somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আবরার হত্যাকাণ্ড: কারণ রেখে অকারণের দিকে বইছে সব, কেন অবাক নয় বুয়েটের শিক্ষার্থীরা? শিবির হিসেবে ভারতবিরোধী পোস্ট প্রমাণ

১০ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ভারতবিরোধী পোস্ট করায় বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে ছাত্রলীগ। সিসিটিভির ফুটেজে এর প্রমাণ মিলেছে। খুনীরাও সত্যতা স্বীকার করেছেন। সত্যতা স্বীকার করলেও তাদের দাবি করেছেন, আবরার ফাহাদের রুমের সবাইকে মাতাল ছিল। সিসিটিভির ফুটেজে কিন্তু আবরারকে একটুও মাতাল মনে হয়নি। বরং ছাত্রলীগ মদ খেয়ে পিটিয়েছে এটা ঠিক বোঝা গেছে আবরারের গায়ের দাগ দেখে।

হাস্যকার ব্যাপার হল, অনেক পত্রিকার রিপোর্টে দেখলাম, হাসপাতাল জানিয়েছে, ‘আবরার হত্যার কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।’ হাতপাতালে নিতান্তই কিছু ছাগল পোস্টমর্টেম করেছে এটা এ থেকে নিশ্চিত। সরকারী ইস্যু আসলে ডাক্তারের কিছু বলে দিতে হয় না। তারা আপনা থেকেই সবকিছু বুঝে নেয় কী করতে হবে আর কী বলতে হবে। আবরারের পোস্টমর্টেম কোনো পাগল ছাগল করলেও সঠিক তথ্যটিই বেরিয়ে আসতো। কিন্তু...

এদিকে কুষ্টিয়ার এসপি আরাফাত তানভীর নৈদিক আমাদের সময়কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছে, আরাফাতের পরিবারের সবাই জামায়াত শিবির। এটা বলে উনি কী বোঝাতে চাইছেন? আবরারকে হত্যা ঠিক আছে, এখন তার পরিবারের এক এক সদস্য করে হত্যা উচিৎ। নাকি বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়ে তাদের জেলে পুড়ে দেয়া উচিৎ। কোনটি?

গতকাল ৯ অক্টোবর বুয়েটের ভিসি আবরারের কবর জিয়ারত করতে গিয়েছিলেন। এলাকাবাসীর তোপের মুখে পালিয়ে এসেছেন। সেখানে লোকজন ভিসিকে আটকে ফেলেন। অবশ্য এলাকাবাসী ভিসিকে বাঁধা দেওয়ার পরে সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় আবরারের ছোট ভাই ফায়াজ, তার ফুপাতো ভাইয়ের স্ত্রী ও আরও একজন নারীকে মারধর করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেন, বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। এর সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি পেতেই হবে। কাউকে একচুলও ছাড় দেয়া হবে না। শুধু প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই নয়, আমি একজন মা হিসেবে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার করব। প্রধানমন্ত্রী মা হিসেবে বিচার করতে চাইছেন। অনেকেই প্রশ্ন ছুঁড়ছেন, কার মা হিসেবে ছাত্রলীগের না ফাহাদের? যেভাবে হত্যাকারীদের কেউ কেউকে দূরে সরানো হচ্ছে, আড়াল করা হচ্ছে, তাতে তো মনে হচ্ছে মা-ই সন্তানকে আড়াল করে রাখছে। এ কথা আমি বলছি না। স্যোশাল মিডিয়ায় অনেকেই বলছেন একথা।

প্রধানমন্ত্রী ভিসির ওপরও ক্ষোভ প্রকাশ করের। বলেন, উনি কেমন ভিসি? একটা ছাত্র মারা গেল, আর তিনি এতটা সময় বাইরে ছিলেন? আবরারের জানাজায়ও তার অংশ নেয়া উচিত ছিল। এ ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত। প্রধানমন্ত্রীর এ কথা শোনার পরই হয়ত ভিসির টনক নড়ে। আর তিনি ছুঁটে যান আবরারের কবর জিয়ারত করতে। প্রধানমন্ত্রী একথা না বললে হয়ত তিনি কখনই কুষ্টিয়ায় পা রাখতেন না।

আর একটা কথা পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের কী আশ্চর্য মিল -এটা কি কেউ খেয়াল করেছেন। ছাত্রলীগ বলল, আবরার শিবির করতো। কারণ হিসেবে পাওয়া গেল সে শিবির করতো। পুলিশও কিন্তু মিল রেখে সেই কথাই বলল। অনেকের ধারণা এই পুলিশ নিশ্চয় ছাত্রলীগ থেকে উঠে এসেছে। তিনি নাকি স্বজাতিদের বাঁচাতে চাইছেন।

বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুয়েটের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, এটা যে নতুন ঘটছে তা নয়। বুয়েটে এটা অনেক পুরনো। বেশ আগে থেকেই চলে আসছে। আজ যেভাবে জানতে পেরেছি এর আগে এভাবে জানতে পারিনি। সবকিছু চলতো গোপনে, তবে আমরা জানতাম। কিন্তু নামগুলো জানতে পারতাম না। আর একারণে আবরার হত্যায় আমরা মোটেও অবাক হচ্ছি না।

অরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, শুধু বুয়েট নয়, দেশেল বড় সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই সমস্যা আছে। যেখানে ছাত্রলীগরা হরহামেশাই শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করে। ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে টার্গেট করে ছাত্রলীগ। এরপর তাকে ভিবিন্নভাবে নির্যাতন চালায়। আবরারের ক্ষেত্রেও তাই ঘটেছে। তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে তাকে টার্গেট করা হয়েছে। ছাত্রলীগ এটা স্বীকার করেছে। তারা আবরারের ল্যাপটপ চেক করেছে। শিবির হিসেবে প্রমাণ পেয়েছে তার ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস।

আজ (১০ অক্টোবর) বিডি নিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এক সংবাদে জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ খোলা একটি ওয়েবপেইজে গত ৯ অক্টোবর পর্যন্ত র‌্যাগিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১৬৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের এমন ঘটনা ঘটে এলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘জেনেও’ উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নির্যাতন বন্ধে অহায়ত্বই ফুটে উঠেছে বুয়েটের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের কথায়। বুয়েটের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে তার দপ্তর।

সবাই বলে আবরার মরে গেছে কিন্তু আমি বলব বেঁচে আছে, এখন পর্যন্ত বেঁচে আছে। নতুন কোনো ইস্যু আসা পর্যন্ত আবরার বেঁচে আছে। ভারতের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে যখন মিডিয়াপারাসহ সকল পারা সরব। ঠিক তখনই সোনার ছেলেরা মোড় ঘুরিয়ে দিল। চুক্তির দিক থেকে সবার নজর সরে গেল। চুক্তি নিয়ে বিবৃতি আসা বন্ধ হল। সবাই চিল্লানো শুরু করল আবরারকে নিয়ে। কিন্তু আবরার কেন মরল। সেটা সবাই ভুলে গেল। নতুন ইস্যু আসতে দেরি হবে না আসা করা যায়। কখন কী ঘটবে কেইবা জানে, তবে ইস্যু তৈরি হবে এটা নিশ্চিত বলে দেওয়া যায় অতীতের অভিজ্ঞাতার ওপর ভিত্তি করে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×