somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মানুষ সৃষ্টিতে কি কোন ইন্টেলেকচুয়েল ইন্টেলিজেন্ট কনসাসনেসের বা স্রস্টার হস্তক্ষেপ ছিলো না?

১৮ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ কি করে সৃষ্টি হলো? দীর্ঘদিনের এ প্রশ্নের উত্তর আজো অমিমাংশিত! তারপরও কিছুটা হলোও উত্তর একটাই। বিজ্ঞানের একটি শ্রেনি তো বলেই দিয়েছে বিবর্তনবাদই হলো মানুষ সৃষ্টির কারন। আবার বিজ্ঞানের মাঝেই বিবর্তনবাদ বিরোধী জোটও যথেষ্ট প্রভাব প্রতিপত্তি নিয়েই বিদ্যমান। বিজ্ঞানের চুড়ান্ত কিছু বক্তব্যও মানুষকে পশু থেকে সৃষ্টির ধারাবাহিক প্রক্রিয়া বলেই স্বিকৃত দেয়।বিবর্তনবাদ বলে এককোষি প্রানী এ্যামিবা থেকে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় মানুষ সৃষ্টি। লক্ষ কোটি বৎসরের বির্বতেনে এককোষি প্রানি থেকে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় মানুষ পর্যন্ত এসেছে। যদি বিষয়টা মেনেও নেওয়া যায় কিন্তু সমস্যাটা অন্যকোথাও! প্রানের গঠন কাঠামো সৃষ্টি প্রক্রিয়া এভাবেই হতেই পারে কিন্তু সমস্যাটা হলো মানুষের জ্ঞানের যে ব্যাপকতা সেটা কিভাবে সম্ভব হলো? বিবর্তনের ধারায় যে লাখ লাখ প্রাণির উদ্ভব হয়েছে তাদের কারোর মাঝে জ্ঞানের উন্নয়ন ঘটলো না। অথচ মানুষের ক্ষেত্রে জ্ঞানের এই বিশালতা কি করে সম্ভব হলো? বিবর্তনের ধারাবাহিকতা কি মানুষের জ্ঞান প্রাপ্তির কারন হতে পারে? এই পৃথিবীর সকল প্রাণির মতো মানুষও একটি প্রানি।কোন প্রানিই এত গভীরে চিন্তা করতে সক্ষম হয় না। কিন্তু মানুষের চিন্তার ক্ষমতা স্মৃতি বংশপরম্পরায় ধরে রাখার মতো সক্ষমতা ! চিন্তা করার মতো নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গির পিছনে কি কোন যুক্তিসং্গত ব্যাক্ষা নেই। আপনা আপনি হয়ে গেছে এটা কি যুক্তিসঙ্গত কোন ব্যাক্ষা হলো?



আমাদেরকে একনিষ্ঠ ভাবে বিশ্বাস করতে হবে মানুষ বিবর্তেনের মধ্য দিয়েই যদি সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলেও মানুষ সৃষ্টির পর মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটেছিলো যা তাকে পশু শ্রেণী থেকে এত উন্নত মার্গীয় চিন্তার অধিকারী করে তুলেছিলো। ধর্মীয় ভাষায় যেমন আমরা গণ্ধম ফল জাতীয় কোন একটা ঘটনার কথা জানি! এমন কিছু না ঘটলে কেনো মানুষের বোধোদয় হয়েছিলো তার নগ্নতার? নগ্ন বোধটাই তাকে পশু শ্রেনি থেকে পৃথক করেছে। বাক্য গঠন করার মতো চিন্তাশক্তি শব্দ গঠন করার মতো বোধোদয় কেমন করে হলো? অনুমান নিশ্চিন্তে প্রমান করে মানব জাতির জীবনচক্রে কিছু একটা ঘটেছিলো যাকে হয়তো আমরা মিউটেশন বলে অভিহিত করতে পারি। আপনাআপনি মিউটিশন বললে হাস্যকরই হয় বলা যেতে পারে পরিকল্পিত জিনেটিক পরিবর্তন করে আধুনিক জিনেটিক ডিজাইনিং। এমন একটি কিছু যা মানবজাতির চিন্তা চেতনার ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন ঘটিয়েছেলো ফলে অভিজ্ঞতা থেকে মানুষের জ্ঞান আহরণ এবং তা ধারন করার মতো সক্ষমতা মানুষের জীবনে সম্ভব হলো। রহস্যজনক হলেও আমাদের বলতে হচ্ছে আমরা যারা বর্তমান আধুনিক মানুষ তারা সকলেই হোমো সেপিয়েন্স থেকে এসেছি।পৃথিবী থেকে হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস, হোমো ইরেকটাস, হোমো নিয়ানর্ডাথাল সকল প্রানি হারিয়ে গেল টিকে গেলো শুধু হোমো সেপিয়েন্স? নিয়ান্ডারথাল ও হোমোসেপিয়েন্স সাধারণ পূর্বপুরুষও ছিল একই ।পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাস হয়ে হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস্দের থেকে বিবর্তিত হয়েছি আমরা উভয়েই। জেনেটিক গবেষণাও তাই প্রমাণ করে। কিন্তু অন্যদের কোন অস্তিত্ব নেই শুধু টিকে আছি আমরা হোমোসেপিয়েন্স। এখান থেকেই মানুষ প্রজাতি।
