somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবর্তনবাদের মুখোশে অপশক্তির ছায়া। (পর্ব-১)

১৩ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বিবর্তনবাদ অনুসারে জীবন একটা গাছের মত হওয়া উচিত। সুদীর্ঘ সময়ের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া দ্বারা একটির পর একটি প্রাণের বিবর্তন ঘটে। বির্বতনবাদী বিজ্ঞানীদের ধারনা অনুসারে মাইক্রো এ্যাভেুলেশন থেকে ম্যাক্রো এ্যাভুলেশন ঘটিয়ে এই জটির প্রাণের অবকাঠামো সুষ্টি যা একটি মূল থেকে শুরু হয়ে তার শাখাসমূহ ছরিয়ে দিয়েছে। ডারউইনীও উৎসসমূহে এরই উপর জোর দেয়া হয়েছে এবং "Tree of Life'' বা "জীবন বৃক্ষ'' নামে ধারণা করে প্রাণের একটি ধারাবাহিক একটি তালিকা তৈরী করা হয়েছে। তাকেই "Tree of Life'' বলা হয়ে থাকে। তাহলে প্রশ্ন হলো বিবর্তন যদি ঘটে থাকে প্রাণিদের বডিফর্ম বা স্টাকটারের মাঝে "Tree of Life'' এর ধারাবাহিক মিল অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু এ দাবীর সাথে প্রকৃত ঘটনার মিল কতটুকু? পৃথিবীতে এমন অনেক প্রাণি আছে যারা এই "Tree of Life'' ধারনাটির সাথে মিল রেখে চলে না। এইরকম ধারাবাহিকতার বাইরে অবস্থান করছে। এককোষি প্রাণি থেকে ধারাবাহিক ভাবে যদি বিবর্তন চলতে শুরু করে তাহলে অবশ্যই এই ধারাবাহিক ফল হিসেবে "Tree of Life'' বিষয়টিই ধাবিত হবে। কিন্তু আধুনিক জীববিজ্ঞানের কিছু গবেষনা এই ধারাবাহিক বিষয়টির মিমাংশা করতে পারছেন না। বিভিন্ন ফসিল উদঘাটন এবং আধুনিক গবেষনা তার উল্টা তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। যেমন অক্টোপাস। "Tree of Life'' এর সম্পূর্ন বিপরীত ধারনাই বহন করছে। যা সর্ম্পন ভিন্ন এবং সুক্ষ ও জটিল ইউনিক জিনেটিক্স কোডিং দ্বারা প্রানিটি গঠিত। ফলে বিজ্ঞানীরা বলতে বাধ্য হচ্ছে “'অক্টোপাসের নতুন জিনের জটিল সেটগুলি কেবলমাত্র অনুভূমিক জিন স্থানান্তর বা বিদ্যমান জিনের সাধারণ এলোমেলো মিউটেশন বা সাধারণ অনুলিপি সম্প্রসারণ থেকে আসেনি।” তাছাড়া জীববিজ্ঞানীরা আশা করেছিলেন যে ডিএনএ প্রমাণগুলি জীবনের একটি বিশাল গাছ প্রকাশ করবে যেখানে সমস্ত জীব স্পষ্টভাবে সম্পর্কিত। কিন্তু তেমনটি ঘটেনি সঠিক এ্যাভিডেন্সর অভাবে বিষয়টি বির্তকিত হয়ে পড়েছে। ফলে বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীদের নতুন ভিমরতি ধরে। তারা বলে অক্টোপাস নামক প্রাণিটি ভিন্গ্রহের প্রাণী। গত ১৩ মার্চ ২০১৮, ৩৩ জন গবেষক "Progress in Biophysics & Molecular Biology" Peer Reviewed Journal-এ তাদের গবেষণায় ব্যাখ্যা করেন অক্টোপাস পৃথিবীর প্রাণী নয় অর্থাৎ অক্টোপাস ভিনগ্রহের প্রাণী। তাদের গবেষণায় উঠে আসা এমন তথ্যে বিস্মিত হন জীববিজ্ঞানীরা। গবেষকরা বলছেন, সেফালোপডা প্রজাতিগুলোর সব জীবই নিজেদের শরীরে নিজেরাই বদল আনতে সক্ষম। সেফালোপডদের এমন আশ্চর্যজনক সামর্থ্য ভাবাচ্ছে বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানীদের। কারণ, বিবর্তনতত্ত্বের সাথে এর কোন মিল নেই। গবেষকরা মনে করছেন, শুধু অক্টোপাস নয়, সেফালোপডদের অন্য জীব যেমন- স্কুইড ও কাটলফিশ এগুলিও হয়তো ভিনগ্রহের জীব। তাদের ধারনা প্রায় ২৭০ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী তৈরির সময় অনেক কিছু মহাকাশ থেকে ছিটকে পড়েছিল যার কিছু ছিল জীবন্ত। আর সেভাবে হয়তো অক্টোপাস অথবা স্কুইডের ডিম সমুদ্রে পড়েছিল যা পরে সমুদ্রের তাপমাত্রায় জীবন পেয়েছে।
সেফালোপডরা নিয়মিত তাদের RNA প্রতিনিয়ত বদল আনতে সক্ষম। এই RNA-তে আছে জেনেটিক কোড। সাম্প্রতিক RNA editing transcriptome-wide ডেটা সোমাটিক RNA বৈচিত্র্য ম্যাকানিজমের উপর যা সেফালোপডে বিশেষ করে অক্টোপাসে আচরণগত-ভাবে জটিল বা সূক্ষ্ম। এই তথ্যসমূহ প্রকাশ করে A-to-I mRNA editing sites-এ সেফালোপডা কলেওয়ডদের (বিশেষ করে অক্টোপাস) প্রায় প্রত্যেকটি প্রোটিন কোডিং জিন আচরণগত-ভাবে খুবই জটিল যা ব্যাপক বিবর্তনীয় পরিবর্তনে প্রোটেকটেড অর্থাৎ প্রত্যেকটি প্রোটিন কোডিং জিন সূক্ষ্ম ও সংরক্ষিত। স্কুইড ও বিশেষ করে অক্টোপাসের প্রায় প্রত্যেকটি প্রোটিন কোডিং জিন বিবর্তন সংরক্ষিত A-to-I mRNA editing sites isoform রয়েছে, যার ফলে non-synonymous এমিনো এসিডের পরিবর্তন ঘটে। ইহা এমন একটি মসৃণ এবং ক্রমবর্ধমান বংশানুক্রমিক আণবিক জেনেটিক কৌশল একটি ভার্চুয়াল গুণগত পরিবর্তন, অর্থাৎ এক ধরণের আকস্মিক পরিবর্তন যাকে “great leap forward" বলা হয়েছে। অক্টোপাসের DNA highly rearranged যেখানে অসংখ্য জিন রয়েছে যা লাফিয়ে স্থান পরিবর্তন করতে পারে আর এই জিনগুলোকে "jumping genes" বলা হয়। যতক্ষণ না স্কুইড বা অক্টোপাস বংশক্রমানুতে সব নতুন জিন সাধারণ মিউটেশন দ্বারা পূর্ব জিন থেকে প্রকাশিত হয় ততক্ষণ পর্যন্ত স্কুইড অথবা অন্য জীব একই পরিবেশ শেয়ার করে নেয়, এখানে অবশ্যই এমন কোন