somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিরোনামহীন

১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গভীর রাতেই কেন জানি সব চিন্তাভাবনা এসে ভীর জমায়...
দুনিয়ার যত হিসেব নিকেশ তখুনি মাথায় আসে...চাওয়া পাওয়ার হিসেব হারানোর হিসেব কান্নার হিসেব ভালবাসার হিসেব..সারারাত জুড়ে চলে হিসেব নিকেশের খেলা..

বিমলের আজকের ইন্টারভিউটাও ভালো হয়নি এদিকে বাবাও রিটায়ার করেছেন মার শরীরটা ভালো যাচ্ছে না ডাক্তার বলেদিয়েছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশনটা করিয়ে নিতে ছোট একটা বোন্ও আছে তার ও ভবিস্যত নিয়ে কিছু একটা করতে লাগবে এসব ভেবেই রাত কেটে যায়...

স্বপন মাস্টারের সারাজীবনে হাজার হাজার ছাত্র পড়িয়েছেন তার হাতদিয়ে কত ছাত্র বেরিয়েছে কতজন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হলো তার হিসেব নেই, এখনো দেখলে কত সম্মান জানায় অথচ তার ছেলের ঘরেই আজ তার জায়গা হয়না কত গঞ্জনা শুনতে হয়, এখন রাত জেগে ভাবেন তার শিক্ষায় কোন দিকদিয়ে ত্রুটি রয়েগেল..

মিথিলা অনেক সাহস করে ঘর ছেড়েছিল প্রকাশের সাথে, ভেবেছিল একসাথে মিলে বানাবে স্বপ্নের সংসার ভালবাসার মেঘ ধরা দেবে তাদের ছাদে..ভুলটা ভাঙ্গে দেড় বছরের মাথায়, এখন প্রকাশ রোজ রাতে মাতাল হয়ে মারধর করে..মিথিলাও বুঝে পায়না এমন হলো কেন ? এমনটা তো হবার কথা ছিল না ? আগের সেই সৌন্দর্য আর কিছুই অবশিষ্ট নেই মিথিলার মধ্যে যে সৌন্দর্যে ধরা খেয়েছিল প্রকাশ এখন রয়ে গেছে তো একটা কঙ্কালসার দেহ..এখন আর চোখের জলে বালিশ ভেজে না চোখের জল ও শুকিয়ে গেছে..

দুধে আলতা রং ছিল বলে মা ওকে আদর করে ডাকত গোলাপী, সেই গোলাপীর কপালে এমন ছিল কেউ ভাবতে পারেনি..গ্রামের এক নেতার ছেলের কূপ্রস্তাবের উত্তরে কষিয়ে দেওয়া এক চড়ের প্রতিশোধটা এত ভয়ানক ভাবে আসবে সে ভাবতেও পারেনি সেদিন হটাত করেই কে বা করা তাকে জোর করে তুলে নিয়ে গেল জঙ্গলের স্কুলঘরের পেছনে রাত ভর কতগুলো জানোয়ার পৈশাচিক আনন্দে মেতে উঠলো সেখানে ফেলে রেখে যাবার আগে মুখে এসিড ঢেলে জ্বালিয়ে দিয়েগেলো..এর পর মেয়েকে চরিত্রহীন বলে গ্রামছাড়া করলো..এখন রোজ রাতে গোলাপী ভাবে তার দোষটা কোথায় ছিল ?

রাত শেষ হয়,
সকাল হতেই দুটো মখে গুঁজে বিমল আবার বেরিয়ে পরে কাজের খুঁজে যাবার সময় মায়ের মুখটার দিকে আরেকবার তাকিয়ে যায় আদরের বোনটার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে যায়..বাবার মুখের দিকে তাকানোর সাহস হয়না..

স্বপন মাস্টার এখনো পড়ানো ছাড়েননি এখন রোজ সকালে নাতিকে পড়াতে বসেন..নিজের ছেলেকে যা শেখাতে পারেননি তা নাতিকে শিখিয়ে দিয়ে যাবেন যেন উনার ছেলে যেন উনার মত কষ্ট না পায়..বাবা হয়ে ছেলের কষ্ট কি করে দেখবেন ..

মিথিলা সকাল হতেই ঘর গুছিয়ে রান্না বসাতে যায়..পুরোনো ময়লা শাড়িটা কোমরে জড়িয়ে আবার সংসারের হাল ধরে..কাজে যাবার আগে যখন প্রকাশ খেতে বসে তখন একমনে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে মিথিলা..মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে ওর, খোঁচা খোঁচা দাড়িতে মুখটা অন্ধকার হয়ে থাকে দেখলে কেমন মায়া হয়..ভালাবাসা তখন অজান্তেই দানা বাঁধে..

সকাল থেকেই ব্যাস্ততার শুরু গোলাপির, শহরে এসেছে আজ বছর কয়েক হলো সারাদিন রাত পরিশ্রম করে এখন নিজের দুটো পার্লার, সেলাইমেশিন এর কাজ শেখানোর সেন্টার খুলেছে, খুলেছে নাচের স্কুল.. নিজের একটা বাড়িও কিনবে এরই মধ্যে..

রাত যায় আরেকটা নূতন সূর্য উঠে, জেদটা আরো জোরদার হয় দাঁতে দাঁত চেপে আবার লড়াইটা শুরু হয়..লড়াইটা নিজের সাথেই..
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৬ ভোর ৪:০৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×