বছরের পর বছর ধরে চলা গবেষণায় জেনেটিক কোড ম্যাপিং করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেন্সিস্ হল ডিএনএ এনকোডেড হওয়া প্রথম বিলুপ্ত মানব প্রজাতি। নিয়ান্ডারথাল ডিএনএর সঙ্গে আমাদের জিনোমের তুলনা করে তারা এখন বলছেন, আধুনিক মানব প্রজাতি (হোমোস্যাপিয়েন্স) জেনেটিকালি অনন্য। কিন্তু এই জেনেটিক্যালি অনন্য হয় কি করে? জেনেটিক্যাল দুর্বলতা নিয়ান্ডারথাল বা অন্যদের হারিয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। তাদের মতে হোমো সেপিয়েন্স এর জীবনে কিছু পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তন হোমো সেপিয়েন্সকে টিকিয়ে রেখেছে কিন্তু এখন প্রশ্ন মানবজাতির জীবনে এমন কি পরিবর্তন হয়েছিলো? এই পরিবর্তন কি কোন পরিব্যাক্তি ছিলো? আধুনিক মানুষ যারা হোমো সেপিয়েন্স থেকে এসেছে তারা হঠাৎ করে এত বিশাল জ্ঞানের অধিকারী বা জ্ঞানবিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হলো কিভাবে? যদি এমন কোন পরিব্যাক্তি ঘটে থাকে তাহলে সেটাই কি সেই জ্ঞান বৃক্ষ (ধর্মীয় দৃষ্টিকোনে মানুষকে যে বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করা হয়েছিলো) যা রুপক অর্থে বোঝানো হয়েছে ধর্মীয় গল্পকাথার মধ্য দিয়ে? তাহলে জ্ঞানবৃক্ষজনিত পরিব্যাক্তিই আধুনিক মানবজাতির সৃষ্টি করে। সত্যিই অবাক করে মানুষের পূর্বের নিয়ানডার্থাল বা হোমো ইরেকটাস শ্রেনির মানুষদের কোন অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে নেই। আমরা তাদের কোন জেনিটিক বহন করি না। আমরা যারা পৃথিবীতে জীবিত অথাৎ আধুনিক মানুষ সকলেই হোমো সেপিয়েন্সের জেনিটিক বহন করে চলেছি।
অপরিহার্যভাবেই যে প্রশ্নটা মনে আসে সেটা হলো ইতিহাস ঘেটে যখন দেখা যাচ্ছে সেপিয়েন্সদের শুরুতে যেখানে ১৫০ জন সেপিয়েন্স একতাবদ্ধতার সীমা অতিক্রম করতে সক্ষম হতো না! সেখানে আকস্মিকভাবে কি এমন যাদু শিখে ফেললো তাতে হাজার হাজার সদস্যের সমন্বয়ে গড়ে তুলল নগর বা গড়ে তুলল সাম্রাজ্য? বিপুল পরিমাণ হোমোসেপিয়েন্স গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে বসবাস করার ক্ষমতা অর্জন করে ফেললো মুহুত্বের মধ্যে এই প্লৈবিক পরিবর্তন। এই বুদ্ধিভিত্তিক বিপ্লব কোথা থেকে পেলো? কে দিলো এই বুদ্ধিভিত্তিক বিপ্লব? তাছাড়া হোমোসেপিয়েন্স এর মাঝে আকস্মিক এই প্রজনন বৃদ্ধি ঘটতে থাকলো কি করে? এই সকল রহস্যময় বিষয়গুলোর কোন মিমাংশ নেই! আজ থেকে তিরিশ হাজার বছর আগে হোমো ইরেকটাস ও হোমো নিয়ানডারথেলনিস বিলুপ্ত হয়ে গেল। যাদের মস্তিষ্কের সর্বোচ্চ আয়তন ছিল ১৩০০ থেকে ১৪০০ সিসি পর্যন্ত। টিঁকে গেল ২০০০ সিসির মস্তিষ্কের আয়তন সমৃদ্ধ হোমো সেপিয়েন্স। শুধু মাত্র মস্তিস্কের আয়তন বৃদ্ধির কারনে সেপিয়েন্স টিকে গেলো মস্তিস্কের আয়তন কম থাকার কারনে বিলুপ্ত হয়ে গেলো হোমো ইরেকটাস ও হোমো নিয়ানডারথেল? মস্তিস্কের আয়তন কি বিলুপ্তির কারন? মোটেও না। প্রকৃতি যেনো চেয়েছিলো অন্য সকল প্রজাতির মুলোচ্ছেদ! অথবা প্রকৃতিতে কি জেগে উঠেছিল এমন কোন ভাইরাস যা সেপিয়েন্স ব্যাতিত অন্য ডিএনএ নিধনকারী বা ধ্বংশকারী। প্রকৃতি অন্যান্য প্রজাতি বিলুপ্ত করে দিতে চেয়েছিলো? বিলুপ্ত করে দিয়ে এই হোমোসেপিয়েন্স থেকেই মানুষ জাতির আবির্ভাব ঘটনার পরিকল্পনা ছিলো। ঠিক সেই হিসেবেই প্রকৃতির যতটুকু দরকার ছিলো ঠিক ততটুকুই রেখেছে বাকীটা ডিলেট করে দিয়েছে। আর এই কারনেই আধুনিক মানুষ সেই হোমো সেপিয়েন্স এর জিন বহন করে চলেছে। শিপ্পাঞ্জি থেকে শুরু করে হোমো ইরেক্টাস হয়ে হোমো অস্ট্রালোপিথ্যাকাস্দের মধ্য থেকে বিবর্তিত হয়ে হোমো নিয়ানর্ডার্থাল এবং হোমো সেপিয়েন্স হয়ে আমরা আধুনিক মানুষ। এ যেনো মানুষ সৃষ্টি করতে ঠিক যতটুকু প্রয়োজন ছিলো প্রকৃতি ঠিক ততটুকুই রেখেছে। বাকি প্রজাতি প্রকৃতি ইচ্ছে করে বিনাশ করে দিয়েছে। এতেই প্রমান হয় প্রকৃতির ছদ্মবেশে প্রকৃতির মাঝে কোন সত্ত্বার উপস্থিতি বিদ্যমান ছিলো? যা মানুষের জ্ঞানবৃক্ষ পরিব্যাপ্তি ঘটার পর মানুষ সৃষ্টি সম্পন্ন বিধায় হারিয়ে দিলো অন্য সকল প্রজাতি! নইলে কি এমন কারন হতে পারে যে আধুনিক মানুষ শুধুমাত্র সেপিয়েন্স এর জীন বহন করছে?
