অনেক দিন ধরেই অভ্র আমার সাথে ঠিক মত কথা বলেনা । সেদিন বললাম,
>> " চল না কিছু একটা লেখি , ভারী মজা হবে । "
সে কোনও পাত্তাই দিলোনা শুধু " ভাষা হোক উন্মুক্ত " লেখাটা দেখিয়ে চলে গেলো ।, তারপর অনেক ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া পেলাম না । তারপর আবার বেশ কিছুদিন কথা বন্ধ । মন খারাপ করে বসেছিলাম তখন ক্রোম বাবাজি এসে বলল,
>> " বড্ড বাড় বেড়েছে অভ্রটার , তোকে পাত্তাই দিলোনা !! ওকে আচ্ছা করে একটা শিক্ষা দে তারপর গিয়ে ঠিক হবে । "
অগত্যা না চাইতেও বের করে দিলাম বাড়ি থেকে , বের হবার সময়ও তার কুছ পরোয়া নেই ভাব । উদ্দত্ত ভাবটা আর সহ্য করতে পারলাম না যা তা বলে বের করে দিলাম । কিন্তু তার পরেও কেন জানি শান্তি পাচ্ছিলাম না মনের মধ্যে কিছু একটা যেন বিঁধছিল । ভাবছিলাম এমনটা তো হবার কথা ছিলনা, হটাত করে কি হল ??
সাতপাঁচ ভেবে বেড়িয়ে পরলাম অভ্রকে খোঁজতে , ব্যাপারটা মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত শান্তি পাবোনা । একটু এগিয়ে গিয়েই তাকে পেয়ে গেলাম , উদাস চোখে তাকিয়ে আছে , পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম দেখেও কিছু বললনা । এগিয়ে গিয়ে বললাম,
>> " কিরে কথা বলবি না ??? কি হয়েছে ??? "
সে বলল
>> " কি আর হবে, কিছুই হয়নি । "
বলে আবার শূন্য দৃষ্টিতে চেয়ে রইল । আর আমি অপরাধীর মতো দাঁড়িয়ে রইলাম । তারপর নিজে থেকেই বলা শুরু করল ,
>> " যখন দরকার পরেছিল তখন মাথায় করে রেখেছিলি , আমাকে ছাড়া আর কিছুই দেখতি না । আর যখন ফুরিয়ে গেল !!! একটিবারের জন্যও আমার খোঁজ নিলিনা !!!! এটাই কি আমার পাওনা ছিল ? "
আমি একটু মৃদু প্রতিবাদ করতে গিয়ে থেমে গেলাম , সে বলে চলল,
>> " এখন যে এসেছিস সেওতো দরকার পড়লো বলেইতো, তাই না ??? "
কিছুক্ষনের জন্য বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম । কথাগুলো যেন তীরের মতো বিঁধছিল , কি বলবো খুঁজে পাচ্ছিলাম না । ভেতরে প্রচণ্ড একটা তোলপাড় শুরু হয়ে গেলো । ধীরে ধীরে বসে পরলাম, মাথাটা ভো ভো করছিলো । হটাত কাধে একটা হাত অনুভব করলাম , তাকিয়ে দেখলাম অভ্র !হাসি মুখে বলল,
>> " চল লিখতে হবে , অনেক লেখা বাকি আছে ভারী মজা হবে । "
আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম আর অনুভব করলাম চশমাটা ঘোলা হয়ে আসছে , পরিষ্কার করব ভেবে পকেট থেকে রুমাল বের করতে গিয়েও বের করলাম না । থাক চশমাটা আরেকটু ঘোলা হোক, মনটা আরেকটু হালকা হোক ।
তারপরের কাহিনী সংক্ষিপ্ত অভ্র আর আমি আবার লেখালেখি থুড়ি খেলা শুরু করলাম , সে ভারী মজার খেলা ।