উপায় নেই যার দ্বারা A-to-I mRNA editing-এর এই বৃহৎ গুণগত রূপান্তর ডারউইন বা নব্য-ডারউইন প্রক্রিয়া দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে, যদিও horizontal gene transfer ডারউইন বা নব্য-ডারউইনে অনুমতি দেয়া হয় (ডারউইন বা নব্য-ডারউইন horizontal gene transfer ব্যাখ্যা দিতে পারে না)। এর আগেও সেফালোপডদের ৫০০ মিলিয়ন বছরের একটি ইভল্যুশনারি হিস্ট্রি অংকন করা হয়েছিল, যদিও তা খুবই বিশৃঙ্খল ও পরস্পরবিরোধী ছিল। অক্টোপাস, স্কুইড ও কাটলফিশে নটিলাস থেকে রূপান্তরিত প্রধান জিনগুলো পূর্বের জীবে সহজে পাওয়া যায় না। এখানে অবশ্যই এমন কোন উপায় নেই যার দ্বারা A-to-I mRNA editing-এর এই বৃহৎ গুণগত রূপান্তর ডারউইন বা নব্য-ডারউইন প্রক্রিয়া দ্বারা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। (ডারউইন বা নব্য-ডারউইন horizontal gene transfer ব্যাখ্যা দিতে পারে না)।
আমরা উপরে যেমটা অক্টোপাসের ক্ষেত্রে দেখেছি। এর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও গঠন সম্পূর্ণ ইউনিক। তাই তাদের একাধিক ক্রমান্বয়ে হওয়া হাল্কা পরিবর্তন দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না।অলৌকিক উপায়ে (বা জেনেটিক ধারা ভেঙ্গে) কোন প্রানীর 'সৃষ্টি' হওয়া পর্যবেক্ষণ করা গেলে কিংবা তুলনামূলক জেনেটিক্সের তথ্য থেকে একই উপসংহারে পৌঁছনো না গেলে বিবর্তনতত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতা থাকে না বলেই বিবর্তনবাদীরা অক্টোপাশ কে ভিনগ্রহের প্রাণি বলেই মনে করেন । অক্টোপাসের জিন মানুষের চেয়েও বেশি যদিও মানুষের চেয়ে তাদের জিনোম ছোট অর্থাৎ অক্টোপাসের জিনোম অসংখ্য জিনে ভর্তি এবং কয়েক'শ জিন পাওয়া যায় যা অন্য প্রাণীতে নেই। অর্থাৎ অক্টোপাসের জিনোমে 'জেনেটিক ধারা' ভেঙে পড়ে ও জেনেটিক্স তথ্য থেকে একই উপসংহারে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। অক্টোপাসের প্রায় প্রত্যেকটি জিন evolutionary conserved যা বিবর্তনবাদী পরিবর্তন থেকে সংরক্ষিত। যার প্রতিটা জিন ইউনিক ও প্রয়োজনীয়। এই জিনের পরিবর্তন জীবের জন্য প্রাণঘাতী(lethal) হতে পারে। তাই গবেষকরা বলছেন, 'The complex sets of new genes in the Octopus may have not come solely from horizontal gene transfers or simple random mutations of existing genes or by simple duplicative expansions.