ইতিহাস থেকে জানা যায় আনুমানিক ৭০ হাজার বছর আগে থেকে সেপিয়েন্সরা তাক লাগানোর মতো কিছু কাজকর্ম শুরু করে দিলো। এই সময়কালে সেপিয়েন্সরা দ্বিতীয় বারের মতো আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে পড়ে। এইবার তারা যুদ্ধাংদেহী মনোভাব নিয়ে বেরুলো। তাদের শক্তির কাছে নিয়ান্ডার্থাল এবং মানুষের অন্যান্য প্রজাতিগুলো অসহায়। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তারা ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় পৌছে যায়। প্রায় ৪৫ হাজার বছর আগে তারা সাগর পাড়ি দিতে শেখে এবং অস্ট্রেলিয়ায় পৌছে যায়। ছড়িয়ে পড়ে সবর্ত্র। এর আগে এই মহাদেশে কোনো মানুষেরই পা পড়েনি। ৭০ হাজার বছর আগে থেকে ৩০ হাজার বছর আগের এই সময়টাতে সেপিয়েন্স নৌকা, তেলের প্রদীপ, তীর-ধনুক এমনকি সুঁই-সুতা আবিস্কার করে ফেলে। শীতের দেশে গরম কাপড় বোনার জন্য এই সুঁই-সুতা খুবই জরুরি ছিল। বেশিরভাগ গবেষকই মনে করেন যে, এতসব গুরুত্বপূর্ণ আবিস্কারের পেছনে সেপিয়েন্সদের বুদ্ধিবৃত্তিক দক্ষতার কোনো পরিবর্তন দায়ী। যদিও পূর্বে শীতের প্রকট থেকে বাচার জন্য নিয়ানর্ডাথালরা পশুর চামড়া শরীরে পেচিয়ে রাখতো। কিন্তু হোমো সেপিয়েন্সরা লজ্জা নিবারনের জন্য পার্মানেন্টভাবে পোষাক পরা শুরু করে। কেনো তাদের এই পোষাক পরার মনোবৃত্তি। উৎপাদিত হলো সুই সুতো।! রহস্যজনক হলেও বলতে হয়-কোথা থেকে পেলো তারা পোষাক পরার পরিকল্পনা! কেনো তাদের মধ্যে লজ্জা বোধটা উদয় হলো? এতদিনের প্রাগৌতিহাসিক নগ্ন মানুষ পোষাক পড়া শুরু করলো? কে দিলো তাদের এই বুদ্ধি? ধর্মীয় দৃষ্টিকোনের গণ্ধম ফল খাওয়ার মতো কোন না কোন একটা কিছু ঘটেছিলো! সকল পশু শ্রেণি থেকে মানুষে উত্তোরনে যে রহস্যময়তা তা মেনে নিতেই হয়। মানুষ একটি পরিকল্পনার ফসল। এই মনুষত্যবোধ বিকাশে ইন্টেলেকচুয়েল ইন্টেলিজেন্ট কনসাসনেস কিছু একটা আছে। অস্বীকার করলেই তো আর হলো না। আপনা আপনি হয়ে গেছে বললেই তো হলো না বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা!
