ্ধান্ত এসে যায পিতৃ-মাতৃ প্রজনন কোষ হতে উৎপন্ন ব্যক্তিটির গুনাগুন কিরুপ হইবে। এই কারখানার মধ্য দিয়েই বাছাই হতে থাকে ৭০ ট্রিলিয়ন ধরনের বিভিন্ন গুনাবলী সম্বলিত জেনেটিক মেটেরিয়ালস। পিতৃ-মাতৃ ক্লোমোসম এর মধ্য হতে কোন গুনাবলী সম্বলীত টিক মেটেরিয়ালস এর ক্লোমোসম টি উৎপন্ন ব্যক্তিটির ভাগে পড়তে চলেছে! এই কারখানার মধ্য দিয়েই নিরুপিত হয়ে যায উৎপন্ন ব্যক্তিটি একজন আইনষ্টাইন হইতেছে নাকি একটা উন্মাদ হইতেছে। অদ্ভুত ব্যাপার হল এগুলী সবই আমাদেরই ব্যাপার বটে কিন্তু এটা আমাদের হস্তক্ষেপ বা নিয়ন্ত্রনের একেবারেই বাইরে, এবং সম্পূর্ণ দৃষ্টির বাইরে এক অদৃশ্য জগতের কারখানা। আমরা যেন সেখান থেকে কোন এক অদৃশ্য হস্তের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । একটি শিশু কি গুনাগুন সমৃদ্ধ হবে সেটা অদৃশ্য এক জগৎ যেনো নির্ধারন করে? প্রকৃতিই নিধারন করে। অদৃশ্য জগত তথা প্রকৃতির চেতন সত্ত্বা প্রাকৃতিক ভাবে র‌্যান্ডমলি এটি নিয়ন্ত্রিত এবং নির্ধারিত করে। প্রকৃতিই সচেতনতা আমাদের দুঃখ কষ্টের মূলে। আছে কী আমাদের হাতে কোন ক্ষমতা, রক্ষা পাওয়ার যদি Cancer Gene, Down’s Syndome মত বা আরো হাজার রকমের ক্ষতিকারক কোন জেনেটিক গরমিল বা বা ত্রুটি বিচ্যুতি আমাদের কারো ভাগে পড়ে যায়? হ্যা, একটা ব্যক্তির হাজার হাজার রকমের জেনেটিক বৈকল্যগত ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় এই মাইওসিস বিভাজনে জেনেটিক মেটেরিয়ালস এর মিশ্রনের সময় কোন রকমের বৈকল্য বা বিচ্যুতি ঘটে যাওয়ার উপর। মাইওসিস এর সেই অদ্ভুৎ কারখানায় আমাদের কোনই নিয়ন্ত্রন নাই। সেখানে আমরা নিতান্তই অসহায় ও নিরুপায়। হ্যাঁ, কী করে এই অদ্ভুৎ কারখানার মধ্য দিয়ে এই আমরাই আসতেছি এটি প্রকৃতির নিয়ন্ত্রনে। (প্রকৃতি বলতে দেহ প্রকৃতি বোঝানো হচ্ছে) প্রকৃতি আর সময়ই সব কিছু নির্ধারন করে। যদি প্রাকৃতিক কোন স্বচেতনা সমস্ত কিছু নির্ধারিত করে থাকে। তাহলে এখানে দৈবাৎ না বলে বরং নিয়ন্ত্রিত বিষয় বলাটাই সমীচিন। প্রাকৃতিক ভাবেই এটি নির্ধারিত থাকে শুধুমাত্র তারই বর্হিপ্রকাশ ঘটে।