আরেকটি কথা না বললেই নয়। বিবর্তনে যদি প্রাণ সিৃষ্টি হয়ে থাকে তবে প্রিক্যামব্রিয়ান যুগ থেকে হঠাৎ করে ক্যামব্রিয়ান যুগে আকস্মিক ভাবে এত বহুকোষি প্রাণির আবির্ভাব হয় কি করে? পৃথিবীর প্রাচীন মহাসাগরগুলিতে জৈবিক প্রজাতির বৈচিত্র্যের দ্রুত বৃদ্ধির একটি আকস্মিক তরঙ্গ সংঘটিত হয়েছিল। ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণ নামে পরিচিত এই ঘটনাটি এতটাই তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হয় যে এটিকে কখনও কখনও জৈবিক বিগ ব্যাং হিসাবেও উল্লেখ করা হয়। বিবর্তনের মাধ্যমে যদি প্রানের আবির্ভাব ঘটে তবে প্রাণের বিগ ব্যাং হয় কি করে? বর্তমানে জানা সব পর্বের প্রাণীই Cambrian Period নামক ভূতাত্বিক যুগে একই সাথে আভির্ভূত হয়েছে। এই যুগটি ৫২০ থেকে ৫৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বে ১০ মিলিয়ন বা ১ কোটি বছর জুড়ে বিস্তৃত ছিল। এ সময়টিতে সব পর্বই পরিপূর্ণ আকৃতিপ্রাপ্ত অবস্থায় দেখা দেয়। ক্যামব্রিয়ান পাথরে পাওয়া জীবাশ্মের মধ্যে জীবনের বিভিন্ন আকৃতি রয়েছে, যেমন শামুক, trilobites, স্পঞ্জ, জেলিফিশ, তারামাছ, সমুদ্র লিলি ও সাঁতারু কাঁকড়া (Swimming Crustaceans) । এ সময়কালের বেশিরভাগ প্রাণিরই বর্তমান নমুনার মতই জটিল তন্ত্র ও উন্নত শারীরতাত্বিক গঠন যেমন চোখ, শ্বাসযন্ত্র ( Gill), রক্ত সঞ্চালন ব্যাবস্থা রয়েছে। এই গঠনগুলো খুবই জটিল এবং বেশ ভিন্নপ্রকৃতির। বর্তমান যুগের অনেক প্রাণীর চেয়ে ক্যামব্রিয়ান যুগের জটিল কিছু লাইফ ফর্ম এখনও বিবর্ত্নবাদীদের হকচকিয়ে দেয়। প্রি ক্যামব্রিয়ান যুগ থেকে ক্যামব্রিয়ান যুগের এই স্বল্প সময়ে বিবর্তনের মাধ্যমে এত জটিল ও সুক্ষ প্রাণ কি করে আবির্ভত হতে পারে তার কোন প্রমান বা এ্যাভিডেন্স বিজ্ঞানীদের হাতে নেই? বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্য-প্রমাণ থেকে দেখা যায় যে প্রথম জীবিত সত্ত্বাসমূহের জন্ম ও বিকাশ বিবর্তিত হয়ে হয়নি। তারা একে অপর থেকে বিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন প্রাণিতে পরিণত হয়নি। বরং হঠাৎ করে আকস্মিক বিভিন্ন লাইফফর্মে বিভিন্ন বডি স্টাকচারে সুক্ষ ও জটিল প্রাণরুপেই আর্বিভূত হয়েছে। বিবর্তনবাদীদের মতে জীব জটিল গঠন অর্জন করে ধারাবাহিকভাবে ও দীর্ঘ সময় নিয়ে। অর্থ্যাৎ, তাদের অনুমিত বিবর্তন ইতিহাসের শুরুতে জীবনের অবশ্যই 'আদিম' বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে শুধুমাত্র দীর্ঘ বিবর্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই উন্নত বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি খু্বই স্বল্প সময়ে প্রাণের জটিল ফর্ম দেখা গেছে। লাইফ ফর্মের আজকের মতই জটিল (Complex) অ্যানাটোমিক্যাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন চোখ, শুঙ্গ (Antenna) , পা, মুখ, পাকস্থলী। অতএব, জটিলতা (Complexity) এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা 'শুরুতেই' দেখা গিয়েছে পরবর্তিতে নয়। জীবাশ্মবিদ্যার (paleontology) এই বাস্তবতা ও ডারউইনিজমের এই প্রত্যক্ষ অসঙ্গতির বর্নণা দিতে গিয়ে বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিলিপ জনসন বলেন- " 'ডারউইনীয় তত্ব ধরে নেয় যে 'ক্রমান্বয়ে প্রসারণশীল বৈচিত্র্যের একটি ত্রিভুজের' মধ্য দিয়ে এক একটি প্রজাতি উঠে আসে। ' এই প্রকল্প মতে, জীবন শুরু হয়েছে প্রথম জীবিত সত্ত্বা বা প্রাণির আদিম প্রজাতি থেকে যা পরে ক্রমান্বয়ে বৈচিত্রময় হয়ে হয়ে জীববিদ্যার শ্রেণিকরণের উচ্চতর শ্রেণীর জন্ম দিয়েছে। কিন্তু প্রাণিদের ফসিল থেকে আমরা দেখি যে এই ত্রিভুজটি আসলে বিপরীত। শুরু থেকেই সব পর্বসমূহ ছিল পরে ধীরে ধীরে সংখ্যা কমেছে।' এ ব্যাপারে বিশিষ্ট জীববিজ্ঞানি ফিলিপ জনসন যেমনটা বললেন, “প্রাণির পর্বসমূহ ধারাবাহিকভাবে বিকশিত না হয়ে একবারে, একইসাথে আভির্ভূত হয়েছে যার অনেকগুলোই পরে বিলুপ্তির শিকার হয়েছে। আর এ ধরণের ভিন্ন ভিন্ন জীবনরূপ আকস্মিক ও নিঁখুতভাবে দেখা দেওয়া থেকে এটাই বোঝা যায় যে এগুলোকে সৃষ্টি করা হয়েছে।”
ক্যামব্রিয়ান জীবসমূহ কোন পূর্বপূরুষ ছাড়াই হঠাৎ করেই ইতিহাসের মঞ্চে হাজির হয়েছে। প্রাণী জগতের সব ধরণের মৌলিক কাঠামো ধারণকারী ৫৩০ মিলিয়ন বছর পূর্বের ক্যামব্রিয়ান জীবসমূহ বিবর্তন তত্ত্বকে পুরোপুরি খণ্ডণ করে দিচ্ছে। ডারউইনের তত্ত্ব সব প্রজাতিকে একই পূর্ব-পুরুষ থেকে উৎপন্ন দেখাতে চায়। ক্যামব্রিয়ান যুগের শুরুতেই ৫০ থেকে ১০০ প্রজাতির আকস্মিক আবির্ভাব ঘটে। ফসিল রেকর্ড ক্যমব্রিয়ান-পূর্ব যুগে তাদের সাধারণ (Common) আদি পুরুষের অস্তিত্বের প্রমাণ দিতে পারেনি।



এখন প্রশ্ন ক্যামব্রিয়ান যুগের পূর্বে কি প্রাণ ছিলো? হ্যা ছিলো। এক কোষি প্রানি ছিলো। এ ব্যাপারে উইকপিডিয়া লিখেছে “প্রাণ সৃষ্টির সময়কাল সম্বন্ধে একেবারে নিশ্চিত হওয়া এখনও সম্ভব হয়নি, কিন্তু পশ্চিম গ্রীনল্যান্ডের উপকূলের নিকটবর্তী কিছু দ্বীপ থেকে ৩৮০ কোটি বছরের পুরোনো পাথরে কার্বনের নমুনা পাওয়া গেছে, যা জৈব উৎসসঞ্জাত হতে পারে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে ৩৪৬ কোটি বছরেরও বেশি প্রাচীন ব্যাক্টেরিয়ার সুসংরক্ষিত অবশেষ পাওয়া গেছে।