মানুষের জীবনে যত উন্নয়ণ তার বেশিরভাগ হোমোসেপিয়েন্স থেকে। এক কথায় বলতে পারি হোমোসেপিয়েন্স থেকেই যেনো মানুষ এবং এখান থেকেই তার উত্তরন।মানবজাতির জীবনে কথা বলা শিক্ষাটাও এই হোমো সেপিয়েন্স আমল থেকেই।একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষন করলে আমরা লক্ষ্য করবো মানুষের ভাষা শিক্ষাটা একটি অলৌকিক বিষয়।ইতিহাস থেকে আমরা যতটুকু আমরা জানতে পারি হোমো সেপিয়েন্সদের পোষাক পড়ার বাসনা থেকেই সুই সুতার আবিস্কার এবং তার কিছুদিনের মধ্যেই অদ্ভুদভাবে হোমো সেপিয়েন্সরা কথা বলতে শুরু করে। বাইবেল অনুযায়ী বলা হয় ভাষা একটি ‘Divine Gift’ বা স্বর্গীয় উপহার।সৃষ্টিকর্তা মানুষ সৃষ্টির শুরুতেই মানুষের মধ্যে শুধু ভাষাই নয় বরং কথা বলার ক্ষমতাও দিয়ে দিয়েছেন।বাইবেলের বক্তব্যটিও সত্যিই ভাবনাময়। মানুষকে কথা বলার ক্ষমতা দিয়েছেন। এই কথা বলার ক্ষমতা কি? মানুষ সৃষ্টির শুরুতেই তিনি তাকে ভাষা শিখিয়েছেন। এবারে আমরা আল কোরআনের গুরুত্বপূন কিছু আয়াত নিয়ে আলোচনা করি।আল কোরআন মানবজাতির কথা বলা শিক্ষা নিয়ে কি বলেন? আল কোরআন বলেন-‘দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন।তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন।-সূরা আর রহমান:১-৪ "যার অর্থ দাড়ায় স্রস্টাই মানুষকে ভাব প্রকাশ করতে বা কথা বলতে শিখিয়েছেন।পৃথিবীতে মানুষই হলো একমাত্র প্রাণী যাদের ভাষা আছে, এই ভাষার কারণে আমরা অন্যসব প্রাণী থেকে আলাদা হয়েছি। "নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাগি টলারম্যান সত্যি একটি মহান সত্যি কথা বলেছেন! আমাদের মানুষের উন্নয়নের চুড়ান্ত শিখরে আরোহন করার একটি মাত্র কারন যে মানুষেরা খুব সহজেই তার মনের ভাব প্রকাশ করাতে পারে।ভাষা আবিস্কারের প্রয়োজনীয়তা সর্ম্পকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা ইতিহাসবিদ ড. লরা রাইট বলেন ‘আড্ডা মারার মতো করে কথা বলার গুরুত্বও কম ছিল না।টুকটাক কথা বলা,পরচর্চা বা গসিপ এগুলো প্রতিদিনেরই অংশ-আর একসকল কারনে মানুষের জীবনে ভাষা আবিস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।কিন্তু মানুষের এই কথা বলার পিছনে তার শারীরিক সক্ষমতা কি ছিলো? নাকি মানুষের বিবর্তেনের মধ্য দিয়ে মানবজাতি কথা বলার মতো যোগ্যতা পেয়ে যাচ্ছিলো। আদি মানুষের মস্তিষ্কের গাঠনিক অবস্থানের সাথে ভাষার উৎপত্তির সম্পর্ক স্থাপন করা খুবই কঠিন।আদিম পৃথিবীতে মানুষের আগেই এসেছিল এপরা। এই এপদের গলায় বড় আকারের বায়ুথলী ছিল। এটা দিয়ে তারা 'গোঁ গোঁ' ধরনের শব্দ করে প্রতিপক্ষ বা অন্যান্য প্রাণীকে ভয় দেখাত। বেলজিয়ামের ফ্রি ইউনিভার্সিটি অফ ব্রাসেলসে বিজ্ঞানী বার্ট দ্য বোর সিমুলেশন করে দেখিয়েছেন। মানুষের ভাষার পেছনে স্বরবর্ণ, যাকে বলে,আবশ্যক।এপদের মধ্যে এ ধরনের বায়ুথলী ছিল ঠিকই,সমস্যা হচ্ছে,এ ধরনের বায়ুথলী স্বরবর্ণের উচ্চারণে বাধা দেয়। কিন্তু হোমো হাইডেলবার্জেনিস প্রজাতীর দেহে এরকম কিছু দেখা যায় না।এই হোমো হাইডেলবার্জেনিস থেকেই পরে নিয়ান্ডারথাল ও স্যাপিয়েন্সরা এসেছে বলে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। তাছাড়া কিছু কিছু বিজ্ঞানীদের মতে মানুষ যখন সোজা হয়ে দাড়াতে শিখতে শুরু করে তখন থেকেই মানুষের বাগযন্ত্র সোজাসুজি অথাৎ L আকৃতির হতে শুরু করে।মানুষের সোজা হয়ে হাটার কারনে তার কন্ঠনালী পারফেক্ট হতে থাকে।