অ্যাকশন-থ্রিলার-অ্যাডভেঞ্চার ভক্তরা জেমস বন্ড মুভির নামে মাতোয়ারা। তাঁদের মধ্যে যারা ভিডিও গেমের ভক্ত তাঁরাও বন্ড-এর সঙ্গে মিলে রোমাঞ্চকর বিভিন্ন অভিযানে অংশ নিতে পারবেন জেমস বন্ড সিরিজের নতুন গেম ব্লাড স্টোনের সুবাদে।
কথায় আছে: ফার্স্ট ইমপ্রেশন ইজ দ্য লাস্ট ইমপ্রেশন। বিজার ক্রিয়েশনস-এর তৈরি এই থার্ড পারসন শ্যুটার গেমটির প্রথম ইমপ্রেশনই গেমারদের মনে গেমটির প্রতি আকর্ষণের সৃষ্টি করবে। যদিও মাঝে মাঝেই একঘেয়ে কিছু মুহূর্তের সৃষ্টি হবে তারপরও এ গেমটি মোটের ওপর গেমার আকর্ষণ ধরে রাখতে সক্ষম।
গেমটির শুরু হয় জি২০ শীর্ষ সম্মেলন বাতিল করার চক্রান্তে লিপ্ত এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর পিছু ধাওয়া দিয়ে শুরু করে। এরই মধ্যে শুরু হয় ষড়যন্ত্র আর পাল্টা ষড়যন্ত্র। আর এই ষড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে জেমস বন্ডকে ঘুরে বেড়াতে হয় এক দেশ থেকে আরেক দেশে। সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হয় মার্কামারা সব অপরাধী আর অন্ধকার জগতে অধিবাসীদের সঙ্গে। ঘটনার ঘনঘটা এতটাই জমজমাট আর অনিশ্চিত যে এক মুহূর্তে জেমস বন্ড হিসেবে গেমার নিজেকে আবিষ্কার করবেন মোনাকোর রাস্তায় অপরাধীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তো পর মুহূর্তেই দ্রুতগতির অ্যাস্টন মার্টিন গাড়ি হাঁকিয়ে তাকে চলে যেতে হবে সাইবেরিয়ায়, জমাট বরফের নদীর ওপর দিয়ে শত্রুর পিছু ধাওয়া করতে করতে। আসল বন্ড ড্যানিয়েল ক্রেইগ এবং অভিনেত্রী জুডি ডেঞ্চ-এর স্বকণ্ঠ গেমে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করে। গেম চলাকালীন সময়ে একের পর এক স্বল্পায়তন কাহিনী নির্ভর সিনের কল্যাণে গেমার গেমের পটভূমির সঙ্গে নিজেকে একাত্ম রাখতে পারেন অনায়াসে।
ব্লাড স্টোন গেমকে নির্দিষ্ট কোনও ঘরানা বা জেনারের অংশভুক্ত করা যাবে না, বরং বিভিন্ন ঘরানার একটি সংমিশ্রণ ঘটনোর চেষ্টাই এখানে করা হয়েছে, আর তাতে প্রচুর সফলতাও এসেছে। তবে গেমে বন্ড যেসব গ্যাজেট ব্যবহার করে তার মধ্যে কিছু দুর্বলতা আছে। উদাহরণস্বরূপ, বন্ডের হাতে একটি শক্তিশালী স্মার্টফোন আছে যেটির সাহায্যে পরিপার্শ্বকে স্ক্যান করে হার্ড ড্রাইভ ক্লোন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সিস্টেম হ্যাক করা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করার মত বিভিন্ন ব্যবস্থা নেয়া যায়। তবে খেলতে গিযে দেখা যায় এগুলো বেশি কাজে আসে না। গেমে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্রের সাউন্ড ইফেক্ট এককথায় জবরদস্ত। শুনতে একেবারে বাস্তব সম্মত। তবে বৈচিত্র্যের অভাব আছে শত্রুদের চরিত্র চিত্রণে এবং অ্যানিমেশনে।
টুকটাক এটা সেটা সীমাবদ্ধতা থাকলেও গেমটির একটি বড় আকর্ষণ হচ্ছে হাতাহাতি যুদ্ধ এবং এতে ব্যবহৃত অস্ত্রের বৈচিত্র্য এবং শক্তিমত্তা। আপনার কয়েক ফুটের মধ্যে অবস্থানরত যে কোনও শত্রু একবার মাত্র বাটন দাবিয়ে মুহূর্তের মধ্যে কচুকাটা করতে পারেন। শত্রুর ঘাড়ে কারাতের কোপ মারা বা এক লাথিতে তাকে অকেজো করে দেয়া কোনও ব্যাপারই না। এভাবে শত্রু ঘায়েল করে আপনি অর্জন করতে পারে ‘ফোকাস কিল’ পয়েন্ট। এছাড়া কিছু রহস্য সমাধান করতে হয কিছু লেভেল এ, সেগুলোও কম উপভোগ্য নয়। তার পাশাপামি স্টেলথ টেকনিক এর সঠিক ও উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি গেম খেলবার মজা অনেকখানি বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
থার্ড পারসন এই গেমটি আশা করি আপনাদের, বিশেষ করে থ্রিলার-একশন পছন্দ করা বন্ড ভক্তদের মনে ধরবে।
গেমটি খেলতে যা লাগবে :
অপারেটিং সিস্টেম: উইন্ডোজ এক্সপি, ভিস্তা, সেভেন।
সিপিইউ: ইন্টেল কোর২ডুয়ো, ২.০ গিগাহার্টজ
র্যাম: ১ গিগাবাইট এক্সপি, ২ গিগাবাইট ভিস্তা/৭
হার্ড ডিস্ক: ১২ গিগাবাইট ফ্রি ডিস্ক স্পেস
গ্রাফিক্স: ২৫৬ মেগাবাইট গ্রাফিক্স মেমোরি
ভিডিও কার্ড: রেডিয়ন ৯৬০০/জিফোর্সএএক্স
সাউন্ড কার্ড: ডিরেক্টএক্স কমপ্লায়েন্ট
ডিরেক্টএক্স: ডিরেক্টএক্স ৯.০সি
আমি একটা ব্লগ টাইপ সাইট ডেভলপ করছি। পাবলিক ব্লগ না, ব্যক্তিগত ব্লগ। সেখানে নিয়মিত মুভি রিভিউ, ই রিভিউ, পিসি গেম রিভিউ সহ টুকটাক লেখারিখি পাবলিশ করি আমি। একবার দেখবেন নাকি?
আমার সাইটটার একটা ফেবু পেজও আছে। সাইটটি ভাল লাগলে, এবং প্রতিদিন নিয়মিত পোস্ট আপডেট পেতে আগ্রহ বোধ করলে একটা লাইক দিন প্লিজ
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১১ রাত ৮:২৯