[৫] ঐ একই জায়গা থেকে আরও কিছু নমুনা পাওয়া গেছে যেগুলো জীবাশ্ম হওয়ার সম্ভাবনা আছে, আর এই দ্বিতীয় প্রকার নমুনাগুলোর বয়স আরও ১০ কোটি বছর বেশি। প্রাক্-ক্যাম্ব্রিয়ানের পরবর্তী দীর্ঘ সময় জুড়ে ব্যাক্টেরিয়াদের নিরবচ্ছিন্ন জীবাশ্ম প্রমাণ পাওয়া যায়।” বিজ্ঞানীদের উদ্ঘাটিত প্রমান বা ফসিল থেকে প্রাপ্ত তথ্য দ্বারা প্রমান ক্যামব্রিয়ান যুগের পূর্বে প্রাণি গুলো সবই এককোষি প্রাণি ছিলো। তবে ইদানিং কিছু প্রমান পাওয়া যাচ্ছে প্রিক্যামব্রিয়ান যুগে যথেষ্ঠ উন্নতমানের গাঠনিক এক কোষি প্রাণির আবির্ভাব ঘটেছিলো। ফসিল রেকর্ড অনুসারে জানা যায় প্রিক্যামব্রিয়ান যুগের ডিকিনসনিয়া নামের এক জীব কোনো বহুকোষী প্রাণী নয়। মিটারখানেক দৈর্ঘ্যের হলেও এটি আসলে একটি এককোষী এমিবা বা ছত্রাক। সে হিসেবে এগুলো বিশ্বের প্রথম প্রাণীগুলোর একটি। এরা সকলে এক কোষি এ্যামিবার মতো নিজেকে দ্বিখন্ডিত করে বংশ বিস্তার করে। এদের যৌন প্রজনন কেন্দ্র বা অন্য কোন উপায় নেই নিজেকে দ্বিখন্ডিত করেই বংশ বিস্তার করে।
প্রিয় পাঠক এবার আসি আমি আল কোরআনের র্ক্ষুদ্রৃ একটি আয়াতে “ فِي ظُلُمَاتٍ ثَلَاثٍ ذَلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ فَأَنَّى تُصْرَفُونَ তিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে একই নফস থেকে। অতঃপর তা থেকে তার যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং তিনি তোমাদের জন্যে আট প্রকার আনআম অবতীর্ণ করেছেন। তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভে পর্যায়ক্রমে একের পর এক ত্রিবিধ অন্ধকারে। তিনি আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা, সাম্রাজ্য তাঁরই। তিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। অতএব, তোমরা কোথায় বিভ্রান্ত হচ্ছ ৩৯:৬” প্রিয় পাঠক এই আয়াতটি গভীর ভাবে লক্ষ্য করুন-আয়াতটির প্রথম অংশে বলা হচ্ছে তিনি সৃষ্টি করেছেন একটি নফস থেকে তারপর তা থেকে তিনি তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন।(ণফস শব্দের আভিধানিক অর্থ আত্মা বা প্রান)। একটি প্রাণ থেকে অথাৎ এককোষি জীব এ্যামিবা যা নিজেদেরকে দ্বিখন্ডিত করে বংশবিস্তার করে। আল কোরআনের প্রিক্যামব্রিয়ান যুগের সেই সময়কালের কথাই বলা হচ্ছে যখন পৃথিবী জুড়ে শুধু এককোষি প্রানির তান্ডব। চারিদিকে এক কোষি প্রাণির স্বর্গরাজ্য। যাদের বংশবিস্তরে সমুদ্র ভরপুর। কিন্তু প্রশ্ন হলো পৃথিবীতে বায়ো অনু বা এক কোষি প্রান কি করে সৃষ্টি হলো। প্রকৃতিতে অসংখ্য ভারী অনু রয়েছে, তবে তাদের মধ্যে প্রাণ নেই। বিজ্ঞান বলছে, কোন বায়ো অণুকে প্রাণ অণু সংগঠনের