আধুনিক মুখের ভাষাগুলির বিভিন্ন ধ্বনি উচ্চারণের জন্য মানুষের বিশেষ উল্টো Lআকৃতির বাগনালী প্রয়োজন এবং স্বরযন্ত্র বা ল্যারিংক্সের গলার বেশ ভেতরে থাকা প্রয়োজন। কিন্তু নিয়ানর্ডাথালদের পূর্বের শ্রেনির মাঝে জৈবিক কাঠামো, শ্বসনতন্ত্র, কণ্ঠের অবস্থা ইত্যাদি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছিলো। আধুনিক মানুষ তথা হোমো সেপিয়েন্স এর পূর্বের নিয়ান্ডারথালদের দৈহিক বাকযন্তু বা অণ্যান্য বিষয়বস্তু কথা বলার জন্য উপযোগী ছিল৷ বক্ষ ও উদরের মাঝখানের ঝিল্লিতে নার্ভের সংখ্যা বেশি হলে এবং স্পাইনাল কর্ড মোটা হলে তা কথা বলার পক্ষে সহায়ক ছিলো। এমনকি কথা বলার মূল চালিকা শক্তি FXP2 নামের একটি জিন নিয়ানডার্থাল শ্রেনির মাঝে বিদ্যমান ছিলো। কিন্তু কোন কোন প্রত্নতাত্ত্বিকের মতে নিয়ান্ডার্থাল মানুষদের মধ্যে ল্যারিংক্সের অবস্থান গলার বেশ উপরের দিকে ছিল এবং এই কারনেই তাদের পক্ষে বর্তমান মনুষ্য ভাষার ধ্বনিগুলি উচ্চারণ করা সম্ভব ছিল না। আধুনিক মানুষের কথা যদি ভাবি, মস্তিষ্ক থেকে মেরুদণ্ড হয়ে অনেক অনেকগুলো স্নায়ু ডায়াফ্রাম এবং পাঁজরের মধ্যকার পেশীতে এসে যুক্ত হয়েছে।ঠিকভাবে শ্বাস নিয়ন্ত্রণ ও যথার্থ শব্দ করার জন্য এগুলো জরুরি ভূমিকা রাখে।এই একই জিনিস নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও দেখা যায়। নিয়ানডার্থালরা বিভিন্ন রকম শব্দ করা বা কিছুটা ইশারা ইঙ্গীতের মাধ্যেমে কিচুটা মনের ভাব প্রকাশ করার চেষ্টা করলেও নিয়ানডার্থালরা আসলে ভাষা আবিস্কার করে উঠতে পারে নাই অথাৎ কোন বস্তুর নামকরন করার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন বস্তুর পরিচয় সৃষ্টির বিষয়টি তাদের মাথায় আসেনি।কথা বলার মতো গো গু শব্দ করা ছাড়া চিৎকার করে কোন কিছু বোঝানো ছাড়া তেমন কোন শব্দ বা বস্তুর নামকরনের মাধ্যমে ভাষার সৃষ্টির কোন গ্রহনযোগ্য কোন প্রমান নিয়ানর্ডাথালদের আমলে পাওয়া যায় নি। এককথায় বলা যায় মানুষের কথা বলার মতো দৈহিক প্রস্তুতি নিতে প্রায় কয়েক লক্ষ বৎসর লেগেছিলো। এটাই হলো বাইবেলে কথা বলার ক্ষমতা প্রদান বা ডিভাইন গিফট।

আধুনিক কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক এর গবেষনা জানা যায় ভাষার উৎপত্তির প্রাচীন যে ঐতিহাসিক প্রমান পাওয়া যায় তা হলে তা হলো হোমোসেপিয়েন্সদের বসতি গড়ার মধ্য দিয়ে। তারাই ভাষা আবিস্কার করেছিলো বলে অনুমান করা হয়ে থাকে। প্রত্নতাত্ত্বীকদের গবেষনা অনুসারে সেই সময়কাল প্রায় ৪০/৫০ হাজার বৎসরের প্রাচীন। মস্তিষ্কের যে অংশ কথা নিয়ন্ত্রণ করে FOXP2 জিন যার জন্য আমরা মুখ মধ্যে প্রয়োজনীয় নড়াচড়াগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।FXP2 নামের এই জিনটি স্তন্যপায়ী প্রায় সকল প্রাণীর শরীরেই আছে। কিন্তু মানবদেহে যেটি আছে সেটি এর রূপান্তরিত জিন,"মানুষের কথা বলার জন্য এই রুপান্তরিত জীনটি কৃতিত্ব বহন করছে।কিন্তু প্রশ্ন হলো মানব দেহে এই জীনটি রুপান্তরিত হলো কি করে? কোন পরিব্যাক্তি কি? কথা বলা ও ভাষার বিকাশে এই জিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।কারণ যেসব মানুষের শরীরে এই জিনটি রূপান্তরিত অবস্থায় থাকে না, তাদের কথা বলতে অসুবিধা হয়।" আর যাদের মধ্যে রুপান্তরিত অবস্থায় থাকে তারাই কথা বলতে পারে। যেমন গরিলা ওরাং ওটাং এর এই জিনটি রুপান্তরিত অবস্থায় নেই।কোন না কোন ভাবে কোন পরিব্যাক্তি মানব দেহে এই জীনটিকে রুপান্তরিত অবস্থায় পরিবর্তন করেছিলো। আর যাই হোক দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়ায় মানব দেহটাও কথা বলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।কিন্তু এই পরিবর্তন অন্য কোন প্রাণির দেহে ঘটলো না ঘটলো আল্লাহর নির্ধারিত প্রানি মানুষকে যাকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে তার মাঝে? নিয়ান্ডারথালদের মধ্যেও এই জিন ছিল, কিন্তু এতটা উন্নত ছিল না। আর এই কারনে জার্মান মনোবিজ্ঞানী উইলহেম উন্ড ভাষার উৎপত্তি নিয়ে যতো তত্ত্ব ও প্রস্তাবনা আলোচিত হয়েছে তা দেখে তিনি প্রশ্ন করেছেন মানব জগতে ভাষার আবির্ভাব ও ব্যবহারের সক্ষমতা কি কোন ‘ঐশ্বরিক দান নাকি?