শন ক্যারলের দৃষ্টিভঙ্গিতে স্থান কালকে ব্যাকগ্রাউন্ডকে হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে। সেই ব্যাকগ্রাউন্ড বা ডিসিটার স্পেস থেকে মহাবিশ্ব বের হয়ে আসে। কিন্তু টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভিলেংকিনের একটি গবেষনায় দেখা যাচ্ছে সেই ব্যাকগ্রাউন্ডের কোন প্রয়োজন পড়ছে না। কারন ভিলেংকিন তার গবেষনায় মহাবিশ্বের সৃষ্টির পিছনে পূর্বের মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন কে কারন হিসেবে উল্লেখ করছেন। তার বক্তব্য মতে পূর্বের মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন যা সংকুচিত হয়ে শুন্যতায় মিলিয়ে গিয়ে সেই কেইওস থেকে নতুন মহাবিশ্বের স্পেস টাইম টানেল করে আবির্ভাব হতে পারে। ভিলেংকিনের দৃষ্টিভঙ্গিতে শুন্যতা বলতে শুধু এম্পটি স্পেস নয় একেবারেই পরম শুন্যতা যাকে বলে নাথিং। সেই শুন্যতা বা নাথিং থেকে কোয়ান্টাম টানেলিং প্রক্রিয়ায় মহাবিশ্বের উদ্ভব হতে পারে। ভিলেংকিন বা কোয়ান্টাম টানেলিং প্রক্রিয়ায় মহাবিশ্ব সৃষ্টি এই কনসেপ্ট নিয়ে ভিলেংকিন সহ আরো অনেকে গবেষনা করছেন। তাদের সকলেই প্রায় একই বেসিক কনসেপ্টের মধ্য দিয়ে ভাবছেন। তাদের প্রস্তবনাটা হলো আমাদের এই মহাবিশ্বটা কোয়ান্টাম টানেলিং নামক প্রক্রিয়ায় অপর একটি মহাবিশ্ব থেকে উদ্ভুত হয়েছে। যে মহাবিশ্বের টাইম axis আমাদের উল্টা। পূর্বের মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন যেটা শুন্যতায় মিলিয়ে গিয়ে সংকুচিত হয়ে প্লাংক লেন্থে চলে গিয়ে ম্যাক্সিমাম এ্যানট্রোপি বা ক্লেইওসে পরিনত হয়। এমনই পরম absolute শুন্যতা সৃষ্টি হয় যে অবস্থান নির্দীষ্ট ভাবে ডিফাইন করা সম্ভব। সেই অবস্থানে থেকে পূর্বের মহাবিশ্বের ওয়েভ ফাংশন নতুন মহাবিশ্বের স্পেস টাইমকে আর্বিভ’ত করে। এই বেসিক কনসেপ্টটি একটি মহাবিশ্ব থেকে আরেকটি মহাবিশ্বের transition। তাহলে পূর্বের মহাবিশ্বটি কোথা থেকে এলো? এ ক্ষেত্রে আমাদের মেনে নিতে হয় পূর্বের মহাবিশ্বটি তারও পূর্বের একটি মহাবিশ্ব হতে উদ্ভুত। এই ধারাবাহিকতা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে একটি মহাবিশ্বের হিসাব নিকাশ তথা পাপ পূন্যের উপর ভিত্তি করে আবার সৃষ্টি হবে। পরের মহাবিশ্বের আবির্ভাব ঘটে।
Yet the explanation still leaves a huge mystery unaddressed. Although a universe, in Vilenkin’s scheme, can come from nothing in the sense of there being no space, time or matter, something is in place beforehand — namely the laws of physics. Those laws govern the something-from-nothing moment of creation that gives rise to our universe, and they also govern eternal inflation, which takes over in the first nanosecond of time.
That raises some uncomfortable questions: Where did the laws of physics reside before there was a universe to which they could be applied? Do they exist independently of space or time? “It’s a great mystery as to where the laws of physics came from. We don’t even know how to approach it,” Vilenkin admits. “But before inflation came along, we didn’t even know how to approach the questions that inflation later solved. So who knows, maybe we’ll pass this barrier as well.”

যদি তাই হয় তাহলে মেনে নিতে হয় আল কোরআনের বক্তব্য মতে আসমান জমিন আবার সৃষ্টির বিষয়টির একটি গ্রহণযোগ্য ব্যাক্ষা পাওয়া যায়। বাস্তবিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে বিচার করলে দেখা যায় সব সময় কিছু না কিছু ছিলো এবং আমাদের মহাবিশ্ব ও তার অর্ন্তভুক্ত সকল কিছুই সেই কিছুর বিবর্তিত অবস্থা মাত্র যা সদা সর্বদা বিবর্তনশীল? যদি তাই হয় তাহলে এটা ভেবে নিতে হয় যে আমরা একটা সাইক্লিক মহাবিশ্বে বসবাস করছি। যা পূন:পূনিক: মিলিয়ে গিয়ে পূনরায় বিগব্যাঙের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করছে? ঠিক সাইক্লিক নয়, একটি মহাবিশ্ব যা নিরাকারে মিলিয়ে গিয়ে সেই মহাবিশ্বের হিসেবের উপর ভিত্তি করে নতুন মহাবিশ্বের আত্মপ্রকাশ। পূর্বের হিসাবনিকাশের উপর ভিত্তি করে যে নতুন মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয় সেটিই আসলে পরকাল।

পরব-৫ : Click This Link
পরব-৪ : Click This Link
পরব-৩ : Click This Link
পরব-২ : Click This Link
পরব-১ : Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২২ রাত ১:২৬
১২টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×