জন্যে তার নিজের প্রতিলিপি তৈরী করার ক্ষমতা থাকতে হবে। এই প্রতি লিপি তৈরী করার ক্ষমতাকে প্রকারান্তরে জন্মদান ক্ষমতা বলা যেতে পারে। কারন এককোষি প্রানি নিজে থেকে আলাদা হয়ে দুটিতে পরিনত হয়। সকল প্রাণি দেহে এরকম প্রতিলিপি তৈরীকরণ ক্ষমতা সম্পন্ন ভারী অনুগুলোই নতুন অনু জন্মদিতে পারে ও নিজে বিবর্র্ততি হতে পারে। আর এই সকল এককোষি প্রাণিগুলো আরএনএ দ্বারা গঠিত। প্রকৃত পক্ষে আর এন এ কিন্তু কোন প্রাণ কোষ নয়, এটি প্রাণকোষস্থিত একটি অনু। তা হলে আরও ধরে নিতে হবে যে, আর এন’র মধ্যেও বুদ্ধিদীপ্ত মস্তিস্ক রয়েছে যেটি চিন্তাভাবনা করে কোষ গঠনের বাকী অনুগুলোকে সংশ্লেষিত করে এক আদর্শ প্রাণকোষ গঠন করতে পারে। বিজ্ঞান কিন্তু এ কথা স্বীকার করেনা; এমন কি প্রকৃতিতে কোন চিন্তাশীল স্বত্তা আছে বলেও বিজ্ঞান স্বীকার করেনা। তাহলে যৌক্তিকভাবেই স্বীকার করতে হচ্ছে প্রকৃতিতে আপনা আপনি প্রতিলিপি করণ ক্ষমতা সম্পন্ন কোন বায়ো অনু সৃষ্টি হতে পারেনা। তার জন্যে প্রয়োজন নীল নকশা ও রাসায়নিক বিক্রিয়ার প্রয়োজনীয় নির্দেশ দান। নইলে আপনা আপনি এই বায়ো অনু বা এক কোষি জীব এ্যামিবা গঠন হতে পারে কি করে? দেখুন আল কোরআন কিন্তু সুন্দর একটি তথ্য দিচ্ছে মানবজাতিকে। প্রকৃতিতে পাওয়া সাধারণ অনু থেকে বায়ো অনুর ভিন্নতা হলো এই নফস। যা বায়ো অনু সৃষ্টির কারন। যে বায়ো অনু নিজের প্রতিলিপি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছে নফস নামক কোন একটি উপাদানের কারনে। আপনি নিজেকে গভীরভাবে প্রশ্ন করুন প্রকৃতির সাধারন অনু কেনো প্রতিলিপি সৃষ্টি করতে সক্ষম নয় কারন বায়ো অনুতে এমন কোন কিছু আছে যাতে নির্দেশ দান করা আছে তার প্রতিলিপি সৃষ্টি করা বা তার জোড়া সৃষ্টি করা। প্রাণ সৃষ্টির এই কারন বা এককোষি প্রাণিদের এই বিভাজন কেনো ঘটে বিজ্ঞানী বোঝেনি। এমনকি বিবর্তনীয় জীববিজ্ঞানী ম্যাসিমো পিগলিউচি স্বীকার করেছেন, "প্রাকৃতিক উপায়ে কীভাবে পৃথিবীতে প্রাণের উদ্ভব হয়েছিল তা আমাদের কাছে সত্যিই কোনো ধারণা নেই।"

এবার আসি আল কোরানের সুরা যুমার পরবর্তী আয়াতটি নিয়ে। আয়াতটিতে বলা হচ্ছে তিনি তোমাদের জন্যে আট প্রকার আনআম অবতীর্ণ করেছেন। আনআম শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো প্রাণি বা কেউ অর্থ বলে চতুষ্পদ জন্তু কেউ তাফসীর করে গবাদী পশু। একেকজন একেকরকম তাফসীর করলেও আসলে বৈজ্ঞানিক ভাবে তাফসীর করলে বা বিবেচিত করলে আপনি পাবেন বডি স্টাকচার বা লাইফ ফর্ম। আবার লক্ষ্য করুন এখানে বলা হচ্ছে অবর্তীন করার কথা। অথাৎ যা উপর থেকে প্রেরন করা হয়েছে। আপনি কি মনে করেন গরু, ছাগল, মুরগী, হাতি