সেই এপদের আমল থেকে নিয়ানর্ডার্থাল আমল পযর্ন্ত ইশারা ইঙ্গিতের ব্যপক ব্যকরন গঠন করেছিলো আদি মানুষেরা। তৎকালীন সময়ে সক্রেটিস প্রকৃত বিষয়টি আড়াল করে আসলে সুস্থ আলোচনা করতে না দিয়ে আলোচনা থামিয়ে দিয়েছিলো। সক্রেটিসের সময়কাল থেকেই ভাষার উৎপত্তি সংক্রান্ত আলোচনাগুলি ছিল ভাষাতাত্বিক এবং দার্শনিকদের প্রিয় বিষয় এ ব্যাপারে পরবর্তী ভাষা বিজ্ঞানী ফার্দিনান্দ দ্য সস্যুরের মতে প্রকৃতি জগতে বিভিন্ন জিনিসের নামকরণ হয়েছিল Signified (চিহ্ন) এর দ্বারা। প্রতিকী ভাবেই আসলে নামকরন করা হতো। যেমন আমি উদাহরন দিয়ে বলতে পারি যেমন বাঘ “ইয়াহু” বলে গর্জন করে অতএব বাঘকে ‘ইয়াহু’ শব্দে নামকরণ করতে হবে। কুকুর ঘেউ ঘেউ করে অতএব কুকুরের নামকরন করতে হবে “ঘেউ”। বিড়াল মিউ মিউ বলে অতএব বিড়ালের নামকরন করতে হবে “মিউ”। ভাষা সৃষ্টির শুরুতে প্রকৃতি প্রদত্ত কোন বিষয়বস্তু দিয়েই প্রথমে নামকরন শুরু করা হয়।নামকরনের মধ্য দিয়েই শব্দ ভান্ডার প্রসার হওয়ার পর মানুষ ব্যকরন বানানো শুরু করে।শুরুতে ভাষাগত ব্যকরণ বলে তেমন কিছু ছিলো না কেবল ভাব প্রকাশ হতে যতটুকু দরকার।সেই আদি যুগে কেউ ঘেউ বললেই অন্যেরা বুঝে নিতো কুকুর আবার কেউ মিউ বললেই বুঝে নিতো বিড়াল।এভাবেই নামকরণ হয় বা শব্দ উৎপাদন হয়।ধর্ম গ্রন্থগুলোতে নামকরণ করা আদমকে শেখানো হয়েছিলো বলে ধর্মগ্রন্থ গুলোতে উল্লেখ পাওয়া যায়।মুসলিমদের আল কোরআনের আয়াতগুলোতে নাম শিক্ষা সমূহ বিষয়বস্তুুর উল্লেখ পাওয়া যায়।আয়াতটি লক্ষ্য করুন যে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর নাম সৃষ্ট বিষয় স্বয়ং আল্লা হতে। আল্লাই মানুষকে এসব নাম সৃষ্ট করতে শিখিয়েছেন-“আর তিনি আদমকে নামসমূহ সব শিক্ষা দিলেন তারপর তা ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন।সুতরাং বললেন, তোমরা আমাকে এগুলোর নাম জানাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা বলল, আপনি পবিত্র মহান। আপনি আমাদেরকে যা শিখিয়েছেন,তা ছাড়া আমাদের কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয় আপনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। তিনি বললেন,হে আদম, এগুলোর নাম তাদেরকে জানাও।অতঃপর সে এগুলোর নাম তাদেরকে জানাল। (আল কোরআন সুরা বাকারা 31-33) প্রিয় পাঠক, লক্ষ্য করুন এই তিনটি আয়াতে আদমকে নাম শিক্ষা দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আল কোরআনে আদমের এই নাম শিক্ষা দেওয়া বিষয়টি ভাষা সৃষ্টির ধারাবাহিক একটি প্রয়াস ছিলো। আল কোরআন বলেন- দয়াময় আল্লাহ, তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কুরআন। তিনিই সৃষ্টি করেছেন মানুষ, তিনিই তাকে ভাব প্রকাশ করতে শিখিয়েছেন। -সূরা রহমান:১-৪ " যার অর্থ দাড়ায় স্রস্টাই মানুষকে ভাব প্রকাশ করতে বা কথা বলতে শিখিয়েছেন। তার মানে দাড়ায় বাইরে থেকে এসে কেউ মানুষকে কথা বলা শিখিয়েচে। মানুষ সভ্যতার ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় মানুষের কথা বলা শেখাটাই ছিলো চমকপ্রদ উন্নয়নমূলক একটি মাইলফলক ঘটনা।কথা বলা শেখার পরেই মানুষ জাতির ঐতিহাসিক উন্নয়ন শুরু হয়। ধাপে ধাপে মানুষের পশুত্ব থেকে মনুষত্ব প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু মানুষ কথা বলা শিখলো কি করে? কে তাকে বোঝালো কন্ঠ থেকে বেরোনো সুর জিহ্বা ঘুরিয়ে পেচিয়ে পরিবর্তন করে মনের ভাব প্রকাশ করা যায়।বিভিন্ন শব্দ চয়নের মাধ্যমে বিভিন্ন বস্তুুর নামকরন করে এক একটি বিষয় নির্ধারন করা যায়? কে তাকে শেখালো এই নামকরন করা? একটি গরুকে গরু বলতে হবে, একটি ছাগলকে ছাগল বলতে হবে, একটি মুরগীকে মুরগী বলতে হবে। আকাশকে আকাশ বলতে হবে।এই নামকরন করা মানবসভ্যতার চুড়ান্ত উন্নয়নের দ্মার উন্মোচরন করে। এই নামকরন করাইবা মানুষ শিখলো কি করে? কে তাকে শিখালো নামকরন করা? ধর্মগ্রন্থ কেনো একটি বিষয় দাবী করছে?
ভাষা তখনই পূর্নতা পেয়েছিল যখন নামকরনগুলো পূর্নাঙ্গরুপে প্রতিষ্ঠিত হয়। আমরা যখন একটি শিশুকে বিদেশী ভাষা শেখায় সর্বপ্রথম বিভিন্ন শব্দ শেখায় শব্দ মুখস্ত হলে ব্যকরন শেখায় এবং বাক্য গঠন শেখায়।আদিমকালে মানুষের সমাজে নানা প্রয়োজনে ভাষার ব্যবহার শুরু হয়। তখন তারা বিভিন্ন জিনিসের নাম দিতে থাকে যাতে সবাই একটি জিনিসকে একটি নির্দিষ্ট নামেই চেনে। শিকার করতে গিয়ে তাদের সহচরদের বুঝতে সহায়তা করতে শিকার করা প্রাণিটিকে একটি নাম ধরে ডাকা শুরু করে। এই নাম সৃষ্টিই পরবর্তীতে ভাষা সৃষ্টি করে।আসলে ভাষার তখনই পূর্নাঙ্গতা পায় যখন পর্যাপ্ত শব্দের ভান্ডার বিদ্যমান থাকে।যেমন একটি বাক্য আমি বলি “আমি বইটি পড়ছি’।এখানে তিনটি শব্দ দিয়ে বাক্য গঠন করা হলো। এই তিনটি শব্দকে তিনটি নামকরন করা হয়েছে।যেমন আমি শব্দটি আমাকে বোঝাতে নামকরন করা হয়েছে।বই একটি বিষয় তাকে বই নামে নামকরন করা হয়েছে।পরবর্তীতে পড়া একটি কাজ তাকে পড়া নামে নামকরন করা হয়েছে। এরকম বিভিন্ন নামকরন করার মধ্যেই হোমো সেপিয়েন্সরা ভাষা সৃষ্টির চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হতে থাকে।কোন জিনিসটার নামকরণ কি হবে তা কিভাবে নির্ধারিত হয়? যেমন ধরুন, বৃক্ষের নাম কেন বৃক্ষ হলো? মাছের নাম কেন মাছ হলো? প্রজাপতির নাম কেন প্রজাপতিই হলো? এই বিষয়বস্তু বা নামকরণ করা হয়েছিলো বস্তুর বিষয়বস্তু বিবেচনা করে। ভাষা সৃষ্টির শুরুতে যখন শব্দ গঠন করার দরকার ছিলো ঠিক তখন বিভিন্ন বস্তুর নামকরন করে শব্দ গঠন করা হতো।নামকরন তত্ব নিয়ে মহামান্য দার্শনিক প্লেটো তার ক্র‍্যাটাইলাস গ্রন্থে বিষয়টির তুলে ধরেছেন।প্লেটোর ‘ক্র‍্যাটাইলাস’ বইয়ে জানা যায় দার্শনিক সোফিস্ট ক্র‍্যাটাইলাস দাবী করেছিলেন জগতের সবকিছুর নামকরণের পেছনে রয়েছে একজন নামকর্তার ভূমিকা। সেই নামকর্তা হতে পারে স্বয়ং ঈশ্বর কিংবা আদিমকালের কোন পৌরাণিক বীর।ক্র‍্যাটাইলাস মনে করেন নামকর্তা নামকরণ করেন প্রতিটা জিনিসের অন্তর্নিহিত প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে। এই সোফিস্ট কর‌্যাটাইলাস একজন আদি মানুষকে উল্লেখ করেছিলেন যিনি মানবজাতিকে নামকরন করা শিখিয়েছেন।এবং সেই মানুষটি স্বয়ং ঈশ্বরের কাছ থেকে নামকরন করার পদ্ধতি শিখেছিলেন।এই সংক্রান্ত বিষয়ে ক্রাইটালাস পুস্তকে প্লেটো সক্রেটিসের সাথে অনেক আলাপচালিতার প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন। সোফিস্ট ক্রাইটালাস একজন আদি মানুষকে ইঙ্গিত করেছিলেন আর আল কোরআন আদম নামক একজন প্রথম মানুষের কথা বলেছেন।নামকর্তা নামকরণ করেন এই প্রসঙ্গে সক্রেটিস মন্তব্য করেন “সেই নামকর্তা যদি সবকিছুর নামকরন করলেন তবে সেই নামকর্তা সবকিছুর নামকরণ করা হলো যদি তার পূর্বে কোন ভাষার অস্তিত্বই না থাকে যার মাধ্যমে নামকর্তা কোন জিনিসের অন্তর্নিহিত প্রকৃতিকে ভাষার মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পারেন?” অথাৎ ভাষায় যখন ছিলো না তখন নামকরন ঘটে কিভাবে? তৎকালীন সময়ে সক্রেটিস ছিলেন জ্ঞান বিজ্ঞানের জগতে হিরো? তাই সক্রেটিসের এই প্রশ্নে সবাই ইতস্তত বোধ করেন।