বা এসকল প্রাণিকে আকাশ থেকে অবর্তীন করা হয়েছে? না আসলে আল কোরআনের এই আয়াতে আনআম বলতে বোঝানো হয়েছে বডি স্টাকচার বা লাইফফর্ম। এমন একটি বিষয় যা এককোষি প্রাণি থেকে বহুকোষি প্রাণি সৃষ্টির একটি মেকানিজম। এমন একটি মেকানিজম স্রষ্টার পক্ষ থেকে অবর্তীন করা হয়েছে। আমি পূবেই বলেছি প্রি ক্যামব্রিয়ান যুগে বিজ্ঞানীদের প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ফসিল রেকর্ড অনুসারে পাওয়া গেছে এককোষি প্রানি কিন্তু ক্যামব্রিয়ান যুগে পাওয়া গেছে বিভিন্ন লাইফ ফর্ম বহুকোষি প্রাণি। ক্যামব্রিয়ান যুগের বা ইতিহাসের একদম নির্দিষ্ট একটা বিন্দুতে হঠাৎ করে এক কোষি প্রাণি পাল্টে যেতে আরম্ভ করেছিলো কি করে? কি করে প্রাণ সৃষ্টির অবকাঠামো গঠিত হতে পারে বিবেকবান মানুষ অবশ্যই উপলদ্ধি করতে পারে। কারন বিবর্তন এভাবে কাজ করে না। বিবর্তন ক্রমশই কাজ করে। তবে পৃথিবীর এই লম্বা ইতিহাসের মধ্যে দুই বা আড়াই কোটি বছর তেমন বেশি কিছু না। এতো অল্প সময়ে প্রানের জটিল কাঠামো কি করে সৃষ্টি হতে পারে? এতোটুকু বিবর্তন হওয়াও বিস্ময়কর, তাই এটাকে বিস্ফোরণ বলে! সুতরাং আমরা এখানে ভাবতে বাধ্য হয় এমন কিছু একটা ঘটেছিলো যা তৎকালীন সময়ে পানির সমুদ্রে যেখানে অসংখ্য লাইফফর্ম গঠিত হয়েছিলো। এটিকে আপনি সৃষ্টি করা না বলে যদি আপনি বিবর্তন বলেন সেটি সম্ভব নয়। সুতরাং আপনি যদি মনে করেন বিবর্তন এক কোষি প্রাণি থেকে বহুকোষি প্রাণি গঠন করেছে বা বডি স্টাচার বা লাইফফর্ম তৈরী করেছে তাহলে সত্যিই সেটা মরিচীকার পিছনে ছুটে চলা হয়ে যাবে। এই কারনেই আল কোরআনের পরবর্তী আয়াতের মানুষকে বিভ্রান্ত হয়ে ছুটে চলার কথা বলা হচ্ছে। এবার আসুন আমরা সুরা যুমার পরবতী আয়াতটি নিয়ে আলোচনায়। আয়াতটিতে বলা হচ্ছে ‘তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভে পর্যায়ক্রমে একের পর এক ত্রিবিধ অন্ধকারে।’ দেখেন এখানে কিন্তু বিবর্তনের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়েছে। আলাদা আলাদা বডি স্টাকচার থেকে বিবর্তিত হয়ে প্রানি সমূহের আজ এই রুপায়ন। এক একটি শ্রেনি থেকে বিবর্তিত হয়ে বিভিন্ন উপশ্রেনি সৃষ্টি। যা আজ আমাদের পৃথিবী জ্যড়ে ব্যাপ্তি। প্রাণিকূল আজ ডাঙ্গাতেও এসেছে। (এ ব্যাপারে পরবতী পর্বে আলোচনা করা হবে) ম্যাক্রো বির্বতনের ইতিহাস বা এ্যাভিডেন্স তেমন কোন প্রমানিত না হলেও মাইক্রো এ্যাভুলেশন কিন্তু আমাদের মেনে নিতে হয়।
(ধারাবাহিক ভাবে চলবে-পরবতী পর্বে)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৬
২৩টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×