সকলে ভাবলেন আসলেও তো তাই ভাষায় যদি না থাকে তবে নামকরন কি করে হবে? সক্রেটিসের এই কাউন্টোরের মুখে খারিজ হয়ে যায় ক্র‍্যাটাইলাসের তত্ত্ব। সক্রেটিস ছিলেন দেবতা অবিশ্বাসী একজন নাস্তিক্যবাদী একজন দার্শনিক। ঈশ্বর সংক্রান্ত বিষয় যেখানে থাকে সেখানেই তিনি তার বিরোধীতা করতেন। ক্রাইটালাসের তত্বের বিরোধীতা করাও ঠিক একই একটি কারনে। নাস্তিক সক্রেটিসের প্রতিবাদে তৎকালীন সময়ে উঠতি দার্শনিক ক্রাইটালাস তার গবেষনা থামিয়ে দিয়েছিলেন। একজন স্রষ্টার সান্নিধ্য পাওয়া মানুষের সন্ধান তিনে থামিয়ে দেন। সেই সময়ে কর‌্যাটাইলাসের তত্ত্ব নিয়ে আর কেউ মাথা না ঘামালেও এখন কিন্তু প্রশ্ন আসেছে নামকরন সৃষ্টির জন্য ভাষার প্রয়োজনীয়তা আদৌ কি খুব জরুরী? যেমন আমরা আমাদের সন্তানদের যখন ইংরেজী ভাষা শিখতে বলি। তখন তাকে প্রথমেই হাজার হাজার শব্দ (ওয়ার্ড) মুখস্ত করতে বলি যখন তার মুখস্ত বিষয়টি সর্ম্পূন হয় তারপর তাকে ভাষা শেখায় বা বাক্য গঠনের বিষয়বস্তু শেখায়। কিন্তু সক্রেটিস কেনো যে আগে ভাষার প্রয়োজনীয়তা খুজে পাইলেন? সেটাই ছিলো প্রশ্ন? আমরা জানি আদি যুগে মানুষের ইশারা ইঙ্গিতের বিশাল এক ব্যকরণ তৈরী করেছিলো। মনের ভাব প্রকাশের জন্য মানুষ ইশারা ইঙ্গিতে কথা বলতো। এখন যেমন বোবা শ্রেনির মানুষেরা ইশারা ইঙ্গিতে মনের ভাব প্রকাশ করে। ঐ মূহুত্বে প্রয়োজন ছিলো শব্দ গঠন এবং বিষয়বস্তুর নামকরণ। পাঠক তাহলে আপনিই বলুনতো শব্দ গঠনের জন্য বা বিষয়বস্তু নামকরনের জন্য আদৌ কি ভাষার প্রয়োজণীয়তা থাকে? ইশারা ইঙ্গিতে কি সেটি সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। আগে প্রয়োজন বস্তুর নামবরন বা শব্দ গঠন তারপর সেই শব্দ সাজায়ে বাক্য গঠন শেখা। সুতরাং তৎকালীন আমলের দেবতা অবিশ্বাসী মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত নাস্তিক সক্রেটিসের মন্তব্যে সেই যুগের মানুষেরা থেমে গেলেও এই যুগে সক্রেটিসের সেই মন্তব্য প্রশ্নের সম্মুখিন। গ্রহনযোগ্যতা পাই না। নামকরনকর্তার প্রশ্নে সচেতন জাগরণের দরকার। ধর্মগ্রন্থগুলো তো এমনি এমনি বলে নাই স্রষ্টা মানবজাতিকে কথা বলতে শিখিয়েছেন। আর কোরআন বলে। বাইবেল বলে স্রষ্টা আদমের জন্য ‘Divine Gift’ হিসেবে ভাষাকে দিয়েছিলো। শুধু তাই নয়। প্লেটো ‘ক্র‍্যাটাইলাস’ বইতে যে বিষয়টি স্থান দিয়েছেলেন খেলার ছলে নয়। তাছাড়া ‘ক্র‍্যাটাইলাস’ এই তত্ত্ব অনুযায়ী ভাষার উদ্ভব একজন ব্যাক্তির কথা উল্লখ করেছিলেন আল কোরআন তাকে আদম বলছেন। আর আদম নামকরনের পদ্ধতিটি শিখেছিল স্রষ্টার কাছ থেকে।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০২৩ বিকাল ৩:৩০
১৩টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসলামের বিধান হতে হলে কোন কথা হাদিসে থাকতেই হবে এটা জরুরী না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ১০:৫৫



সূরাঃ ৫ মায়িদাহ, ৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত, রক্ত, শূকরমাংস, আল্লাহ ব্যতীত অপরের নামে যবেহকৃত পশু, আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

×